মুসলমান – এর সংজ্ঞা প্রসঙ্গে
কাদিয়ানিদের একটি কুতর্ক হল, বলুন! মুসলমানের সংজ্ঞা কী? কাদিয়ানীদের মধ্যে যারা বিশেষকরে আওয়ামীলীগ, বিএনপি কিংবা জাসদ বাসদ ইত্যাদির রাজনীতির সাথে যুক্ত আজকের এই লিখাটি তাদের জন্য। তাদের বিবেকের কাছে জিজ্ঞাসা, তাদের তথাকথিত মসীহ মির্যা কাদিয়ানী এবং মুসলেহ মওউদ মির্যা বশির উদ্দিন এই দুই ব্যক্তির ফতুয়ামতে তারা তাদের পছন্দের রাজনৈতিক অ-কাদিয়ানী নেতৃবৃন্দকেও “কাফের” বিশ্বাস করেন কিনা?
মূল আলোচনা
কাদিয়ানীদের কথিত দ্বিতীয় খলীফা মির্যাপুত্র মির্যা বশির উদ্দীন এর রচিত “আয়নায়ে সাদাকাত” এর মধ্যে সুস্পষ্টভাবে লিখা আছে, کل مسلمان جو حضرت مسیح موعود کی بیعت میں شامل نہیں ہوئے خواہ انہوں نے حضرت مسیح موعود کا نام بہی نہیں سنا وہ کافر اور دائرہ اسلام سے خارج ہیں (উচ্চারণ) কুল মুসলমান জু হযরত মসীহ মওউদ কি বাইয়েত মে শামেল নিহি হোয়ে খাহ উন হোঁ নে হযরত মসীহ মওউদ কা নাম বিহি নিহি চুনা উয়োহ কাফের আওর দায়েরায়ে ইসলাম চে খারেজ হেঁ। (বাংলা অনুবাদ) যে সমস্ত মুসলমান মসীহ মওউদের (মির্যা কাদিয়ানী) বাইয়েতের মধ্যে শামিল হয়নি, তারা যদিও বা হযরত মসীহ মওউদের নাম পর্যন্ত শুনেনি এমন ব্যক্তিও কাফের এবং ইসলামের গন্ডি থেকে বহিষ্কৃত। (আরো দেখুন, মির্যা বশির উদ্দিন এর রচনাবলীর সমষ্টি ২৬ খন্ডে প্রকাশিত ‘আনওয়ারুল উলূম’ এর ৬ নং খন্ডের ১১০ নং পৃষ্ঠা, অনলাইন এডিশন [উর্দু])।
স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য
কাদিয়ানীদের বইতে যেভাবে “মুসলমান” এর সংজ্ঞা এলো!
উপরে তারা “কাফের” এর সংজ্ঞা দিলেন। এবার এর বিপরীতে “মুসলমান” এর সংজ্ঞা কী দাঁড়ায় দেখুন, যারা মির্যা কাদিয়ানীর বাইয়েতের মধ্যে শামিল হবে তথা কাদিয়ানী মতবাদে দীক্ষিত হবে শুধুমাত্র তারাই মুসলমান এবং তারাই ইসলামের গন্ডির মধ্যে থাকবে। এককথায়, যারা কাদিয়ানী নয় তারা মুসলমান নয়।
মুসলমান এর সংজ্ঞা কী? এইরকম প্রশ্ন তুলার কারণ!
এইরকম প্রশ্ন তুলা তাদের মূলত একটি অপকৌশল! এতে শ্রোতার দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়াও উদ্দেশ্য থাকে এমনকি আলোচনার টপিক পরিবর্তন করার অসৎ উদ্দেশ্যও বলা যেতে পারে। তাই তাদের বই থেকেই তথাকথিত “কাফের” এবং পরোক্ষভাবে “মুসলমান” এর সংজ্ঞা আজ এখানে পোস্ট করতে বাধ্য হলাম। এখানে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হল, কাদিয়ানীদের উক্ত “কাফের” এর সংজ্ঞা মতে মির্যা কাদিয়ানীকে নবী রাসূল স্বীকার না করায় আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ আমরা সবাই তাহলে কী হতে যাচ্ছি? ভাবিয়ে তুলে কিনা?
(মির্যা কাদিয়ানীর নবী রাসূল দাবী করার প্রমাণ তারই বইয়ের স্ক্রিনশট থেকে দেখতে ক্লিক করুন >> Click)
অতএব, কে মুসলমান আর কে কাফের – এর পুরোটাই যখন নির্ভর করছে মির্যা কাদিয়ানিকে গ্রহণ করার উপর তখন আমাদের প্রাণপ্রিয় এই বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীসহ কোটি কোটি মানুষ কেউ-ই কি আর মুসলমান থাকল? যদিও বা আমরা আল্লাহ ও তাঁর খাতামুন নাবিয়্যীন মুহাম্মদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বান্তকরণে মেনে চলি না কেন! যদিও বা মুসলমানের ন্যায় সালাত আদায় করি না কেন! যদিও বা কা’বা শরীফকে কেবলা মানি না কেন? যদিও বা মুসলমানের জবেহ কৃত হালাল জন্তুর গোশত আমরা ভক্ষণ করি না কেন? হায় হায়! এখন এর কী হবে!
ধন্যবাদ সবাইকে।
(লিখাটির কোনো রেফারেন্স বা উদ্ধৃতি মিথ্যা প্রমাণ করতে পারলে নগত ১ লক্ষ টাকা পুরুষ্কার দেয়া হবে)।
লিখক প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী। শিক্ষাবিদ ও গবেষক