ইমাম ❝মুহাম্মদ ইবনে হাসান আশ শায়বানী❞ (রহ.) (জন্ম-মৃত্যু ১৩২-১৮৯ হিঃ) সম্পর্কে “কাজ্জাব” তথা মহা মিথ্যাবাদী হবার অভিযোগ কতটুকু বিশুদ্ধ ও প্রমাণিত? তিন (৩)টি রেওয়ায়েত উল্লেখপূর্বক তাহকিকি উত্তর,
❝খতীবে বাগদাদী (ক)❞
((أخبرنا محمد بن أحمد بن رزق قال نا أحمد بن علي بن عمر بن حبيش الرازي قال سمعت محمد بن أحمد بن عصام يقول سمعت محمد بن سعد بن محمد بن الحسن بن عطية العوفي يقول سمعت يحيى بن معين – وسألته عن محمد بن الحسن فقال: كذاب))
অর্থাৎ… মুহাম্মদ ইবনে সা’দ ইবনে হাসান বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈনকে বলতে শুনেছি, তাকে মুহাম্মদ ইবনে হাসান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সে কাজ্জাব। (তারীখে বাগদাদ ২/৫৭০)।
খণ্ডনমূলক উত্তরঃ এ বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সনদে উল্লিখিত ❝মুহাম্মদ ইবনে সা’দ ইবনে হাসান ইবনে আ’তিয়া আল আ’ওফি❞ খুবই দুর্বল এবং মুনকার। কাজেই একজন বরেণ্য ও সুপ্রসিদ্ধ মুজতাহিদ ও ফকিহ ইমামের বিরুদ্ধে এধরণের দুর্বল ও অনির্ভরযোগ্য মানুষের সাক্ষী প্রত্যাখ্যাত।
1 ইমাম যাহাবী (রহ.) এর কিতাব ❝সিয়ারু আলামিন নুবালা❞ (৫/৩২৬) এর মধ্যে তার সম্পর্কে লিখা আছে, সে একজন দুর্বল এবং সে ছিল একজন শীয়া।
2 ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন বলেছেন ((كان ضعيفًا في القضاء. ضعيفًا في الحديث)) সে হাদীস এবং বিচার ব্যবস্থা উভয় ক্ষেত্রে দুর্বল।
3 ইমাম ইবনু সা’দ ‘আত তবক্বাত’ (الطبقات) কিতাবে লিখেছেন ((وقد سمع سماعًا كثيرًا، وكان ضعيفًا في الحديث)) সে অনেক শুনা কথা ধরে আর সে ছিল হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল।
4 ইমাম নাসাঈ এবং আবূ হাতিম উভয়ই তাকে দুর্বল বলেছেন।
5 ইবনে হিব্বান তাকে “আল মাজরূহীন” কিতাবে (منكر الحديث) “মুনকারুল হাদীস” আখ্যা দিয়েছেন। আর বলেছেন, ((ولا يجوز الاحتجاج بخبره)) তার বর্ণনাকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা নাজায়েজ। আর সে ২০১ হিজরীতে মারা যায়। (লিসানুল মীযান ২/২৭৮ দ্রষ্টব্য)।
সোর্সঃ Click
উল্লেখ্য ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) ইমাম আবূ হানীফার শিষ্য ও উপদেষ্টা ছিলেন। ইমাম আবূ ইউসুফের পরে তিনিই ছিলেন একজন যোগ্য শিষ্য। শিক্ষকের কাজ ও মতামতগুলো লিপিবদ্ধ ও সম্পাদনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। হানাফী ফকীহদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম পর্যায়ের মুজতাহিদ ইমাম। তিনি ইমাম মুহাম্মদ হিসাবে পরিচিত। তাঁর অনেক রচনা আইনশাস্ত্র ও আইনশাস্ত্রের ভিত্তির উপর রচিত। ইমাম ইবনে মা’ঈন কিংবা আবূ ইউসুফের নাম ভেঙে আজকে যারা কতেক শাজ ও মুনকার রেওয়ায়েত দ্বারা প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে, আজ থেকে অনেক আগেই ইমাম যাহিদ আল-কাউসারী (রহ.) দুই-দুইটি কিতাব ((تانیب الخطیب এবং بلوغ الامانی)) রচনা করে সেগুলোর দাঁতভাঙা উত্তর দিয়ে গেছেন।
ইমাম যাহাবী লিখেছেন, ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান আশ শায়বানী (রহ.) ইমাম শাফেয়ীর প্রিয় শায়খ ছিলেন। ইমাম শাফেয়ী ষাট দিনার ব্যয় করে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর কিতাবপত্র সংগ্রহ করেন ((أنفقت على كتب محمد ابن الحسن ستين دينارا)) এবং সেখান থেকে ইলম অর্জন করা সহ তিনি দীর্ঘ সময়ব্যাপী ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর সোহবতে থেকে ফিকহশাস্ত্র আত্মস্থ করেন। ইমাম শাফেয়ী বলেছেন, ((و قد كتبت عنه حمل بختى)) অর্থাৎ ❝আমি তাঁর কাছ থেকে এক উট-বোঝাই পরিমাণ লিপিবদ্ধ করেছি।❞ (মানাকিবুল ইমাম আবী হানীফা ওয়া সাহিবাইহি পৃষ্ঠা ৮১, ইমাম যাহাবী)। ইমাম আহমদও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) থেকে ফিকহের জটিল মাসয়ালাগুলো রপ্ত করার প্রয়াস পান। এ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহ.) ❝সিয়ার❞ গ্রন্থে (৯/১৩৬) লিখেছেন ((قال إبراهيم الحربي: قلت للإمام أحمد: من أين لك هذه المسائل الدقاق؟قال: من كتب محمد بن الحسن)) ইবরাহীম আল হারবী বলেছেন, ❝আমি ইমাম আহমদকে জিজ্ঞেস করলাম, এ সূক্ষ্মতর মাসয়ালাগুলো আপনার নিকট কোত্থেকে এলো? তিনি উত্তরে বললেন, মুহাম্মদ ইবনে হাসানের কিতাবসমূহ থেকে।❞ এখন প্রশ্ন হল, ইমাম শাফেয়ী এবং ইমাম আহমদ কিজন্য ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান (রহ.)-এর কিতাব থেকে ইলম নিবেন যদি না তিনি সত্যবাদী হন?
ইমাম ইবনু নাদীম (রহ.) ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর মোট ২৭টি রচনা থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে আল-মাবসূত (المبسوط), আল জামেউস সগীর (الجامع الصغير), তিনি কিতাবটি ইমাম আবূ ইউসুফ (রহ.)-এর কাছ থেকে বর্ণনা করেছিলেন। আল জামেউল কাবীর (الجامع الكبير), আস-সিয়ারুল কাবীর (السيرالکبیر), আস-সিয়ারুস সগীর (السيرالصغیر), যিয়াদাত (الزیادات), উল্লিখিত ৬টি কিতাবকে ❝জাহিরুর রিওয়ায়াত❞ বলে। এগুলো হানাফী ফিকহের বুনিয়াদি রচনা। এছাড়াও তিনি রচনা করেন মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ (مؤطا امام محمد); এখানে রেওয়ায়েতগুলো তিনি ইমাম মালেক থেকে একত্রিত করেছেন, কিতাবুল আসার (كتاب الأثار); এখানে রেওয়ায়েত গুলো তিনি ইমামে আ’যম থেকে একত্রিত করেছেন, যিয়াদাতুয যিয়াদাত (زیادات الزیادات), আমালি (الامالى), আল-আসল (الأصل), আল-মাখারিজ ফিল হাইল (المخارج فی الحيل), আল-হুজ্জাহ আ’লা আহলিল মাদীনা (الحجة على اهل المدينة), কিতাবুল কাসবি (کتاب الکسب) অনুবাদগ্রন্থ, ইত্যাদি অন্যতম।
❝খতীবে বাগদাদী (খ)❞
((قرأت على الحسن بن أبي بكر، عن أحمد بن كامل القاضي قال أخبرني أحمد بن القاسم، عن بشر بن الوليد قال قال أبو يوسف قولوا لهذا الكذاب – يعنى محمد بن الحسن – هذا الذي يرويه عني سمعه مني؟))
অর্থাৎ… বিশর ইবনে ওয়ালিদ বলেছেন, আবূ ইউসুফ (রহ.) বলেছেন “তোমরা এ কাজ্জাবটিকে অর্থাৎ মুহাম্মদ বিন হাসানকে জিজ্ঞাসা করো যে, সে আমার কাছ থেকে যা বর্ণনা করছে তা কি সে আমার কাছ থেকে শুনেছে? (তারীখে বাগদাদ ২/৫৭১)।
খণ্ডনমূলক উত্তরঃ বর্ণনাটির সনদে উল্লিখিত ❝বিশর ইবনে ওয়ালিদ ((بشر بن الوليد الكندي))❞ এর জন্ম ১৫০ হিজরীতে, আর মৃত্যু ২৩৮ হিজরীতে। (সিয়ার ১০/৬৭৬ ইমাম যাহাবী)। তার সম্পর্কে জারহ এবং তা’দীল (সমালোচনা এবং প্রশংসা) উভয়ই রয়েছে। কিন্তু মোটের উপর চিন্তা করলে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, রাবী বিশর ইবনে ওয়ালিদের বর্ণনাটিও প্রমাণযোগ্য নয়। কেননা মুহাদ্দিসগণের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধেও ❝অনির্ভরযোগ্যতা❞ এর অভিযোগ তুলেছেন, তাকে কল্পিতমনা ও রাফেজী বলেছেন, মুহাদ্দিসগণ তাকে পরিত্যাগ করার কথাও রয়েছে।
প্রোপাগাণ্ডাকারীদের হয়ত জানা নেই যে, ইমাম আবূ ইউসুফ (রহ.)-এর কাছ থেকেও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর ব্যাপারে অনেক প্রশংসা রয়েছে। ইমাম যাহাবী (রহ.) ❝ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর মানাকিব❞ উল্লেখ করে লিখেছেন, সিরিয়ার “রাক্কা” নগরীতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য ইমাম আবূ ইউসুফ (রহ.) তৎকালীন খলীফা হারুনুর রশীদকে ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান (রহ.)-এর ব্যাপারে প্রস্তাব দেন আর তখন তিনি ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। (অন্যখানে বিস্তারিত লিখব, ইনশাআল্লাহ)।
জারহ ও তা’দীলঃ 1 ইমাম সালেহ বিন মুহাম্মদ বলেন, ❝বিশর ইবনে ওয়ালিদ❞ সত্যবাদী, যদিও একজন আহলুর রায়। আরেকবার বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তিনি মনে রাখতে পারেন না যে তিনি কী বলছেন, তিনি ছিলেন বয়োবৃদ্ধ ((صالح بن محمد جزرة : صدوق إلا أنه من أصحاب الرأي، ومرة: صدوق ولكنه لا يعقل ما يحدث به كان قد خرف))।
2 আবূবকর আল বুরক্বানী বলেন, সে বিশুদ্ধতার শর্তে উত্তীর্ণ নন ((أبو بكر البرقاني : ليس هو من شرط الصحيح))।
3 ইমাম দারে কুতনি (রহ.) তাকে সিকাহ বলেছেন ((الدارقطنى ثقة))।
4 ইমাম আবূ দাউদ আস সিজিস্তানী বলেন, সে সিকাহ তথা বিশ্বস্ত ছিল না ((أبو داود السجستاني : لم يكن ثقة))।
5 ইমাম ওবায়দুল্লাহ ইবনে সাঈদ আস সারাখছি বলেন, সে ছিল কল্পিতমনা ব্যক্তি, যুক্তিবাদী এবং রাফেজী মতাদর্শের। ((عبيد الله بن سعيد السرخسي : من أهل الأهواء من أهل الرأي والرافضة))।
6 মুহাম্মদ ইবনে সা’দ কাতিব আল ওয়াক্বিদী বলেন, যখন সে বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হয় এবং কুরআন সৃষ্ট কি অসৃষ্ট-এ বিষয়ে মন্তব্য করলে তখন হাদীস বিশারদগণ তাকে পাকড়াও করেন এবং পরিত্যাগ করেন। ((محمد بن سعد كاتب الواقدي : لما كبرت سنة وتكلم بالوقف أمسك أصحاب الحديث عنه وتركوه))।
রেফারেন্স – তাকরীবুত তাহযীব, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী।
সোর্সঃ Click
❝ইমাম উকায়লী’র الضعفاء الكبير থেকে (গ)❞
((محمد بن الحسن صاحب أبي حنيفة كوفي حدثنا أحمد بن محمد بن صدقة قال: سمعت العباس بن محمد البصري، يقول سمعت يحيى بن معين، يقول: محمد جهمي كذا.))
অর্থাৎ…আব্বাস ইবনে মুহাম্মদ আল বছরী বলেন, ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) বলেছেন, মুহাম্মদ একজন জাহমী এবং কাজ্জাব। (আদ্ব-দু’আফাউল কাবীর, ক্রমিক নং ১৬০৬)।
খণ্ডনমূলক উত্তরঃ 1 প্রোপাগাণ্ডাকারীরা ইবনে মা’ঈন (রহ.) এর নাম ভেঙে এ ধরণের জরাহ/সমালোচনা যখন প্রচার করে এবং ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর ন্যায়পরায়ণতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তখন তারা ভুলে যায় যে, ইমাম ইবনে মা’ঈন (রহ.) নিজেও ছিলেন ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান (রহ.)-এর শিষ্য বা ছাত্র (দেখুন, মানাকিবুল ইমাম আবী হানীফা ওয়া সাহিবাইহি পৃষ্ঠা ৮০, ইমাম যাহাবী)। এমনকি ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) স্বীয় উস্তাদ ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসানের রচিত ❝আল জামেউস সগীর❞ কিতাবটি সম্পূর্ণ লিপিবদ্ধ করেন। এ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহ.) লিখেছেন, ((عباس ابن محمد سمعت ابن معين يقول كتبت عن محمد ابن الحسن الجامع الصغير)) অর্থাৎ আব্বাস ইবনে মুহাম্মদ বলেন, আমি ইবনে মা’ঈন থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি মুহাম্মদ ইবনে হাসান থেকে “আল জামেউস সগীর” কিতাবটি লিপিবদ্ধ করেছি। (মানাকিবুল ইমাম আবী হানীফা ওয়া সাহিবাইহি পৃষ্ঠা ৮১)। এর প্রমাণ বিশুদ্ধ সনদ সহ দেখুন ❝তারীখে বাগদাদ❞ খণ্ড ২ পৃষ্ঠা নং ১৭২। ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) থেকে পরিষ্কার বর্ণিত আছে তিনি বলেছেন ❝আমাদের সাথী (হাদীসবিশারদ)গণ আবূ হানীফা ও তাঁর সাথীদের ক্ষেত্রে বেশি বাড়াবাড়ী করেছেন।❞ (ইবনুল বার মালেকী রচিত ‘জামেউ বয়ানিল ইলম ওয়া ফাজলিহি-২৬০১, সহীহ)।
কাজেই, প্রশ্ন দাঁড়ালো, এমতাবস্থায় আমরা ❝আব্বাস ইবনে মুহাম্মদ আল বছরী❞র বর্ণনার উপর কিভাবে আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারি? আমরা কিভাবে মনে করতে পারি যে, এমন একজন ইমাম সম্পর্কে ইমাম ইবনে মা’ঈন (রহ.) ❝কাজ্জাব❞ এবং ❝জাহমী❞ মন্তব্য করতে পারেন যিনি তাঁরই উস্তাদ ছিলেন এবং উস্তাদের রচিত কিতাব থেকে ইলম অর্জন করেছিলেন!?
সব চেয়ে বড় কথা হল, যে রাবী (বর্ণনাকারী) এধরণের জরাহ (সমালোচনা) ইবনে মা’ঈন (রহ.) থেকে পেশ করেছেন তিনি তার علة তথা ❝জরাহ’র কারণ❞ পেশ করেননি। অথচ উসূলে হাদীসশাস্ত্রের মুহাদ্দিসগণ বলেছেন, হাদীসের মতন সহীহ হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে ((صحة سنده وانتفاء علته وعدم شذوذه ونكارته وأن لا يكون روايه قد خالف الثقات أو شذ عنهم)) হাদীসের সূত্রের বিশুদ্ধতা, ইল্লাত-علة (জারহ’র কারণ) অনুপস্থিত না থাকা, শাজ (দুর্লভ বর্ণনা) না হওয়া, মুনকার না হওয়া এবং এমন কোনো রাবী না হওয়া যিনি অনেক সিকাহ রাবীর বিপরীতে বর্ণনাকারী কিংবা সিকাহ (বিশ্বস্ত) রাবীগণের সূত্রে শাজ বর্ণনাকারী। (আল ফুরূসিয়্যাতুল মুহাম্মদীয়্যাহ ১/১৮৬, ইমাম ইবনুল কাইয়ুম)।
2 ধারণা করা যাচ্ছে যে, উকায়লীর বর্ণনায় উল্লিখিত ❝আব্বাস ইবনে মুহাম্মদ আল বছরী❞র কথাটি ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর খাস শিষ্য ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) সম্পর্কে ছিলনা, বরং অন্য কারো সম্পর্কে ছিল। আল্লাহু আ’লাম।
শেষকথাঃ অপরাপর প্রায় সকল ইমামের মতই ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান (রহ.)-এর বিরুদ্ধেও যেমন সমালোচনা রয়েছে, তেমনি অনেক প্রশংসাও রয়েছে। আর যে সব সমালোচনা পাওয়া যায় সেগুলো প্রধান প্রধান মুহাদ্দিসগণ গুরুত্ব দেননি। কেননা যে সব ইমাম ন্যায়পরায়ণতা আর বিশ্বস্ততার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন কারো কোনো জরাহ/সমালোচনা কখনো প্রভাব ফেলবেনা। এটাই উসূলে হাদীসবিদগণের স্বীকৃত মূলনীতি। নতুবা ইমাম বুখারী (রহ.)-এর বিরুদ্ধেও মারাত্মক যেসব জরাহ বর্ণিত আছে সেগুলোর কোনো উত্তর থাকেনা। আর তাই ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর বিরুদ্ধে কোনো ইমাম থেকে “কাজ্জাব” শব্দে জরাহ সাব্যস্ত হলেও কোনো প্রভাব ফেলবেনা। অধিকন্তু উপরের বর্ণনাগুলোর একটিও সূত্রের বিচারে সহীহ নয়। কাজেই এ সমস্ত সমালোচনা/আপত্তি আমাদের নিকট দু’ পয়সার মূল্যও নেই।
❝এ আর্টিকেল গুলো আপনার জন্য❞
মানাকিবে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) Episode 1 Click
মানাকিবে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) Episode 2 Click
মানাকিবে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) Episode 3 Click
লিখক, মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
এডমিন ফিকহ মিডিয়া