Home আপত্তি খন্ডন কে মুসলমান আর কে মুসলমান না

কে মুসলমান আর কে মুসলমান না

0

কাদিয়ানীরা কয়েকটা বয়ান বাংলাদেশে চালায়, এর মধ্যে একটা হচ্ছে,

কে মুসলমান আর কে কাফের, সেটা নির্ধারণ করবেন শুধুমাত্র আল্লাহ, মানুষকে এটি নির্ধারণ করার ক্ষমতা দিয়েছে কে?

কাদিয়ানীদের প্রশ্নের উত্তর : মুসলমান হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে ইসলামের সকল শিক্ষাকে নতশিরে মেনে নিয়েছে, আর যে ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় কোনো শিক্ষাকে সরাসরি বা অপব্যাখ্যার মাধ্যমে অস্বীকার করে সে অন্য আর যতই আমল করুক; ইসলামের গণ্ডী থেকে বহিষ্কৃত।

কে মুসলমান আর কে কাফের তা ইসলামের অকাট্য শিক্ষার আলোকে ব্যক্তির ধর্মবিশ্বাস যাচাই করা দ্বারাও নির্ধারণ করা সম্ভব। আর তা সম্ভব বলেই যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম খলীফা হযরত আবুবকর (রা.) জিহাদ ঘোষণা করতে পেরেছিলেন।

কাদিয়ানীদের উক্ত সস্তা বয়ান আমলে নিয়ে পালটা প্রশ্ন করতে পারি যে, তাহলে তো দেশের বিচার ব্যবস্থা, আইন আদালত সব কিছুই অপ্রয়োজনীয়, পুলিশ প্রশাসনেরও কোনো দরকার নেই। যেহেতু, কে অপরাধী আর কে অপরাধী নয় তা তো আল্লাহই সব চে ভালো জানেন, রোজ কেয়ামতে আল্লাহই তার বিচার করবেন!

কাদিয়ানীদের বইতে মুসলমানদের “অমুসলিম” বলে আখ্যা দেয়া :

মির্যাপুত্র মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ লিখেছেন, “আমাদের জন্য ফরজ হচ্ছে, আমরা যেন গয়ের আহমদীদেরকে (অ-কাদিয়ানীদেরকে) মুসলমান মনে না করি এবং তাদের পেছনে সালাত না পড়ি। কেননা আমাদের দৃষ্টিতে তারা খোদাতালার একজন নবীকে অস্বীকারকারী। এটি ধর্মীয় মু’আমালা, এতে কিছু করার মত কারো কোনো এখতিয়ার বা সুযোগ নেই।” (আনওয়ারুল উলূম ৩:১৪৮, মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ)।

এখন মির্যাপুত্র মির্যা বশির মুসলমানদের “অমুসলমান” সাব্যস্ত করতে পারলে তখন উক্ত ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহর উপর কিভাবে ন্যস্ত রইল?

সত্যি কথা বলতে, কাদিয়ানীদের উপরিউক্ত সস্তা বয়ানটি এক দিকে যেমন স্ববিরোধিতা, অপরদিকে সাধারণ মানুষের মনে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করতে নির্লজ্জ ভন্ডামি! আল্লাহ আমাদেরকে তাদের সমস্ত ভন্ডামি আর কুফুরী মতবাদ থেকে হেফাজত করুন।

আমার দীর্ঘ আলোচনায় মূল পয়েন্টগুলো হলো,

১. ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তি : ইসলামের অকাট্য ও সর্বজনস্বীকৃত শিক্ষাকে যে মেনে নেয়, সে মুসলমান। যে ব্যক্তি ইসলামের মৌলিক কোনো শিক্ষাকে অস্বীকার করে, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।

২. উদাহরণ (যাকাত অস্বীকারকারী) : প্রথম খলীফা হযরত আবুবকর (রা.) যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন, যা প্রমাণ করে যে ইসলামের মৌলিক বিষয় অস্বীকারকারীদের অমুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে তা বৈধ।

৩. কাদিয়ানীদের স্ববিরোধিতা : কাদিয়ানীরা নিজেরা তাদের বইয়ে (যেমন “আমাদের জন্য ফরজ” উল্লেখ করে মির্যাপুত্র মির্যা বশির উদ্দীন মাহমুদ-এর লেখা) সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের “অমুসলিম” বা “কাফের” বলে আখ্যা দেয়। এটি তাদের নিজেদের দাবির সম্পূর্ণ বিরোধী। আমি আশাকরছি যে, আমার এই জবাবটি কাদিয়ানীদের বিভ্রান্তিকর প্রচারণার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ও তথ্যভিত্তিক যুক্তি হিসেবে কার্যকর ভুমিকা রাখবে।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here