মির্যা কাদিয়ানী সাহেব কুরআন শরীফ এবং বাইবেলের নামেও কেন এমন সব মিথ্যাচার করে গেলেন?
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেব পবিত্র কুরআন এবং তাওরাতের তিনটি পুস্তকের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজ পুস্তক (বাংলায় অনুবাদকৃত) “কিশতিয়ে-নূহ” এর ৫ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “ইহাও স্মরণ রাখিতে হইবে যে, কুরআন শরীফে এমনকি—তওরাতের কোন কোন কিতাবেও এই সংবাদ বিদ্যমান রহিয়াছে যে, মসীহ মওউদ (আ.)-এর সময়ে প্লেগের প্রাদুর্ভাব হইবে।” মির্যা কাদিয়ানী সাহেব উক্ত উদ্ধৃতির সমর্থনে বইয়ের টীকায় তওরাতের তিনটি পুস্তকের রেফারেন্স দিয়েছেন। রেফারেন্স হল, সখরিয়-১৪:১২, ইঞ্জিল মথি-২৪:৮, প্রকাশিত বাক্য-২২:৮।
এবার আমি ‘বাংলাদেশ বাইবেল স্যোসাইটি, ঢাকা” থেকে মুদ্রিত বাইবেল থেকে উল্লিখিত তিনটি পুস্তক থেকে আপনাদের উদ্দেশ্যে স্ক্রিনশট তুলে ধরছি। আপনারা ঐ তিনটি পুস্তকের যথাক্রমে ১৪:১২, ২৪:৮ ও ২২:৮ এর সাথে মির্যা কাদিয়ানীর কৃত উদ্ধৃতি মিলিয়ে দেখুন। আপনি বাইবেলের ঐ পুস্তকগুলোর সাথে মির্যা কাদিয়ানীর উদ্ধৃত কথাটির ১% মিলও খুঁজে পাবেন না। এতদ্ব্যতীত পবিত্র কুরআনের সাথে মির্যার উক্ত বক্তব্যের মিল থাকার তো প্রশ্নই আসেনা। এমতাবস্থায় মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে আপনি বা আমি একজন নিরপেক্ষ পাঠক হিসেবে কেমন মন্তব্য ছুড়তে পারি বলুন!
(মিলিয়ে দেখার জন্য বাইবেলের তিনটি পুস্তকের স্ক্রিনশট এখানে যুক্ত করে দিলাম)।
মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে উল্লিখিত তথ্যের আলোকে আমি যদি নিম্নরূপ মন্তব্য ছুড়তে চাই তাহলে মোটেও বাড়াবাড়ি হবেনা! যথা-
১- মির্যা কাদিয়ানী একজন মিথ্যাবাদী।
২- একজন খেয়ানতকারী।
৩- একজন প্রতারক।
৪- সত্যমিথ্যা মিশ্রিত কারী।
৫- আল্লাহর নামে জঘন্য মিথ্যারোপকারী।
৬- একজন গু খোর, জারজ, হারামজাদাহ, মুশরিক ও শুয়োরের চেয়েও নিকৃষ্ট। কেননা মির্যা কাদিয়ানী নিজেই তার রচনাবলীর জায়গায় জায়গায় লিখেছে, মিথ্যা বলা আর গু খাওয়া একই কথা। এভাবে উপরের সবগুলো কথা নিজেই লিখেছেন। তাই এগুলো তার সাথে মিলে গেল!
৭- একজন ভন্ড মাহদী, নবুওয়তের মিথ্যাদাবিদার। কেননা, এমন একজন মিথ্যাবাদী ও খেয়ানতকারী আর যাইহোক অন্তত ভদ্র মানুষ হওয়ার যোগ্যতাও রাখেনা; থাক তো ইমাম মাহদী বা নবী হবে!
- আফসোস! মির্যা কাদিয়ানী সাহেব ভেবেছিলেন যে, তার এসব জালিয়াতি ধরার মত পরবর্তীতে লোকের খুব অভাব থাকবে। ফলে যাচাই-বাছাই ছাড়া সবাই চোখবুঁজে তার সব মিথ্যাকে সত্য বলেই গলাধঃকরণ করবে! বেচারা ভুলেও ভাবেনি যে, শেষ যামানায় স্যোসাল মিডিয়া নামে কিংবা ইন্টারনেট নামে কিছু একটা মানুষের হাতেহাতে পৌঁছে যাবে।
প্রিয় আহমদী ভাই ও বোনেরা! নিরপেক্ষভাবে কথাগুলো নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন। মনে রাখবেন, বাহাউল্লাহ ইরানীও নবুওয়তের দাবীদার ছিলেন এবং ১৮৬৩ সালে মসীহ মওউদ হবার দাবীও করেছিলেন। তিনি তার উক্ত দাবীর উপর আরো প্রায় ২৯ বছর জীবিত ছিলেন। বর্তমানে প্রায় ২১৮টি রাষ্ট্রে তার বাহায়ী জামাত ৮ মিলিয়ন অনুসারীসহ টিকে আছে। এখন কোনো জামাত বা গোষ্ঠী দীর্ঘ সময়ব্যাপী টিকে থাকার অর্থ মোটেও এই নয় যে, সেটি সত্য বলে গন্য হবে। অন্যথা বাহায়ী জামাতকেও সত্য জামাত এবং বাহাউল্লাহও “সত্য মসীহ” হয়ে যেত। তাই আবেগপ্রবণ হয়ে নয়, বরং বিবেকবুদ্ধি সহকারে সত্যটা খুঁজে নেবেন! ইসলামের মূলধারায় ফিরে আসবেন।
লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক
প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।