Home নবীদের ঘটনা দানিয়াল নবীর দাফন কবে ও কোথায় হয়?

দানিয়াল নবীর দাফন কবে ও কোথায় হয়?

0

হযরত দানিয়াল (আ.) সম্পর্কিত এ ঘটনাটির সত্যতা আছে কি?

উত্তর :

দানিয়াল (আ.) সম্পর্কিত নিম্নোক্ত ঘটনাটির সনদ প্রমাণিত নয়, বরং ভিত্তিহীন। রাসূল (সা.) থেকে এধরণের কোনো কথার সনদ বা বিশুদ্ধ সূত্র খোঁজে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি ঐতিহাসিক ইবনু কাসীর (রহ.) “আল বিদায়া” গ্রন্থে এনেছেন, তিনি নিজেও স্বীয় তাফসীর কিতাবের ভূমিকায় ঘটনাটি সম্পর্কে মন্তব্য করে লিখেছেন যে, এটি একটি ইসরাঈলী ঘটনা। আর ইসলামী শরীয়াহ এর বিরোধী না হলে তখন ইসরাঈলী ঘটনা বর্ণনায় কোনো অসুবিধা নেই। হাদীসে এসেছে, ইসরাইলী বর্ণনার ব্যাপারে চুপ থাকাই উত্তম, সত্য বা মিথ্যা কোনোটাই মন্তব্য করা যাবেনা।

ঘটনা :

قال أبو بكر ابن أبي الدنيا في كتاب ” أحكام القبور ” : حدثنا أبو بلال محمد بن الحارث بن عبد الله بن أبي بردة بن أبي موسى الأشعري حدثنا أبو محمد القاسم بن عبد الله عن أبي الأشعث الأحمري قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إن دانيال دعا ربه عز وجل أن تدفنه أمة محمد فلما افتتح أبو موسى الأشعري تستر ، وجده في تابوت ، تضرب عروقه ووريده ، وقد كان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من دل على دانيال فبشروه بالجنة . فكان الذي دل عليه رجل يقال له : حرقوص فكتب أبو موسى إلى عمر بخبره ، فكتب إليه عمر أن ادفنه ، وابعث إلى حرقوص ; فإن النبي صلى الله عليه وسلم بشره بالجنة . وهذا مرسل من هذا الوجه ، وفي كونه محفوظا نظر . والله أعلم

আবু বকর ইব্‌ন আবী আদ-দুনিয়া (রহ.)… তাঁর রচিত “কিতাবু আহকামিল কুবুর” গ্রন্থে আবুল আশআছের বরাতে লিখেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : নবী দানিয়াল আল্লাহর নিকট দোয়া করেছিলেন যে, তার দাফনকার্য যেন উম্মতে মুহাম্মাদীর হাতে সুসম্পন্ন হয়।

পরবর্তীকালে আবূ মূসা আশআরী (রা.)-এর হাতে ইরাকের তুস্তর নগরী বিজিত হলে সেখানে হুরমুজান শাসকের বায়তুলমালের অভ্যন্তরে একটি চৌকির উপর এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান। এ সময় তাঁর দেহের শিরা ও কাঁধের মোটা রগ দুটি নড়াচড়া করছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, যে ব্যক্তি দানিয়ালের লাশ সনাক্ত করতে পারবে, তাকে জান্নাতের সু-সংবাদ দিবে। হারকুস নামক এক ব্যক্তি দানিয়ালের লাশ সনাক্ত করেছিলেন। আবু মূসা (রা.) হযরত উমর (রা)-কে এ বিষয়ে অবহিত করেন। তখন হযরত উমর (রা) পত্র মারফত তাকে জানান যে, দানিয়ালকে ওখানে (ইরাকে) দাফন কর এবং হারকুস (حرقوص)কে আমার নিকট পাঠিয়ে দাও….!

(আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/৩৭৮)।

মান – উল্লিখিত ঘটনাটির সূত্র বা সনদ অপ্রমাণিত, অগ্রহণযোগ্য।

জ্ঞাতব্যঃ বর্ণনাটি বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, ঘটনাটির বর্ণনাকারী আবুল আলীয়া’র ধারণামতে, লাশটি ৩০০ বছর পূর্বেকার। যদি তাই হয় তাহলে এ লাশ কিছুতেই দানিয়াল নবীর হতে পারেনা। কেননা সহীহ বুখারী শরীফের বর্ণনা এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও ঈসা ইব্‌নু মরিয়ামের মাঝখানে অন্য কোনো নবীর আগমন ঘটেনি। আর এ দুই নবীর মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ বছর।

উল্লেখ্য, দানিয়াল নবী ছিলেন নাকি একজন ওলী ছিলেন, এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। পবিত্র কুরআন এবং বিশুদ্ধ হাদীস সমূহে তাঁর সম্পর্কে তেমন কিছু উল্লেখ নেই। তবে ঐতিহাসিক বিবরণ মতে, তিনি দাউদ (আ.) এর পরের এবং জাকারিয়া (আ.)- এর পূর্বের একজন তাওরাহ অনুসারী ইসরাইলী নবী ছিলেন। তাঁকে তৎকালীন প্রবল প্রতাপশালী বাদশাহ বুখতনসরের নির্দেশে জেরুজালেম থেকে ইরাকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি সেখানেই ইন্তেকাল করেন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here