Home Careers কাদিয়ানীদের মিথ্যাচার প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী শুধুই একজন!

প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী শুধুই একজন!

প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী শুধুই একজন!

ইমাম মাহদী শুধুই একজন হবেন, একাধিক ইমাম মাহদীর কনসেপ্ট ভিত্তিহীন

রাসূল (সা.) অসংখ্য সহীহ হাদীসে প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে গেছেন। তন্মধ্যে একটি হাদীসে এসেছে যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রা.) হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন الْمَهْدِيُّ مِنْ عِتْرَتِي مِنْ وَلَدِ فَاطِمَةَ ‏ অর্থাৎ ইমাম মাহদী আমার ঔরসজাত ফাতিমার বংশ থেকে হবে। (রেফারেন্স :- আবুদাউদ কিতাবুল মাহদী, অধ্যায় নং ৩১; হাদীস নং ৪২৩৫ ইফা হতে প্রকাশিত, হাদীসের মান: সহীহ) । সুতরাং একথা একদমই পরিষ্কার হল যে, রাসূল (সা.) একাধিক ইমাম মাহদীর সংবাদ দেননি, বরং শুধুই একজনের সংবাদ দিয়ে গেছেন। আর যার আগমনের সংবাদ দিয়ে গেছেন তিনি আহলে বাইয়েতের অন্তর্ভুক্ত ও ফাতেমা (রা.)-এর সন্তান হতেই আবির্ভূত হবেন। এটিই সুস্পষ্ট ও চূড়ান্ত। কিন্তু আজকের এই লিখাটি পড়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ইমাম মাহদী তো একজনই, একথা তো সর্বজনসম্মত। তারপরও এইধরনের লিখার উদ্দেশ্যটা কী? আমি আমার সেসব ভাইবোনদের জিজ্ঞাসার উত্তরে বলতে চাই, মির্যা কাদিয়ানীর কতিপয় অনুসারীর একটি বিভ্রান্তিকর দাবী ও বিশ্বাসের অসারতা প্রমাণ করতেই মূলত আজকের এই লিখা। যেহেতু তাদেরকে যখনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয় যে, এই দেখুন হাদীসগুলো! এই সহীহ হাদীসগুলোর কোনো একটিও মির্যা কাদিয়ানীর সাথে যায়না। তাকে ইমাম মাহদী সাব্যস্ত করার কোনো রসদ এগুলোতে নেই। কাজেই রাসূল (সা.)-এর সুসংবাদকৃত সেই একমাত্র ইমাম মাহদী এখনো আসেনি, তবে তিনি যথাসময়ে আসবেন। সুতরাং মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আপনা দাবীতে সত্যবাদী ছিলনা।

আপনি-আমি যখন এভাবে তাদের সামনে তাদেরই ভুলগুলো ও বাস্তবতা তুলে ধরব, তখন গা বাঁচাতে বা মির্যার মাহদী দাবীকে বাস্তব প্রমাণ করতে তারা একধরণের মিথ্যা আর গোঁজামিলের আশ্রয় নিয়ে থাকে। বলে থাকে যে, আরে জনাব! হাদীসে তো একাধিক ইমাম মাহদীর সংবাদ এসেছে। মির্যা কাদিয়ানী সাহেব যদিও ফাতেমা (রা.)-এর বংশধর বা আহলে বাইয়েতের মধ্য হতে নন, তাতে অসুবিধা কোথায়? ইমাম মাহদী যেহেতু আরও অনেক হবেন সেহেতু তিনি তাদের মধ্য থেকে কোনো না কোনো একজন তো নিশ্চয়ই হবেন! এবার আশাকরি বুঝতেই পেরেছেন যে, তারা কী অসম্ভব রকমের বিভ্রান্তিতে নিপতিত। এইজন্যই লিখাটি লিখতে হল!

এবার আমি সেসব হতভাগা বিভ্রান্ত ও বিপথগামী আহমদীবন্ধুদের উদ্দেশ্যে তাদেরই চতুর্থ খলীফা মির্যা তাহের আহমদ সাহেবের রচিত বই থেকে দেখাব যে, তিনি নিজেও পরিষ্কার করে লিখে গেছেন যে, ইমাম মাহদী শুধুই একজন। রাসূল (সা.) শুধুই একজন ইমাম মাহদী আসার সংবাদ দিয়ে গেছেন। (রেফারেন্স ‘মাজালিসে ইরফান’ বা مجالس عرفان (উর্দূ) পৃষ্ঠা নং ৭২)।

আমি মির্যা তাহের আহমদ সাহেবের কিতাব থেকে উর্দূটা অনুবাদ সহ নিচে তুলে ধরছি, মির্যা তাহের আহমদ সাহেব লিখেছেন, اور یہ ہو نہیں سکتا کہ خدا نے دس امتی نبی بہیجنے ہوں اور صرف ایک کی خبر دے۔ اس لئے عقلا امکان اور چیز ہے۔ واقعتا کتنے آئیں گے حضرت اقدس محمد مصطفی صلی اللہ علیہ وسلم سے پوچھے بغیر فیصلہ نہیں ہو سکتا۔ اور آپ صلی اللہ علیہ وسلم نے ایک امام مہدی کی خبر دی ہے۔ یہ تو ہمیں علم ہے۔ اور ہم ایک کو مان بھی بیٹہے ہیں۔ اس لئے کل کو اگر کسی نے دعوی کیا تو جماعت احمدیہ اس سے پوچھے گی کہ ہم نے پہلے کو تو اس لئے ماننا تھا کہ اس کے متعلق آنحضور صلی اللہ علیہ وسلم کی خوشخبریاں تھیں۔ اگر تم سچے ہو تو وہ خوشخبریاں دکھاؤ ہم تمہیں بھی مان لیں گے۔ یہ ہمارا مسلک ہے۔ অর্থাৎ ‘আর এটা তো হতে পারে না যে, খোদাতালা উম্মতিনবী পাঠাবেন দশজন আর সংবাদ দিবেন শুধুই একজনের। বুদ্ধির দাবীতে (যদিও বা এইরূপ) সম্ভাবনা থাকাটা ভিন্ন জিনিস তবে বাস্তবে কতজন আগমন করবে তা তো হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করা ব্যতীত সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না। আর হযরত (সা.) একজন ইমাম মাহদীরই সংবাদ দিয়ে গেছেন, এটি তো আমাদের জানা কথা। আর আমরা একজনকেই মেনে বসে আছি। কাজেই আগামীকাল যদি দ্বিতীয় কেউ (ইমাম মাহদী হওয়ার) দাবি করে তাহলে জামাতে আহমদীয়া তাকে জিজ্ঞেস করবে যে, আমরা তো আগের ইমাম মাহাদীকে এজন্যই মেনে নিয়েছিলাম যে, তার সম্পর্কে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুসংবাদ ছিল। (কাজেই এখন) যদি তুমি তোমার দাবিতে সত্যবাদী হও তাহলে তোমার ব্যাপারে সুসংবাদ সমূহ প্রদর্শন করো! আমরাও তোমাকে মেনে নেব! এটাই হচ্ছে আমাদের মাসলাক তথা রায়।’ (মাজালিসে ইরফান [مجالس ]-৭২; মির্যা তাহের আহমদ)। স্ক্রিনশট:-

মির্যা তাহের আহমদ এর রচিত – মাজালিসে ইরফান :৭২

শেষকথা, আমার প্রিয় আহমদী ভাই ও বোনেরা! আল্লাহর ওয়াস্তে সত্যটা খুঁজুন, সত্যটা বুঝার চেষ্টা করুন। অন্ধ হবেন না। আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া বুঝার শক্তি দিয়েছেন, পরিবার বুঝতে শিখেছেন। নিজের ভালো মন্দ সবই বুঝতে সক্ষম। তাহলে কিজন্য নিজের দ্বীন ধর্ম আর ইসলামি শিক্ষায় আপনি অন্ধ থাকবেন? কেন নিরপেক্ষ ভাবে যাচাই করবেন না যে, সেই একমাত্র প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীর প্রকৃত পরিচয় কেমন? জাল আর জঈফ হাদীসগুলো বাদ দিয়ে আপনি অন্তত সহীহ ও বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হাদীসগুলো পড়ুন (ইমাম মাহদী সংক্রান্ত ১২টি নির্বাচিত সহীহ হাদীস)। ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসগুলোর সনদ (সূত্র) সম্পর্কে গত হাজার বছর আগ থেকেই বিশেষজ্ঞ ইমামগণ সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন যে, কোন কোন হাদীস সূত্রের বিচারে সহীহ ও গ্রহণযোগ্য আর কোন কোন হাদীস অপ্রমাণিত ও বাতিল। ইনশাআল্লাহ, আপনি নিরপেক্ষ ভাবে সত্য খোঁজে দেখুন। একদিন অবশ্যই আপনি আপনার প্রত্যাশিত সত্য পথ পেয়ে যাবেন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

Previous article মির্যার স্ববিরোধীতা-৩০
Next article কাদিয়ানীদের ‘সালানা জলসা’ হজ্জের মত!
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! এটি সম্পূর্ণ দ্বীনি ও অলাভজনক একটি ওয়েবসাইট। প্রতি বছর এটির ডোমেইন ও হোস্টিং ফি হিসেবে আমাকে এর ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। যদি উক্ত ব্যয় বহন করতে অপারগ হই তাহলে এই সাইটটি নিশ্চিত বন্ধ হয়ে যাবে। সেহেতু আপনাদের সবার নিকট আবেদন থাকবে যে, আপনারা সাইটটির উক্ত ব্যয় বহনে এতে বিজ্ঞাপন দিতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করবেন এবং নিজেরাও সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। বিনীত এডমিন! বিকাশ : ০১৬২৯-৯৪১৭৭৩ (পার্সোনাল)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here