কাদিয়ানীদের দ্বিতীয় খলীফার আয়েশী জীবন সম্পর্কে ডকুমেন্টারি একটি লাইভ প্রোগ্রাম!
কানাডিয়ান প্রবাসী সাবেক কাদিয়ানী সগির আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় জনাব মুস্তাক মালেক সাহেবের আলোচনা হতে চম্বুকাংশ তুলে ধরলাম।
(মুস্তাক মালেক সাহেব নিজেও একজন কাদিয়ানী। পাকিস্তানের কাদিয়ানী অধ্যুষিত শহর রাবওয়ারই বাসিন্দা। একজন প্রবীণ কাদিয়ানী। তবে বর্তমানে তিনি কাদিয়ানী জামাতে নেই।)
জানিয়ে দিতে চাই যে, সগির আহমদ চৌধুরীকে সংক্ষেপে এস.এ চৌধুরী বলা হয়।
এস.এ চৌধুরী : আমাতুল হাই উনি কে?
মুস্তাক মালেক : উনি জামাতে আহমদীয়ার (কাদিয়ানী জামাতের) প্রথম খলীফা হেকিম নূরুদ্দীন সাহেবের কন্যা!
এস.এ চৌধুরী : হেকিম নূরুদ্দীন সাহেবের সন্তান আর কারা ছিলেন?
মুস্তাক মালেক : মিয়া আব্দুল মান্নান, মিয়া আব্দুল ওয়াব এবং মিয়া আব্দুল হাই। আর কন্যা ছিলেন আমাতুল হাই। আহমদীদের দ্বিতীয় খলীফা মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেব আমাতুল হাই সাহেবাকে বিয়ে করেছিলেন।
এস.এ চৌধুরী : ও তাই! মানে দ্বিতীয় খলীফা আর প্রথম খলীফা জামাই শ্বশুর ছিলেন!
মুস্তাক মালেক : জ্বী, হ্যাঁ। কিন্তু আফসোসের বিষয় হল, আমাতুল হাইকে মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেব বিষ পানে হত্যা করে ফেলেন!!
এস.এ চৌধুরী : কিন্তু কেন?
মুস্তাক মালেক : মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেব হেকিম নূরুদ্দীন সাহেবের কন্যা আমাতুল হাইকে বিবাহ করেছিলেন। ঐ সংসারে একজন পুত্র সন্তান জন্ম হয়। সম্ভবত তার নাম ছিল মির্যা খলিল আহমদ। আর দুইটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। আমাতুর রশীদ আর আমাতুল কাইয়ুম। আমাতুর রশীদ ছিলেন বোনদের মধ্যে বড়। অত্যন্ত নির্লজ্জের ব্যাপার যে, মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ আপন কন্যা আমাতুর রশীদের সাথে জেনা করেন। আমাতুর রশীদ তখনও পূর্ণ সাবালিকা হননি। নিজ স্ত্রী আমাতুল হাই এবং মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের গৃহ শিক্ষক মির্যা মুহাম্মদ হোসাইন বি.কম তারা হাতে নাতে জেনা করা অবস্থায় পাকড়াও করেছিলেন। উক্ত ঘটনার পর গৃহ শিক্ষক মির্যা মুহাম্মদ হোসাইন সাহেব চলে যান এবং তিনি আহমদীয়ত ত্যাগ করেন। যদিও ইতিপূর্বে তিনি অত্যন্ত মুখলিস আহমদীদের একজন ছিলেন। কয়েকদিন পরেই মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের স্ত্রী আমাতুল হাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর সংবাদ বেরিয়ে আসে। তাকে যারা দেখেছেন সবাই তার চেহারা নীল বর্ণের দেখেছিলেন। তাই এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ নিজের উক্ত কুকর্ম ঢাকার জন্যই স্ত্রীকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেছেন।
এস.এ চৌধুরী : হায়! মুসলেহ মওউদ!!
মুস্তাক মালেক : একবার ডক্টর ইসরার আহমদ সাহেব মির্যা মুহাম্মদ হোসাইনকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন মির্যা মুহাম্মদ হোসাইন সমস্ত ঘটনা তার নিকট বর্ণনা করেন। মির্যা মুহাম্মদ হোসাইন বলেন, এই যে আমার মাথার চুলের দিকে তাকান। এই চুল আমার এক দিনেই উঠে গেছে। আমি নিজ চোখে ঘটনা না দেখলে জীবন চলে গেলেও তা একজন মুসলেহ মওউদ সম্পর্কে বিশ্বাসও করতাম না। আমার তো দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, জামাতে আহমদীয়া আল্লাহরই পরিচালিত একটি সত্য জামাত। এ জামাতের খলীফা আল্লাহই বানান। তার উপর মুসলেহ মওউদ বলে কথা। তাহলে নিজ চোখে না দেখলে আমি কিভাবে বিশ্বাস করতে পারতাম যে, একজন পিতা তার আপন কন্যাকে র্যাপ করেছে!?
এস.এ চৌধুরী : আমাতুর রশীদ সাহেবার কি অন্য কোথাও বিয়ে হয়েছিল?
মুস্তাক মালেক : জ্বী হ্যাঁ, আব্দুর রহিম আহমদের সাথে পরবর্তীতে তার বিয়ে হয়। তিনি আব্দুর রহিম আহমদের নিকটেও ঐসব ঘটনা স্বীকার করেছেন। সালেহ নূর সাহেবও এর একজন সাক্ষী।
এস.এ চৌধুরী : সালেহ নূর সাহেব কে ছিলেন?
মুস্তাক মালেক : তিনি আব্দুর রহিম আহমদের একজন ব্যবসায়ী সেক্রেটারি ছিলেন।
এস.এ চৌধুরী : মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেবের সাথে হেকিম নূরুদ্দীন সাহেবের পুত্র মিয়া আব্দুল ওহাবের ঘটনাটি সম্পর্কে বলুন!
মুস্তাক মালেক : ঐ ঘটনা সম্পর্কে কি আর বলব! এটি তো দ্বিপ্রহরের সূর্যের ন্যায় পরিষ্কার একটি সত্য ঘটনা। শতকরা ৯৯% আহমদীই ঐ ঘটনা মনে মনে হলেও সত্য বলে বিশ্বাস করেন। ঘটনাটি সম্পর্কে যখন জিজ্ঞেস করেছেন তখন বলেই ফেলি! হেকিম নূরুদ্দিন এর ছেলে মিয়া আব্দুল ওহাব নিজ মুখেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, কথিত মুসলেহ মওউদ মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ তাকে বলৎকার করেছেন। এটি ১৯২৪ সালের ঘটনা। এই ঘৃণ্য অপকর্মের ঘটনাটির সত্যতা প্রমাণে সাবেক কাদিয়ানী মির্যা শফিক রচিত “শহরে ছদূম” বইটির পৃষ্ঠা নং ৯৭-৯৮ দেখে নিতে পারেন।
- মির্যা শফিক এর ‘শহরে ছদূম‘ গ্রন্থের ভাষ্যমতে, 1924 میں مرزا محمود بفرض سیر و تفریح کشمیر تشریف لے گئے – دریائے جہلم میں پیراکی میں مصروف تھے کہ مرزا محمود نے غوطہ لگاکر ایک سولہ سالہ نوجوان کے منارہ وجود کو کو اپنی گرفت میں لے لیا۔ وہ اتنا کہہ کر خاموش ہو گئے۔تو ان کے دواخانہ کے انچارج جناب اکرم بٹ نے پوچھا آپ کیسے پتہ چلا؟ تو وہ بولے یہ میں ہی تھا অর্থাৎ ১৯২৪ সালে মির্যা মাহমুদ ভ্রমণ এবং বিনোদনের জন্য কাশ্মীর যান। জেহলাম নদীতে সাঁতার কাটানোর সময় মির্যা মাহমুদ ডুব দিয়েছিলেন এবং ১৬ বছরের এক তরুনের নিতম্ব (পাছা) চেপে ধরেছিলেন। (গ্রন্থকার বলেন) তিনি (আব্দুল ওহাব) এতটুকু বলার পর চুপ হয়ে গেলেন। তাই তার দাওয়াখানার ইনচার্জ মিস্টার আকরাম বাট জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কীভাবে জানলেন? তখন তিনি বলেছিলেন যে, ঐ তরুনটা আমিই ছিলাম।” (শহরে ছদূম পৃ-৯৮, মির্যা শফিক)।
এস.এ চৌধুরী : লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
মুস্তাক মালেক : ঘটনা এখানে শেষ নয়। তারপরের ইতিহাস আরো জঘন্য। ১৯৩৪ সালে ইতালিয়ান নাগরিক নৃত্যশিল্পী মিস রূপা নামের একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে মুসলেহ মওউদ মির্যা বশির উদ্দিন পুনরায় সমালোচনার কেন্দবিন্দুতে পরিণত হন। দৈনিক আল-ফজল (১৮/০৩/১৯৩৪) পত্রিকাতেও এই সংবাদ ছেপে এসেছে। মুসলেহ মওউদ সাহেব মিস রূপার সাথে জেনা তো করেছেন কিন্তু সামনে নিজ ১৪ বছর বয়সী কন্যা নাসেরা সাহেবাকে বসিয়ে রেখেছিলেন। মিস রূপা যখন লাহোরে মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে জাস্টিস মুনির সাহেবের নিকট মুকাদ্দামা দায়ের করতে চেয়েছিলেন তখন তিনি তার নিকট উক্ত ঘটনা ব্যক্ত করেন। কিন্তু জাস্টিস মুনির সাহেব এই মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান এই বলে যে, নিজ কন্যাকে পাশে বসিয়ে কেউ অন্য একজন মহিলার সাথে জেনা করবে, আমি এই অভিযোগ নিয়ে মামলায় জিততে পারব না। মির্যা বশির সাহেব অভিযোগ ঢাকতে সাংবাদিক ব্রিফিং করে জানালেন, নৃত্যশিল্পী মিস রূপাকে তিনি তার বাসায় তার ছেলে মেয়েদের বিশুদ্ধ ইংলিশ শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে ইতালি থেকে ভাড়ায় নিয়ে এসেছিলেন। লাহোরের দৈনিক জমিদার পত্রিকাসহ তখনকার পত্রিকাগুলোতে এই খবর বেশ জোরালোভাবে ছাপিয়ে আসে।
এস.এ চৌধুরী : নাসেরা সাহেবা সম্পর্কে একটু বলুন!
মুস্তাক মালেক : উনি মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের কন্যা, মির্যা নাসির আহমদ সাহেবের বোন এবং বর্তমান খলীফা মির্যা মাসরূর আহমদ সাহেবের মা। তবে অপ্রিয় হলেও সত্য, মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেব নিজ এই সুন্দরী কন্যাকে স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে গায়ুর পাঠান নামের একটি যুবকের শয্যাসঙ্গীনী করে দিয়েছিলেন।
এস.এ চৌধুরী : গায়ুর পাঠান যুবকটা কে ছিল?
মুস্তাক মালেক : এখানে অনেক রহস্য লুকায়িত। এই সুদর্শন চেহারার যুবকটি একজন পাঠান ছিল। সে লাহোর তালিমুল ইসলাম হাইস্কুলে লেখাপড়া করত। অনেক মেধাবীও। মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ সাহেবকে লাহোর থেকে সেক্সুয়াল ড্রাগ গুলো এই যুবকই রুটিন মাফিক এনে দিত। একবার পাঠান যুবকটিকে কাছে পেয়ে মির্যা বশির সাহেব বললেন, তুমি আমার কাছে এখন যা চাহিবা তাই পাবে। কী চাও বল! তখন পাঠান যুবকটা বললেন, আমি নাসেরাকে চাই। মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ নির্লজ্জের মত ঐ যুবককে তার মনোরঞ্জনের জন্য নিজ মেয়ের কামরায় (কক্ষে) প্রবেশ করিয়ে দেন! কারণ তিনি শর্তহীনভাবে তাকে খুশি করবেন বলে আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেন।
আপনি মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের শেষ বয়সের চেহারার অবয়ব দেখেই বুঝতে পারবেন যে, তিনি কী পরিমাণে অস্বাভাবিক সেক্সুয়াল ড্রাগ সেবন করতেন! তিনি বিয়েও করেছিলেন তিনটি। অতিমাত্রায় ড্রাগ সেবন করায় তিনি মানসিকভাবে সেক্স-উম্মাদনায় বেসামাল থাকতেন। ফলে তার থেকে তার কন্যাও বাঁচতে পারেনি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, ঐ পাঠান যুবকটি মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের ছোট ভাই মির্যা বশির আহমদের সেক্স-পার্টনার ছিল। তাদের মধ্যে প্রায় সমকামিতার ঘটনাও ঘটেছিল। যার ফলে পাঠান যুবকটি মির্যা বশির আহমদকে ব্ল্যাকমেইলও করেছিল। তার ভাজিতি নাসেরা সাহেবাকে যেন তার সাথে বিয়ে দেয়া হয় সেজন্য তদবির চালাতেও বাধ্য করে। কিন্তু মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ পাঠানের সাথে আত্মীয়তার প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
এস.এ চৌধুরী : মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ কি তার কুকর্মের ঘটনাগুলো সরাসরি অস্বীকার করেছিল?
মুস্তাক মালেক : অস্বীকার করার মত সুযোগ ছিলনা। কারণ ভিক্টিমরাই তার বিরুদ্ধে প্রথমে আওয়াজ তুলেছিল। তাছাড়া সেই সময়কার বহু আহমদী মুরুব্বিও মির্যা বশিরকে প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে তাকে ত্যাগ করে লাহোরি জামাতে চলে গিয়েছিল। বেশিরভাগই তাওবা পড়ে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। গোলাম রাসূল (এম.এ) সাহেব তখন মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদকে মুবাহালার চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। কিন্তু মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার সাহস রাখেননি। কারণ তিনি জানতেন যে, ঘটনাগুলো সবই সত্য। গোলাম রাসূল সাহেব এখনো লাহোরেই জীবিত আছেন। বর্তমানে তার বয়স হবে ৯৫ বছর। যদি বিশ্বাস না হয়, তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।
সাক্ষাৎকারের ভিডিও এখানে https://youtu.be/Eh_Ko4O7VhE
(পরের অংশটি মুস্তাক মালেক সাহেবের অন্য আরেকটি সাক্ষাৎকার থেকে নেয়া-ভাষান্তরকারী)
এস.এ চৌধুরী : মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেবের বিরুদ্ধেও তো জেনার অভিযোগ ছিল! আপনি এ সম্পর্কে কিছু বলুন!
মুস্তাক মালেক : মির্যা সাহেবের পুত্র মির্যা বশির উদ্দিন এর বিরুদ্ধে জেনার অভিযোগ উঠলে তখন কাকতালীয়ভাবে মির্যা সাহেবেরটাও সামনে চলে আছে।
এস.এ চৌধুরী : প্রকৃতপক্ষে ঘটনাটা কী?
মুস্তাক মালেক : প্রকৃতপক্ষে ঘটনাটা হল, মির্যা কাদিয়ানী সাহেব আর তার পুত্র মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে এক সঙ্গে জেনার অভিযোগ করেছিলেন শায়খ আব্দুর রহমান মিশরি।
এস.এ চৌধুরী : শায়খ আব্দুর রহমান মিশরীর পরিচয় কী?
মুস্তাক মালেক : তিনি প্রথমে জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন। হিন্দু থাকাকালীন তাঁর নাম ছিল, লালাহ শংকর দাস। অনেক বড় এডুকেটেড পার্সন ছিলেন। মির্যা গোলাম আহমদ সাহেবের বইগুলো তাঁকে আকৃষ্ট করায় তিনি ১৯০৫ সালে মির্যার হাতে বাইয়াত নিয়ে কাদিয়ানী ধর্মে দীক্ষিত হন। কাদিয়ানী হওয়ার পর তিনি নও মুসলিম শায়খ আব্দুর রহমান নামেই পরিচিতি লাভ করেন। মিশর থেকে আরবী ভাষাজ্ঞান শিক্ষা লাভ করায় তাকে “মিশরি”ও বলা হয়। আব্দুর রহমান মিশরি সাহেব কাদিয়ানের “মাদরাসায়ে আহমদীয়া”-র প্রধান শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও কাদিয়ানী জামাতের উচ্চ পর্যায়ের নানা পদে থেকে তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সব চেয়ে বড় পরিচয়, তিনি মির্যার ৩১৩ বিশ্বস্ত সাথীদের তালিকাভুক্তদের একজন। মির্যা কাদিয়ানী সাহেব তাঁকে ২৫৫ নং সিরিয়ালে স্থান দেয়। (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ১১/৩২৮)।
এস.এ চৌধুরী : ঘটনাটি এখনো জানা হল না! একটু মূল ঘটনাটি বলুন!
মুস্তাক মালেক : জ্বী হ্যাঁ, অবশ্যই বলব, ১৯৩৭ সালের কথা। মির্যা কাদিয়ানীর হাতে বাইয়াতপ্রাপ্ত আব্দুর রহমান মিশরি সাহেব-ই কাদিয়ানীদের তখনকার দ্বিতীয় গদ্দিনিসিন মির্যা বশিরের বিরুদ্ধে জেনার অভিযোগ তুলে পত্র প্রেরণ করেন।
যদিও তখন তার পত্রটিতে মির্যা গোলাম কাদিয়ানীর দুশ্চরিত্রের বিষয়টিও কাকতালীয়ভাবে উঠে আসে। মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের সাহাবী আব্দুর রহমান মিশরির অভিযোগ পত্রে উল্লেখ ছিল,
- “মসীহে মওউদ আল্লাহর ওলী ছিলেন। আল্লাহর ওলীও কখনো সখনো জেনা করতেন। কিন্তু মসীহে মওউদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। কেননা, তিনি জেনা করতেন মাঝেমধ্যে। আমার অভিযোগ শুধুমাত্র বর্তমান খলীফা মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে। কারণ তিনি সর্বদা জেনা ব্যভিচারে লিপ্ত থাকেন।”
এই কথাগুলো খোদ মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ-ই উপস্থিত শ্রোতাদের সামনে হস্তগত পত্রটি হতে সবাইকে পড়ে শুনিয়েছিলেন। (দেখুন, দৈনিক আল ফজল, তারিখ ৩১-আগস্ট ১৯৩৮ ইং)। যাইহোক, এই তথ্যের ভিত্তিতে অন্তত এটুকু হলেও প্রমাণিত হল, মির্যা বশিরের বিরুদ্ধে জেনার অভিযোগ উত্থাপনকারী সাধারণ কোনো আহমদী (কাদিয়ানী) ছিলনা বরং সে মির্যা কাদিয়ানীর কথিত একজন সাহাবী এবং ১৯০৫ সালে তার হাতে বাইয়াতপ্রাপ্ত ও ৩১৩ জনের একজন ছিলেন।
এস.এ চৌধুরী : মুসাম্মাৎ ছকিনা সম্পর্কিত ঘটনাটিও যদি বলতেন!
মুস্তাক মালেক : মুসলেহ মওউদ মির্যা বশির উদ্দিনের জেনা ব্যভিচারের বিরুদ্ধে আগেও অনেকে আওয়াজ তুলেছিলেন। ১৯২৭ সালে মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ তারই পি.এস মিয়া জাহিদ এর বোন “মুসাম্মাৎ ছকিনা” নামের একটি বিবাহিতা নারীর সম্ভ্রম হরন করলে তার বিরুদ্ধে পুরো কাদিয়ানজুড়ে প্রতিবাদের আওয়াজ জোরালো হয়ে উঠে। তার স্বামী আব্দুল হক, পিতা আব্দুল করিম এবং ভাই মিয়া জাহিদ সবাই তখন জোরালোভাবে এর প্রতিবাদ জানান। এখানে বলে রাখতে চাই যে, মুসাম্মাৎ ছকিনা নামের বিবাহিতা মেয়েটির ভাই মিয়া জাহিদ সেই সময় মির্যা বশিরের ডান হস্ত ও ফ্যামিলি মেম্বারদের মতই পাশে থাকতেন। তিনি ভাবতেই পারেননি, তার কথিত মুসলেহ মওউদ এভাবে তার বিবাহিতা বোনটির ইজ্জত মেরে দেবেন!!
পরের ইতিহাস হয়ত অনেকই জানেন! মির্যা বশির উদ্দিন সাহেব নিজের এই বেত্তমিজি ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করলে বাদীপক্ষের সবাই তখন তাকে মুবাহালার আহবান জানান। কিন্তু মির্যা বশির উদ্দিন সাহেব মুবাহালার আহবানে সাড়া দেননি। উপরন্তু বাদীপক্ষের প্রতিবাদকে “ফেতনায়ে মুসতারিয়া” আখ্যা দিয়ে বসেন এবং বলপ্রয়োগ করে তাদের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। সে যাইহোক, এখানে আমি যেটি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি সেটি হল, বাদীপক্ষের মুবাহালার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানানোই প্রমাণ করে যে, মির্যা বশির উদ্দিন সাহেব প্রকৃতই একজন জেনাকার ছিলেন।
তারপর কাদিয়ানী জামাত ভেঙ্গে তৃতীয় টুকরা হিসেবে ১৯৫৬ সালে “জামাতে আহমদীয়া ইছলাহ পছন্দ” গ্রুপটির গোড়াপত্তন হয়। বর্তমানে এই গ্রুপের প্রধান হলেন, আব্দুল গাফফার জম্বাহ।
তাদের গ্রুপটির অফিসিয়ালি ওয়েবসাইট হল www.alghulam.com সে যাইহোক, কাদিয়ানীদের প্রথম গদ্দিনিসিন হেকিম নূরুদ্দিনের কন্যা আমাতুল হাইয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে আওয়াজ উঠানোর কারণে হেকিম সাহেবের দুই পুত্র মিয়া আব্দুল মান্নান আর মিয়া আব্দুল ওহাবও রক্ষা পাননি। তাদেরকেও জামাতে আহমদীয়া হতে খারেজ করে দেয়া হয়।
(সংক্ষেপে)।