Home ইমাম মাহদী এমন ব্যাকগ্রাউন্ড যার সে কিভাবে ইমাম মাহদী দাবী করতে পারে?

এমন ব্যাকগ্রাউন্ড যার সে কিভাবে ইমাম মাহদী দাবী করতে পারে?

0
এমন ব্যাকগ্রাউন্ড যার সে কিভাবে ইমাম মাহদী দাবী করতে পারে?

এই সমস্ত চরিত্রহীন বৈশিষ্ট্যের বিচারে মির্যা কাদিয়ানীর ইমাম মাহদী দাবীও গ্রহণযোগ্যতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পারেনা!

  • আসুন! ইমাম মাহদী দাবীদার মির্যা কাদিয়ানী সাহেবকে প্রথমেই একজন “সত্যবাদী” প্রমাণ করা যায় কিনা দেখি!

প্রিয় আহমদীবন্ধুরা! আপনারা যারা মির্যা কাদিয়ানী সাহেবকে “ইমাম মাহদী” বিশ্বাস করেন তাদের নিকট আমার প্রশ্নটি নিম্নরূপ :

১. অসংখ্য সহীহ হাদীসে বর্ণিত প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী’র কোনো একটি পরিচয়ের সাথেও যার কোনো মিল না থাকা

২. পিতা গোলাম মর্তুজার পেনশনের ৭০০ রূপী নিয়ে উধাও হয়ে চার বছর পর্যন্ত বাড়ীঘরে আর ফিরে না আসা আর ঐ পাঁচ-পঞ্চাশের ঘটনায় উদ্ভট ব্যাখ্যা’র মাধ্যমে চাঁদা দাতাদের সাথে খেয়ানতপূর্ণ আচরণ করা

৩. নিজের জামাতকে ব্রিটিশ সরকারের রোপিত চারাগাছ আখ্যা দেয়া এবং দখলদার ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ১৮৫৭ সালে মাতৃভূমি উদ্ধারে স্বাধীনতাকামী ভারতীয় মুসলমান প্রজাদের অজ্ঞ, নোংরা চালচলনের মানুষ, অভদ্র ও পাপী বলে নিন্দা ও গালমন্দ করা, তাদের বিদ্রোহের পথ বেছে নেয়াকে অবৈধ ও হারাম বলা এমনকি ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্য করাকে ইসলামেরই একটি অংশ বলা

৪. অর্থ উপার্জনের জন্য ওহীর দোহাই দিয়ে “বেহেশতি মাক্ববেরাহ” নামে ধর্মের মোড়কে কবর ব্যবসার প্রচলন করা

৫. বেগানা মহিলাদের দিয়ে শরীর ম্যাসেজ করা

৬. মুহাম্মদী বেগম নামের একটি মেয়েকে বিয়ের জন্য তার পরিবারকে আমৃত্যু চাপ দেয়া, মেয়েটির অন্যখানে বিয়ে হয়ে যাওয়া সত্ত্বে তার অভিভাবকদের (মেয়েটিকে ফিরে এনে হলেও) তখনও বিয়ে দিতে চাপ অব্যাহত রাখা এবং তার সাথে মেয়েটির বিয়েকে খোদার অখন্ডনীয় নির্দেশ আখ্যা দেয়া অতপর বিয়ে করতে ব্যর্থ হওয়া

৭. লাহোরের পলিমারের দোকান থেকে নিয়মিত “টনিক মদ” কেনা ও আপনা বিশ্বস্ত শিষ্য ডাক্টার বাশারাত আহমদ—’র সাক্ষ্যমতে প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতাকে প্রশমিত করতে সেটি পান করা

৮. ১৮৮৪ সালে নুসরাত জাহানকে বিবাহ করার পর যৌন উত্তেজক ঔষধ “জদঝামে ইশক” নামীয় অষ্টধাতুর আফিম মিশ্রিত মেডিসিনকে খোদার ইলহামি ড্রাগ আখ্যা দিয়ে সেবন করা

৯. আপনা খাস ও বিশ্বস্ত শিষ্য (১৯০৫ সালে হিন্দু থেকে কাদিয়ানী হওয়া) শায়খ আব্দুর রহমান মিছরী’র স্বীকারোক্তি অনুসারে একজন জেনাকার সাব্যস্ত হওয়া

১০. আপনা শিষ্য কথিত মুফতি(!) মুহাম্মদ সাদেক রচিত ‘যিকরে হাবীব’ পুস্তক অনুসারে থিয়েটার (সিনেমা) দেখা

১১. মুখে পান রেখে নামায পড়া

১২. আমৃত্যু যাকাত না দেয়া, হজ্ব না করা এবং ইতিকাফ না করা

১৩. মস্তিষ্কে ব্যাধি এবং বহুমুত্র রোগী হওয়া

১৪. নিজ স্বীকারোক্তি মতেই মিরাক (সিজোফ্রেনিয়া) এবং হিস্টিরিয়া (মূর্ছারোগ) ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকা

১৫. মহানবী (সা:)-এর শানে গোস্তাখিমূলক কবিতার পাঠককে ‘জাজাকাল্লাহ’ বলে সমর্থন করা এবং স্বীয় রচনাবলীর পাতায় পাতায় বিরোধীদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়া

১৬. পবিত্র কুরআনের আয়াত সমূহের অর্থ ইচ্ছাকৃতভাবেই বিকৃত করে তার উপর যুক্তি দাঁড় করা

১৭. নিজের মতকে সঠিক প্রমাণ করতে সহীহ হাদীসের বিপরীতে দুর্বল আর জাল হাদীস দিয়ে দলিল দেয়া, কখনো প্রধান প্রধান মুহাদ্দিসদের নামেও মিথ্যাচার করা

১৮. কখনো হাদীসের শব্দ গায়েব করে ফেলা, কখনো বা হাদীসের উপর নিজ যুক্তি আর খ্রিস্টানদের রচনাবলীকে প্রাধান্য দেয়া

১৯. হাদীস নয় এমন বানোয়াট কথাকে রাসূল (সা:)-এর হাদীস বলে চালিয়ে দেয়া এবং

২০. কথায় কথায় অহেতুক ভবিষ্যৎবাণী করা অতপর সেটি বাস্তবতার মুখ না দেখলে তখন সেটিকে বাস্তব করে দেখানোর জন্য তাবীল আর রূপক ব্যাখ্যার আশ্রয় নেয়া ইত্যাদী যেই লোকটির প্রকৃত চরিত্র, সে কিভাবে আপনাদের (কাদিয়ানী অনুসারীদের) বিচারে আল্লাহর প্রেরিত ও প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী হতে পারে? (উপরের ১-২০ নং এর রেফারেন্স, নিচের ফুটনোট থেকে দেখুন)।

ফুটনোট :

১. বিশেষ করে সুনানে আবুদাউদ, মাহদী অধ্যায় এর মাহদী সংক্রান্ত ১১টি হাদীস দ্রষ্টব্য। মির্যার সাথে সেগুলোর ১টিও মিল নেই। ২. মির্যাপুত্র মির্যা বশির আহমদ এম.এ কর্তৃক পাঁচ খন্ডে রচিত ‘সীরাতে মাহদী’ (উর্দু, নতুন এডিশন) খন্ড ১ পৃষ্ঠা নং ৩৮; বর্ণনা নং ৪৯। পঞ্চাশ খন্ডে বই লিখার ওয়াদা, রূহানী খাযায়েন (উর্দু) খন্ড ৯ পৃষ্ঠা নং ২১। ৩. মাজমু’আয়ে ইশতিহারাত (উর্দু), নতুন এডিশন খন্ড ৩ পৃষ্ঠা ২১-২২ (ব্রিটিশ সরকারের রোপিত চারাগাছ); হামামাতুল বুশরা (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ৭২; বারাহীনে আহমদিয়া (বাংলা) খন্ড ৩ পৃষ্ঠা নং ৮, প্রকাশকাল ডিসেম্বর ২০১৭ ইং (স্বাধীনতাকামীরা অজ্ঞ, নোংরা ও পাপী), রূহানী খাযায়েন খন্ড ৬ পৃষ্ঠা নং ৩৮০ (ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্য ইসলামের অংশ)। ৪. আল ওসীয়্যত (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ২২; ভাষান্তর, এ.এইচ.এম আলী আনোয়ার, পুনঃ মুদ্রন জুন ২০১৪ ইং।

৫. সীরাতে মাহদী (উর্দু), বর্ণনা নং ৭৮০ এবং ৯১০। ৬. রূহানী খাযায়েন খন্ড ৫ পৃষ্ঠা নং ৫৭৩ (আল্লাহ আমাকে বলেছেন, যদি অন্য কারো সাথে এই মেয়ের বিয়ে হয় তাহলে তার [মুহাম্মদী বেগম] জন্যও কল্যাণ নেই, তোমার [আহমদ বেগ] জন্যও কল্যাণ নেই); রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৬০ (আমি তোমার নিকট তাকে ফিরিয়ে দেবই, মির্যার ওহী); রূহানী খাযায়েন খন্ড ৫ পৃষ্ঠা নং ৩২৫ (তার নিকট আত্মীয়দের সমস্ত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে হলেও শেষমেষ সে বিধবা হয়ে আমার বিবাহে আসবেই)। ৭. মির্যায়ী মুরিদ হাকিম মুহাম্মদ হুসাইন কুরাইশী রচিত ‘খুতূতে ইমাম বনামে গোলাম’ (উর্দু) পৃষ্ঠা নং ৫; সেই সময় প্রতি-বোতল বাজারমূল্য ছিল পাঁচ দেরহাম, লাহোরি মুভমেন্ট এর ‘পয়গামে ছুলহে’ ৪ই মার্চ ১৯৩৫ইং। ৮. সীরাতে মাহদী ১/৫৪৮, বর্ণনা নং ৫৬৯ (আফিম সংক্রান্ত)। ৯. কাদিয়ানীদের দৈনিক উর্দু সংবাদপত্র আল ফজল তাং ৩১শে আগষ্ট ১৯৩৮ ইং (শায়খ আব্দুর রহমান মিছরীর স্বভাব চরিত্র বিশ্বস্ত এবং নির্মল ও পরিচ্ছন্ন, রূহানী খাযায়েন ১১/৩২৫; তিন’শ তের এর মধ্যে তার সিরিয়াল নং ২৫৫, রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৩২৮ দ্রষ্টব্য)।

