- মাহে রমজানে আমাদের করণীয় :
মাহে রমজানের রোজা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়সী বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন মুসলিম নর নারীর উপর একটি ফরজ বিধান। সুবহে সাদেক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে প্রত্যেক ধরণের পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস থেকে নিজেকে বিরত রাখাই রোজা। মাহে রমজানের রোজার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়। ধনী ব্যক্তি উপবাসের মাধ্যমে গরিবের দুঃখ ও অনাহারের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। একে অপরের সুখ-দুঃখ উপলব্ধির মধ্য দিয়ে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়। এবার রোজাদারের জন্য পালনীয় বিষয়গুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরব!
- রোজাদারের জন্য করণীয় :
রমজানের ফজিলত ও মর্যাদা লাভের জন্য রোজাদারকে যেসব বিষয় পালন করতে হবে তা হলো :
১. রোজাদার অতিরিক্ত কথা বলবেন না। ২. অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ বর্জন করবেন। ৩. কারো সাথে ঝগড়া-ফ্যাসাদ করবেন না। কেউ ঝগড়া করতে এলে (আমি রোজাদার) বলে তাকে বিদায় দেবেন। ৪. বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আজকার করবেন। ৫. মিথ্যা কথা বলবেন না। ৬. কারো সমালোচনায় লিপ্ত হবে না। ৭. রোজার হক যথাযথভাবে আদায় করবেন। ৮. স্ত্রীর সাথে যৌনালাপ থেকে বিরত থাকবেন। ৯. অশ্লীল ও অশালীন ছবি-চিত্র দেখা থেকে বিরত থাকবেন। ১০. মুখ দিয়ে কোনো কিছুর স্বাদ গ্রহণ করবেন না। ১১. গরম বা রোদের কারণে বারবার কুলি করা যাবে না। ১২. অধিক উষ্ণতার কারণে গায়ে ভেজা কাপড় জড়িয়ে রাখা যাবে না। ১৩. বেশি বেশি দান-সাদকাহ করবেন। ১৪. রোজাদারের জন্য শরিয়ত নির্দেশিত সব অবৈধ কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। ১৫. যথাসময়ে সাহরি ও ইফতার গ্রহণ করতে হবে প্রভৃতি।
- রোজা যেসব কারণে ভেঙে যায় :
এবার রোজাদারকে জানতে হবে কী কারণে তার অতি কষ্টের রোজা ভেঙে যায়। রোজা ভেঙে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হচ্ছে, ১. ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পানাহার করা। ২. স্ত্রী-সহবাস করা। ৩. স্ত্রী চুম্বন দ্বারা বীর্যপাত হওয়া বা হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত করা। ৪. ইচ্ছা করে মুখভর্তি বমি করা। ৫. পাথর, লোহার টুকরা বা ফলের আঁটি প্রভৃতি গিলে ফেলা। ৬. ইচ্ছাকৃতভাবে পায়ু বা যৌনপথে যৌন সম্ভোগ করা। ৭. ইচ্ছাপূর্বক এমন জিনিস পানাহার করা, যা খাদ্য বা ওষুধরূপে ব্যবহার হয়। ৮. ডুজ নেয়া। ৯. কান বা নাকের ভেতর ওষুধ দেয়া। ১০. ধূমপান, লোবান এবং হুক্কা ইত্যাদির ধোঁয়া শুঁকা ইত্যাদি মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
শেষকথা : রোজার সার্বিক গুরুত্ব অপরিসীম। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষ বিভিন্ন পাপাচার থেকে দূরে থেকে সৎ কাজের প্রতি ধাবিত হয়। সুতরাং আমাদের প্রত্যেকের উচিত, রোজার এ মহান শিক্ষাকে উপলব্ধি করা। তাই রোজার প্রতি সবারই যত্মবান হওয়া অপরিহার্য। লিখাটি ভাল লাগলে সবাই শেয়ার করুন!
লিখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক