Home সাধারণ ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-কে সত্যিই কি দুই বার কুফুরী (كفر) থেকে তাওবা করানো হয়েছিল?

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-কে সত্যিই কি দুই বার কুফুরী (كفر) থেকে তাওবা করানো হয়েছিল?

0
ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-কে সত্যিই কি দুই বার কুফুরী (كفر) থেকে তাওবা করানো হয়েছিল?

সম্পর্কিত খণ্ডনমূলক আর্টিকেলটির লিংক নিন্মে দেয়া হল,

আর্টিকেল Click

রাবী বৃত্তান্ত

1 গ্রন্থকার হাফিয ইমাম আবুল কাশিম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আব্দিল্লাহ আস সা’দী ❝ইবনু আবীল আ’ওয়াম❞ নামে প্রসিদ্ধ ((ابو القاسم عبدالله إبن محمد إبن أحمد إبن يحيى إبن الحارث السعدى، ابن أبى العوام))। মৃত্যু: ৩৩৫ হিজরী।

উল্লেখ্য বিশিষ্ট মুহাক্কিক শায়খ লতিফুর রহমান আল- বাহরাইজি লিখেছেন (( أصل الكتاب لابى القاسم جد ابى العباس…و ابو العباس روى عنه بواسطة ابيه أبى عبدالله محمد ابن عبدالله )) অর্থাৎ কিতাবটির মূল লিখক আবুল কাশিম হচ্ছেন আবুল আব্বাসের দাদা…এবং আবুল আব্বাস সেটি তার পিতা আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে আব্দিল্লাহ থেকে রেওয়ায়েত করেছেন। (মানাকিবু আবী হানীফা – পৃষ্ঠা নং ৭, ভুমিকা দ্রষ্টব্য)।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘উ’কূদুল জুমান’ রচিতা ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ আস সালেহী (মৃত. ৯৪২ হিজরী) বলেছেন ((كلهم حنفيون ثقات اثبات نقاد)) অর্থাৎ তারা সকলেই বিশ্বস্ত হানাফি স্কলার। (মানাকিবু আবী হানীফা – পৃষ্ঠা নং ৬, ভুমিকা দ্রষ্টব্য)।

ইমাম আব্দুল কাদির মুহাম্মদ ইবনে নাসরুল্লাহ আল কারশী (মৃত. ৬৯৬ হিজরী) লিখেন ((أَحْمد بن مُحَمَّد بن عبد الله بن مُحَمَّد بن أَحْمد بن يحيى بن الْحَارِث أَبُو الْعَبَّاس عرف بِابْن أبي الْعَوام السَّعْدِيّ يَأْتِي أَبوهُ وَعبد الله جده من بَيت الْعلمَاء الْفُضَلَاء وَأحمد هَذَا أحد قُضَاة مصر مولده بهَا سنة تسع وَأَرْبَعين وَثَلَاث مائَة روى عَن أَبِيه عَن جده روى عَنهُ أَبُو عبد الله مُحَمَّد بن سَلامَة الْقُضَاعِي)) অর্থাৎ ❝আহমদ ইবনে মুহাম্মদের পিতা এবং দাদা (মিশরীয়) শীর্ষস্থানীয় আলেমগণের বাসায় যাওয়া আসা করতেন। ইমাম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ নিজেও স্বীয় জন্মস্থান মিশরের অন্যতম একজন বিচারপতি ছিলেন। তিনি ৩৪৯ হিজরীবর্ষ থেকে নিজ পিতা এবং দাদার কাছ থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর তাঁর কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে সালামাহ আল-কুদা’ঈ।❞

হাফিয ইমাম আবুল কাশিম ইবনু আবীল আ’ওয়াম (রহ.) এর সম্পূর্ণ বৃত্তান্ত জানতে পড়ুন ‘আল জাওয়াহিরুল মুদিয়্যাহ’ ১/২০৯।

