বেহেশতি মাকবেরা :
‘বেহেশতি মাকবেরা’ বাক্যটি ফার্সী এবং আরবী মিশ্রিত। অর্থ বেহেশতি কবর। মানে এমন একটি সমাধি যেটির অধিবাসী একজন বেহেশতি হিসেবে পরিগনিত। মির্যা কাদিয়ানী সাহেব তার বইতে তার কথিত ইলহামে পাওয়া এই বিশেষ ধরনের কবর সম্পর্কে লিখেছেন, যে ব্যক্তি ইহাতে দাফন হবে সে বেহেশতি হয়ে যাবে।’ (মালফুযাত ৫/৩৬০ উর্দূ এডিশন, ইলহাম ১৮-১১-১৯০২ ইং)।
কাদিয়ানীদের নতুন একটি কনসেপশন হচ্ছে কথিত “বেহেশতি মাকবেরা“। সোজা বাংলায়, দুনিয়াতে বসেই বেহেশত কেনা-বেচা। এই বেহেশত কেনা-বেচা চালু করেন মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী। তাও আল্লাহর নামে ওহী ইলহামের দোহাই দিয়ে, যা অত্যন্ত নির্লজ্জ ও জঘন্য কর্মকাণ্ড বৈ আর কিছু না। তার অন্ধভক্ত সাধারণ মানুষদের প্রায় সবাই সরলমনে এটি বিশ্বাসও করে নিয়েছেন। তারা ঐ বেহেশতী মাকবেরায় দাফন হওয়ার জন্য যেই শর্ত তাও পূরণ করার চেষ্টা করেন। কেউ একত্রে কেউ বা কিস্তিতে পর্যায়ক্রমে নির্ধারিত রেট আদায় করে থাকেন। রেট বেশিনা, প্রত্যেক মুসী অর্থাৎ ওসীয়্যতকারী নিজ পরিত্যক্ত সম্পত্তির ১০% সম্পদ বা নগদ অর্থ কাদিয়ানী ফাণ্ডে আদায় করে দেবেন। বিনিময়ে বেহেশত পেয়ে যাবেন। আর কোনো চিন্তা থাকবেনা। কেননা, মির্যা সাহেব পরিষ্কার বলেছেন যে, তার প্রবর্তিত ঐ বেহেশতি মাকবেরায় বেহেশতিরাই কেবল সমাহিত হবেন। মির্যার দাবীমতে, এটাই হল তার প্রতি অবতীর্ণ আল্লাহ’র পবিত্র বাক্যের প্রকৃত মর্মার্থ। (নাউযুবিল্লাহ)। তাদের কথিত ‘বেহেশতি মাকবেরা’ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া থেকে জানতে পড়ুন। ক্লিক করুন।
এই সম্পর্কে আমার পেইজবুক ফেইজে একটি আর্টিকেল পোস্ট দিয়েছি। সেটি হুবহু এখানে তুলে ধরা হল।
এটি মির্যা কাদিয়ানীর বই “আল ওসীয়্যত” এর পৃষ্ঠা নং ৩৮ এবং ৩৯। এখান থেকে তার এদেশীয় অনুসারীদের উদ্দেশ্যে দুই কলম লিখতে চাই যাতে তাদের জ্ঞানের চক্ষুর উপর অন্ধবিশ্বাসের যেই কালো পর্দাটি ঝুলে আছে তা দ্রুত সরে যায় :-
অধিকাংশ কাদিয়ানী বইটি পড়ে থাকলেও বুঝে পড়েনা, এটা সত্য। নইলে এই বইটিতে পরিষ্কার লিখা আছে, মির্যা কাদিয়ানী কর্তৃক প্রবর্তিত কথিত বেহেশতি মাকবেরা নামীয় কবরস্থান শুধুমাত্র ভারতের পাঞ্জাবে “কাদিয়ান” নামক গ্রামেই সীমাবদ্ধ, প্রত্যেক মুসী (ওসীয়্যতকারী)-কে সেই গ্রামেরই নির্ধারিত কবরস্থানে কবর দিতে হবে, বাহিরের যে কোনো দেশের ওসীয়্যতকারী কাদিয়ানীর লাশ সিন্দুকের মধ্যে রেখে কাদিয়ান পাঠাতে হবে। এই হচ্ছে, তার কথিত বেহেশতি মাকবেরার বৃত্তান্ত। স্ক্রিনশট –
এখন আমার প্রশ্নটি হচ্ছে, তাহলে এদেশের কাদিয়ানী মুসীদের লাশ কেন কাদিয়ানে পাঠানো হয়না? কেন এদেশের ভেতরেও নানা স্থানে “বেহেশতি মাকবেরা” নামে কাদিয়ানীরা বেহেশতখানা খুলে বসেছে? এগুলো কি এক দিকে মির্যা কাদিয়ানীর সাথে দুই নাম্বারি নয়? আরেক দিকে যে এটি কবর বিক্রির বিনাপূজির রমরমা নিকৃষ্ট ব্যবসা তা কি আর বলা লাগে?
আমার চ্যালেঞ্জ :-
এখন কোনো কাদিয়ানী কি মির্যার কাছ থেকে এমন কোনো ইলহাম থাকার প্রমাণ দিতে পারবে যেখানে পরিষ্কার করে একথা বলা হয়েছে যে, কথিত এই “বেহেশতি মাকবেরা” কাদিয়ান ছাড়া বাহিরের যে কোনো দেশেও কেউ বানালে বৈধ হবে বা অনুমতি আছে? নইলে মির্যার কথিত ইলহামী ওয়ালা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার এই দুঃসাহস পরবর্তী যুগের চাঁন্দাখোর কাদিয়ানী নেতারা কোত্থেকে পেল? আমার চ্যালেঞ্জ রইল, কোনো কাদিয়ানী নেতা এইরূপ কার্যাবলীর কোনো অনুমোদন থাকা মির্যার তথাকথিত কোনো ওহী বা ইলহাম দ্বারা প্রমাণ করতে পারবেনা।
কাজেই খুব চিন্তা করা দরকার যে, তাহলে কাদিয়ানী মুসীদের লাশ জায়গামত দাফন হচ্ছে কিনা? যদি জায়গামত দাফন না হয় তাহলে ওসীয়্যত বাবত তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির ১০% সম্পদ/সমপরিমাণ অর্থ প্রদান কি ফাউ গেল না?? বেহেশতের লোভনীয় অফার কি তখন লাঠে উঠল না?
- এই লিখাটি পোস্ট দেয়ার পর একজন কাদিয়ানী মু’আল্লিম কী কমেন্ট করল পড়ে দেখুন! আমিও তার কমেন্টের প্রতিউত্তর করতে দেরি করিনি। কিন্তু সে আর পালটা প্রতিউত্তর করতে পারেনি। লিখাটি ফেইজবুক থেকে পড়ুন! ক্লিক করুন।
যদি ভুল লিখি তবে শুধরে দেবেন।
লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী