সুনানু দারে কুতনি এর হাদীস ‘ইন্না লি মাহদীনা’ এর তাহকীক

0
সুনানু দারে কুতনি এর হাদীস ‘ইন্না লি মাহদীনা’ এর তাহকীক

হাদীস :

إن لمهدينا آيتين لم تكونا منذ خلق السماوات والأرض، تنكسف القمر لأول ليلة من رمضان، وتنكسف الشمس في النصف منه، ولم تكونا منذ خلق الله السماوات والأرض

(উচ্চারণ : ইন্না লি মাহদীনা আয়াতাইনি লাম তাকূনা মনযু খালকিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি। তানকাছিফুল ক্বমারু লি আওয়ালি লায়লাতিম মিন রমাযানা। ওয়া তানকাছিফুশ শামছু ফিন নিছফি মিনহু। ওয়া লাম তাকূনা মনযু খালাক্বাল্লাহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা)।

মির্যা গোলাম আহমদ কৃত অনুবাদ : “আমাদের মাহদীর সত্যায়নের জন্য দুটি নিদর্শন নির্ধারিত আছে। আসমান জমিন যখন থেকে সৃষ্টি হয় তখন থেকে এই দুটি নিদর্শন কোনো দাবীদারের সময় প্রকাশিত হয়নি। আর সেটি হচ্ছে মাহদী দাবীদারের সময় চন্দ্র তার গ্রহণের তিন রাত্রির প্রথম রাত্রিতে অর্থাৎ ১৩তম তারিখে গ্রহণ লাগবে। সূর্য তার গ্রহণের দিনগুলোর মাঝখানের দিনটিতে অর্থাৎ ২৮ তারিখে গ্রহণ লাগবে। যখন থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে কোনো দাবীদারের জন্য মতৈক্য হয়নি যে, তার দাবীর সময় রমাযানের উক্ত তারিখেই চন্দ্রগ্রহণ আর সূর্যগ্রহণ হয়েছেই।” (উর্দূ থেকে বাংলা অনুবাদ-রূহানী খাযায়েন ১১/৩৩০)।

সঠিক অনুবাদ : “নিশ্চয়ই আমাদের মাহদীর জন্য দুইটি নিদর্শন রয়েছে। আসমান জমিন সৃষ্টি হতে অদ্যাবধি এই দুটি নিদর্শন প্রকাশিত হয়নি। একটি হল, রমাযানের প্রথম রাত্রিতে চন্দ্রগ্রহণ লাগবে এবং দ্বিতীয়টি হল, রামাযানের অর্ধ-দিবসে সূর্য গ্রহণ লাগবে। অথচ যখন থেকে আল্লাহতালা আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন তখন থেকে (অদ্যাবধি) এই দুটি নিদর্শন প্রকাশিত হয়নি।”

সংক্ষিপ্ত আলোচনা : সুনানু দারে কুতনি গ্রন্থে বর্ণিত এই বর্ণনাটি মারফূ (যার সনদ রাসূল সা. পর্যন্ত পৌঁছেছে এমন) তো নয়, কোনো সাহাবী থেকেও বর্ণিত হবার প্রমাণ নেই। এটি মুহাম্মদ বিন আলী বিন হুসাইন নামক একজন ক্ষুদে তাবেয়ীর বক্তব্য হিসেবে কতেক অগ্রহণযোগ্য ও মিথ্যুক রাবীর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেন, এটি মুনকার তথা অগ্রহণযোগ্য রেওয়ায়েত। (দারে কুতনি, কিতাবুল ঈদাইন ক্রমিক নং ১৭৭৭)। ডাউনলোড লিংক। রিজাল শাস্ত্রের কিতাব ‘তাকরীবুত তাহযীব’ এবং ‘তাহযীবুত তাহযীব’ এর মধ্যে পরিষ্কার লিখা আছে যে, قال ابن حبان: رافض يشتم الصحابة ويروي الموضوعات عن الثقات. قال أبو حاتم: منكر الحديث جدا ضعيف الحديث لا يشتغل به تركوه. وكذلك وهاه غير واحد منهم অর্থাৎ ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) বলেছেন, এর বর্ণনাকারী আমর ইবনে শিমার একজন রাফেজি ছিল। সে সাহাবীদের গালমন্দ করত। সে বহু বিশ্বস্ত রাবীর নামে অনেক বানোয়াট হাদীস বর্ণনা করত। ইমাম আবু হাতিম (রহ.) বলেছেন, এটি একটি মুনকার হাদীস ও খুবই দুর্বল হাদীস।

শায়খ নাসির উদ্দীন আল বানী (রহ.) কৃত ‘ছিফাতু সালাতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লি সালাতিল কুসুফ’ গ্রন্থেও বর্ণনাটি উল্লেখপূর্ব লিখা আছে যে, এর সনদ খুবই দুর্বলডাউনলোড লিংক। (খণ্ড নং ১, পৃষ্ঠা নং ১৮)।

এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন –

চন্দ্রসূর্যগ্রহণ কি মাহদীয়তের নিদর্শন?

কাদিয়ান থেকেও কি দেখা গিয়েছিল?

সম্পর্কিত তথ্যসূত্র এর স্ক্রিনশট –

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here