মেরাজ সশরীরে হয়েছিল মর্মে সমস্ত সাহাবীর বিশ্বাস

0
মেরাজ সশরীরে হয়েছিল মর্মে সমস্ত সাহাবীর বিশ্বাস

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

পুরো উর্দূ Text এর বাংলা অনুবাদ করে দিলাম। যার সারকথা হল, আমাদের নবী করীম (সা:) মেরাজের রজনীতে সশরীরে আকাশে যাওয়ার এই বিশ্বাস একটি ইজমায়ী (সর্বসম্মত) বিশ্বাস হওয়া এবং সমস্ত সাহাবীর এমনই বিশ্বাস ছিল মর্মে মির্যা কাদিয়ানী নিজেও স্বীকারোক্তি করে গেছেন।

  • অনুবাদ: “আমাদের উলামায়ে কেরামের উপর আল্লাহ রহম করুন। আমাদের নেতা ও মওলা (সা:)-এর মান মর্যাদা তারা লক্ষ্য করেনা যে, আল্লাহতালার সব চেয়ে বেশি করুনা ছিল তাঁর উপর। কিন্তু তথাপি হযরত (সা:)-কে সশরীরে উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে অর্থাৎ মেরাজের রজনীতে তাঁকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল মর্মে সমস্ত সাহাবীর তেমনই বিশ্বাস ছিল যেমনটা মসীহ (ঈসা)-কে উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে এই যামানার মানুষের বিশ্বাস। অর্থাৎ সশরীরে (আকাশে) উঠিয়ে যাওয়া অতপর ফিরে আসা। কিন্তু তথাপি হযরত আয়েশা (রা:) একথা মানতেন না। তিনি বলতেন যে, এটি (মেরাজ) একটি সত্য স্বপ্নই ছিল মাত্র। যেজন্য নাউযুবিল্লাহ কেউ না তাঁর নাম নাস্তিক বা ভ্রষ্ট রেখেছে আর না ইজমার বিপরীতে চলে যাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে।” (রূহানী খাযায়েন ৩/২৪৭-৪৮)।

প্রখ্যাত মুহাদ্দেসীন ও হাদীস বিশারদগণ বলেছেন, হযরত আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত রেওয়াতটি সূত্রের বিচারে দুর্বল ও অপ্রমাণিত। স্ক্রিনশট

এবার নুযূলে মসীহ সম্পর্কে মির্যা কাদিয়ানীর স্বীকারোক্তি কেমন ছিল পড়ুন!মির্যা সাহেব লিখেছেন,

⤵️”মসীহ এর আগমনী ভবিষ্যৎবাণী প্রথমস্তরের ভবিষ্যৎবাণী। সবাই সর্বসম্মতিক্রমে এটি গ্রহণ করে নিয়েছে। এর তাওয়াতূরের মর্যাদাও লাভ হয়েছে।” (রূহানী খাযায়েন ৩/৪০০; সারাংশ)।

⤵️”আল্লাহতালা আমার পূর্বে মুসলমানদের প্রতিভা মসীহ’র সশরীরে অবতরণের দিকেই ফিরিয়েছেন কিন্তু আমার উপর এই রহস্য উন্মোচন হয় যে, তার অবতরণ সশরীরে নয়, বরং রূহানীভাবেই হবে।” (রূহানী খাযায়েন ৫/৫৫৩)।

⤵️ “তাওয়াতূর বিষয়ক কোনো কিছু অস্বীকার করা প্রকারান্তরে ইসলাম-ই অস্বীকার করা।” (রূহানী খাযায়েন ১৩/২০৬)।

➡️শেষকথা : এখন সারমর্ম দাঁড়াল এই যে, নবী করীম (সা:)-এর মেরাজ সশরীরে আকাশে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছিল, এটি সমস্ত সাহাবীর বিশ্বাস ছিল বলে খোদ মির্যায়ী রচনাই সাক্ষী। হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ:)-এর আগমনের ভবিষ্যৎবাণী একাধারে উম্মাহার ইজমা-ভিত্তিক আকীদা (جسکو سب نے بالاتفاق قبول کرلیاہے) এবং এর তাওয়াতূরের মর্যাদাও লাভ হওয়া, কথাগুলো স্বয়ং মির্যা কাদিয়ানী নিজেই লিখে গেছেন। তিনি এও লিখে গেছেন যে, ইতিপূর্বের সমস্ত মুসলমানের বিশ্বাস ছিল যে, ঈসা মসীহ (আ:) সশরীরেই অবতরণ করবেন। আর এই বিশ্বাস একটি তাওয়াতূর পর্যায়ের বিশ্বাস ছিল। মির্যা সাহেব লিখেছেন, “তাওয়াতূর বিষয়ক কোনো কিছু অস্বীকার করা প্রকারান্তরে ইসলাম-ই অস্বীকার করা।” এখন প্রশ্ন হল, বর্তমানে কেউ ঈসা (আ:) সম্পর্কিত কাদিয়ানী অনুরূপ কনসেপ্ট লালন করার অর্থ কি সাহাবায়ে কেরামের মত ও পথের বিপরীতমুখী কনসেপ্ট লালন করা নয়? তাহলে সাহাবায়ে কেরামের মতের বিপরীতে অবস্থান করে কোনো কাদিয়ানী কিভাবে নিজেকে মুসলমান দাবী করতে পারে? নাকি তারা বলতে চাচ্ছে যে, সাহাবায়ে কেরামের ঐ মত ও পথ ভুল ছিল! নাউযুবিল্লাহ।

জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই ভাবিয়ে তুলবে।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here