মির্যা কাদিয়ানীর লাশ বরফ দ্বারা বাক্সবন্দী করা

0
মির্যা কাদিয়ানীর লাশ বরফ দ্বারা বাক্সবন্দী করা

মির্যা কাদিয়ানীর লাশ বরফের বাক্স করে লাহোর থেকে ভারতের কাদিয়ান গ্রামে নিয়ে যাওয়ার একটি ঐতিহাসিক সত্য ঘটনা :

২৬ শে মে ১৯০৮ সালের কথা। মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেব লাহোরে আপনা এক মুরিদের বাসায় কলেরায় মৃত্যুবরণ করেন। সেই এক লম্বা করুণ ইতিহাস। আজ সেদিকে যাচ্ছিনা। গত কয়দিন আগের কথা। ইউটিউবে এক সাবেক আহমদী (কাদিয়ানী) মির্যা শামসুদ্দিন সাহেবের একটি ভিডিও দেখতেছিলাম।

  • বলে রাখতে চাই, মির্যা শামসুদ্দিন সাহেব ২০১৩ সালে কাদিয়ানীয়ত ত্যাগ করে ইসলামে ফিরে আসেন। তার পিতা মির্যা হামিদ উদ্দিন আর বর্তমান কাদিয়ানী খলীফা মির্যা মাসরূর আহমদ দুইজনই দুধ-শরিক ভাই।

যাইহোক মির্যা শামসুদ্দিন সাহেব তার ভিডিওটিতে আজব একটা তথ্য দিলেন। মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের মৃত্যুর পরে তার ভক্ত মুরিদরা তাকে বরফের বাক্স করে কাদিয়ান নিয়ে আসেন। উনি মির্যাপুত্র বশির আহমদ এম.এ সাহেব রচিত “সীরাতে মাহদী” এর দ্বিতীয় খন্ডের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। মির্যায়ীদের আরেকটি পুস্তক “আসহাবে আহমদ” এর অষ্টম খন্ড থেকেও স্ক্রিনশট সহ উদ্ধৃতি দিয়েছেন। আমি তথ্যটি জেনে অবাক হলাম! হায় আল্লাহ! মির্যা সাহেব তো একজন নবী রাসূল এবং খোদ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলেও দাবী করতেন। তাহলে তার লাশ কিজন্য নষ্ট হওয়ার আশংকায় ছিল? নতুবা বরফের বাক্স করে লাশ নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য কি? তা-ও এমন বাক্স করে যার ভেতরে বাহিরে পর্যাপ্ত পরিমাণে বরফ রাখা ছিল!

তাদেরই বইয়ের ভাষায় : জিস কি আন্দর কাফি তি’দাত বরফ কি বহরি থি। অর্থাৎ যার ভেতরটা পর্যাপ্ত পরিমাণে বরফে পূর্ণ ছিল। (সীরাতে মাহদী, ২য় খন্ড)। তারপর তাদের ‘আসহাবে আহমদ’ পুস্তক এর উদ্ধৃতিটাও দেখতে পারেন। কফিনের ভেতরে এবং বাহিরে অর্থাৎ দুই দিকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে বরফে তার লাশ ঢাকা ছিল। যেন লাশ ফুলে ফেঁপে বা ফেটে না যায়!!

প্রামাণ্য ডকুমেন্ট

এখন হয়ত কারো কারো মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, নবীদের দেহ মুবারক পঁচে না বা নষ্ট হয় না, এইরূপ কোনো কথা কি হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত আছে? আমি এর উত্তরে বলব, জ্বী হ্যাঁ। নিশ্চয়ই আছে। তাহলে দেখুন, হাদীসগ্রন্থের নাম, “মুসতাদরাক আ’লা আস-সহীহাঈন (مستدرك على الصحيحين)” অধ্যায় كتاب الفتن والملاحم ; সংকলক, ইমাম আবু আব্দুল্লাহ নিশাপুরী (রহ:)। হাদীস নং ৩৫৮৯।

  • হযরত আউস ইবনে আবী আউস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন : إن الله تعالى حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء ” . هذا حديث صحيح على شرط الشيخين ، ولم يخرجاه অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহতালা নবীগণের শরীরকে মাটির জন্য ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন। (হাদীসের মান : সহীহ, হাদিসটির সনদের মান ইমাম বুখারী এবং মুসলিম উভয়ের কৃত শর্তে বিদ্যমান)।
ইমাম যাহাবী রহ: এর ‘সিয়ারু আলামিন নুবালা‘ খ-৯/পৃ-১৬২ দ্রষ্টব্য।

এবার আশাকরি বুঝতেই পেরেছেন, সত্যিকারের নবীগণের শরীর কখনো নষ্ট হওয়ার জিনিস নয় এমনকি মাটি পর্যন্ত ভক্ষণ করার ক্ষমতা রাখেনা। এককথায় নবীদের শরীরের সম্মান রক্ষার্থে তা নষ্ট হওয়া কিংবা পঁচেগলে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারা ইত্যাদি থেকে আল্লাহ রক্ষা করে থাকেন।

ওহে আল্লাহ! এমন অপ্রিয় তথ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়েও তোমার যেসব কাদিয়ানী বান্দা মির্যার হাকীকত পর্যন্ত পৌছতে চাচ্ছেনা তাদেরকে বুঝানোর সাধ্য আমাদের নেই! মাবূদ! তুমি তাদের সহীহ বুঝ দান কর। আমীন।

অনুবাদক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here