Home কালিমা শুধুই কালেমা তাওহীদ কি জান্নাত লাভের জন্য যথেষ্ট?

শুধুই কালেমা তাওহীদ কি জান্নাত লাভের জন্য যথেষ্ট?

0
শুধুই কালেমা তাওহীদ কি জান্নাত লাভের জন্য যথেষ্ট?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের উত্তর হল, জ্বী হ্যাঁ। কালেমা তাওহীদ জান্নাত লাভের জন্য যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ, তবে অন্তত ফরজ, ওয়াজিব আমলসমূহ ত্যাগ করার ফলে সে পরকালে শাস্তিযোগ্য অপরাধী হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর আল্লাহ যদি কোনো ব্যক্তির প্রতি অনুগ্রহ করতে চান তা ভিন্ন বিষয়। আল্লাহ চাইলে আমল ত্যাগকরার ফলে শাস্তিও দিতে পারেন, চাইলে ক্ষমাও করতে পারেন! মোটকথা, তাওহীদের স্বীকারোক্তির ফলে এবং শিরিক থেকে আমৃত্যু পবিত্র থাকলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামের কঠিনতম শাস্তি ভোগ করার পর যথাসময় মুক্তি পেতে সক্ষম হবে, ইনশাআল্লাহ।

.

এবার প্রশ্ন আসবে, তাহলে ‘যে আন্তরিকতার সাথে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু—এর স্বীকারোক্তি দেবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে‘ এই ধরনের হাদীস দ্বারা আমলের কোনো গুরুত্ব নেই বলে বিশ্বাস করার সুযোগ থাকবে কিনা?

উত্তর হচ্ছে, উল্লিখিত হাদীসের ব্যাখ্যায় বিজ্ঞ হাদীস বিশারদগণ থেকে দুইটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তারা লিখেছেন, وقيل: هو في حق من قالها فمات بعدها قيل: إن ذلك كان قبل نزول الفرائض، في أوائل الدعوة في مكة অর্থ- কারো মতে, এটি এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে উক্ত কলেমা পাঠ করার পরপরই মৃত্যুবরণ করেছেন। কোনো কোনো ব্যাখ্যাকারক এটিও লিখেছেন যে, এই কলেমা পাঠ মক্কার সেই প্রাথমিক যুগের সাথে সম্পর্কিত যে সময়টিতে তখনও ফরজ-বিধানাবলী নাযিল হয়নি, শুধুমাত্র ঈমানের দাওয়াত চলছিল।

শারেহে বুখারী ইবনে হাজার আসকালানী, শারেহে মুসলিম ইমাম নববী প্রমুখও অনুরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। এইজন্যই এ ধরনের হাদীস দ্বারা আমলের কোনো গুরুত্ব নেই বলে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। রাসূল (সা.) থেকে হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস দ্বারাও একথার পরিষ্কার ইংগিত বিদ্যমান। যেমন মুসলিম শরীফের ‘কিতাবুল ঈমান’ অধ্যায়ে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, من مات وهو يعلم أنه لا إله إلا الله دخل الجنة অর্থ- যে ব্যক্তি এমতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করছে যে সে জানে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। উল্লেখ্য যে, জান্নাতে প্রবেশ করার দুটি পন্থা রয়েছে। একজন তওহীদে বিশ্বাসী গুনাহগার যদি প্রথম দফায় জান্নাতে প্রবেশ করতে না পারলেও কিন্তু শাস্তি ভোগ করার পরে হলেও সে প্রবেশ করতে পারবে, ইনশাআল্লাহ। হাদীসটিতে دخل الجنة বাক্যটি মুক্ত অর্থে। এতে সে আল্লাহ চাইলে প্রথমেও পারবে। নতুবা পরে হলেও প্রবেশ করবে। যেহেতু সে তাওহীদে বিশ্বাসী এবং শিরিক থেকে পবিত্র।

তবে এমন কোনো ব্যক্তির তাওহীদের স্বীকারোক্তি কখনো আল্লাহ কবুল করবেন না, যে আল্লাহর প্রেরিত কোনো বার্তাবাহকের রেসালতের স্বীকৃতি দেয়নি। যেমন, ইহুদি খ্রিস্টান জাতি। অথবা কোনো রেসালতের মিথ্যা দাবীদার মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর মত কোনো মিথ্যাবাদীকে নবী রাসূল মেনে নিয়ে ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে গেছে। যেমন, মরক্কোর সালেহ বিন তারিফের সালেহুল মুমিনীন জামাত, ভারতের মির্যা গোলাম আহমদের আহমদী জামাত, ইরানের আলী মুহাম্মদ বাবের বাবী জামাত ও ইরানের মির্যা হুসাইন আলী নূরী (বাহাউল্লাহ)’র বাহায়ী জামাত ইত্যাদী। আল্লাহু আ’লাম।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

Previous article সহজে কাদিয়ানী চেনার উপায়
Next article মির্যা কাদিয়ানী সত্যিই কি খোদা দাবীও করেছিল?
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! এটি সম্পূর্ণ দ্বীনি ও অলাভজনক একটি ওয়েবসাইট। প্রতি বছর এটির ডোমেইন ও হোস্টিং ফি হিসেবে আমাকে এর ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। যদি উক্ত ব্যয় বহন করতে অপারগ হই তাহলে এই সাইটটি নিশ্চিত বন্ধ হয়ে যাবে। সেহেতু আপনাদের সবার নিকট আবেদন থাকবে যে, আপনারা সাইটটির উক্ত ব্যয় বহনে এতে বিজ্ঞাপন দিতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করবেন এবং নিজেরাও সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। বিনীত এডমিন! বিকাশ : ০১৬২৯-৯৪১৭৭৩ (পার্সোনাল)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here