কাদিয়ানীদের বইতে কাউকে মুরতাদ বলার হুকুম

0
কাদিয়ানীদের বইতে কাউকে মুরতাদ বলার হুকুম

কাদিয়ানীদের তথাকথিত তৃতীয় খলীফা মির্যা তাহের আহমদ এর বই থেকে

প্রথমে মুরতাদ সম্পর্কে জানা যাক, তারপর প্রাসঙ্গিক আলোচনায় ফিরব, ইনশাআল্লাহ। মুরতাদ (مرتد) শব্দটি আরবী। এর ক্রিয়ামূল হচ্ছে ‘আল ইরতিদাদ’ (الارتداد)। বাবে ইফতি’আল থেকে। মূলধাতু رد বা রাদ্দ। আভিধানিক অর্থ, বিমুখ হয়েছে বা ফিরে গিয়েছে এমন ব্যক্তি। এর মূল কথা হলো, ইসলাম ত্যাগ করা বা ইসলামের কোনো মৌলিক আকিদা বা বিধানকে মানতে অস্বীকার করা কিংবা তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করা অথবা ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ের অবমাননা করা।

কাদিয়ানী খলীফা মির্যা তাহের আহমদ-এর বাণীতে কেউ আপর কাউকে মুরতাদ বলার অধিকার নেই :

কাদিয়ানী মতবাদের তৃতীয় খলীফা মির্যা তাহের আহমদ সাহেব ‘অপর কাউকে মুরতাদ বলা’ সম্পর্কে কী লিখলেন তা এবার আপনাদের দেখাচ্ছি। তিনি তার রচিত ‘আল্লাহ’র নামে নরহত্যা‘ বইতে লিখেছেন, “পবিত্র কুরআনে ‘রিদ্দা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে অকর্মক রূপে (ইফতি’আল-এর ওজনে) যার অর্থ হচ্ছে, প্রত্যেকের পছন্দ অপছন্দের অধিকার আছে, কিন্তু কারো এই অধিকার নেই যে, সে অপর কাউকে মুরতাদ বলে। এটা একটি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কাজ এবং এতে বাহিরের কারও কোনো ভুমিকা পালন করার কিছু নেই।” তিনি একই পৃষ্ঠায় কয়েক লাইন উপরে ‘ইরতাদ্দা’ এর ব্যকরণিক বিশ্লেষণ দ্বারা লিখেছেন, “স্বকীয় বিশ্বাস পরিত্যাগ বা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন যে শব্দটি ব্যবহার করেছে তা হচ্ছে, ইরতাদ্দা’-যার অর্থ—কোনো মুসলমানকে মুরতাদ বলার অধিকার কারো নেই। ইমাম রাগিব ইস্পাহানীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী ‘ইরতেদাদ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে–যে স্থান থেকে রওয়ানা দিয়েছিল সেই স্থানে ফিরে আসা। শব্দটি বিশেষভাবে সেইভাবে ধর্মত্যাগ করার অর্থাৎ ইসলাম থেকে কুফরীতে (অবিশ্বাসে) প্রত্যাবর্তন করার সঙ্গে সম্পৃক্ত।” (আল্লাহর নামে নর হত্যা, পৃষ্ঠা নং ১১; মির্যা তাহের আহমদ)। স্ক্রিনশট এই,

.

পরিশেষে আমার প্রশ্নটি হচ্ছে, অনলাইন কিবা অফলাইনে আমরা আহমদী-কাদিয়ানীদের অনেককে কথায় কথায় ‘কাদিয়ানী জামাত ত্যাগকারী’-কে মুরতাদ আখ্যা দিতে দেখে থাকি। অথচ একটু আগেই আমরা প্রমাণ করেছি যে, তাদের কথিত খলীফা মির্যা তাহের আহমদ পরিষ্কার করে লিখে গেছেন যে, কারও জন্য অপর কাউকে মুরতাদ বলার অধিকার নেই। এমতাবস্থায় কাদিয়ানী জামাতের যারা কথায় কথায় তাদেরই Ex Ahmadi or Ex Qadiani (জামাত-ত্যাগকারী)-দের মুরতাদ বলছে তাদের ব্যাপারে জামাতে আহমদীয়ার অফিসিয়ালি কী ফতুয়া (সীদ্ধান্ত)? আশাকরি প্রশ্নের উত্তর দেবেন!

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here