2 তিনি (হাফিয ইমাম আবুল আবুল কাশিম আহমদ ইবনে মুহাম্মদ) বলেন, ❝আমি  এ তথ্য পেয়েছি আবূ আলী আল হাসান ইবনু হাম্মাদ ইবনে কুসাইব আল হাযরামী ((أبو علي ، الحسن بن حماد بن كسيب الحضرمي البغدادي)) এর হাদীসগ্রন্থে, আর আমি তার সূত্রে এটি বর্ণনা করছি।❞ ইমাম যাহাবী তার সম্পর্কে বলেছেন ((قلت : كان من جلة العلماء وثقاتهم في زمانه)) আমি বলি, তিনি উঁচু মর্যাদা সম্পন্ন একজন আলেম ও সমসাময়িক অন্যতম একজন সিকাহ তথা বিশ্বস্ত ব্যক্তি। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১১/৩৯৩)। মৃত্যু: ২৪১ হিজরী।

3 তিনি বলেন, এটি আমাকে বর্ণনা করেছেন আবূ কুতন আমর ইবনুল হাইসাম আল যুবায়দী ((أبو قطن عَمْرو بن الْهَيْثَم الزبيدِيّ))। জন্ম-মৃত্যু: ১২১-১৯৮ হিজরী। একজন সিকাহ। ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন বলেন, ((إن أبا قطن اسمه عمرو بن الهيثم بن قطن بن كعب وانه ثقة)) তিনি একজন সিকাহ। (আল জারহু ওয়াত তা’দীল’ ৬/২৬৮ ইমাম ইবনে আবী হাতিম আর-রাযী)। তিনি সহীহ মুসলিম-এরও একজন রাবী। তিনি ইমাম শু’বাহ ইবনুল হাজ্জাজ থেকেও বর্ণনা করেছেন। (তাহযীবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল খ-৩৪ পৃ-২০২ ইমাম মিজ্জি)।

সনদের মানঃ সহীহ ও মুত্তাসিল

প্রশ্ন, উল্লিখিত রেওয়ায়েতটির দ্বিতীয় কোনো বিশুদ্ধ মুতাবা’আত (সমর্থন) আছে কিনা?

উত্তর জ্বী হ্যাঁ, আছে। হিজরী দ্বিতীয় শতকের বিখ্যাত হাফিযুল হাদীস ও শায়খুল মুহাদ্দিসীন উপাধীতে ভূষিত ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) বলেন ((أَحْمَدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ قَالَ سُئِلَ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ وَأَنَا أَسْمَعُ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ فَقَالَ ثِقَةٌ مَا سَمِعْتُ أَحَدًا ضَعَّفَهُ هَذَا شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ يَكْتُبُ إِلَيْهِ أَنْ يحدث ويأمره وَشعْبَة شُعْبَة)) অর্থাৎ  আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে ইবরাহীম আল-দাওরাকী বলেন, ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈনকে আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন আমি শুনছিলাম। উত্তরে তিনি বললেন “আবূ হানীফা সিক্বাহ (বিশ্বস্ত)। কেউ তাঁকে জঈফ (দুর্বল) বলেছেন বলে আমি শুনিনি। এ তো ইমাম শু’বাহ ইবনুল হাজ্জাজ (রহ.) তাঁকে চিঠি লিখে হাদীস বর্ণনা করার আদেশ করেছেন। আর ইমাম শু’বাহ তো শু’বাই।” – সনদ সহীহ। (ইমাম ইবনু আব্দিল বার মালেকী’র ‘আল-ইনতিকা’ [الانقاء], পৃষ্ঠা নং ১২৭)।

প্রথমোক্ত বর্ণনায় ইমাম শু’বাহ (রহ.)-এর কাছ থেকে ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর নিকট পত্র প্রেরণ করার যে ঘটনার উল্লেখ আছে সেটাই যেন অত্র বর্ণনায় আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদ ইবনে ইবরাহীম আল-দাওরাকী (রহ.) ইমাম ইবনে মা’ঈনের সূত্রে বলা হল। সুতরাং পূর্বোক্ত বর্ণনায় বিশুদ্ধতার দিক থেকে শক্তি দ্বিগুণ বৃদ্ধি হল।

তথ্য-সংগ্রাহক মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
এডমিন ফিকহ মিডিয়া


LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here