হযরত আদম (আ.) “প্রথম মানুষ” ছিলেন না, তার আগেও মানুষ ছিল (নাউযুবিল্লাহ), এটি কাদিয়ানীদের অন্যতম একটি কুফুরি বিশ্বাস। তাদের লিটারেচার গুলোই এর সাক্ষী। নিচে স্ক্যানকপি পেশ করা হবে!
এইরূপ আকীদা রাখার পরিণাম ফল হল,
[১] পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত ‘আদম’ নামীয় মানুষটির প্রকৃত অবস্থা (প্রথম নবী ও মানব জাতির আদি পিতা) অস্বীকার করার শামিল।
[২] ইসলামের মূলধারার শিক্ষা ও ইজমার বিপরীতে সম্পূর্ণ নতুন তথা বিদয়াতি আকীদা পোষণ করার নামান্তর। এই পর্যায় কাদিয়ানীদের উক্ত বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসের অসারতা তুলে ধরতে বিবেক-জাগানিয়া কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই!
কাদিয়ানীদের প্রতি প্রশ্নগুলো এই,
[১] মির্যা কাদিয়ানী মানব সভ্যতার আয়ু হযরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত মাত্র পাঁচ হাজার বছর বলে লিখে গেছেন। ফলে একথা সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, প্রথম মানুষটা কে সেটি মির্যা সাহেব নিশ্চয়ই জানতেন! নইলে তিনি কিভাবে পাঁচ হাজার বছরের হিসেব লিখে যেতে পারলেন? (দেখুন, ইসলাম ও এদেশের অন্যান্য ধর্মমত পৃষ্ঠা নং ৪২-৪৩)। উল্লেখ্য, উক্ত বইয়েরই ৪৮ নং পৃষ্ঠায় একদম পরিষ্কার করে এও লিখা আছে যে, ‘আর এই (সকল) সভ্যতার পূর্ণ চক্রের আয়ু সাত হাজার বছর পর্যন্ত প্রসারিত।‘ এ থেকে বুঝা গেল, মোট মানব সভ্যতার সর্বসাকুল্য আয়ু মাত্র সাত হাজার বছর, তারপরই কেয়ামত হয়ে যাবে। (পৃ-৪৮ দ্রষ্টব্য)।
কিয়েক্টাবস্থা! কেয়ামতের আর কতদিন বাকি মির্যা সাহেব নির্দিষ্ট করে তাও বলে দিলেন!! অথচ….!
[২] সহীহ বুখারীর হাদীসে আছে, কেয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ শাফায়াতের প্রথম পর্বে সর্বপ্রথম আদম (আ.)-এর নিকট যাবেন (فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ)। হাদীসে এসেছে, সমস্ত মানুষ আদমের নিকট উপস্থিত হয়ে বলবেন, আপনি আমাদের জন্য শাফায়াত করুন আপনার রবের নিকট। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৫১০)। এখন এই “আদম” নামীয় মানুষটি একই সঙ্গে নবী আর আদি পিতা, দুটোই ছিলেন না কিভাবে? আদি পিতা হলে, তাঁর আগেও আরও কিছু মানুষ কিভাবে থাকতে পারে? এরপর দেখুন, বুখারীর হাদীসও বলছে যে, আদমই আদি পিতা!
[৩] রাসূল (সা.) মেরাজে যখন যান তখন প্রথম আসমানে আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর সাথে নবীজীর দেখা হলে জিবরাঈল (আ.) পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় বলেছিলেন هَذَا أَبُوكَ آدَمُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ অর্থাৎ ইনি আপনার পিতা আদম, আপনি তাঁর প্রতি সালাম পেশ করুন। (সহীহ বুখারী, ইসরা ও মেরাজের অধ্যায়)। আদম (আ.) সম্পর্কে জিবরাঈল নবীজীকে বলছেন, ‘হাযা আবূকা আদাম, ফাসাল্লিম আ’লাইহি’ (ইনি আপনার পিতা আদম…)। এখন আদম (আ.) নবী হওয়া, সে সাথে আদি পিতাও হওয়া; দুটোই প্রমাণিত হল কিনা?
এরপরেও কাদিয়ানী মতবাদ অনুসারে, হযরত আদম (আ.)-এর পূর্বেও মানুষ ছিল, একথা গ্রহণযোগ্য হয় কিভাবে?
আসলে কাদিয়ানীরা এইরকম অসংখ্য ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহার সর্বসম্মত আকীদা বিশ্বাসের বিপরীতে অবস্থান করার কারণেই ইসলামের গণ্ডি থেকে সম্পূর্ণ বাহিরে!
লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।