কাদিয়ানী মিশনারীদের নিকট এ প্রশ্নগুলোর কোনো সঠিক উত্তর আছে কি?
১ আমরা মুসলিম উম্মাহ বিশ্বাস করি যে, ঈসা (আ.)-এর পুনঃ আগমনের বিশ্বাস কুরআন দ্বারা ইংগিতে এবং সহীহ হাদীসগুলো দ্বারা দ্ব্যর্থহীনভাবে সাব্যস্ত। কিন্তু কাদিয়ানী সম্প্রদায়ও বিশ্বাস করে যে, কুরআন দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছে যে, ঈসা (আ.) পৃথিবীতে আবার আসবেন! (রূহানী খাযায়েন ১:৫৯৩)। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, কাদিয়ানীদের মতে, আগত সেই ঈসা হতে পাঞ্জাব প্রদেশের কাদিয়ান পল্লীর নবী দাবীদার গোলাম আহমদ উদ্দেশ্য। তাই প্রশ্ন আসবে, কুরআনের সেই আয়াত কী কী যেখানে আগত সেই ঈসা বলতে গোলাম আহমদ কাদিয়ানীই উদ্দেশ্য? কিভাবে তা বুঝিয়ে দিন!
উল্লেখ্য, মুসলিম উম্মাহ বিশ্বাস করেন, ঈসা (আ.) আবার আসবেন ঠিকই, কিন্তু তিনি রূপক কেউ নন, বরং তিনি প্রকৃত ঈসা ইবনে মরিয়ম-ই। আর এর প্রমাণ কুরআনে [3:46] ইংগিতে (وَيُكَلِّمُ النَّاسَ فِي الْمَهْدِ وَكَهْلا وَمِنَ الصَّالِحِينَ) অর্থাৎ (মরিয়মের প্রতি কৃত ইলহাম, যা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে) আর তিনি (ঈসা) দোলনায় মানুষের সাথে কথা বলবেন এবং প্রৌঢ় বয়সেও বলবেন এবং তিনি নেককারদের মধ্য হতে একজন। হাদীস বলছে (وَالَّذِي نَفْسِي بيَدِهِ، لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمُ ابنُ مَرْيَمَ حَكَمًا عَدْلًا) অর্থাৎ শপথ সেই সত্তার যার হাতের মুঠোয় আমার প্রাণ, তোমাদের মাঝে মরিয়ম পুত্র একজন ন্যায়বিচারক ও শাসক হিসেবে অবশ্যই নেমে আসবেন। (সহীহ বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া দ্রষ্টব্য।
২ আগমনকারী ঈসা ‘রূপক ঈসা‘ হবেন, এর মজবুত এমন কোনো দলীল কি কুরআনে বা হাদীসে রয়েছে, যা দ্বারা গত তেরশত বছর ধরে প্রতি শতাব্দীর সকল যুগ-ইমাম ও মুজাদ্দিদ, মুফাসসির এবং হাদীস বিশারদগণও আপনাদের মতোই মনে করতেন!?
উল্লেখ্য, কাদিয়ানীদের ‘মহা সুসংবাদ’ নামের একটি বইয়ের শেষে আঠারো জন যুগ ইমামের নাম-তালিকা উল্লেখ আছে। অন্তত তাদের কোনো একজন-ও কি আপনাদের অনুরূপ কোনো কনসেপ্ট রাখতেন? প্রামাণ্য স্ক্যানকপি সহ দেখাবেন!
৩ এমন একটি হাদীস বা কুরআনের আয়াত কি নির্ভরযোগ্য কোনো পুরনো তাফসীর বা ব্যাখ্যা সহকারে দেখাতে পারবেন যেখানে আগমনকারী ঈসা আর প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী তারা দু’জনই একজন হবেন বলে উল্লেখ রয়েছে?
৪ সহীহ মুসলিম শরীফের একটি হাদীসে প্রায় চার চার বার আগত ঈসাকে ‘নবীউল্লাহ ঈসা‘ অর্থাৎ আল্লাহর নবী হযরত ঈসা নাযিল হবেন, উল্লেখ রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, সেই ‘নবীউল্লাহ ঈসা’ দ্বারা মির্যা কাদিয়ানী উদ্দেশ্য হলে তিনি কিজন্য নিজেকে সরাসরি ‘নবী’ দাবী করার পরিবর্তে বিভিন্ন বিশেষণমূলক শব্দ (উম্মতি-বুরুজি-জিল্লি)কে আশ্রয় নিলেন? তাকে এ অনুমতি কে দিয়েছে? আল্লাহ দিয়েছেন? তার কোনো লিখনীতে কি একথা পরিষ্কার করে উল্লেখ আছে যে, সে সমস্ত বিশেষণের আশ্রয় নিতে আল্লাহ-ই তাকে বলেছেন!? দয়া করে তার বই থেকে দলীল দেখাবেন!
৫ মনে করুন, আল্লাহ-ই তাকে ‘নবী‘ নামে নামকরণ করেছেন! যদি তার এ কথা সঠিক হত তাহলে সে কিজন্য তার আরেকটা লিখায় মানুষের উদ্দেশ্যে লিখেছে যে,
তোমরা আমার লিখায় আমার সম্পর্কে যেখানেই ‘নবী’ শব্দ দেখতে পাবে তোমরা সে নবী শব্দটি কর্তিত ধরে নেবে আর নবী শব্দের জায়গায় ‘মুহাদ্দাস’ শব্দ উদ্দেশ্য নেবে! (আনওয়ারুল উলূম ২:৫৪১, উর্দূ – আনলাইন এডিশন)।
ডকুমেন্টস সহ দেখুন- ক্লিক
উত্তরগুলো পাওয়ার অপেক্ষায় থাকলুম!
লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক
প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী এম.এ