লোহা, লেবাস, গবাদিপশু ইত্যাদি এগুলোও কি আকাশ থেকে নাযিল হয়েছে?

0
লোহা, লেবাস, গবাদিপশু ইত্যাদি এগুলোও কি আকাশ থেকে নাযিল হয়েছে?

আল-কুরআনে লোহা, পোশাক, গবাদিপশু ইত্যাদি নাযিল হওয়ার আয়াত ও কাদিয়ানীদের ভ্রান্তি নিরসন :

আলোচনা শুরুর আগে কাদিয়ানীদের প্রশ্ন-সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলো দেখে নিন :

১. সূরা হাদীদ আয়াত >> ২৭। আল্লাহতালা বলেন, ওয়া আনযালনা আলাইকুমুল হাদীদা অর্থাৎ আমি তোমাদের জন্য লোহা নাযিল করেছি।

২. সূরা আ’রাফ আয়াত >> ২৬। আল্লাহতালা এখানে ‘ক্বদ আনযালনা’র পরে বলেছেন, ‘আলাইকুম লিবাসা’ অর্থাৎ আমরা তোমাদের জন্য লেবাস (পোশাক) অবতীর্ণ করেছি।

৩. সূরা যুমার আয়াত >> ৬। আল্লাহতালা এ আয়াতে ‘আনযালা’র পরে বলেছেন, ‘লাকুম মিনাল আন’আমি ছামানিয়াতা আঝওয়াজ’। অর্থাৎ তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য আট জোড়া গবাদিপশু নাযিল করেছেন’।

৪. সূরা ত্বালাক আয়াত >> ৯। আল্লাহতালা এই আয়াতের ‘ক্বদ আনযালাল্লাহু’ এর পরেই বলেছেন, ইলাইকুম যিকরা। অর্থাৎ আল্লাহ তোমাদের প্রতি কুরআন নাযিল করেছেন। তার পরের আয়াতে আছে ‘রাসূলা’ অর্থাৎ রাসূল নাযিল করেছেন (কাদিয়ানীদের অনুবাদ অনুসারে)।

  • বলে রাখতে চাই যে, ইমাম সুয়ূতী (রহ:) সহ সকল যুগ ইমাম সূরা ত্বালাক এর ৯ নং আয়াতের ‘ক্বদ আনযালাল্লাহু’ এর পরের আয়াতে ‘রাসূলান’ এর তাফসীরে লিখেছেন এখানে رسولًا এর পূর্বে أَرسَلْنَا ক্রিয়াপদ ঊহ্য মেনে নিতে হবে। ফলে অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহতালা অবতীর্ণ করেছেন উপদেশ (কুরআন) এবং প্রেরণ করেছেন এক রসূল। অতএব, এই আয়াত দ্বারা “রাসূল (সা:)ও আকাশ থেকে নাযিল হলেন কিনা” কাদিয়ানীদের এই প্রশ্ন চরম মূর্খতাপূর্ণ বৈ নয়।

একটি প্রশ্নের জবাব :

  • কাদিয়ানীদের প্রশ্নটি এরকম, “নাযিল” শব্দ থাকলেই কোনো জিনিস ‘আকাশ’ থেকে অবতীর্ণ হওয়াকে আবশ্যক করেনা। যদি ‘নাযিল’ হওয়া মানে ‘আকাশ’ থেকেই অবতীর্ণ হওয়াকে আবশ্যক করত তখন প্রশ্ন আসবে যে, তবে কি আয়াতের আট জোড়া গবাদিপশুও আকাশ থেকে নাযিল হয়েছিল? লেবাস বা পোশাক পরিচ্ছেদও কি আকাশ থেকে ছিল? রাসূল অবতীর্ণ হওয়াটাও কি আকাশ থেকে বুঝাল? যেহেতু এখানে নাযিল হওয়ার অর্থ আকাশ থেকে নাযিল হওয়াকে বুঝায়নি সেহেতু ঈসা (আ:) সম্পর্কেও যেই ‘নাযিল’ অর্থাৎ অবতীর্ণ হওয়ার কথা এসেছে তার-ও একই অর্থ উদ্দেশ্য হবে। অর্থাৎ ঈসা (আ:) নাযিল হওয়ার মানে ‘আকাশ থেকে’ অবতীর্ণ হওয়া উদ্দেশ্য নয়। (কাদিয়ানিদের বক্তব্য শেষ হল)।

আমার জবাব : জ্বী হ্যাঁ, আমরাও আপনাদের উক্ত যুক্তির সাথে একমত হতে পারতাম যদি হযরত ঈসা (আ:) সম্পর্কে “নাযিল” শব্দের পাশাপাশি একাধিক সহীহ হাদীসে মিনাস সামায়ি (من السماء) বা ‘আকাশ থেকে নাযিল হবে’ শব্দ-ও উল্লেখ না থাকত এবং হাদীসের মধ্যে হযরত ঈসা (আ:)-এর আগমনী ভবিষ্যৎবাণীতে ‘রুজূ’ (رجوع) তথা ঈসা (আ:) দ্বিতীয়বার ফিরে আসবেন, এজাতীয় শব্দ-ও না হত। অধিকন্তু হযরত ঈসা (আ:)-এর আগমনী ভবিষ্যৎবাণীতে রাসূল (সা:) শপথ বাক্যসহ সংবাদ দেয়ার প্রমাণও রয়েছে। ফলে দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হল যে, আগত ঈসা (আ:) রূপক কোনো ঈসা নন এবং এতদ-সংক্রান্ত হাদীসগুলোর ‘নুযূল’ শব্দটিও প্রকৃত অর্থের বাহিরে রূপক অর্থে উদ্দেশ্য নয়!

এবার জবাবের খোলাসা :

বিজ্ঞ পাঠকবৃন্দ! এই পর্যায় ‘মিনাস সামায়ি’ (من السماء অর্থাৎ আকাশ থেকে) শীর্ষক অনেকগুলো হাদীসের মধ্য হতে শুধুমাত্র একটি সহীহ হাদীস পেশ করছি, বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন: كيف انتم إذا نزل ابن مريم من السماء فيكم و امامكم منكم অর্থাৎ তখন তোমাদের কেমন (আনন্দের) হবে যখন ইবনে মরিয়ম (ঈসা) মিনাস সামায়ি তথা আকাশ থেকে তোমাদের মাঝে নাযিল হবেন আর তখন তোমাদের ইমাম (মাহদী) তোমাদের মধ্য হতে হবেন। [দেখুন, সুনানে বায়হাক্বীর সংকলক কর্তৃক সংকলিত ‘আল আসমা ওয়াস সিফাত’ ২/৩৩১; হাদীস নং ৮৯৫, বাবু ক্বওলিল্লাহি আজ্জা ওয়া জাল্লা লি-ঈসা ইন্নী মুতাওয়াফ্ফীকা ওয়া রাফিউকা ইলাইয়্যা; হাদীসের মান : সহীহ]।

স্ক্রিনশট :

ইমাম বায়হাক্বীর ‘আল-আসমা ওয়াস সিফাত’ ২/৩৩১

তাওয়াতূর পর্যায়ের অসংখ্য হাদীস দ্বারা ঈসা (আ:) এর নাযিল হওয়া মানে আকাশ থেকে-ই নাযিল হওয়া উদ্দেশ্য। ক্লিক করুন >> 235

এখন প্রশ্ন হল, ঈসা (আ:)-এর আগমনী ভবিষ্যৎবাণীতে তাঁর (আ:) আগমন সম্পর্কে হাদীসে ‘রুজূ’ (رجوع) শব্দ থাকলে তাতে কিজন্য ঈসা (আ:) প্রকৃতপক্ষেই আকাশ থেকে ফিরে আসা সঠিক সাব্যস্ত হবে? মির্যা কাদিয়ানী সাহেব থেকে কি এধরণের কোনো কথার প্রমাণ আছে?

এর উত্তর হল, জ্বী হ্যাঁ। আপনি ‘রূহানী খাযায়েন’ এর ২৩ নং খন্ডের ২২৯ নং পৃষ্ঠাটি খুলে দেখুন, মির্যা সাহেব লিখেছেন, ঈসা (আ:) এর আগমন সম্পর্কে হাদীসে ‘রুজূ’ (رجوع) শব্দ থাকলে তখনি তাঁর (আ:) ফিরে আসার ঘটনা প্রকৃতপক্ষে “আকাশ থেকেই” ঘটবে বলে সাব্যস্ত হবে। যেজন্য মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কর্তৃক স্বীকৃত বিগত তেরশত শতাব্দির সমস্ত মুজাদ্দিদ ও যুগ ইমাম সবাই ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন যে, আগত ঈসা ইবনে মরিয়ম মানে বনী ইসরাইলী ঈসা ভিন্ন কেউ নন এবং তিনি এখনো আকাশে জীবিত আছেন।

স্ক্রিনশট :

রূহানী খাযায়েন ২৩/২২৯

তাহলে ঈসা (আ:)-এর দুনিয়ায় ফিরে আসা শীর্ষক ‘রুজূ’ (رجوع) শব্দ সম্বলিত হাদীসটি কী?

