- মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে ‘খাতামান নাবীঈন’ এর অর্থ
বাংলাদেশি কাদিয়ানিদের বইতে “খাতামান নাবীঈন” এর অর্থ ‘সর্বশেষ নবী’ করা হয়না। অথচ নবুওয়ত দাবী করার আগে মির্যা কাদিয়ানী সে নিজেও তার বইতে “খাতামান নাবীঈন” অর্থ সেটাই লিখে গেছেন যেটি ইসলামের প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সমস্ত মুসলমানের হৃদয়ে বদ্ধমূল। আমার জানা মতে এদেশীয় কাদিয়ানীদের মধ্যে বেশিরভাগই ঊর্দু পারেনা। যেসব কাদিয়ানী মতাবলম্বী উর্দু পারেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি :
পড়ুন : ঈসা (আ:) পুনরায় আগমন করলে তখন শেষ নবী কে হবেন?
এই দেখুন মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নিজেও পবিত্র কুরআনের সূরা আহযাব আয়াত নং ৪০ এর খন্ডাংশ “ওয়া খাতামান নাবীঈন” এর অর্থ ঊর্দুতে করেছেন “আওর খতম করনে ওয়ালা নবীয়ুঁ কা” (اور ختم کرنے والا نبیوں کا)। অর্থাৎ তিনি (মুহাম্মদ) নবীগণের সমাপ্তকারী। (রূহানী খাযায়েন ৩/৪৩১) স্কিনশর্ট দ্রষ্টব্য। বাকিটা নিজেই বুঝে নিন!
- উল্লেখ্য, খাতাম শব্দের অনেকগুলো আভিধানিক অর্থ রয়েছে। যথা সীল-মোহর, শেষ ও সমাপ্তি এবং আংটি। সহীহ বুখারী সহ বহু সহীহ হাদীসে রাসূল (সা:) নিজেই ‘খাতামান নাবীঈন’ এর প্রকৃত অর্থ কী তা ‘লা নাবিয়্যা বা’দী’ (অর্থাৎ আমার পর আর কোনো নবী নেই)-এইরূপ শব্দচয়নে সুস্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। তাই “খাতাম” শব্দটির যতগুলোই আভিধানিক অর্থ থাকুক না কেন তন্মধ্যে এখানে শব্দটি শুধুমাত্র ‘শেষ বা সমাপ্তকারী’ অর্থেই ধর্তব্য হবে। আর যারা ‘সীল-মোহর’ অর্থ নিয়ে থাকেন তাদেরটাও নিম্নোক্ত ব্যাখ্যায় সঠিক। কেননা, সীল-মোহর কোনো কিছু লেখার শেষেই লাগিয়ে দেয়া হয়। এর দ্বারা বুুুঝানো হয় যে, এই লিখাটি এখানেই সমাপ্ত। তদ্রুপ রাসূল (সা:) এমন একজন নবী ছিলেন যাঁর আগমনের মাধ্যমে আল্লাহতালা কেয়ামত পর্যন্ত নবুওয়তের দরজায় সীল-মোহর লাগিয়ে দিয়েছেন। কেয়ামত পর্যন্ত আর কারো জন্য এই সীল-মোহর খোলা হবেনা। আর ঈসা (আ:) যেহেতু পূর্ব থেকেই নবুওয়তপ্রাপ্ত , নতুনভাবে নবুওয়তের দায়িত্বভার নিয়ে আসবেন না, স্রেফ একজন উম্মতি মর্যাদায় আসীন হবেন; ফলে তাঁর পুনঃ আগমনে কোনোভাবেই উক্ত নবুওয়তের দরজায় ধাক্কা লাগবেনা। যেজন্য একথা বলাও জায়েজ হবেনা যে, ঈসা (আ:) পুনঃ আগমন করলে তখন শেষ নবী কে হবেন? আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
- লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক