Home Careers কাদিয়ানীদের মিথ্যাচার উরিযা ফীহা বি-রূহি ঈসা শীর্ষক হাদীসের সঠিক তাৎপর্য

উরিযা ফীহা বি-রূহি ঈসা শীর্ষক হাদীসের সঠিক তাৎপর্য

0
উরিযা ফীহা বি-রূহি ঈসা শীর্ষক হাদীসের সঠিক তাৎপর্য

হাদীসের ভুল অনুবাদ দ্বারা জনমনে বিভ্রান্তি ও তার সমাধান

আহমদীয়া অর্থাৎ কাদিয়ানীবন্ধুদের ভুলটি শুধরানো উচিত, উনাদের অনেককে দেখেছি, একখানা হাদীসের খণ্ডিত একটি অংশ তুলে ধরে দাবী করতে চাচ্ছে যে, দেখ দেখ এখানে পরিষ্কার বলা আছে যে, “ঈসা (আ.)-এর রূহ কবজ করা হয়েছে”। আসুন, সম্পূর্ণ হাদীসটি (আরবীসহ) অনুবাদ আগে দেখে নিই।

  • হুবাইরা ইবনু ইয়ারীম হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, আলী (রা:) যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন হযরত হাসান (রা:) মিম্বারে উঠে ভাষণ দেয়ার প্রাক্কালে বলেছেন…. و لقد قُبِضَ فى الليلةِ التى عُرِجَ فيها بِرُوْحِ عيسى ابنَ مريم ليلةَ سبعِ و عشرين مِن رمضانَ অর্থ—“এমন একটি রাত্রিতে তাঁর (আলী) রূহ কবজ করা হয়েছে, যেই রাত্রিতে রূহ (রূহুল কুদস জিবরাইলের)’র মাধ্যমে ঈসা ইবনে মরিয়মকে উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে (عُرِجَ فيها بِرُوْحِ عيسى)। রাত্রটি ছিল রমাদ্বানের ২৭ তারিখ।” (রেফারেন্স, আত-তবক্বাতুল কোবরা, লি ইবনে সা’আদ ৩/৩৭; মাকতাবাতুল খানজি লাহোর, সহীহ ইবনে হাব্বান খন্ড ১৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ খন্ড ১৭)।

হাদীসের তাহকীক : হাদীসটির একজন বর্ণনাকারী হলেন আবু ইসহাক সাব’ঈ। তিনি মুদাল্লিস বা সূত্রের ক্রুটি-বিচ্যূতি গোপনকারী হিসেবে অভিযুক্ত (তবকাতুল মুদাল্লিসীন পৃষ্ঠা নং ৫৮)। তাই বর্ণনাটির সনদের মান দুর্বল । (স্ক্রিনশট দেখুন)

যাইহোক, হাদীসের মান নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোনো অভিযোগ নয়। আমার বলার উদ্দেশ্য হল, এখানে ঈসা (আ.)-এর রূহ কবজ করাই যদি উদ্দেশ্য হত তাহলে عُرِجَ (উরিযা) শব্দ না হয়ে বরং قُبِضَ (কুবিজা) শব্দই ব্যবহার হত। আর ঈসা (আ.)-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ‘রূহ’ শব্দটিও ‘বা’ (ب) বর্ণ যোগে মাজরূর (مجرور) হত না। সব চে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি ওরাও হয়ত খেয়াল করেনি সেটি হল, বাক্যের মধ্যে روح (রূহ) শব্দটি কর্ম (مفعول) তথা Object নয়। অথচ রূহ কবজ করা বুঝাতে হলেও অন্ততপক্ষে روح শব্দ এখানে কর্মকারকে থাকা লাগত।

জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই জানা আছে যে, জিবরাইল (আ.) এর উপাধি ‘রূহুল কুদস’ ছিল। আল্লাহ ঈসা (আ.)-কে রূহুল কুদস তথা জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে সাহায্য করার কথা পবিত্র কুরআনেও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তালা ইরশাদ করেছেন, (সূরা বাকারা ৮৭)। و ايدناه بروح القدس (উচ্চারণ – ‘ওয়া আইয়াদনা-হু বি-রূহিল কুদুস‘- অর্থাৎ আমরা তাকে জিবরাইলের মাধ্যমে সাহায্য করেছি)। তাফসীর এই,

حدثنا الحسن بن يحيى قال : أخبرنا عبد الرزاق قال : أخبرنا معمر ، عن قتادة في قوله : وأيدناه بروح القدس) قال : هو جبريل) উপরের রেওয়ায়েতটিতে খুব খেয়াল করুন, হুবহু এই আয়াতের মতই ب (বা) বর্ণ সহকারে بروح (বি-রূহ) শব্দ এসেছে। তাহলে এই নির্বোধরা কিজন্য আরবী ক্রিয়াপদ عرج (উরিযা)এর প্রতি খেয়াল করেনা? যদি ঈসা (আ.) এর রূহ কবজ করাই উদ্দেশ্য হত তবে তো قبض (কুবিজা) শব্দটাই উল্লেখ থাকত, তাই নয় কি? এরপরেও যাদের বুঝে আসবেনা তাদেরকে আল্লাহর নিকট সমর্পণ করছি।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

Previous article মির্যার স্ববিরোধীতা-১২
Next article মির্যার স্ববিরোধীতা-১৩
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! এটি সম্পূর্ণ দ্বীনি ও অলাভজনক একটি ওয়েবসাইট। প্রতি বছর এটির ডোমেইন ও হোস্টিং ফি হিসেবে আমাকে এর ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। যদি উক্ত ব্যয় বহন করতে অপারগ হই তাহলে এই সাইটটি নিশ্চিত বন্ধ হয়ে যাবে। সেহেতু আপনাদের সবার নিকট আবেদন থাকবে যে, আপনারা সাইটটির উক্ত ব্যয় বহনে এতে বিজ্ঞাপন দিতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করবেন এবং নিজেরাও সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। বিনীত এডমিন! বিকাশ : ০১৬২৯-৯৪১৭৭৩ (পার্সোনাল)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here