জ্বী জনাব! হাদীসটি এই যে, (ক) রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, و ان الله رفعه بجسده و أنه حى الآن و سيرجع إلى الدنيا فيها ملكا ثم يموت অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহতালা তাঁকে (ঈসা) সশরীরে উঠিয়ে নেন এবং তিনি এখনো জীবিত। অতিসত্বর তিনি পৃথিবীতে রুজূ করবেন তথা ফিরে আসবেন। তখন তিনি পৃথিবীতে একজন বাদশাহ হবেন। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করবেন।” (দেখুন হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ হতে বর্ণিত, ইবনে সা’আদ [মৃত: ২৩০হিজরী] সংকলিত ‘আত-তবকাতুল কাবীর‘ : খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৩৫-৩৬; প্রকাশনায়, মাকতাবাতুল খানজী, কায়রো মিশর)।

() রাসূল (সা:) জনৈক ইহুদীকে লক্ষ্য করে বলেছেন, ان عيسى لم يمت و أنه راجع إليكم قبل يوم القيامة অর্থাৎ নিশ্চয়ই ঈসা (আ:) মৃত্যুবরণ করেননি। তিনি নিশ্চয়ই কেয়ামতের আগে তোমাদের নিকট ফিরে আসবেন। (তাফসীরে তাবারী ৫/৪৪৮)।

স্ক্রিনশট : (ক)

স্ক্রিনশট : (খ)

তারপর জানার বিষয় হল, হাদীসে শপথ বাক্যসহ কোনো সংবাদ বর্ণিত থাকার দরুন সংবাদটি প্রকৃত অর্থের বাহিরে রূপক অর্থে উদ্দেশ্য হবে না, এমন কোনো কথাও কি মির্যা কাদিয়ানীর রচনায় উল্লেখ আছে?

এর জবাব হল, আপনি মির্যা কাদিয়ানীর রচনাবলীর সমষ্টি ‘রূহানী খাযায়েন’ এর ৭ নং খন্ডের ১৯২ নং পৃষ্ঠাটি খুলে দেখুন। মির্যা সাহেব স্পষ্টতই লিখে গেছেন, ‘শপথ করে কোনো কথা বলা একথারই প্রমাণ বহন করে যে, নিশ্চয়ই খবর তথা হাদীসটি আক্ষরিক অর্থেই ধর্তব্য হবে। সেখানে রূপক অর্থ করা চলবেনা। নতুবা শপথ করে লাভ কী হল?’ (আরো দেখুন, হামামাতুল বুশরা, বাংলা অনূদিত পৃষ্ঠা নং ২৭)।

স্ক্রিনশট :

হামামাতুল বুশরা, বাংলা অনূদিত পৃষ্ঠা নং ২৭

আর আমরা জানি, সহীহ বুখারীর কিতাবুল আম্বিয়ার ৩২৬৪ নং হাদীসে হযরত ঈসা (আ:) এর নাযিল সম্পর্কিত বর্ণনা শুরুতে রাসূল (সা:)-এর দ্ব্যর্থহীনভাবে শপথবাক্য ‘ওয়াল্লাযী নাফসি বিয়াদিহি (والذي نفسى بيده) …’ উল্লেখ রয়েছে। এতে একদম পরিস্কার হয়ে গেল যে, ঈসা (আঃ) এর নাযিল হওয়া মানে প্রকৃতপক্ষেই আকাশ থেকে তাঁর অবতীর্ণ হওয়া-ই উদ্দেশ্য! নতুবা ‘শপথ’ ব্যক্ত করে লাভ কী হল? প্রায় দেড়’শ সহীহ হাদীস রয়েছে যদ্দ্বারা ঈসা (আ:) এর পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত। উপরের লিংক থেকে দেখে নিন। সুতরাং ঈসা (আ:) এর “নাযিল” শব্দের সাথে অন্যান্য গুলোর “নাযিল” শব্দকে বিশেষ কোনো ক্বারীনা ছাড়া এক ও অভিন্ন মনে করার কোনো কারণ নেই। সংক্ষেপে।

সহীহ বুখারী কিতাবুল আম্বিয়া, অনলাইন ভার্সন

এবার জানার বিষয় হল, হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ:) ভিন্ন অন্যান্য ক্ষেত্রে ‘নাযিল’ শব্দের প্রকৃত অর্থ পরিত্যাজ্য হয়ে কাছাকাছি ভিন্ন অর্থ নেয়ার কারণ কী?

