Home কাদিয়ানী মতবাদ খণ্ডন কাদিয়ানীদের নবী-প্রেম এর আসল রহস্য

কাদিয়ানীদের নবী-প্রেম এর আসল রহস্য

0

কাদিয়ানীদের সব চেয়ে জঘন্য অন্যায় হলো তারা ‘খতমে নবুওয়তে’ (অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুক্ত ও স্বাধীন সর্বশেষ নবী – এটিকে) বিশ্বাস করে না। আর তাদের একখান মেকি গুণ হলো, তারা আপনার সামনে এমনভাবে নবী-প্রেমে বুঁদ হয়ে থাকবে যে আপনি তাদের কোনো ত্রুটিরই টের পাবেন না। এটাকে বলে ‘তাকিয়া’। আর আমার ভাষায় এ তাকিয়ারই অপর নাম ললিপপ। কাদিয়ানীরা জনরোষ সামাল দিতে ও সাধারণদের ধোকা দিতেই যার-তার সাথে উক্ত ‘ললিপপ’ কান্ডে অবতীর্ণ হয়ে থাকে।

আর আপনি জেনে অবাক হবেন যে, পৃথিবীতে কাদিয়ানীদের চেয়ে মারাত্মক ‘নবী বিদ্বেষী’ ও গোস্তাক দ্বিতীয় কাউকে খুঁজে পাবেন না। যেমন- তাদের চেপে রাখা কুফুরী আকীদাগুলোর একটি হচ্ছে-

“এখন কলেমায় পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, ((مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ))-এর অর্থে নতুন একজন রাসূল বৃদ্ধি হয়ে গেছে।” (কালিমাতুল ফছল পৃ-৬৯, লিখক মির্যাপুত্র মির্যা বশির আহমদ এম.এ)।

আরেক জায়গায় একদম নিখুঁতভাবে লিখা আছে যে,

মির্যা কাদিয়ানী নাকি স্বয়ং মুহাম্মদ (সা.)। তাদের অফিসিয়াল উর্দূ পত্রিকা দৈনিক আল ফজল (২৮-১০-১৯১৫)-এর মধ্যে পরিষ্কার লিখা আছে ((مسيح موعود محمد است و عين محمد است)) অর্থাৎ মসীহ মওউদ হচ্ছেন মুহাম্মদ এবং তিনি প্রকৃতপক্ষেই মুহাম্মদ। নাউযুবিল্লাহ।

একই পৃষ্ঠায় আরো খোলাসা করে লিখা আছে,

“তিনি প্রকৃত মুহাম্মদ (সা.) হওয়ার ব্যাপারে বিন্দু পরিমাণেও কোনো সন্দেহ নেই।”

আরো লিখা আছে,

“আল্লাহর নিকট মসীহ মওউদের সত্তা হযরত (সা.)-এরই সত্তাতে পরিণত। তাদের মধ্যে কোনো ভিন্নতা থাকেনি, তারা একই সত্তা।”

আরেক জায়গায় লিখা আছে,

“এ জগত ধ্বংস হতে এখনও এক হাজার বছর অবশিষ্ট আছে।” (ইসলাম ও এদেশে অন্যান্য ধর্মমত পৃ-৪২)। একই পুস্তকে আরও লিখা আছে,

“সপ্তম সহস্র যা খোদা এবং তাঁর মসীহ’র জন্য নির্ধারিত।” (সূত্র ঐ ৪৯)। উল্লেখ্য, মির্যা কাদিয়ানী নিজেকে “মসীহ” তথা ঈসা আলাইহিস সালাম হওয়ার দাবীও করত।

এতে স্পষ্টত সাব্যস্ত হল যে, মির্যা কাদিয়ানীর বিশ্বাস ছিল, তার দাবীর সময় থেকে কেয়ামত পূর্ব দীর্ঘ এই সময়টি শুধু তারই, কার্যত নবুওয়তে মুহাম্মদীয়া অচল। নাউযুবিল্লাহ। নতুবা তার ঐ কথার কী অর্থ?

আরেক জায়গায় লিখা আছে,

“হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগে মিডিয়া না থাকার দরুন তাঁর দ্বারা দ্বীন প্রচারের কাজ পরিপূর্ণভাবে হয়নি। তিনি পূর্ণ প্রচার করেননি। আমি তাঁর বুরুজী রঙ্গে (অবতাররূপে) এসে তাঁর অসম্পূর্ণ কাজগুলো পূর্ণ করেছি।” (রূহানী খাযায়েন ১৭/২৬৩, সারমর্ম)। নাউযুবিল্লাহ।

যাইহোক,

কাদিয়ানীদের সবচেয়ে বড় স্লোগান হলো “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। দেখবেন, তাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি মাহফিলে-মজমায়, তাদের প্রতিটি পোস্টার-সারকুলারে অনেক বড় অক্ষরে এবং অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন করে এই কালেমা লেখা থাকে। কাদিয়ানীরা কোথাও তাদের “কাদিয়ানী” নাম ব্যবহার করে না। তাদের নাম থাকে আহমদীয়া মুসলিম জামাত। ঢাকার বকশিবাজার আলিয়া মাদরাসার পাশে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়।

আপনি যদি কোনো কাদিয়ানীকে জিজ্ঞেস করেন সে খতমে নবুওয়তে বিশ্বাস করে কিনা, তাহলে সে ইনিয়ে-বিনিয়ে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে আপনাকে প্রচুর নবীপ্রেম দেখাবে। তারা এতো নিখুঁতভাবে কথা বলতে জানে যে, অধিকাংশ মানুষ তাদের সাথে বিতর্ক করতে এসে তাদের নবী-ভক্তিমূলক বাক্যালাপের কাছে হেরে যাওয়ার উপক্রম হয়।

কিন্তু তাদের ঈমান(!) খুব টনটনে। তারা ভুলেও একথা স্বীকার করবে না যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘শেষ নবী’।

আল্লাহ্ বলেন, ‘মুহাম্মাদ’ তোমাদের মধ্য থেকে কোনো পুরুষের পিতা নয়। তিনি হলেন আল্লাহর রাসূল এবং ‘শেষ নবী’ (কুরআন ৩৩:৪০)। আপনি যদি আল্লাহর এই কথাকে বিশ্বাস করেন তাহলে বলুন “কাদিয়ানীরা জিন্দিক ও কাফের এবং ইসলামের সব চেয়ে নিকৃষ্ট দুশমন!”

আল্লাহ তালা তাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here