১০. যিকরে হাবীব (উর্দু) পৃষ্ঠা নং ১৪; ‘দা’ওয়ায়ে নবুওয়ত ওয়া মুজাদ্দিয়ত’ শিরোনাম দ্রষ্টব্য। ১১. সীরাতে মাহদী পৃষ্ঠা ৬০৬ নতুন এডিশন, বর্ণনা নং ৬৩৮। ১২. সীরাতে মাহদী বর্ণনা নং ৬৭২। ১৩. তাযকেরাতুশ শাহাদাতাইন (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ৪৯। ১৪. সীরাতে মাহদী বর্ণনা নং ১৯ ও ৩৭২। ১৫. দৈনিক আল ফজল (উর্দু) ২২ ই আগস্ট ১৯৪৪, পৃষ্ঠা ৪ কলাম ১; আখবারে বদর (উর্দূ) ২৫ শে অক্টোবর ১৯০৬ ইং (মুহাম্মদ সাঃ এর চেয়েও মর্যাদায় সামনে বেড়ে যাওয়া), খানকির ছেলে (রূহানী খাযায়েন খন্ড ৫ পৃষ্ঠা নং ৫৪৮), শুয়োর (রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৩৩৭), বেশ্যার বংশ (রূহানী খাযায়েন খন্ড ৮ পৃষ্ঠা নং ১৬৩), হারাম জাদাহ (রূহানী খাযায়েন খন্ড ৯ পৃষ্ঠা নং ৩১), হে মরা খাওয়া মৌলবী (রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৩০৫), হিন্দুর বাচ্চা (রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৫৯), তাদের উপর হাজার অভিশাপ (রূহানী খাযায়েন খন্ড ১১ পৃষ্ঠা নং ৩৩০) ইত্যাদি প্রায় পাঁচশতের অধিক শব্দে গালি দেয়ার দীর্ঘ লিস্ট রয়েছে। ১৬. আল ওসীয়্যত (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ১৫ মির্যার বিকৃত অনুবাদ “(সূরা মায়েদা ১১৭)…তখন আবার আমি কিভাবে জানতাম যে, আমার পরে তারা কোন বিপথগামিতায় নিপতিত হয়েছিল”। প্রমাণস্বরূপ এখানে মাত্র ১টি দেখানো হল। ১৭. হামামাতুল বুশরা (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ২৩ ও ১৫০ (দাজ্জালের গাধা প্রসঙ্গে), পৃষ্ঠা নং ৩৬ (ঈসা আঃ ১২০ বছর জীবিত থাকা প্রসঙ্গে), পৃষ্ঠা নং ৮১ (সূরা নিসা আয়াত নং ১৫৯-কে স্বীয় যুক্তি দ্বারা বাতিল করা), পৃষ্ঠা নং ১০৩ (প্রধান প্রধান মুহাদ্দিসগণও ঈসার মৃত্যুর পক্ষে সাক্ষ্য দেয়া প্রসঙ্গে), পৃষ্ঠা নং ১৫০ (আকাশ থেকে ঘোষণা শুনা যে, মাহদী আল্লাহর খলিফা প্রসঙ্গে), পৃষ্ঠা নং ১৫৮ (ইমাম বুখারীর নামে মিথ্যাচার)।

১৮. হামামাতুল বুশরা (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ১৫৮ (ঈসা আঃ আফীক পাহাড়ে নাযিল প্রসঙ্গে। এখানে ‘আকাশ’ শব্দ বাদ দিয়ে লিখা হয়েছে। অথচ মূল হাদীসগ্রন্থে ‘আকাশ’ শব্দ এখনো আছে। কাঞ্জুল উম্মাল, হাদীস নং ৩৯৭২৬ দ্রষ্টব্য) ইত্যাদি। ১৯. হামামাতুল বুশরা (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ২৩ (ফেরেশতা দাজ্জালের মুখ সিরিয়ার দিকে ঘুরিয়ে দেবে সেখানে সে ধ্বংস হবে প্রসঙ্গে), ২৬ (রাসূল সাঃ স্বপ্নে দেখেছেন, দাজ্জাল তার দুইহাত দুই ব্যক্তির কাঁধে রেখে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছে), ৩১, ৩২ (মাহদী হিজরী বা ইসলামী শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে আসবেন প্রসঙ্গে), ৩৩, ৬১, ৬৫, ৬৬, ৬৯, ৮৩, ১৫১-১৫৪ (‘দাব্বাতুল আরয’ নামক কীটের পা মাটিতে এবং মাথা গগনচুম্বী প্রসঙ্গে), আল ওসীয়্যত (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ১৪ (হাদীসের নামে মিথ্যা উদ্ধৃতি : نبى الله و امامكم منكم অর্থাৎ তিনি নবী ও উম্মতী দুই-ই হবেন। অথচ এইরূপ শব্দচয়নে কোনো হাদীস নেই) ইত্যাদি। মির্যার অজ্ঞতাপূর্ণ অথবা খেয়ানতপূর্ণ কয়েকটি উক্তি হামামাতুল বুশরা (বাংলা) পৃষ্ঠা নং ৩০, ৩৪, ৪৭, ৪৯, ৫৬ হতে। ২০. এজন্য আমার লেখিত ‘আহমদীবন্ধু ইসলামে ফিরে এসো’ বইটিও দেখা যেতে পারে। আমি মনে করি, মির্যা কাদিয়ানীকে আবিষ্কার করতে এতটুকু জানাই যথেষ্ট।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here