এর জবাব হল, বরেণ্য তাফসীরবিদগণের তাফসীরে ঈসা (আ:) ভিন্ন অন্যান্য ক্ষেত্রে ‘নাযিল’ শব্দের প্রকৃত অর্থ ত্যাগ করে তার কাছাকাছি ভিন্ন অর্থ নেয়ার প্রধান কারণ হল, সেসব আয়াতে উল্লিখিত ‘নাযিল’ শব্দের প্রকৃত অর্থ ইসলামের আদিম ও তিন স্বর্ণযুগ থেকেই পরিত্যাজ্য এবং তার কাছাকাছি ভিন্ন অর্থ গ্রাহ্য। যেহেতু সেসব আয়াতের ‘নাযিল’ শব্দের বিশ্লেষণে রাসূল (সা:) কিংবা কোনো একজন সাহাবী বা তাবেয়ীর তাফসীরেও ‘মিনাস সামায়ি’ তথা আকাশ থেকে শব্দ উল্লেখ পাওয়া যায়না। অথচ এর বিপরীতে হযরত ঈসা (আঃ)-এর “নাযিল” শব্দের প্রকৃত অর্থ নেয়ার পক্ষে বহু ক্বারীনা (قرينة) তথা নিদর্শন এবং উপযুক্ত দলিল-প্রমাণ বিদ্যমান।

শেষকথা: তাফসীরশাস্ত্রে যাদের সামান্যতম হলেও ধারণা আছে তারা জানেন যে, পবিত্র কুরআনের অনুবাদ নেয়ার ক্ষেত্রে কুরআনের অপরাপর আয়াত আর সুন্নাহ উভয়ের সামঞ্জস্যতার বিধান মানা আবশ্যক। যার যেভাবেই খুশি অর্থ নেয়া সুস্পষ্ট বিকৃতি আর মুলহিদানা চরিত্রের শামিল! তাই সালফে সালেহীনগণ এই নিয়মের ভিত্তিতেই পবিত্র কুরআনের অনুবাদ করে গেছেন। মজার ব্যাপার হল, এরূপ স্বতঃসিদ্ধ ও সুপ্রতিষ্ঠিত নিয়মের সমর্থনে খোদ মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীও লিখে গেছেন। ‘রূহানী খাযায়েন’ এর ১০ নং খন্ডের ৮৬ নং পৃষ্ঠাটি খুলে দেখুন! পরিষ্কার লিখা আছে,

  • “প্রথম হল কুরআন শরীফ। কিন্তু স্মরণ রাখা চাই যে, কুরআনের কোনো আয়াতের সেই মর্মার্থই আমাদের নিকট (সঠিক বলে) বিবেচিত যার পক্ষে কুরআনের অপরাপর আয়াত সাক্ষ্য দিয়ে থাকে। কেননা কুরআনের কোনো কোনো আয়াত অপর আয়াতের ব্যাখ্যাকারী। এমনকি কুরআনের পরিপূর্ণ ও অকাট্য মর্মের উদঘাটন যদি কুরআনের অপরাপর স্থানগুলো দ্বারাও সহজলভ্য না হয়ে থাকে তখন তার জন্যও শর্ত হচ্ছে কোনো সহীহ, মারফূ ও মুত্তাসিল হাদীসও তার (আয়াতের) ব্যাখ্যাকারী হবে।”

এখন যেসব কাদিয়ানী-উম্মত ‘কুরআন থাকতে হাদীসে যেতে হবে কেন?’ এরূপ চটকদার ও মূর্খতাপূর্ণ যুক্তির আড়ালে নিজেদের ঈমানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঢেলে দিচ্ছেন তারা এবার মির্যা গোলাম আহমদকে কী বলবেন? কেননা সে নিজেও কুরআনের সঠিক মর্মার্থ উদঘাটন করতে মারফূ ও মুত্তাসিল স্তরের সহীহ হাদীসকে আয়াতের ব্যাখ্যাকারী বলে লিখে গেছেন! তাই তাওয়াতূর পর্যায়ের অসংখ্য হাদীস দ্বারা যেখানে ঈসা (আ:)-এর “নাযিল” হওয়া মানে আকাশ থেকে অবতীর্ণ হওয়াই উদ্দেশ্য, সেখানে লোহা, লেবাস, গবাদিপশু ইত্যাদি “নাযিল” এর কুরআনিক শব্দকে হযরত ঈসা (আ:)-এর “নাযিল” এর অ-কুরআনিক শব্দের মুকাবিলায় দাঁড় করতে চাওয়া কতটা গণ্ডমূর্খতা তা নিজেরাই একবার চিন্তা করে দেখুন! আশাকরি জবাব পেয়েছেন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
তাং ০১/১২/২০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here