Home কাদিয়ানী মতবাদ খণ্ডন কাদিয়ানী বয়ানের উপর পালটা বয়ান তৈরি

কাদিয়ানী বয়ানের উপর পালটা বয়ান তৈরি

0
কাদিয়ানী বয়ানের উপর পালটা বয়ান তৈরি

কাদিয়ানীদের প্রতি “বয়ান” ছুড়ে দিন এভাবে যে,

((বয়ান-২))

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী তার বইতে লিখেছে, ঈসা (আ.) একজন শরাবী (মদখোর) ছিল, পতিতা মহিলাদের সাথে তার দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল! নাউযুবিল্লাহ। (রেফারেন্স সহ পোস্টের নিচে দীর্ঘ-বাক্যে দেখুন)।

উল্লেখ্য, ঈসা (আ.) সম্পর্কে উল্লিখিত উক্তিগুলি তার নিজের বিশ্বাসের জায়গা থেকেই ছিল। এটি শুধুমাত্র খ্রিস্টানদের খন্ডনে পালটা জবাবি তথা ‘ইলজমি জবাব’ রূপে ছিল, এ কথা মোটেও ঠিক না। যদিও কোনো কোনো কাদিয়ানী মতের অনুসারী মির্যা কাদিয়ানীর পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে এমনটা প্রতিউত্তর করার চেষ্টা করে থাকে।

তাই কাদিয়ানী মতের অনুসারীদের প্রতি আমার চ্যালেঞ্জ রইল, ঈসা (আ.) সম্পর্কে মির্যা কাদিয়ানী নিজ বিশ্বাসের জায়গা থেকে উপরে উল্লিখিত যে আপত্তিকর উক্তি নিজ বইতে লিখে গেছে তা সঠিক এবং বাস্তব প্রমাণ করে দেখান। যদি তা কুরআন হাদীসের আলোকে সঠিক এবং বাস্তব প্রমাণ করতে পারেন তাহলে আমরা মির্যা কাদিয়ানীকে সত্য হিসেবে মেনে নেব।

আর যদি তা প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে নির্দ্বিধায় আপনারাও মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন যে, মির্যা কাদিয়ানী ঈসা (আ.) সম্পর্কে আপত্তিকর উক্তিগুলোর ক্ষেত্রে শতভাগ মিথ্যাচারকারী। আর আল্লাহ কোনো মিথ্যাচারকারীকে “নবী” তো দূরের কথা; সাধারণ একজন ওলী-আউলিয়াও বানাবেন না, এটাই চূড়ান্ত কথা।

দীর্ঘ-বাক্যে সম্পূর্ণ উদ্ধৃতি :

  • মির্যা কাদিয়ানী লিখেছে, “ইউরোপের লোকদের মদ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণ হল, হযরত ঈসা (আ.) মদ পান করত। তা কোন রোগের কারণে বা পুরাতন অভ্যাস থাকার কারণে।” (কিশতিয়ে নূহ পৃষ্ঠা ৮৫ বাংলা অনূদিত, রূহানী খাযায়েন ১৯:৭১)।

আচ্ছা পাঠকবৃন্দ, ঈসা (আ.) সম্পর্কে উল্লিখিত উক্তিটি যার সে একই সাথে ঈসা (আ.)-এর মদ পান করার “কারণ”ও কিন্তু নিজ জবানে বলে দেয়ার পরেও ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে তার নিজের বিশ্বাসের জায়গা থেকেই নয়, একথা কিভাবে বলা যায়??

  • মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী উলামায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে রচিত তার ‘দাফেউল বালা’ নামক বইতে লিখেছে, ‘‘মাসীহের সততা তার সময়কার অন্যান্য সৎ লোকের চেয়ে বেশি বলে প্রমাণিত হয় না; বরং তার চেয়ে ইয়াহইয়া নবীর মর্যাদা এক গুণ বেশি। কেননা, সে মদপান করত না এবং কোনো ব্যভিচারিণী নারী নিজের ব্যভিচার থেকে উপার্জিত অর্থ দ্বারা সুগন্ধি ক্রয় করে তার মাথায় মালিশ করেছে এমন কোনো কথা তার ব্যাপারে শোনা যায়নি। অথবা এমনও জানা যায়নি যে, এরূপ কোনো নারী নিজের হাত বা মাথার চুল দ্বারা তার শরীর স্পর্শ করেছিল অথবা কোনো আনাত্মীয় যুবতী নারী তার সেবা করত। এ কারণে আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইয়াহইয়াকে হাসূর (নারী বিরাগী) বলেছেন। কিন্তু মাসীহের এ নামকরণ করা হয়নি। কেননা, উক্তরূপ ঘটনাবলী এরূপ নামকরণের অন্তরায় ছিল।’’ (দাফেউল বালা [উর্দূ] হতে অনুবাদ, মির্যা কাদিয়ানী)।

গোলাম আহমদ কায়িদানীর উক্ত রচনায় হযরত মাসীহ ইবনে মরিয়ম (আ.)-এর প্রতি কয়েকটি অপবাদ পরিদৃষ্ট হয়। (১) তিনি মদ পান করতেন। (২) তিনি ব্যভিচারিণী নারীদের অবৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থ দ্বারা ক্রয়কৃত সুগন্ধি মাথায় লাগাতেন এবং তাদের হাত ও চুল দ্বারা নিজের শরীর স্পর্শ করাতেন। (৩) অনাত্মীয় যুবতী নারীদের থেকে সেবা নিতেন।

অথচ হযরত মসীহ ইবনে মরিয়ম (আ.)-এর মত একজন মহান নবীর প্রতি এসব অশ্লীল ও কদর্য অপবাদ আরোপ করার পর সে এ রায়ও দিয়েছে যে, এসব ঘটনার কারণেই আল্লাহ তাআলা তাকে পবিত্র কুরআনে ‘হাসূর’ (নারী বিরাগী) বিশেষণ দ্বারা বিশেষায়িত করেননি। এতে দৃঢ়ভাবে সাব্যস্ত হচ্ছে যে, উক্ত মানহানিকর কথাগুলো ‘ইলজামি জবাব’ হিসেবে ছিলনা, বরং তার নিজেস্ব বিশ্বাসের জায়গা থেকেই ছিল।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here