কাদিয়ানী নেতারা যে সব বুলির অন্তরালে সাধারণ কাদিয়ানীদের চোখের ও মনের উপর পর্দা ফেলে রাখে

0
কাদিয়ানী নেতারা যে সব বুলির অন্তরালে সাধারণ কাদিয়ানীদের   চোখের ও মনের উপর পর্দা ফেলে রাখে

সাধারণ কাদিয়ানীদের জন্য এই লিখাটি পড়া খুবই জুরুরী :

  • কাদিয়ানী নেতারা যে কয়টি কথা দিয়েই সাধারণ কাদিয়ানীদের ভুলিয়ে রাখে এবং নিজেরাও অহংকারে বাঁচেনা এখানে তারই কিছু কথা তুলে ধরে জবাব দেয়া হল। মূলত তারা এই কয়টি কথা দিয়েই তাদের চোখের ও মনের উপর পর্দা ফেলে রাখে। যেকেউ-ই উত্তরগুলো নিয়ে ভাবলে তার জন্য তাদের মিথ্যা আর ধোকা থেকে বাঁচতে সহজ হবে, ইনশা-আল্লাহ।

১. মোল্লা মৌলভীর পক্ষে সম্ভব না মির্যা কাদিয়ানীর কথার মর্ম বুঝা! মির্যা সাহেব এর আধ্যাত্মিক কথাবার্তার মর্ম বুঝতে হলে হৃদয় ও মন দুইটাই পবিত্র হতে হবে।

আমার বক্তব্য : নাউযুবিল্লাহিমিন যালিক। যারা এই ধরণের কথা বলেন তারা মির্যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সা:) থেকেও বড় বুঝাতে চাচ্ছেন! নতুবা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার মর্ম বুঝা সহজ হওয়া সত্ত্বেও মির্যা কাদিয়ানীর কথার মর্ম বুঝা কেন কঠিন হবে? সুতরাং শীঘ্র তাওবা করুন।

২. মির্যা সাহেব হাদীসের ভবিষ্যৎবাণী অনুসারে প্রতিশ্রুত “মসীহ মাওউদ” হিসেবে আগমন করেছেন। তাই অন্যরা ভুল করলেও মির্যা সাহেব ভুল করতে পারেন না। কেননা রাসূল (সা:) মসীহে মাওউদ সম্পর্কে “হাকামান আদালান” অর্থাৎ ন্যায়পরায়ণ প্রশাসক হবেন, বলে গেছেন। সুতরাং অন্যদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের উপর মির্যা সাহেবের ব্যাখ্যাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।

আমার বক্তব্য : প্রথমে তো প্রমাণ করা চাই যে, মির্যা সাহেবই হাদীসে বর্ণিত সেই প্রতিশ্রুত মসীহ মাওঊদ কিনা? কারণ, বুখারী শরীফের “কিতাবুল আম্বিয়া” পর্বে ৩২৬৪ নং হাদীসে এসেছে, والذي نفسى بيده ليوشكن ان ينزل ابن مريم فيكم حكما عدلا অর্থাৎ “কসম সেই সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ, অচিরেই মরিয়ম পুত্র (ঈসা) তোমাদের মাঝে একজন ন্যায়পরায়ণ প্রশাসক হিসেবে অবশ্যই নাযিল হবেন।” এখানে মোটা দাগে কয়েকটি পয়েন্ট লক্ষণীয়। (১) আগমনকারী ব্যক্তিটি মরিয়মপুত্র হযরত ঈসা (আ:)-ই হবেন, এইকথা কসম বা শপথ করে বলা (২) নাযিল হওয়া (৩) ইবনে মরিয়ম হওয়া এবং (৪) ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্রপ্রশাসক হওয়া। যেহেতু তিনি রাষ্ট্রীয় কর মওকুফ করবেন। বলাবাহুল্য, রাষ্ট্রীয় কর (টেক্স) মওকুফ করতে পারে শুধুমাত্র যিনি রাষ্ট্র প্রধান তিনিই। তাই প্রশ্ন আসবে, এসবের একটিও কি মির্যা গোলাম আহমদের সাথে মিল পাওয়া যায়? চিন্তা করে দেখুন তো! এখানে বলে রাখা দরকার, মির্যা কাদিয়ানী নিজেই কিন্তু লিখে গেছেন, কসম খেয়ে কোনো কথা বললে তা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ হয়না, বরং আক্ষরিক অর্থে-ই বহাল থাকে। (হামামাতুল বুশরা উর্দূ- পৃষ্ঠা ১৪; রূহানী খাযায়েন ৭/১৯২)। এমতাবস্থায় “ইবনে মরিয়ম” দ্বারা ইবনে চেরাগবিবি মির্যা কাদিয়ানী কিভাবে উদ্দেশ্য হয়?

৩. সত্যের বিরোধীতা আগেও ছিল এখনো হচ্ছে আগামীতেও হবে। সুতরাং অন্য ফেরকার মুসলমান কর্তৃক কাদিয়ানীদের বিরোধীতা হওয়াই স্বাভাবিক। আর এটি তাদের সত্য হওয়ারই দলিল!

আমার বক্তব্য : অন্ততপক্ষে সহীহ বুখারীর মানদণ্ডে-ও মির্যা কাদিয়ানীর মসীহ হবার দাবী যেখানে মিথ্যা সাব্যস্ত হল সেখানে তাকে (মির্যা) “মিথ্যুক” প্রমাণ করার আর কী বাকি? পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ১৫৯ নং আয়াতে ঈসা (আ:) এর মৃত্যুর পূর্বে তাঁর প্রতি আহলে কিতাবীদের প্রত্যেকে ঈমান আনা প্রসঙ্গে ক্ববলা মওতিহি অর্থাৎ ঈসা (আ:)-এর মৃত্যুর পূর্বে… শব্দ উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও ঈসা (আ:)-কে মির্যা কাদিয়ানী মৃত বলে চেঁচামেচি করার কে? বর্তমানে কি আহলে কিতাবিদের সবাই ঈমান এনে মুসলমান হয়ে গেছে বলতে চান? অন্যথা আমরা মহান আল্লাহকে ছেড়ে মির্যাকে কিরূপে সত্যবাদী মেনে নিতে পারি? উল্লেখ্য, অন্য আরেকটি মতে “মওতিহি” এর একবচনের সর্বনামপদ দ্বারা ‘আহলে কিতাবী’-কে বুঝানো উদ্দেশ্য। কিন্তু এটি সর্বসম্মত মতের বিরোধী ও বিচ্ছিন্ন একখানা মত মাত্র। সহীহ বুখারীর কিতাবুল আম্বিয়া অংশে হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে ثم يقول ابو هريرة واقرأو ان شئتم শীর্ষক হাদীস দ্বারাও পরিষ্কার বুঝা যায় যে, আয়াতটির ‘মওতিহি’ শব্দ দ্বারা ‘ঈসা (আ:)-এর মৃত্যুর পূর্বে’ বুঝানোই উদ্দেশ্য। সংক্ষেপে।

৪. হাদীসে এসেছে উম্মতে মুহাম্মদীয়া ৭৩ ফেরকা হবে। এদের ৭২ ফেরকা দোজখে যাবে আর ১টি মাত্র ফেরকা বেহেশতি। সুতরাং ৭২ ফেরকার লোকেরা এই ১টি ফেরকাকে অর্থাৎ “আহমদীয়ত”কে কুফুরী জামাত বলবে এটাই স্বাভাবিক।

আমার বক্তব্য : কিন্তু মির্যা কাদিয়ানী নিজেই ‘জামাতে আহমদীয়া’ নামের নতুন এই দলটিকে তার বইয়ের এক জায়গায় উম্মতে মুহাম্মদীয়া’র ৭৩ ফেরকার বহির্ভূত সম্পূর্ণ ভিন্ন আরেকটি গোষ্ঠী বলেই সুস্পষ্ট ইংগিত দিয়ে গেছেন। যেমন তিনি লিখেছেন : تمہارے ہاتھ میں کیا ہے؟ بجز ان حدیثوں کے جو تہتر فرقوں نے بوٹی بوٹی کرکے باہم تقسیم کر رکہی ہیں ۔ অর্থাৎ তোমাদের হাতে সেসব হাদীস ছাড়া আর কিবা আছে যেগুলো ৭৩ ফেরকার লোকেরা টুকরো টুকরো করে ভাগ ভাটোয়ারা করে রেখেছে! (রূহানী খাযায়েন খণ্ড নং ১৭ পৃষ্ঠা নং ৪৫৬)। তাছাড়া “পাক্ষিক আহমদী” নামের সাময়িকীতেও মির্যার সেই কথারই প্রতিধ্বনি হিসেবে লিখা হয়েছে যে “এই যে তেয়াত্তর দল এই তেয়াত্তর দলই আহমদীয়া জামাতকে কাফির বলিয়া গণ্য করে”। (রেফারেন্স পাক্ষিক আহমদী ৩১ ডিসেম্বর,২০১৮ ঈসাব্দ পৃষ্ঠা নং ৩৮; ০৪/০৯/১৪৪০ হিজরী)। আরো মজার ব্যাপার হল, খোদ মির্যা কাদিয়ানীর বইতেও লিখা আছে, উম্মতে মুহাম্মদীয়া তৃতীয় শতাব্দির পরে তেয়াত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইয়া গিয়েছে। (দেখুন, হাকীকাতুল ওহী [বাংলা] ৩৬)। তাহলে তারও প্রায় এক হাজার বছর পরে এসে কাদিয়ানী জামাত এই উম্মতের তেয়াত্তর ফেরকার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে কিভাবে? সুতরাং কাদিয়ানিরা ৭৩ দলের বাহিরে সম্পূর্ণ নতুন একটি গোষ্ঠী হওয়াই পরিষ্কার হয়ে গেল।

৫. দুনিয়ার ২১৩টি রাষ্ট্রে আহমদীয়া জামাত (কাদিয়ানীরা) বিজলির গতিতে পৌছে গেছে। এটাই প্রমাণ করে যে, এটি আল্লাহর জামাত। এটিকে ধ্বংস করা কারো সাধ্য নেই। আরেকটি কথা এই যে, মির্যা সাহেব মিথ্যা হলে তিনি দীর্ঘ জীবন লাভ করতে পারলেন কীভাবে?

আমার বক্তব্য : বিজলির গতিতে কোনো জামাত বা গোষ্ঠী সারা দুনিয়ায় পৌছে যাওয়াই সেটি “সত্য” হওয়ার যুক্তি সঠিক হলে তখন নিচের প্রশ্নটির কোনো-ই জবাব থাকবেনা! আপনি কি বাহাউল্লাহ সম্পর্কে জানেন? উইকিপিডিয়া (আরবী) আমাদের তথ্য দিচ্ছে, মির্যা হুসাইন আলী নূরী তথা বাহাউল্লাহ তিনি ১৮৬৩ সালে ‘মসীহ’ দাবী করার পর আরো ২৯ বছর বেঁচে ছিলেন! দ্য ব্রিটানিকা বুক অফ দ্য ইয়ার (১৯৯২-বর্তমান) বইটি ২০০২ সালে দেশের উপস্থিতির সংখ্যাকে ভিত্তি করে ধর্মের বর্ধনশীলতার একটি হার প্রকাশ করেছে। এই জরিপ অনুসারে বাহাই ধর্ম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বর্ধনশীল স্বাধীন ধর্ম। ব্রিটানিকা দাবি করেছে বিশ্বের ২২১টি দেশ ও স্থানে এই ধর্মের অস্তিত্ব আছে। সেই সাথে বিশ্বে প্রায় ২,১০০ জাতিগত, বর্ণভিত্তিক ও উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই ধর্মের অনুসারী রয়েছে। এছাড়াও বিশ্বের প্রায় ৮০০টি ভাষাভাষীর মানুষের মধ্যে এই ধর্মের অস্তিত্ব বিদ্যমান এবং সবমিলিয়ে বিশ্বব্যাপী এই ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ। ২০০৭ সালে এফপি ম্যাগাজিনের এক জরিপ অনুসারে বিশ্বে বাহাই ধর্মের অনুসারী বৃদ্ধির হার ১.৭%। Click

এবার বাহায়ী জামাতকে কী বলবেন? বাহাউল্লাহ কিংবা তার জামাতকে কি সত্য বলবেন? আর যদি বাহাউল্লাহ মিথ্যা হয় তাহলে আপনাদের দাবী আর যুক্তি অনুসারে সে অল্প কয়দিন পরেই ধ্বংস হয়ে গেল না কেন? কেন সে মসীহ দাবী করে আরও ২৯ বছর দীর্ঘ জীবন লাভ করল? আরেকটি কথা হল, অপরাধীর শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কুরআন (সূরা কাহফ/১৮:৫৮) আমাদের বলছে, আল্লাহ অপরাধীদের নিশ্চয়ই সাথে সাথে পাকড়াও করেন না বরং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের অবকাশ দিয়ে থাকেন অতপর নির্ধারিত সময়ে তাদের পাকড়াও করবেন! মজার ব্যাপার হল, মির্যার ছেলে মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ লিখেছেন, মির্যা সাহেবের উপর নবুওয়তের মাসয়ালা ১৯০০ বা ১৯০১ সালের পরেই খুলেছিল। তিনি আরো লিখেছেন, ১৯০১ সালের পূর্বে তিনি তার দাবীকৃত নবুওয়তকে ‘মুহাদ্দাসিয়ত’ শব্দে তাবীল করেছেন এবং আপনা দাবীকৃত নবুওয়তকে জুঝী নবুওয়ত বা অসম্পূর্ণ নবুওয়ত বলে আখ্যা দিতেন। মির্যাপুত্র রচনাবলীর সমষ্টি ‘আনওয়ারুল উলূম’ ২/৪৪৪-৪৫ দ্রষ্টব্য। এমতাবস্থায় মির্যা কাদিয়ানী নবুওয়তের দাবী করে মাত্র ৭ বা ৮ বছরই বেঁচেছিলেন বলা যেতে পারে! তো এটাই কি তার দীর্ঘ জীবন লাভ করা?

৬. অ-আহমদীরা যতই বিরোধিতা করবে ততই আহমদীয়ত সারা বিশ্বে বৃদ্ধি হতে থাকবে। এই বছর-ও প্রায় ছয় লক্ষ নতুন করে বাইয়েত নিয়েছে। তাই আহমদীয়ত সত্য! সারা দুনিয়াতে আহমদীরা (কাদিয়ানীরা) বর্তমানে ২৬ কোটির ঊর্ধ্বে। সুতরাং আমরাই সত্য!

আমার বক্তব্য : আহমদীয়ত যে মিথ্যা এবং সুস্পষ্ট মডারেট ধোকা তা উপরেই দলিল-প্রমাণের আলোকে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন বাকি থাকল, ছয় লক্ষ বাইয়েতের দাবী! আমি এর প্রতিউত্তরে তাদেরই একজন সাবেক কাদিয়ানী মুরুব্বী পাকিস্তানের লাহোরের জেহলম জেলার সাবেক কাদিয়ানী নায়েবে আমীর প্রফেসর মালিক মনোয়ার আহমেদ এর একটি বক্তব্য উল্লেখ করব। তিনি ২০০১ সালে ইসলাম কবুল করে সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন “২০০০ সালে আমাকে কেন্দ্র থেকে ৩০০ গয়রে আহমদীকে বাইয়েতের জন্য টার্গেট করতে বলা হল। আমি মাত্র তিনজনকে প্রস্তুত করতে পারলাম। কিন্তু ইউ.কে জলসায় ৪১৩০৮৯৭৫ (চার কোটি ১৩ লক্ষ) নতুন বিশ্ব বাইয়েতের খবর প্রকাশ করা হয় এবং আমাকে জানানো হয় ‘আপ কা টার্গেট পুরা হো গী’ (অর্থাৎ আপনার টার্গেট পূর্ণ হয়ে গেছে)। তারপরের বছর অর্থাৎ ২০০১ সালে আমাকে সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০০ জনকে বাইয়েতের টার্গেট করতে বলা হল। আমি একজনকেও রাজি করতে পারিনি। কিন্তু ওদিকে বিশ্ব বাইয়েত থেকে ৮১০০৬৭২১ (আট কোটি দশ লক্ষ) জনের নতুন বাইয়েতের ঘোষণা দিয়ে দেয়া হল (দৈনিক আল ফজল, ৩রা আগস্ট ২০০৫ ইং সংখ্যা দ্রষ্টব্য)। আমি আশ্চর্য হলাম। জেলা আমীরকে প্রশ্ন করলাম। আমাকে উত্তর দেয়া হল, তুম খামুশ রাহো (অর্থাৎ তুমি চুপ থাক)। জামাতের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবানা খবরদার! তিনি আমাকে যুক্তি দিলেন, যদিও তোমার এখান থেকে কেউ বাইয়েত হয়নি, কিন্তু দুনিয়ার অন্যান্য জায়গা থেকে তো হয়েছে! তখন আমি বললাম, আমি আমার আশেপাশেও খবর নিয়েছি। সব জায়গায় আমার মতই অবস্থা এবং সবাই আপনার মতই একই শান্তনামূলক কথা বলে আত্মপ্রসাদ নিচ্ছে!” প্রমাণ হিসেবে প্রফেসর মালিক মনোয়ার আহমদ এর মুখ থেকেই শুনে নিন Click তারপরই তিনি ২০০১ সালে কাদিয়ানীদের বিশ্ব বাইয়েতের এই ড্রামা’র মুখোশ উন্মোচন করে ইসলামে ফিরে আসেন। সুতরাং আপনাদের নিকট কুরআন হাদীস বাদ দিয়ে বিশ্ব বাইয়েতি ড্রামা খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা আমাদের নিকট কোনোই গুরুত্ব রাখেনা।

প্রফেসর মালিক মনোয়ার আহমেদ (সাবেক কাদিয়ানী সদর মুরুব্বী)

৭. সব নবীই বিরোধীতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাই মির্যা কাদিয়ানীও বিরোধীতার সম্মুখীন হবেন এমনটাই স্বাভাবিক। আর আল্লাহ তাকে ওহী(?) দ্বারা জানিয়ে দিয়েছেন যে, সারা দুনিয়ায় তিনি তার জামাতকে পৌঁছিয়ে দেবেন। আজ তাই হচ্ছে।

আমার বক্তব্য : কাদিয়ানীদের কথাতেই পরিষ্কার হয় যে, তারা মির্যাকে “নবী” হিসেবেই মান্য করে। নতুবা “সব নবীই বিরোধীতার সম্মুখীন হয়েছিলেন” এইধরণের উদাহরণ টানার মানে কী? যাইহোক, কোনো দাবীদার ব্যক্তি বিরোধীতার সম্মুখীন হওয়াই তার সত্য হওয়ার প্রমাণ নয়। বরং সত্যতার প্রমাণ হল, কুরআন হাদীস ও ইজমায়ে সাহাবা। কেননা ইতিহাস সাক্ষী, বহু মিথ্যাবাদী তাদের ভন্ডামীর কারণে জনরোষের স্বীকার হয়েছিল এমনকি হত্যা পর্যন্ত হয়েছিল। সাহাবাদের যুগে মুসাইলামা কাজ্জাব আর অষ্টাদশ শতাব্দীর ইরানী বংশোদ্ভূত আলী মুহাম্মদ বাবী তারই দৃষ্টান্ত বহন করে। ১৮৫১ সালে ইরান সরকার “বাবী জামাত” এর প্রতিষ্ঠাতা আলী মুহাম্মদ বাবকে ‘ইমাম মাহদী’ দাবীর পর ফায়ারিং স্কোয়াডে অমানুষিক কায়দায় হত্যা করেন। অনুরূপ বাহায়ী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ও মসীহ এবং রাসূল দাবীদার বাহাউল্লাহ ইরানীও প্রথমে ইরান থেকে ইরাক নির্বাসিত হন। তার কিছু দিন পর ইরানী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আমৃত্যু জেল খাটেন। তার মৃত্যুর পর তার সেই বাহায়ী জামাত আজ পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় ২২১ টি রাষ্ট্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এখানে কী বলবেন?

দুনিয়ার প্রায় ২২১টি রাষ্ট্রে বাহায়ীদের এমন সুন্দর ও দৃষ্টি নন্দন বহু উপাসনালয় রয়েছে

৮. মির্যার সত্যতা জানতে চাহিলে খোদার নিকট দোয়া করুন আর ইস্তিখারাহ করুন। দেখবেন চল্লিশ দিনের মধ্যেই ফল পেয়ে যাবেন।

আমার বক্তব্য : ইস্তিখারাহ সম্পর্কে ইসলামের একটি বিধান রয়েছে। তা হল, শরীয়তের পূর্ব মীমাংসিত কোনো বিষয়ে কনফিউশন হয়ে ইস্তিখারাহ করা নাজায়েজ ও হারাম। বুখারী শরীফের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাকারক, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) লিখেছেন, فإن الواجب و المستحب لا يستخار فى فعلهما و الحرام والمكروه لا يستخار فى تركهما . فتح البارئ كتاب الدعوات অর্থাৎ ওয়াজিব এবং মুস্তাহাব বিষয়ে তা পালন করা আর না করার ক্ষেত্রে ইস্তিখারাহ বিধিবদ্ধ নয়। কোনো হারাম বা মাকরূহ বিষয়ে তা বর্জন করা আর না করার ক্ষেত্রেও ইস্তিখারাহ বিধিবদ্ধ নয়। (সূত্র : ফাতহুল বারী শরহে বুখারী : কিতাবুদ দাওয়াত, বাব ৪৮; খন্ড ১৪ পৃষ্ঠা ৪১৮)। এতে বুঝা যায়, ইস্তিখারাহ হতে হবে দুনিয়াবী বিষয়ে। ইসলামের আলোকে যেই বিষয়টি পূর্ব থেকে মীমাংসিত ও ইজমায়ে উম্মত দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত সেই বিষয়ে কনফিউশন হওয়া ও নতুন করে সমাধান চাওয়ার নিয়তে ইস্তিখারাহ করা নাজায়েজ এবং হারাম। উদাহরণস্বরূপ, আপন ভাইয়ের সাথে বোনের বিয়ে হারাম, এটি পূর্ব মীমাংসিত বিষয়। তাই এই বিষয়ে কনফিউশন হওয়া এবং ইস্তিখারাহ করা নাজায়েজ। তদ্রুপ নবুওয়তের দরজায় সীল লেগে যাওয়া এবং ঈসা (আ:) জীবিত থাকা ও তাঁর দ্বিতীয়বারে আগমন করার বিষয়েও ইস্তিখারাহ করা হারাম। কেননা এগুলো ইসলামের পূর্ব মীমাংসিত বিষয়। তাই এসবে অস্বীকারকারী মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে ইস্তিখারাহ করার অর্থই হল নিজকে নিজে ইসলামের গন্ডি থেকে খারিজ করে দেয়া। ফলে বিতাড়িত শয়তানের পক্ষে সহজ হয়ে যায় স্বপ্নযোগে তার চোখে মির্যাকে সত্যবাদীরূপে দর্শন করানো। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, ইস্তিখারাহ এর শরয়ী বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বহু সরলমনা মুসলমান ধোকা খেয়ে কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার ঘটনাও কম ঘটেনি। তাই আপনাদের মির্যা কাদিয়ানীর বিষয়ে ইস্তিখারাহ করার উক্ত পরামর্শ সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাজ্য ও বাতিল।

৯. আমরা আহমদীরা (কাদিয়ানীরা) সারা দুনিয়াতে এক ও অভিন্ন জামাত। আমাদের খলিফা আছে। আমাদের বায়তুলমাল আছে। আর অপর দিকে অন্যরা নানা ফেরকায় বিভক্ত। সুতরাং আমরাই সঠিক তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আমার বক্তব্য : যারা ইসলাম সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই রাখেনা তাদের মহলে আপনাদের এই সমস্ত ইমোশনালি কথাবার্তা খুবই গুরুত্ব রাখবে তা ঠিক। আপনি বললেন যে, আপনাদের নাকি খলিফা রয়েছে! যদি তাই হয় তাহলে বলুন, ইসলামের দৃষ্টিতে “খলিফা” এর সংজ্ঞা কী? সুনির্দিষ্ট কোনো ভুখন্ড ছাড়া কেউ “খলিফা” দাবী করা পাগলের প্রলাপ নয় কি? আমরা জানি, ইসলামের সকল খলিফার যুগে নির্দিষ্ট ভুখন্ডের উপর তাদের প্রত্যেকেরই দখল ছিল। তাদের নির্দিষ্ট সামরিক ফোর্স ছিল। তার পরেই বায়তুলমাল ইত্যাদীর প্রশ্ন আসবে। তার চেয়ে বড় কথা, কাদিয়ানী জামাত তো ইসলামেরই কেউ না। এমতাবস্থায় খলিফার প্রসঙ্গটাও আরো বহু পরের সাবজেক্ট, তাই নয় কি? আরেকটি অপ্রিয় সত্য হল, ২০০৮ সালের ভেতরেই কাদিয়ানী জামাত কম বেশি প্রায় ১০টি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে, লাহোরী গ্রুপ, জামাতে আহমদীয়া ইছলাহ পছন্দ, জামাতে আহমদীয়া আল মুসলিমীন, গ্রীন আহমদীয়ত, জামাতে সহীহ ইসলাম এবং জামাতে আহমদীয়া হাকিকি অন্যতম। সংক্ষেপে। সুতরাং দয়া করে এই বিশ্বায়নের যুগে এসেও আর মিথ্যা বলবেন না!

১০. একমাত্র আহমদীরাই ঈসা (আ:)-কে মৃত প্রমাণের মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্মকে মৃত সাব্যস্ত করে থাকে। অপর দিকে অন্যান্য মুসলমান ঈসা (আ:)-কে জীবিত বিশ্বাস করে। ফলে তারা খ্রিষ্টানদের নবী ঈসা (যিশুখ্রিস্ট)কে জীবিত রেখে ঈসায়ী ধর্মকেও জীবিত রাখতে চাচ্ছে। সুতরাং আমরাই সঠিক ইসলামের অনুসারী।

আমার বক্তব্য : মির্যা কাদিয়ানী তার ‘নূরুল হক’ বইয়ের ১ম খন্ডের ৫০ নং পৃষ্ঠায় মূসা (আ:) সম্পর্কে লিখেছেন و فرض علينا أن نؤمن بأنه حيي فى السماء و لم يمت و ليس من الميتين অর্থাৎ আমাদের উপর একথা বিশ্বাস রাখা ফরজ যে, নিশ্চয়ই তিনি (মূসা) আকাশে জীবিত, তিনি মৃত্যুবরণ করেননি এবং মৃতদের অন্তর্ভুক্তও নন। (রূহানী খাযায়েন ৮/৬৮-৬৯ দ্রষ্টব্য)। সম্পূর্ণ পৃষ্ঠাটি পড়ে দেখুন। উপরে মূসা (আ:) এর দীর্ঘ আলোচনা শেষে পরের পৃষ্ঠায় তাঁর (আ:) সম্পর্কে মির্যা সাহেব এইধরণের কথা লিখে গেছেন। আসুন! এবার আপনার যুক্তিতে ফিরে আসি। খ্রিষ্টানদের নবী ঈসা (যিশুখ্রিস্ট)কে জীবিত রাখার অর্থ যদি ঈসায়ী ধর্মকে জীবিত রাখা হয় তাহলে মূসা (আ:)-কে জীবিত রাখার বিশ্বাসের কী অর্থ দাঁড়াল? শুনুন! ধোকা আর প্রতারণা করারও একটা লিমিট আছে!!

১১. ইসলামের প্রাথমিককালেও অনেকে মুরতাদ হয়ে যায়। জনৈক কাতেবে ওহীও মুরতাদ হয়ে গিয়েছিল। কাজেই আরব আহমদী খলিফা খ্যাত ডক্টর হানী তাহের, ইংল্যান্ড আহমদী খলীফার মসজিদুল ফতূহ এর নায়েবে ইমাম ইকরামা নজমি, মিশরের আহমদী মু’আল্লিম ইনসার্জ ও লাহোরের জেহলম জেলার নায়েবে সদর আমীর প্রফেসর মালিক মনোয়ার আহমদ প্রমুখ তারাও কাদিয়ানীয়ত ত্যাগ করে মুরতাদ হয়েছেন বলে বিরোধীদের এত খুশি হওয়ার কারণ নেই। মরা পাতা ঝরে গেলেই ভাল!

আমার বক্তব্য: শরীয়তের পরিভাষায় সাধারণ অর্থে মুরতাদ বলতে বুঝানো হয় ধর্ম-ত্যাগী ব্যক্তিকে। এখন কেউ কাদিয়ানীয়ত ত্যাগ করার কারণে কাদিয়ানীদের দৃষ্টিতে মুরতাদ হওয়ার অর্থ ‘কাদিয়ানীয়ত’ যে আলাদা একটি ধর্ম তা কি প্রমাণ করা নয়? অবশ্যই। এমতাবস্থায় অ-কাদিয়ানীদের (মুসলমানদের) পক্ষ হতে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘অমুসলিম সংখ্যালুঘু’ ঘোষণার দাবী ১০০% যুক্তিক বলেই সাব্যস্ত হল কিনা? সেযাইহোক, কাতেবে ওহী সাহাবীটির নাম হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সা’আদ ইবনে আবু সারাহ (রা:) তিনি (আয়াত): “ফা তাবারাকাল্লাহু আহসানুল খালিকীন” -কে কেন্দ্র করে মনে মনে সন্দিহান হয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি কিছুদিনের জন্য ইসলাম ত্যাগ করে মক্কায় চলে যান। অতপর মক্কা বিজয়ের আগ মুহূর্তে নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্বেচ্ছায় তাওবা করেন এবং রাসূল (সা.)-এর হাতে ইসলামের উপর বয়াত গ্রহণ করেন। ইমাম আবু জা’ফর মুহাম্মদ বিন জারির আল তাবারী (৮৩৮-৯২৩) তার “জামিউল বায়ান ফী তাফসীরিল কুরআন” বইয়ে বর্ণনা করেন : “ইসলামের নবী মক্কা বিজয়ের কিছু আগেই আব্দুল্লাহ ইবনে সা’আদ ইবনে আবু সারাহ (রা:) ইসলাম পুনরায় গ্রহণ করেন।” এ থেকে প্রমাণিত হয় আবদুল্লাহ ইবনে সা’আদ সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় ইসলাম পুনরায় গ্রহণ করেন। কারণ ঠিক মক্কা বিজয়ের সময়কালে তাকে প্রভাবিত করার কোনো মুসলিম সামরিক শক্তি তার আশেপাশে ছিল না। তারপর তিনি আমৃত্যু ইসলামের সেবায় নিয়োজিত থাকেন এবং হযরত উসমান (রা:) এর খেলাফতের আমলে মিশরের মত রাষ্ট্রের গভর্নরও হন। তিনি সামুদ্রিক বড় বড় জিহাদগুলোর চিপ কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। একথাগুলো বলার উদ্দেশ্য হল, উক্ত কাতেবে ওহী ব্যক্তিটি সাময়িকভাবে ইসলাম ত্যাগ করেছিলেন ঠিকই কিন্তু এজন্য তিনি না কুরআনকে ভুল আখ্যা দিয়েছেন আর না মুহাম্মদ (সা:)-কে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়েছেন; বরং নিজেই নিজেকে দুষেছেন এবং নিজ ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করেছেন। পক্ষান্তরে ডক্টর হানী তাদের সহ যারাই কাদিয়ানীয়ত ত্যাগ করেছেন সবাই মির্যাকে মিথ্যুক আর ভন্ড আখ্যা দিয়েছে। তাহলে কিসের সাথে কিসের উপমা দিতে এলেন!

১২. কাদিয়ানীয়ত ছেড়ে কোন ইসলামে ফিরে যেতে চান? শীয়া, হানাফী মালেকী শাফেয়ী হাম্বলী আহলে হাদীস, দেওবন্দী, বেরলবী, জামাত শিবির, চরমোনাই, রাজারবাগী মাইজভাণ্ডারী ইত্যাদি কোন ফেরকার ইসলামে ফিরে গেলে সঠিক ইসলামে ফিরে যাওয়া হবে?

আমার বক্তব্য : প্রথমকথা হল, মনে করুন কাদিয়ানীয়ত ছেড়ে কেউ এদের যে কোনো একটিতে চলে গেল! অন্ততপক্ষে তাতেও তার ঈমানটা বাঁঁচবে। কেননা সে মুহাম্মদ (সা:)- এর পরে দ্বিতীয় আর কাউকে নবী মেনে নেয়া থেকে রক্ষা পেল। ফলে তার আমলের দুর্বলতার কারণে সাময়িক শাস্তি ভোগ করলেও একটি সময় ঈমানের কারণে সে নাজাত পাবে, ইনশাল্লাহ । দ্বিতীয় কথা হল, প্রশ্নে বর্ণিত নামগুলোর মধ্যে শীয়া হল ইসলামের একটি পুরনো ফেরকা। তাদের বিচারে তারাও সঠিক। বিপরীতে অন্যগুলোর মধ্যে হানাফী শাফেয়ী মালেকী আর হাম্বলী এগুলো ফেরকাই নয়, বরং ফিকহি মাসয়ালায় চারজন বিশিষ্ট ফকিহ ও মুজতাহিদ ইমামের চারটি ফিকহ বা গবেষণালব্ধ বুঝের ভিন্নতা মাত্র। যা আহলে সুন্নাহরই অভ্যন্তরীণ একটি ফিকহি মতভিন্নতা। তারপর আহলে হাদীস, চরমোনাই, জামাতে ইসলামি সহ এগুলোর কোনো কোনোটি রাজনৈতিক দল আবার কোনোটি পীর মুরশিদি তরিকা, কোনো কোনোটি মানহাজ তথা পার্সোনালিটি মাত্র। মনে রাখতে হবে যে, ফেরকা, মানহাজ, পলিটিকাল পার্টি ও মাযহাব এগুলো প্রত্যেকটি আলাদা জিনিস। কাদিয়ানীদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্ন হল, কাদিয়ানীয়ত ইসলামী ফেরকা বা মানহাজ হলে তখন কেউ সেটিকে ত্যাগ করার দরুন ‘মুরতাদ’ হবে কেন? বলাবাহুল্য, কাদিয়ানীয়তের দৃষ্টিতে মির্যা কাদিয়ানীই তাদের সর্বশেষ নবী (রূহানী খাযায়েন খন্ড ২০ পৃষ্ঠা ৭০ দ্রষ্টব্য) !

রূহানী খাযায়েন ২০/৭০

তাই অপ্রিয় হলেও সত্য, সাধারণ কাদিয়ানীদের বুঝে আসুক বা না আসুক, সত্য এটাই যে, কাদিয়ানীয়ত নতুন একটি ধর্ম। ফলে এটি ইসলামের কোনো ফেরকারই অন্তর্ভুক্ত নয়। আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন! আমীন। সংক্ষেপে…

(বি: দ্র: কথাগুলো তাদের আর জবাব গুলো আমার)।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here