ইমাম মাহদীকে আলেমরা তাকফির করা

0
ইমাম মাহদীকে আলেমরা তাকফির করা

প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীকে সমসাময়িক যুগের আলেমগণ তাকফির করবেন, এভাবে উক্তিটি নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী (রহ.)-এর গ্রন্থে সম্পূর্ণরূপে যেভাবে উল্লেখ রয়েছে সেভাবে কাদিয়ানীরা জীবন চলে গেলেও পেশ করতে চাইবেনা। তার কারণ কী তা বুঝতে হলে চলুন, পুরো উক্তিটি একবার দেখে আসি!

আল্লামা নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী (রহ.) রচিত হিজাজুল কিরামাহ ফী আসারিল কিয়ামাহ’ (ফার্সি) গ্রন্থের ৩৬৩ নং পৃষ্ঠায় লিখা আছে,

چہ مہدی و عیسی ہر دو ناصر دین اسلام و تابع سنت خیر الانام و محی سنن رسول کریم باشند۔ پس فعل و عمل ہریکی گویا صینع دیگری سے بلاتفاوت و چوں مہدی علیہ السلام مقاتلہ بر احیاء سنت و اماتت بدعت فرماید علماء وقت کہ خوگر تقلید فقہاء و اقتداء مشائخ و آباء خود باشند گویند ایں مرد خانہ بر انداز دین و ملت ماست وبمخالفت برخیز و بحسب عادت خود حکم بتکفیر و تضلیل وی کنند۔کنند۔ اما از سطوت سیف او و جلال شوکتش کار ایشاں پیش نرود و دو دمان تقلید بی چراغ گردد و دولت کده سنت بوجود باوجود وی منور شود سنیان متبع غالب و بدعتیاں مقلد مغلوب گردند. و یوئده ما اخرج نعیم بن حماد عن ابی جعفر قال یظهر المهدی بمکة عند العشاء.

অর্থাৎ “তেমনি মাহদী এবং ঈসা ইসলামধর্মের দুই সাহায্যকারী এবং নবীজীর সুন্নাহ’র অনুসারী ও তাঁর সুন্নাতসমূহ পুনরুজ্জীবিতকারী হবেন। ফলে তাদের উভয়ের কাজ ও কর্ম অপরাপর শৈল্পিক দিক থেকে যেন এক ও অভিন্নই। আর যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং বিদয়াত নির্মূল করতে হযরত মাহদী (আ.) লড়াই অব্যাহত রাখবেন তখন সমসাময়িক আলেমগণ যারা ফোকাহাদের তাকলিদকারী এবং মাশায়েখ ও নিজ পূর্ব পুরুষদের আনুগত্যকারী তারা বলবে যে, এই পুরুষটি দ্বীন ও উম্মাহাকে নষ্ট করে দিচ্ছে আর নিজ স্বভাবের দরুন তাকে তাকফির করবে এবং ভ্রষ্ট বলবে। তাঁর তরবারির দাপট আর ক্ষমতার প্রভাবে তাদের কর্মকান্ড অগ্রসর হতে পারবেনা। বংশপরম্পরায় চলে আসা তাকলীদ আলোহীন হয়ে পড়বে। সুন্নতের রাজ্য আলোকিত হবে। মুত্তাবীয়ে শরীয়ত সুন্নীরা বিজয়ী হবে। মুকাল্লিদ বিদয়াতিরা পরাজিত হবে। আবু জা’ফরের সূত্রে ইমাম আবু ন’ঈম ইবনে হাম্মাদ (রহ.)-এর বর্ণনাও একথা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছে যে, তিনি বলেছেন, ইমাম মাহদী এ’শার-এর সময় মক্কায় আত্মপ্রকাশ করবেন।”

সম্পূর্ণ বক্তব্যের খোলাসা : (১) ইমাম মাহদী এবং মসীহ ঈসা তারা ভিন্ন ভিন্ন দুইজন (২) ইমাম মাহদী লড়াই (শস্ত্র যুদ্ধ-জিহাদ) করবেন (৩) তাঁর হাতে তরবারি থাকবে (৪) তিনি ক্ষমতাধর প্রশাসক হবেন (৫) তাঁর সময়টিতে আহলে সুন্নাহর মতাদর্শের উম্মতে মুহাম্মদীয়ারই বিজয়ী হবে (৬) তাঁর আত্মপ্রকাশ হবে মক্কায় এবং এ’শার সময়। (৭) এই গুণে গুণান্বিত প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী সম্পর্কেই নবাব সিদ্দিক হাসান খান সাহেব বলেছেন যে, তৎ সমসাময়িক কতিপয় বিদয়াতি আলেমরাই ইমাম মাহদী সম্পর্কে প্রচার চালাবে যে, এই লোক আমাদের দ্বীন বরবাদ করছে। তারা তাঁকে তাকফির করবে এবং ভ্রষ্ট আখ্যা দেবে। এখন এর সাথে ভণ্ড কাদিয়ানীর কী সম্পর্ক? উপরের একটি বৈশিষ্ট্যও কি তার সাথে যায়? আপনার নিরপেক্ষ বিবেক কী বলে?

সংযুক্ত স্ক্যানকপি :-

আফসোস! কাদিয়ানীরা কাটছাঁট উদ্ধৃতি পেশ করার মাধ্যমে গ্রন্থকারের উদ্ধৃত অংশের সম্পূর্ণ কনসেপ্টই পরিবর্তন করে ফেলতে চেয়েছে, যা নিকৃষ্টতর প্রতারণা ছাড়া কিছুই না। এমতাবস্থায় এদের অন্যান্য উদ্ধৃতি গুলোও মূল কিতাবের সাথে ভালো ভাবে মিলিয়ে দেখা ব্যতীত সত্য মিথ্যা কিভাবে নিশ্চিত হতে পারি?

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here