ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্য স্বীকার করে কাদিয়ানীদের দ্বিতীয় খলীফার চাঞ্চল্যকর বক্তব্য
প্রশ্ন : কাদিয়ানীরা কি সত্যিই ব্রিটিশ প্রোডাক্ট? অনেককেই তো এভাবে বলতে শুনি! কিন্তু প্রমাণ আছে কি?
উত্তর : কাদিয়ানী জামাতের দ্বিতীয় খলীফা-এর বক্তব্যে ব্রিটিশ সরকার সম্পর্কে অতিব গুরুত্বপূর্ন একটি মূল্যায়ন তুলে ধরছি, যা একজন সাধারণ শিক্ষিত মানুষকেও ভাবতে উৎসাহিত করবে! একটি গোষ্ঠী কতটা পরগাছা আর ব্যক্তিত্বহীন হলে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের এতটা করুণা ভিক্ষুক হতে পারে তা চিন্তা করতেও মাথা নিচু হয়ে যায়! নিজেদের ‘ইমাম মাহদীর জামাত আর ট্রু ইসলাম’ দাবীদারদের এ-ই না হয় আসল রূপ!! ব্রিটিশ সরকারের পতনকে নিজেদেরই ‘পতন’ বলে দাবীদারদের মুখে কথায় কথায় “ইলাহী জামাত” শব্দটা শুধু শ্রুতিকটুই নয়, বরং দুনিয়ার সাথে তামাশা-ই বলা যায়! ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্য স্বীকার করে মির্যাপুত্র মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ কী বলেছেন দেখুন! (উর্দূ থেকে বাংলা অনুবাদ), ((یہ بات روز روشن کی طرح ظاہر ہوتی جاتی ہے کہ فی الواقع گورنمنٹ برطانیہ ایک ڈھال ہے جس کے نیچے احمدی جماعت اگے ہی اگے بڑھتی جاتی ہے۔ اس دهال کو ایک طرف کر دو اور دیکھو زہریلے تیروں کی کیسی خطرناک بارش تمہارے سروں پر ہوتی ہے۔ ہمارے مخالف اس بات کی انتظار میں رہتے ہے کہ ذرا ان کو موقع ملے۔ اور وہ زمین سے ہمارے جوڑ اکھاڑ کر پھینک دے لیکن جس درختوں کو خدا لگائے اسے کون اکھاڑ کر پھینک سکتا ہے اور جس باغ کا خدا مالی ہو اسی کون نقصان پہنچا سکتا ہے جب کبھی دشمن ہم پر حملہ آور ہوتا ہے۔ علاوہ اسمانی تائیدات کے۔ اللہ تعالی انسانوں میں سے بھی ایک محافظ ہمارے حفاظت کے لیے کھاڑا کر دیتا ہے اور وہ ہمیشہ ایک ہی ہوتا ہے یعنی گورنمنٹ برطانیہ پس کیوں ہم اس گورنمنٹ کے شکر گزار نہ ہوں۔ ہماری فوائد اس گورنمنٹ سے متحد ہوگے ہے اور اس گورنمنٹ کی تباہی ہمارے تباہی ہے اور اس گورنمنٹ کی ترقی ہمارے ترقی۔ جہاں جہاں اس گورنمنٹ کی حکومت پھیلتی جاتی ہیں ہمارے لیے تبلیغ کا ایک اور میدان نکلتا آتا ہے- پس کسی مخالفت کا اعتراض ہم کو اس گورنمنٹ کے وفاداری سے پھر نہیں سکتا۔))
“একথা দিবালকের মত পরিষ্কার যে, প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশ সরকার এমন একটি ঢাল, যার ছত্রছায়ায় ‘আহমদী জামাত’ নিরবচ্ছিন্নভাবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এই ঢালটিকে এক পাশে রেখে দেখতে থাকো যে, বিষাক্ত তীরসমূহের কত ভয়ানক বৃষ্টিধারা তোমাদের মাথার উপর ধেয়ে আসছে। আমাদের বিরোধীরা এরই অপেক্ষমান, যেন একটু সুযোগ মিলে আর এই ভূপৃষ্ঠ থেকে আমাদের গোড়া থেকেই উচ্ছেদ করতে পারে। অধিকন্তু কার সাধ্য সেই বাগানের ক্ষতি করতে পারে যার মালিক খোদা! শত্রু আমাদের উপর যখন আক্রমণ করে তখন স্বর্গীয় সমর্থন ছাড়াও মহান আল্লাহ আমাদের সুরক্ষার জন্য মানুষের মধ্য থেকে একজন রক্ষাকারী দাঁড় করে দিয়ে থাকেন। সেটি সবসময় একই হয়ে থাকে অর্থাৎ ব্রিটিশ সরকার। এমতাবস্থায় আমরা এই সরকারের কৃতজ্ঞতা (শোকরগুজার) স্বীকার না করে কিভাবে থাকতে পারি!! এই সরকারের সাথেই আমাদের সমস্ত উপকারিতা একাকার হয়ে গেছে। এই সরকারের পতন আমাদেরই পতন, এই সরকারের উন্নতি আমাদেরই উন্নতি।
এ সরকারের হুকুমত (আধিপত্য) যেখানে যেখানেই সম্প্রসারিত হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য (সে সবখানে) তাবলীগের (সদস্য সংগ্রহের) একেকটি ময়দান সুগম (উন্মুক্ত) হচ্ছে। সুতরাং কোনো বিরুদ্ধবাদীর আপত্তি আমাদেরকে এ সরকারের অনুগত হওয়া থেকে বিচ্যুত করতে পারবেনা।” (দৈনিক আল ফজল, তারিখ-১৯/১০/১৯১৫ ইং, মির্যা কাদিয়ানীর পুত্র ও জামাতের দ্বিতীয় খলীফা মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ-এর বক্তব্যের উদ্ধৃতাংশ)।
পরিশেষে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু এটুকু বলব, সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের লেজুড়বৃত্তি হয়ে যাদের টিকে থাকার খাহেশ, তারা আর যাইহোক; অন্তত আত্মমর্যাদার অধিকারী কোনো গোষ্ঠী হতে পারেনা। এ গোষ্ঠীটি যে রাষ্ট্রেই শিকড় গাঁথতে সক্ষম হবে সে রাষ্ট্রের কপালে শনি থাকা-ই স্বাভাবিক। কারণ ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্যই যাদের ধর্মের মূল শিক্ষা, তারা যে নিজ মাতৃভূমির বিরুদ্ধেও শত্রু দেশটির পক্ষে কোনো না কোনো সময় গুপ্তচরবৃত্তি করবেনা তা কিভাবে হয়! কাদিয়ানীরা সংখ্যায় পাকিস্তানে অনেক বেশি হওয়ায় আজ সেখানকার রাজনৈতিক অবস্থা দুনিয়ার সামনে পরিষ্কার। দেশটির অর্থনীতি খাত পুরোই বিপর্যস্ত। আত্মঘাতী বোমা হামলা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। একজন পাগলও বুঝতে পারে যে, এর সবই বিদেশীদের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই না। আল্লাহ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশকে রক্ষা করুন। আমীন।
লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক