হায়াতে আউলিয়ায়ে কেরাম।
শায়েখ মাহমুদ এফেন্দীর জানাজায় এরদোয়ান :
ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশে অবস্থিত ইয়াভুজ সুলতান সেলিম মসজিদে গতকাল বাদ জুমা অনুষ্ঠিত বিশ্ববরেণ্য আলেম, তুরস্কের ধর্মীয় গুরু এবং নকশবন্দিয়া তরীকার খালিদিয়া শাখার শায়খ মাহমুদ এফেন্দীর জানাজায় শরীক হয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ৯৩ বছর বয়সে মহান এ মনীষী ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। নামাজে জানাজা শেষে যথাযথ সম্মানের সাথে তাঁকে দাফন করা হয়। প্রিয়গুরু ও বিশ্বনন্দিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব শায়খ মাহমুদ এফেন্দির ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এক টুইটে বলেছেন: আমাদের দেশের আধ্যাত্মিক একজন পথপ্রদর্শক মাহমুদ এফেন্দিকে আল্লাহ রহম করুন। তিনি ইসলামের জন্যে তাঁর জীবন কুরবান করেছেন। উল্লেখ্য, ইসলামের জন্যে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন শায়খ মাহমুদ এফেন্দি। খেলাফত ও সালতানাতবিদ্বেষী কামাল পাশার রেখে যাওয়া আধুনিক তুরস্কে সেকুলার বা ধর্মহীন শাসনের সময় ইসলামকে মানুষের মাঝে টিকিয়ে রাখতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা ছিলো তাঁর। বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের প্রভাব নিয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন তিনি। সেকুলার তুরস্কে যখন মসজিদগুলো জাদুঘর হয়ে যায়; মাদ্রাসাগুলোর যাবতীয় সম্পত্তি সরকার ক্রোক করে নেয়; ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়; রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে ধর্ম-চর্চা নিষিদ্ধ করা হয় – তখন তুর্কি আলেমগণ শহর ছেড়ে চলে যান প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মাদ্রাসা কায়েম করেন অজপাড়া গাঁয়ে। তাঁরা গাছের নিচে বসে বাচ্চাদেরকে কুরআন মজীদ শেখানোর কাজ শুরু করেন। মোট কথা – সরকারী নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়ে নিজেদেরকে যাঁরা ইসলামের জন্যে সঁপে দিয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন ছিলেন মাহমুদ এফেন্দি (রাহমাতুল্লাহিতা’লা ‘আলাইহি)। তিনি যেভাবে কষ্ট করে দ্বীনি ইলম হাসিল করেছেন, সেভাবে নিজেও গ্রামগঞ্জে ছাত্রদেরকে শিখিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শায়খ মাহমুদ আফেন্দি ছাত্রদের আঙুলের ইশারায় সারফ-নাহু শেখাতেন এবং হাতের ইশারায় মাসয়ালা-মাসায়িল বলতেন। এখনো তুরস্কের কিছু জায়গায় এ পদ্ধতি চালু আছে। মরহুম মাহমুদ এফেন্দি হাফিজাহুল্লাহ তুর্কি ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের ১৮ খণ্ডের বিশাল এক তাফসীর লিখেছেন – যার নাম ‘রুহুল ফোরকান’। (সূত্র: হুরিয়াত ও অন্যান্য)।