কবরের আযাব সম্পর্কে সহীহ হাদীস

0
কবরের আযাব সম্পর্কে সহীহ হাদীস
  • কবরে ফেরেশতার সুওয়াল জওয়াব এবং আযাব সম্পর্কে :

কবরে ফেরেশতার সুওয়াল জওয়াব এবং আযাব সম্পর্কে সহীহ বুখারী’র কিতাবুল জানায়েজ অংশে বিস্তারিত বহু হাদীস উল্লেখ রয়েছে। এখানে লম্বালম্বি কোনো আলোচনায় যাব না। শুধুমাত্র ‘কবরের আযাব’ সম্পর্কিত একটি সহীহ হাদীস অনুবাদ সহ উল্লেখ করব! কাদিয়ানীদের অন্যতম একটি ধর্মবিশ্বাস হল, কবরে কোনো সুওয়াল জওয়াব কিংবা আযাব এসবের কিছুই হবেনা। অথচ ইমাম বুখারীর দাদা ওস্তাদ (শায়খ) সংকলিত হাদীসের প্রাচীনতম গ্রন্থ ‘মুসান্নাফে আব্দ রায্যাক‘ কিতাবুল জানায়েজ, বাবু ফিতনাতিল কবরি, হাদীস নং ৬৭৩৭ -তেও সুুুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে : ফিরিশতা জিজ্ঞেস করবেন “তোমার নবী কে?”। এমনকি সহীহ বুখারীর মধ্যেও উল্লেখ আছে। এই দেখুন,

কবরের আযাব সম্পর্কে সহীহ হাদীস :

  • গ্রন্থ : সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন /ইফা:)
  • অধ্যায়ঃ ২০/ জানাযা (كتاب الجنائز)
  • হাদিস নম্বরঃ ১২৯১

৮৬৯. কবর আযাব প্রসংগে।

باب مَا جَاءَ فِي عَذَابِ الْقَبْرِ حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ، وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ فَيَقُولاَنِ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم‏.‏ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ فَيَقُولُ أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ‏.‏ فَيُقَالُ لَهُ انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ، قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الْجَنَّةِ، فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا ‏”‏‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ وَذُكِرَ لَنَا أَنَّهُ يُفْسَحُ فِي قَبْرِهِ‏.‏ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَنَسٍ قَالَ ‏”‏ وَأَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ لاَ أَدْرِي، كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ‏.‏ فَيُقَالُ لاَ دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ‏.‏ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً، فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ، غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ ‏”‏‏.‏

অনুবাদ : আইয়াশ ইবনু ওয়ালিদ (রহ:) … আনাস ইবনু মালিক (রা:) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (মৃত) বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তার সাথী এতটুকু মাত্র দূরে যায় যে সে (মৃত ব্যাক্তি) তখনও তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। এ সময় দু’জন ফিরিশতা তার কাছে এসে তাকে বসান এবং তাঁরা জিজ্ঞেস করেন : مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم‏.‏ অর্থাৎ এ ব্যক্তি তথা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তুমি কি বলতে? তখন মু’মিন ব্যক্তি বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থান স্থলটির দিকে নজর কর! আল্লাহ তোমাকে তার বদলে জান্নাতের একটি অবস্থান স্থল দান করেছেন। তখন সে দু’টি স্থলের দিকেই দৃষ্টি করে ফেলবে।

বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদা (রহ:) বলেন, আমাদের কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সে ব্যক্তির জন্য তাঁর কবর প্রশস্ত করে দেওয়া হবে। এরপর তিনি (কাতাদা) পুনরায় আনাস (রা:) এর হাদীসের বর্ণনায় ফিরে আসেন। তিনি [আনাস (রা:)] বলেন, আর মুনাফিক বা কাফির ব্যক্তিকেও প্রশ্ন করা হবে, তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কি বলতে? সে উত্তরে বলবে, আমি জানিনা। লোকেরা যা বলত আমি তা-ই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি না নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। আর তাকে লোহার মুগুর দ্বারা এমনভাবে আঘাত করা হবে, যার ফলে সে এমন বিকট আওয়াজে চিৎকার করে উঠবে যে, দু’ জাতি (মানব ও জ্বীন) ব্যতিত তার আশপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here