Home হজ্জ্ব কথিত ‘ছায়া হজ্জ’ বনাম ‘মক্কার হজ্জ’ সম্পর্কে

কথিত ‘ছায়া হজ্জ’ বনাম ‘মক্কার হজ্জ’ সম্পর্কে

0
কথিত ‘ছায়া হজ্জ’ বনাম ‘মক্কার হজ্জ’ সম্পর্কে

কাদিয়ানীবন্ধুদের আরেকটি ধর্মবিশ্বাস তাদের সালানা জলসা ‘ছায়া হজ্জ’! তাদের উক্ত বিশ্বাসের খোলাসা হচ্ছে, মক্কার হজ্জ মূলত কোনো উপকারী হজ্জই নহে যতক্ষণ না তাদের (কাদিয়ানীদের) ‘সালানা জলসা’তে শরিক হবে। সহজ করে বললে, তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে যে, মক্কায় অনুষ্ঠিত মুসলিম উম্মাহার এই হজ্জ সম্পূর্ণ রসহীন তথা নিষ্ফল, কোনো উপকারিতা নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর প্রবর্তিত ‘সালানা জলসা’ (বার্ষিক সম্মেলন) পালন করা না হবে। নিচের স্ক্রিনশট থেকে দেখে নিন!

পয়গামে সুলহে ১৯/০৪/১৯৩৩ ইং

মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ এর একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি টেনে পয়গামে সুলহে পত্রিকায় লাহোরী মুভমেন্ট এর এডিটর ডাক্তার বাশারত আহমেদ সাহেব লিখেছেন, پچہلے دنوں خلیفہ صاحب نے ظلی حج کا اعلان کیا اور بتایا کہ مکہ کا حج چونکہ اپنے مقصد حقیقی کو کہو چکا ہے اور ایک رسمی عبادت کی شکل میں رہ گیا ہے اسلئے اللہ تعالیٰ نے قادیان میں ایک اور ظلی حج مقرر کیا ہے অর্থাৎ দিন কতেক আগে খলীফা (মির্যা বশির উদ্দিন) সাহেব জিল্লী হজ্জের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মক্কার হজ্জ যেহেতু আপনা আসল উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলেছে এবং গতানুগতিক শুধুই একটি ইবাদতের রূপ ধারণ করেছে, সেহেতু আল্লাহতালা কাদিয়ানে দ্বিতীয় আরেকটি জিল্লী হজ্জ চালু করে দিয়েছেন।’ (সূত্র “পয়গামে সুলহে” পাতা ৪, কলাম ২, তাং ১৯/০৪/১৯৩৩ ইং)। কথিত এই জিল্লি হজ্জ সম্পর্কে আরও কিছু উদ্ভট বর্ণনা সম্পর্কে জানতে পরবর্তী স্ক্যানকপি গুলোও দেখা যেতে পারে।

  • মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ এর ‘খুতুবাতে মাহমুদ’ গ্রন্থেও লিখা আছে যে, জলসাও হজ্জের মত (স্ক্রিনশট সহ পড়ুন) Click

ডকুমেন্ট পরিচিত : পয়গামে সুলহে, কাদিয়ানী জামাতের দ্বিতীয় বৃহত্তর গ্রুপের অফিসিয়াল পত্রিকা। আমার নিকট মনে হচ্ছে, এটি প্রতি তিন দিবস অন্তর প্রকাশিত হয়ে থাকে। মির্যা কাদিয়ানীর সিনিয়র সহচর মুহাম্মদ আলী লাহোরী’র প্রতিষ্ঠিত ‘লাহোরি মুভমেন্ট’ কর্তৃক লাহোর থেকে প্রকাশিত। তাদের কেন্দ্রীয় ওয়েব সাইট www.aaiil.org থেকে এর পিডিএফ গুলো ডাউনলোড করা যায়। পত্রিকাটি মূলত তাদেরই প্রতিপক্ষ গ্রুপ তদানিন্তন কাদিয়ানী দ্বিতীয় খলীফা মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ গ্রুপের অফিসিয়াল দৈনিক পত্রিকা ‘আল ফজল’-কে ডিফাইন করতেই বের হত। তাদের মধ্যে প্রথমাবস্থায় বিরোধিতার সূত্রপাত ঘটে ১৯১৪ সালে তাদের প্রথম খলিফা হেকিম নূরউদ্দিনের মৃত্যুর পর। তখন কাদিয়ানী জামাতের একটি অংশ এবং মির্যার স্ত্রী নুসরাত জাহানের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদকে খলীফা নির্বাচন করা হয়। অথচ তখন মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ বয়সে খুব ছোট, মাত্র ২৭ বছরের ছিল। আর অপর দিকে মির্যা কাদিয়ানীর ঘনিষ্ঠ সহচর মুহাম্মদ আলী লাহোরীও দ্বিতীয় খলীফার জন্য প্রার্থী হয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ব্যর্থ হন। তারপর তিনি কাদিয়ানী অনুসারীদের বৃহত্তর একটি অংশ নিয়ে ‘লাহোরি মুভমেন্ট‘ গঠন করেন। বর্তমানে ‘লাহোরি মুভমেন্ট’ এর পঞ্চমতম আমীরের যুগ চলছে, নাম প্রফেসর আব্দুল করীম সাঈদ লাহোরী।

