মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি গালিগালাজও করত?
নীতিবাক্য : মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী লিখেছেন, কোনো খারাপ কথা মুখে আনা আমার স্বভাব পরিপন্থি। (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ৪/৩২০) তিনি তার রচনায় এও দাবী করে লিখেছেন, আল্লাহ তা’আলা তাকে নাকি সুন্দর চরিত্র দিয়ে পাঠিয়েছেন। (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ১৭/৪২৬)।
মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের গালিগালাজ :
অথচ মানুষকে গালিগালাজের যে লম্বা তালিকা মির্যা সাহেব তার বই-পুস্তকে রেখে গেছেন তা সত্যিই একজন ভদ্র মানুষের ক্ষেত্রে ভাবা কঠিন। কোনো নবী রাসূল তো দূরের কথা, ন্যূনতম একজন সৎ এবং ভদ্র মানুষের জন্যও তা কল্পনা করা যায় না। নমুনা স্বরূপ কয়েকটি দেখুন :
১. খানকীর ছেলে। (রূহানী খাযায়েন ৫/৫৪৮)।
২. মিথ্যার গু খাদক। (রূহানী খাযায়েন১১/৩৩৪)।
৩. কুত্তা। (রূহানী খাযায়েন ১২/১২৮)।
৪. হিন্দুর বাচ্চা। (রূহানী খাযায়েন ১১/৫৯)।
৫. শুয়োর। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩৩৭)।
৬. বেশ্যার বংশ। (রূহানী খাযায়েন ৮/১৬৩)।
৭. হে মরা খাওয়া মওলভী। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩০৫)।
৮. আঁধারের কীট। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩০৫)।
৯. হে নাপাক দাজ্জাল। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩৩০)।
১০। হে পেঁচা। (রূহানী খাযায়েন ২১/৩৩২)।
১১. নাপাক মোল্লারা। (রূহানী খাযায়েন ১৪/৪১৩)।
১৫. নিকৃষ্ট নাপাক। (রূহানী খাযায়েন ১৪/৪১৩)।
১৬. হারাম-জাদাহ। (রূহানী খাযায়েন ৯/৩১)।
১৭. শুয়োরের চেয়ে বেশি নাপাক। (রূহানী খাযায়েন১১/৩০৫)।
১৮. খান্নাস। (রূহানী খাযায়েন ১১/১৭ [টিকা] দ্র.)
১৯. দুনিয়ার কীট। (রূহানী খাযায়েন ২১/৩১১)।
২০. তাদের উপর হাজার লা’নত। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩৩০)।
২১. বিশ্বাসঘাতক। (রূহানী খাযায়েন ১৯/১৯০)।
মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের গালিগুলো কাদেরকে উদ্দেশ্যে করে?
মির্যা কাদিয়ানী সাহেব এই গালিগুলোর অধিকাংশই আলেম-উলামাদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়েছেন। তার সমকালীন সময়ে ইলমে দ্বীনের আলোচিত খাদেম, উম্মতের আস্থাভাজন কোনো আলেমই মির্যা সাহেবের এ কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ থেকে বাঁচতে পারেননি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, মির্যা সাহেব তৎকালীন দখলদার ব্রিটিশের মত জালিম স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো কথা বলেছেন বা তাদের গালি দিয়েছেন বলে কোনোই দৃষ্টান্ত নেই।
দখলদার ব্রিটিশ সরকার সম্পর্কে মির্যা কাদিয়ানীর অভিব্যক্তি :
মির্যা সাহেব নিজেই লিখেছেন, আমার কথার মধ্যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে কখনও কোনো বক্তব্য থাকবে না। আমরা এ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। কেননা আমরা তার কাছে আরাম ও শান্তি পাই। (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ২৩/৪৮৪)।
আরো লিখেছেন, আমার শিরা-উপশিরায় ব্রিটিশ সরকারের কৃতজ্ঞতা বহমান। (রূহানী খাযায়েন ৬/৩৭৮)।
তিনি আরও লিখেছেন, আমার জীবনের অধিকাংশই অতিবাহিত হয়েছে ব্রিটিশ সরকারকে সুদৃঢ় আর সহযোগিতা করার মধ্য দিয়ে। (রূহানী খাযায়েন ১৫/১৫৫-৫৬)। চিন্তার বিষয় যে, আল্লাহ যাকে ইমাম মাহদী করে পাঠাবেন তার জীবনের অধিকাংশই নাকি সমসাময়িককালীন এমন একটি সরকারের সহযোগিতায় অতিবাহিত হবে যেই সরকার খ্রিস্টান এবং স্বৈরাচারী! ভাবিয়ে তুলে কিনা? স্ক্রিনশট দেখুন।
তিনি আরও লিখেছেন, ব্রিটিশ সরকার তোমাদের জন্য রহমত ও বরকত স্বরূপ। (মজমু’আয়ে ইশতিহারাত ২/৭০৯)।
তিনি আরও লিখেছেন, ব্রিটিশ সরকারের আনুগত্য ইসলামেরই একটি অংশ। (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ৬/৩৮০)। স্ক্রিনশট দেখুন
তিনি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অজ্ঞ, নোংরা ও পাপী ইত্যাদি শব্দে কটুক্তি করে গেছেন। (দেখুন, বারাহীনে আহমদিয়া বাংলা অনূদিত ৩/৮; প্রকাশকাল ডিসেম্বর ২০১৭ ইং)। স্ক্রিনশট দেখুন
তিনি নিজেকে সুস্পষ্টভাবে ব্রিটিশ সরকারের রোপিত চারাগাছ বলেও স্বহস্তে লিখে গেছেন। দেখুন, মাজমু’আয়ে ইশতিহারাত (উর্দূ) ৩/২১-২২, নতুন এডিশন। সংক্ষেপে দু’চারটে কথা লিখলাম। নতুবা এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। স্ক্রিনশট দেখুন
কী বুঝলাম?
বুঝলাম যে, মির্যা কাদিয়ানী মূলত ব্রিটিশ সরকারেরই সৃষ্ট। ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য এবং জিহাদকে নিষ্প্রভ করার জন্যই তারা তাকে দাঁড় করিয়েছিল । যেজন্য তাকে প্রথমে ইমাম মাহদী অতপর প্রতিশ্রুত মসীহ ঈসা হওয়ার দাবী করতে হয়েছে। কেননা সে ভালো করেই জানত যে, জিহাদ নিষ্প্রভ করার ঘোষণা দিতে হলে তাকে একই সাথে মসীহ দাবী করাও বাধ্যতামূলক। কারণ হাদীসে এসেছে, ওয়াইয়াদ্বা’উল হার্বু। অর্থাৎ মসীহ’র যুুুগে লড়াই স্থগিত হয়ে যাবে।
আশাকরি বুঝতেই পারছেন যে, ব্রিটিশরা খেলাটা কিভাবে খেলেছে! অথচ ইতিহাস সাক্ষী, কোনো রিফর্মার বা আল্লাহ প্রেরিত মহাপুরুষ তাদের সমসাময়িককালের স্বৈরশাসকদের কখনো অনুগত ছিলেননা, বরং আমৃত্যু তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়েছেন। আহ! কাদিয়ানী সম্প্রদায় এসব কেন যে ভেবে দেখেনা! উপরন্তু তারা মনে করছে, মির্যা কাদিয়ানীই মসীহ এবং একজন নবী! নাউযুবিল্লাহ।
লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক