মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেব (মৃত. ১৯০৮ইং) এর উদ্ভট অনেক দাবীর কথা বলা যায়। তন্মধ্যে এটিও একটি যে, তিনি খোদাতায়ালার সাথে ইন্টারকোর্স তথা যৌনমিলন করেছেন। একদম সরল ও ভদ্র ভাষায় বললে, তিনি তার খোদার সহিত সহবাস করেছিলেন। তারই হাতে বয়’আত গ্রহণকারী সিনিয়র সহচর (মুরিদ) কাজী ইয়ার মুহাম্মদ খান সাহেব মির্যা সাহেব থেকে এ ঘটনাটি তার নিজ গ্রন্থ ‘ইসলামী কুরবানী‘-তে লিখে গেছেন।
কাজী ইয়ার মুহাম্মদ খান আহমদীয়া কমিউনিটি জগতে খুবই প্রসিদ্ধ ও মুখলিস ব্যক্তি যাকে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী প্রায় সব সময় কাছাকাছি রাখতেন। মির্যা সাহেবের পরিবারের সদস্যের ন্যায়ই ছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে, মির্যা কাদিয়ানী সাহেব কাজী সাহেব সম্পর্কে একটি ইলহামী বাণীতে বলেছেন آخر سيف الاسلام অর্থাৎ ইসলামের সর্বশেষ তলোয়ার (ইসলামী কুরবানী পৃষ্ঠা নং ৫)। আরও বলা হয় যে, কাজী সাহেব মির্যা সাহেবের স্ত্রী সাইয়েদা নুসরাত জাহান সাহেবার পার্সোনাল সেক্রেটারি ছিলেন।
সে যাইহোক, তিনি ‘ইসলামী কুরবানী’ (اسلامى قربانى) বইটি উর্দূ ভাষাতেই লিখেন। আহমদীয়া কমিউনিটি কাজী ইয়ার মুহাম্মদ খান সাহেবকে প্রথম সারীর কথিত একজন মির্যায়ী ‘সাহাবী’ বলে গণ্য করতেন। দেখুন, নিচের ছবিতে তিনি মির্যা সাহেবের গায়ে হাত রেখে বাম পাশে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছেন!
কাজী ইয়ার মুহাম্মদ খান সাহেবের দুর্লভ একটি ছবি

এবার মূল কথায় ফিরে এলাম, মির্যা সাহেব থেকে তারই কথিত সাহাবী কাজী ইয়ার মুহাম্মদ খান সাহেব সরাসরি বর্ণনা করে নিজ হাতে লিখেছেন
جیسا کہ حضرت مسیح موعود علیہ السلام نے ایک موقع پر اپنی حالت یہ ظاہر فرمائی ہے کہ کشف کی حالت آپ پر اس طرح طاری ہوئی کہ گویا آپ عورت ہیں اور اللہ تعالی نے رجولیت کی طاقت کا اظہار فرمایا تھا سمجھنے والے کے لیے اشارہ کافی ہے۔ اسلامی قربانی ؛ قاضی یار محمد خان

- অর্থ:- “হযরত মসীহে মওঊদ (মির্যা কাদিয়ানী) একবার নিজের অবস্থা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, কাশফ (আধ্যাত্মিক ধ্যাণ)’র অবস্থা এভাবে চেপে বসল যে, নিজেকে স্ত্রীলোক মনে হল। আর আল্লাহ তা’য়ালা পৌরুষত্বের শক্তি আমার উপর প্রকাশ করছেন। জ্ঞানীদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট।” নাউযুবিল্লাহ।
দেখুন ‘ইসলামী কুরবানী ট্রাকট নং ৩৪, পৃষ্ঠা নং ১২।
- ইসলামী কুরবানী বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
উল্লেখ্য, আধুনিক ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক রূপকার যদি মির্যা কাদিয়ানী সাহেবকে ধরা হয় তাহলেও ভুল হবার কথা নয়। বলাবাহুল্য যে, ট্রান্সজেন্ডার মতবাদে বিশ্বাসীরাই সমকামিতা বা প্রকৃতিবিরুদ্ধ যৌনকর্মের সমর্থক। নাউযুবিল্লাহ ছুম্মা নাউজুবিল্লাহ।
কিন্তু আহমদীয়া কমিউনিটিকে উক্ত ঘটনা সম্পর্কে যখন জিজ্ঞেস করা হয় তখন তারা ৩ ভাবে এর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে থাকে। এক. প্রথমতঃ ঘটনাটিকেই অস্বীকার করে মুখ লুকানোর চেষ্টা করেন। দুই. কখনো উত্তরটা এভাবেও দেন যে, আরে আরে; এটি একটি কাশফ মাত্র। কাজেই এধরণের কাশফীয় কোনো কথাবার্তায় এত সিরিয়াস হবার কী আছে! তিন. আবার কখনো ঘটনার বিবরণকে ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে দিতে ‘রূপক’ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। আর যখন লজ্জায় মুখ লুকানোর কোনো উপায় থাকেনা তখন বইটির লিখক কাজী সাহেবকেই ‘মাতাল’ আর ‘পাগল’ বলে সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেন। পড়ুন, তাদের ‘হান্ড্রেড অ্যালিগেশন‘ অনলাইন ভার্সন।
আর যখন বর্তমান আহমদীয়া কমিউনিটি কাজী সাহেবকে পাগল আর মাতাল বলে মির্যা সাহেবের কাশফকে বেহুদা সাব্যস্ত করতে চাচ্ছে তখন তারা ভুলে যায় যে, বিগত কাদিয়ানী খলীফাদের কেউই কাজী সাহেবকে পাগল বা মাতাল বলার কোনো প্রমাণ নেই। বরং প্রত্যেকে তাকে মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের ঘনিষ্ঠ অনুসারীদের মধ্যেই গণ্য করে আসছেন। উপরের ছবিটিও তা-ই প্রমাণ করে। নইলে মির্যা কাদিয়ানী সাহেব কিজন্য একজন মাতাল বা পাগলকে নিজের শরীরের সাথে মাখামাখি অবস্থায় ক্যামরার সামনে নিয়ে পোজ দেবেন? বিষয়টি জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই ভাবিয়ে তুলবে। আর হ্যাঁ, মির্যা কাদিয়ানী সাহেব একজন নবী দাবীদারও ছিলেন। কাজেই আর যাইহোক একজন নবী দাবীদারের ‘কাশফ’কে ‘বেহুদা’ আখ্যা দেয়ার মত এমন দেয়াদব অন্তত নিজেকে তার অনুসারী বলে দাবী করতে পারেনা।
লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী