সহীহ বুখারী সহ অসংখ্য জায়গায় রাফউল ইয়াদাইন সংক্রান্ত হাদীসগুলো ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, কিন্তু ইবনে উমর (রা.) নিজেই পরবর্তীতে সেই আমল পরিত্যাগ করেছেন। ইবনে উমর (রা.)-এর দুজন শিষ্য মুজাহিদ এবং আব্দুল আজীজ ইবনে হাকিমের সাক্ষ্য মতে এ কথা প্রমাণিত।
ইতিপূর্বে ইবনে উমর (রা.) এর শিষ্য মুজাহিদ (রহ.)-এর সূত্রে এর একটি টনটনে বিশুদ্ধ বর্ণনা পড়ে এসেছেন। অত্র লিখার সংশ্লিষ্ট ও সংযুক্ত স্ক্যানকপি (ক্রমিক 1) থেকেও পুনরায় দেখে নিতে পারেন। আজকে মুজাহিদ (রহ.)-এর উক্ত বর্ণনার অন্যতম শাহেদ (সমর্থক) হিসেবে অপরাপর শিষ্য আব্দুল আজীজ ইবনে হাকিমের আরেকটা রেওয়ায়েত সনদ ও সনদের তাহকিক সহ তুলে ধরছি। হাদীসটি ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান আশ শায়বানী (রহ.)-এর সংকলন ❝মুয়াত্তা মুহাম্মদ❞ ((مؤطا محمد)) হাদীস নং ১০৮ থেকে উৎকলিত, ((সনদ)) ((أخبرنا: محمد بن أبان بن صالح عن عبد العزيز بن حكيم قال: رأيت ابن عمر يرفع يديه حذاء أذنيه فى أول تكبيرة افتتاح الصلاة، ولم يرفعهما فيما سوى ذلك))
অর্থাৎ ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) বলেন, আমাকে মুহাম্মদ ইবনে আবান ইবনে সালেহ বর্ণনা করেছেন, তিনি আব্দুল আজীজ ইবনে হাকিমের কাছ থেকে আর তিনি বলেছেন আমি হযরত ইবনে উমর (রা.)-কে দেখেছি যে, তিনি সালাতের শুরুতে প্রথম তাকবীরে নিজ দু’ কানের লতি পর্যন্ত দুই হাত উঠিয়েছেন, তিনি এ ছাড়া আর কোথাও দুই হাত উঠাননি। (শাওয়াহেদ থাকার কারণে এর মান : হাসান)।
রাবীঃ
1 ❝মুহাম্মদ ইবনে আবান ইবনে সালেহ❞ সম্পর্কে আল্লামা জফর আহমদ উসমানী (রহ.) তাঁর এ’লাউস সুনান’ কিতাবে লিখেছেন ((ٱن كان ضعيفا لكنه ليس ممن يكذب، و حديثه يكتب فيعتضد به حديث مجاهد)) ❝তাকে (শুধুমাত্র ‘মুরজিয়া‘ মতাবলম্বী আখ্যা দেয়ার নিমিত্ত) দুর্বল বলা হলেও কিন্তু সে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না আর তার হাদীস লিপিবদ্ধ রাখার উপযোগী ছিল আর মুজাহিদের বর্ণিত হাদীস তার হাদীসটিকে সমর্থন করে।❞ (এ’লাউস সুনান পৃষ্ঠা নং ৭৪)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি
2 উক্ত বর্ণনার মূল রাবী ❝আব্দুল আজীজ ইবনে হাকিম (عبد العزيز بن حكيم)❞ একজন সিকাহ এবং তাবেয়ী। ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.) তাঁকে সিকাহ তাবেয়ীগণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন ((عبد العزيز بن حكيم الحضرمي كنيته أبو يحيى يروي عن ابن عمر عداده في أهل الكوفة روى عنه الثوري وإسرائيل مات بعد سنة … هـ وهو الذي يقال له ابن أبي حكيم . انتهى . وفي ” ميزان الاعتدال ” قال ابن معين : ثقة وقال أبو حاتم : ليس بالقوي))।
অর্থাৎ আব্দুল আজীজ ইবনে হাকিম আল হাযরামী, যার উপনাম আবূ ইয়াহইয়া। তিনি ইবনে উমর থেকে বর্ণনা করেছেন আর তাকে কূফাবাসীর মধ্যে গণ্য করা হয়। তার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন ইমাম আস-সাওরী, ইসরাইল প্রমুখ। তিনি ১৩০ হিজরীর পর ইন্তেকাল করেছেন। তাকে ইবনু আবী হাকীমও বলা হয়। ‘মীযানুল ই’তিদাল’ গ্রন্থে এসেছে, ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন বলেছেন, সে একজন সিকাহ বা বিশ্বস্থ [ইমাম আবূদাউদ-ও বলেছেন, সে একজন সিকাহ] আর ইমাম আবূ হাতিম বলেছেন, সে শক্তিশালী নয়। (কিতাবুস সিকাত-كتاب الثقات ১/১২৫ ইবনে হিব্বান)।
❝প্রাসঙ্গিক আর্টিকেল গুলো আপনার জন্য❞
সালাতে রাফউল ইয়াদাইন সংক্রান্ত হাদীস কতগুলো? Click
আবুবকর ইবনে আয়্যাশ-এর সূত্রে হযরত মুজাহিদ থেকে ইবনে উমর (রহ.)-এর তরকে রাফউল ইয়াদাইন প্রসঙ্গে…..Click
রাফউল ইয়াদাইন সম্পর্কিত চেপে রাখা তথ্য Click
ইমাম মালেক (রহ.)-এর ফিকহ বা ইজতিহাদ মতে “রাফউল ইয়াদাইন” এর আমল….Click
ইমাম আওযা’ঈ রাহিমাহুল্লাহ ও রাফউল ইয়াদাইন Click
“তোমরা দুষ্ট ঘোড়ার ন্যায় সালাতে দু’হাত উঠানামা করোনা, তোমরা সালাতে স্থীর থাকো”–রাসূল (সা.)-এর এ ফরমান কিসের ইংগিত? Click
সহীহ বর্ণনামতে হিজরতের পর থেকে রাসূল (সাঃ) “রাফউল ইয়াদাইন”-এর আমল পরিত্যাগ করা….Click
ইমাম ত্বহাবী রাহিমাহুল্লাহ রাফউল ইয়াদাইন (رفع اليدين)-কে “রহিত” আমল বলা ও ‘আবূবকর ইবনে আয়্যাশ’ এর একক বর্ণনার পক্ষে আরও কোনো “শাওয়াহিদ” থাকা…. Click
নবী (সাঃ) এর সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত আবূবকর, উমর দু’জনেরই “আমল” ছিল তরকে রাফউল ইয়াদাঈন তথা রাফউল ইয়াদাইন পরিত্যাগ করা….Click
প্রধান দুই খলীফাতুল মুসলিমীন রাফউল ইয়াদাইন করতেন না Click
লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
এডমিন ফিকহ মিডিয়া