লাহোরি মুভমেন্ট এর পঞ্চম আমীর, আব্দুল করীম সাঈদ

কাদিয়ানীদের সব চেয়ে বড় গ্রুপ ‘আহমদীয়া কমিউনিটি’-এর বর্তমান পঞ্চম খলীফা মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদের প্রপৌত্র মির্যা মাসরূর আহমদ। তাদের এই বৃহত্তর দুটি গ্রুপের মধ্যকার বুনিয়াদী ইখতিলাফ ৪টি। যথা- (১) মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নবী নন, তার ‘নবী’ দাবীটা শুধুই আক্ষরিক অর্থে বিবেচিত হবে, মূলত তার নবী শব্দ থেকে ‘মুহাদ্দাস‘ উদ্দেশ্য। (২) মির্যা সাহেবকে অস্বীকার করা দ্বারা কেউ অমুসলিম বা কাফের হবেনা, বড়জোর ‘ফাসেক’ এবং পরকালে ‘শাস্তির উপযুক্ত’ বলে গণ্য হবে। (৩) মির্যা সাহেবের ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী সেই ‘মুসলেহ মওউদ’ মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ নন। কেননা ‘মুসলেহ মওউদ’-এর ভবিষ্যৎবাণী মির্যা সাহেবের আসমানী বিবি মুহাম্মদী বেগমের সাথে সম্পর্কিত ছিল। মির্যা সাহেবের সাথে উক্ত আসমানী বিবির বিবাহ সংঘটিত হবার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। (বলে রাখা জরুরি, লাহোরিরা বিশ্বাস করে, আসমানী বিবির সাথে মির্যা সাহেবের বিবাহ জান্নাতে হবে)। (৪) ‘জামাত’ পরিচালনা জন্য ‘খিলাফত পদ্ধতি’ নয়, বরং একটা ‘আঞ্জুমান’ তথা পরিচালনা পর্ষদ হতে হবে। কেননা, খিলাফতের ক্রমধারা নবী থেকে আরম্ভ হয়। অতএব মির্যা সাহেবের নবী দাবীটা যেহেতু ‘মুহাদ্দাস’ অর্থে ধর্তব্য, সেহেতু মির্যা সাহেব থেকে খিলাফতের ক্রমধারা আরম্ভ হওয়া সম্ভব নয় (লাহোরী গ্রুপের বক্তব্য শেষ হল)।

  • আরও কিছু প্রাসঙ্গিক স্ক্যানকপি এই (মূল স্ক্রিনের উদ্দিষ্ট অংশটি ১ এবং ২ নং থেকে Zoom করে দেখানো হল)।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

Previous article ইউনুস নবীর নামে মির্যা কাদিয়ানীর মিথ্যাচার
Next article ইন্নি মুতাওয়াফফীকা (انى متوفيك) এর তাৎপর্য
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! এটি সম্পূর্ণ দ্বীনি ও অলাভজনক একটি ওয়েবসাইট। প্রতি বছর এটির ডোমেইন ও হোস্টিং ফি হিসেবে আমাকে এর ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। যদি উক্ত ব্যয় বহন করতে অপারগ হই তাহলে এই সাইটটি নিশ্চিত বন্ধ হয়ে যাবে। সেহেতু আপনাদের সবার নিকট আবেদন থাকবে যে, আপনারা সাইটটির উক্ত ব্যয় বহনে এতে বিজ্ঞাপন দিতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করবেন এবং নিজেরাও সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। বিনীত এডমিন! বিকাশ : ০১৬২৯-৯৪১৭৭৩ (পার্সোনাল)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here