মির্যা কাদিয়ানীর ‘নবী রাসূল’ দাবী করার পূর্বে সে কোন মাযহাবে ছিল? হানাফী? শাফেয়ী? মালেফী? হাম্বলী? নাকি ‘আহলে হাদীস’ মাযহাবের ছিল?
উত্তর : ভারত উপমহাদেশের বেশিরভাগই হানাফী মাযহাবের ফিকহ অনুসরণ করতেন বিধায় মির্যা কাদিয়ানীও সে একই মাযহাবের ফিকহ অনুসরণ করে থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে নবী রাসূল দাবী করার পর থেকে তিনি নির্দিষ্ট কোনো মাযহাবের অনুসরণ করতেন না। সহজ করে বললে, তিনি মুক্ত তাকলিদ করতেন। অর্থাৎ যখন যে মাসয়ালায় সুবিধা নিতে চাইতেন তখন সে মাসয়ালা মতে তিনি আমল করতেন। অপ্রিয় হলেও সত্য, তিনি ইরতিদাদের দিকে ঝুঁকে পড়ার পূর্ব মুহূর্তে পর্যায়ক্রমে ‘লা মাযহাবী’ তারপর ‘হাদীস অস্বীকারকারী’ হয়ে পড়েন। হাদীসের প্রতি তার কীরকম বিদ্বেষ ও বিরুক্তি ছিল তা বুঝতে চাইলে তার ‘কিশতিয়ে নূহ’ বইটির শেষের দিকে (পৃষ্ঠা নং ৭৭, জুন ২০১৮ ইং) কয়েকটি পাতা পড়ে দেখুন। যাইহোক, একথা দিবালোকের মত সুস্পষ্ট যে, শরীয়তের শাখাগত ইখতিলাফি মাসয়ালায় উর্ধতন কোনো ইমামকেই তিনি ফলো করতেন না, বরং হানাফী, শাফেয়ী ইত্যাদী পরিচয়কে তিনি ‘বিদয়াত’ আখ্যা দিয়ে গেছেন। নিচে তারই লিখনী থেকে,
(উর্দু থেকে অনুবাদ) “লোকেরা নিজেদের নাম হানাফী, শাফেয়ী ইত্যাদি রেখেছে, এ সবই বিদয়াত। রাসূল (সা.)-এর নাম দু’টিই ছিলো। একটি হল মুহাম্মদ আরেকটি হল আহমদ (সা.)। রাসূল (সা.)-এর ইসমে আজম হল, মুহাম্মদ (সা.)। যেমন আল্লাহতালার ইসমে আজম হল আল্লাহ। আল্লাহ নামটি বাকি সমস্ত নাম তথা হাইয়্যুন, কাইয়্যুম, রহমান, রহীম ইত্যাদির মাউসূফ। রাসূল (সা.)-এর নাম আহমদ। …এভাইে ইসলামী মাযহাবগুলো ভুল করেছে। কেউ নিজেদের হানাফী বলেছে তো কেউ নিজেদের মালেকী বলছে, কেউ নিজেদের শীয়া, কেউ বা সুন্নী বলছে। অথচ রাসূল (সা.)-এর নাম ছিল দুইটি। মুহাম্মদ ও আহমদ (সা.)। সুতরাং মুসলমানদের দুটি দলই হতে পারে। মুহাম্মদী বা আহমদী। মুহাম্মদী সে সময় যখন তার মাঝে জালাল তথা তেজস্বীতার প্রভাব প্রবল ছিল, আর আহমদী তখন যখন জামাল তথা সৌন্দর্যতার প্রভাব থাকবে। (সূত্র: মালফুযাত ১:৪৪৩-৪৪ নতুন এডিশন, পুরাতন এডিশন ২:২০৮-২০৯)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি
লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী