মির্যা কাদিয়ানী ও তার আবোল তাবোল যতসব ব্যাখ্যার নামে খিস্তিখেউড়!
মির্যা কাদিয়ানীর মুরিদদের কয়জনেই বা এগুলো জানে!
সাধারণ কাদিয়ানীদের নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। কারণ এরা মির্যার বইগুলো কখনো পড়েনা বা পড়ার কোনো মুরোদও নেই। এদের শিক্ষা আর তারবিয়ত আগাগোড়াই কাদিয়ানী জামাতের উর্ধতন নেতাদের বক্তৃতা বয়ান-নির্ভর, যেখানে নিজ চিন্তাশক্তির ছিটেফোঁটাও থাকেনা। আমার আঙ্গুল সেসব কাদিয়ানী নেতাদের প্রতি যারা জেনে-বুঝে সত্যটা গোপন রেখে চলেছে। আমি হলফ করে বলতে পারি, জনাব আব্দুল আউয়াল নিজেও মির্যা গোলাম আহমদকে হাদীসে বর্ণিত ইমাম মাহদী বিশ্বাস করেনা। আর বিশ্বাস করার মত কোনো রসদই তাদের নিকট নেই।
বাংলাদেশের কাদিয়ানী জামাতের চিহ্নিত ১০/১২জন জ্ঞানপাপী এই গোষ্ঠীটাকে আগলে রেখেছে শুধুমাত্র অর্থ কামানের জন্য। কারণ প্রত্যেক কাদিয়ানী নিজ ইনকামের ১৬% অর্থ প্রতিমাসে কাদিয়ানী ফাণ্ডে চাঁদা দিয়ে থাকে। সে সাথে পরিত্যক্ত সম্পত্তির ১০ ভাগের ১ ভাগ দিতে হয় প্রত্যেক কথিত জান্নাতি টিকেটধারী (তাদের পরিভাষায় ‘মছীহ’-)কে। এবার তাহলে হিসেব কষে দেখুন, সারা দেশ থেকে কী পরিমাণে এদের বিনা পুঁজির রমরমা ধর্মব্যবসা।
আমার ভাবতেও অবাক লাগে এত নিকৃত ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী কোন মুখে অন্যকে (মুসলমানদের) ধর্মব্যবসায়ী বলে মুখে ফেনা তুলে! মূলত এই রমরমা ধর্মব্যবসার আড়ালে লালে লাল হওয়ার জন্যই সত্য গোপন করে চলছে আর সাধারণ কাদিয়ানীদের রক্ত শোষণ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যেভাবে ইতিপূর্বে কথিত জ্বীনের বাদশাহ নামের ভণ্ডরা নিয়েছিল এবং সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে সর্বহারা করেছিল!
আজকে লিখব মির্যা কাদিয়ানীর কতিপয় কমেডি ব্যাখ্যা, যা জেনে আপনি নিজেও মনে মনে হাসবেন! আর বলবেন, আহা! এই জ্ঞান বিজ্ঞানের যুগেও এমন একজন মানসিক প্রতিবন্ধীকেও ইমাম মাহদী বিশ্বাস করা কিভাবে সম্ভব হয়!!
মির্যা কাদিয়ানীর অভিনব কমেডি ব্যাখ্যা –
মির্যা কাদিয়ানী লিখেন, নিজ থেকে নতুন কোনো অর্থ দাঁড় করাটাও ইলহাদ (নাস্তিকতা) আর তাহরিফ (বিকৃতি) করার শামিল। (রূহানী খাযায়েন ৩/৫০১)।
কিন্তু বাস্তবতা হল, এভাবে যিনি লিখলেন তিনি নিজেই নিজের কথার উপর অবিচল থাকতে পারেননি। যেমন,
রেফারেন্স সহ নিম্নরূপ-
১. বর্ণনায় উল্লিখিত ‘কার’আ’ (كرعة) হতে কাদিয়ান বুঝা হয়েছে। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩২৯)। ২. ‘আদনাল আরদ’ (ادنى الارض) দ্বারা কাদিয়ান উদ্দেশ্য। (তাযকিরাহ ৬৪৯)। ৩. শারক্বিয়্যি দামেস্ক হতে কাদিয়ান উদ্দেশ্য। (তাযকিরাহ ১৪১)। ৪. তিনটি শহরের নাম কুরআনে উল্লেখ আছে, মক্কা, মদীন এবং কাদিয়ান। (তাযকিরাহ পৃষ্ঠা নং ৬০ চতুর্থ এডিশন)। ৫. হামান থেকে উদ্দেশ্য নও মুসলিম সা’দ উল্লাহ উদ্দেশ্য। (রূহানী খাযায়েন ১১/৩৪০)। ৬. ইউরোশলম (يروشلم) থেকে উদ্দেশ্য কাদিয়ান। (রূহানী খাযায়েন ১৮/৪২০)। ৭. হাদীসে উল্লিখিত লুদ গেইট (بباب لد) মানে পাকিস্তানের শহর লুধিয়ানা। (রূহানী খাযায়েন ১৮/৩৪১)। ৮. আল-আকসা মসজিদ দ্বারা উদ্দেশ্য কাদিয়ানের মির্যা কর্তৃক নির্মিত মসজিদ। (রূহানী খাযায়েন ১৬/২১)। ৯. জাহান্নাম মানে প্লেগ মহামারি। (রূহানী খাযায়েন ২২/৫৮৩)। ১০. জান্নাত হতে বিভ্রম বা মনোবৃত্তি উদ্দেশ্য (وهم) উদ্দেশ্য। ১১. মুহাদ্দাসীয়ত মানে নবুওয়ত। (রূহানী খাযায়েন ২২/৫০৩)। ১২. দুটি হলুদ কাপড় (مهرودتين) মানেই দু‘টি রোগ (মিরাক/সিজোফ্রেনিয়া এবং বহুমুত্র রোগ) উদ্দেশ্য। (রূহানী খাযায়েন ২২/৩২০, তাযকিরাতুশ শাহাদাতাইন, বাংলা ৪৯)। ১৩. আদম, ঈসা ও মূসা হতে উদ্দেশ্য মির্যা কাদিয়ানী। (তাযকিরাহ)। ১৪. দাজ্জাল মানে খ্রিস্টান মিশনারী (রূহানী খাযায়েন ২২/৪৫৬), দাজ্জাল মানে শয়তান (রূহানী খাযায়েন ১৪/২৯৬)। ১৫. ফেরাউন মানে আহলে হাদীস শায়খ মুহাম্মদ হুসাইন বাটলভী। ১৬. হিন্দু মানে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ। ১৭. মৃত্যু (موت) মানে বিজয় (فتح)। (তাযকিরাহ ৫০৩)। ১৮. কথিত ইলহাম ছায়্যিবুন বা (ثيب) হতে মির্যার স্ত্রী নুসরাত জাহান উদ্দেশ্য (জালালুদ্দিন শামস কৃত ব্যাখ্যা), (তাযকিরাহ ৩১)। ১৯. দাব্বাতুল আরদ (دابة الارض) মানে প্লেগের পোকামাকড় (রূহানী খাযায়েন ১৮/৪১৬), উলামায়ে ছূ, (রূহানি খাযায়েন ৭/৮); নেক মানুষের দল (রূহানী খাযায়েন ৩/৩৭০)। ২০. পাঁচ (৫) মানে পঞ্চাশ (৫০)। ২১. চার (৪) মানে চল্লিশ (৪০)। ২২. ১ দিন মানে ২ বছর। ২৩. ইয়াজুজ মাজুজ দ্বারা উদ্দেশ্য রাশিয়া ব্রিটেন (হামামাতুল বুশরা ৩৮, বাংলা অনূদিত নভেম্বর ২০১১ইং)। ২৪. শয়তান মানে খারাপ চিন্তা। ২৪. ২০০ বছর মানে ১৩০০ বছর। ২৫. ১ম তারিখ মানে ত্রয়োদশ তারিখ। ২৬. রমাযানের অর্ধ-তারিখ হতে আঠাশ (২৮) তারিখ উদ্দেশ্য।
পরিশেষ, যার চোখ আছে দেখবে, আর যার বিবেক আছে চিন্তা করবে। কাদিয়ানী জামাতে থেকে বে-ঈমান অবস্থায় কবরে যাবে নাকি হায়াত থাকতে মির্যা গোলামকে তিন তালাক দিয়ে বের হয়ে ইসলামে ফিরে আসবে।
লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক।