Home উম্মতিনবী ‘উম্মতি’ শব্দকে আশ্রয় করে মির্যা কাদিয়ানীর “নবী” দাবীর গোমর ফাঁস

‘উম্মতি’ শব্দকে আশ্রয় করে মির্যা কাদিয়ানীর “নবী” দাবীর গোমর ফাঁস

0
‘উম্মতি’ শব্দকে আশ্রয় করে মির্যা কাদিয়ানীর “নবী” দাবীর গোমর ফাঁস

মির্যা কাদিয়ানীকে কথিত “উম্মতিনবী” মান্যকারীরা কি আমার এই ১০টি প্রশ্নের উত্তর দেবেন? প্রশ্নগুলো ধারাবাহিকভাবে নিচে তুলে ধরা হল :

  • প্রশ্ন করার আগে বলে রাখা দরকার যে, আমরা যখনি মির্যা কাদিয়ানীর নবী রাসূল দাবী করার বিষয়ে আপত্তি করি তখনি অধিকাংশ কাদিয়ানী মির্যাকে রক্ষা করতে বলে থাকেন যে, আরে না না; উনি নবী দাবী করেননি, উনি তো বরং উম্মতিনবী দাবী করেছিলেন! যার অর্থ ‘মুহাদ্দাস‘, প্রকৃত নবী নয়! তাই তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের প্রশ্ন হল,
লিখক, মির্যা কাদিয়ানী

১। তার মানে কি বুঝাতে চাচ্ছেন যে, যিনি উম্মতিনবী হওয়ার দাবী করেন তাকে মূলত ‘নবী’ দাবীদার বলা যায় না? যদি তাই হয় তাহলে আপনাদের বইতে যে লিখা আছে “তিনি যেমন একজন উম্মতি তেমনি দায়রা-এ-মুহাম্মদীয়ার মধ্যে অবস্থান করেই একজন নবীও” (দেখুন, উম্মতিনবী ৯)। একথার অর্থ কী এই নয় যে, মির্যা সাহেব একই সাথে ‘উম্মতি’ এবং ‘নবী’ দুইয়েরই দাবীদার ছিলেন? তো এবার তিনি ‘নবী’ দাবী করেননি একথা কিভাবে বলতে পারেন? অন্যথা তাকে ‘নবী’ শব্দ বাদ দিয়ে শুধু ‘উম্মতি’ শব্দে লিখা হল না কেন? তাহলে তো সবাই বুঝে নিতেন যে, সে নবী নয়, শুধুমাত্র একজন ‘উম্মতি’!

২। আপনারা এও বলেন যে, তিনি তো শরীয়ত ওয়ালা নবী হওয়ার দাবী করেননি! আমি উত্তরে আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই যে, তাহলে প্রথমেই কেন তার ‘নবী’ দাবী অস্বীকার করেন? প্রথমেই কেন তার দাবীকে উম্মতি, বুরুজি এসব শব্দে বিশেষিত করেন? যাইহোক, তারপর রইল মির্যার দাবীর মধ্যে শরীয়তধারী হওয়াও ছিল কিনা? তার জবাবে আমি মির্যার বই থেকেই এখানে তুলে ধরছি, তিনি লিখেছেন : (ক) “শরীয়তধারী নবীকে অস্বীকার করা ব্যতীত অন্য আর কাউকে অস্বীকার করায় কেউ কাফের হবেনা, চাই সে যেই পর্যায়েরই মুলহাম বা মুহাদ্দাস হোক, কিংবা মহান আল্লাহর নিকট যেই মর্যাদারই অধিকারী হোক না কেন?” (রূহানী খাযায়েন ১৫/৪৩২)। অধিকন্তু মির্যা সাহেব তার অস্বীকারকারীদের কাফের, অমুসলিম এবং জাহান্নামী আখ্যায়িত করার বহু প্রমাণ রয়েছে। তাযকিরা (উর্দু) পৃষ্ঠা নং ৫১৯; চতুর্থ এডিশন দ্রষ্টব্য। তারপরেও কি বলতে চান যে, মির্যা শরীয়তধারী নবী হওয়ার দাবী করেনি!?

তিনি অন্য জায়গায় আরো সুস্পষ্টভাবে লিখেছেন : (খ) “এ ছাড়া এটিও তো চিন্তা কর শরীয়ত কী বিষয়? যিনি নিজের ওহীর মাধ্যমে কতক আদেশ ও নিষেধ বর্ণনা করেন আর স্বীয় উম্মতের জন্য নিয়মকানূন নির্ধারণ করেন তিনিই শরীয়তবাহকও হয়ে যান। সুতরাং এ সংজ্ঞার দৃষ্টিকোণ থেকেও আমাদের বিরোধীরা অভিযুক্ত কেননা আমার ওহীতে আদেশ নিষেধ উভয়ই আছে” (দেখুন, আরবাঈন ১০০-১০১, বাংলা অনূদিত)। এখানে মির্যা কাদিয়ানী শরীয়তধারীর সংজ্ঞা দিয়েই শেষে ‘কেননা আমার ওহীতে আদেশ নিষেধ উভয়ই আছে’ উল্লেখপূর্বক নিজেকে প্রকারান্তরে শরীয়তধারীর অন্তর্ভুক্ত বলে দাবী করলেন কিনা? আসলে মির্যা কাদিয়ানীর বইগুলো আপনাদের পড়া নেই বলেই আপনারা কখনো বলেন সে নবী দাবী করেনি, কখনো বলেন শুধু উম্মতিনবী দাবী করেছিল; আবার কখনো বলেন সে শরীয়তধারী নবী দাবী করেনি। আর যখন তারও প্রমাণ দেয়া হয় তখন সত্যটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য টেনে আনেন ঈসা (আ:) এর প্রসঙ্গ; তিনি জীবিত না মৃত!

৩। আপনাদের বইতে মির্যার নবী দাবীর ব্যাখ্যায় লিখা হয় যে, তার দ্বারা ‘মুহাদ্দাস’ উদ্দেশ্য। এই দেখুন আপনাদের বইতেই লিখা আছে “পক্ষান্তরে আল্লাহর পক্ষ থেকে শরীয়তবিহীন ওহী একাধারে লাভ করার দাবীও বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করেছেন এবং এই ওহী প্রাপ্তির মর্যাদাকে মুহাদ্দাসিয়্যত বলে অভিহিত করেছেন” (হামামাতুল বুশরা ১৪৮; টিকা, বাংলা অনূদিত)। এখানে অন্ততপক্ষে মির্যা কাদিয়ানীর নবী দাবীকে ‘মুহাদ্দাসিয়্যত’ (বান্দার সাথে আল্লাহর কথোপকথন) বলে বুঝানোর প্রমাণ পাওয়া গেল! তাই এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কোনো মুহাদ্দাসকে অস্বীকারকারী ব্যক্তি কাফের কেন হবে? তার থেকে কেউ ফিরে এলে তাকে মুরতাদ কেন বলা হবে?

৪। এখন হয়ত কেউ বলতে পারেন যে, মির্যা কাদিয়ানী কোথায় লিখেছেন যে, তার অস্বীকারকারী ব্যক্তি অমুসলিম বা তার থেকে ফিরে আসা ব্যক্তি মুরতাদ তথা ধর্মত্যাগী? তার জবাব হল, মির্যা সাহেব থেকে তার বহু লেখাতে এর প্রমাণ রয়েছে। দেখুন, তাযকিরাহ (উর্দু) ৫১৯, হাকীকাতুল ওহী (বাংলা) ১৩০। মির্যা কাদিয়ানী তার দীর্ঘ বিশ বছরের সঙ্গী ডাক্টার আব্দুল হাকিম খানকে তার বইয়ের বিভিন্ন স্থানে ‘মুরতাদ’ ও ‘অমুসলিম’ আখ্যা দিয়েছে শুধু এই কারণে যে, সে মির্যাকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে তাকে ত্যাগ করেছিলেন। তাই প্রশ্ন বরাবরের মতই, যার নবী দাবী হতে ভিন্ন কিছু অর্থাৎ মুহাদ্দাস উদ্দেশ্য তাকে অস্বীকারকারী ব্যক্তি কেন কাফের বা মুরতাদ হবে? এমতাবস্থায় আপনারা নতুন আরেকটি ধর্মমতের অনুসারী বলেই গণ্য হবেন না কেন?

৫। হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে, এই উম্মতের মধ্যে মুহাদ্দাস হিসেবে একমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিটি হযরত উমরই। খোদ মির্যা কাদিয়ানীর বইতেও লিখা আছে যে, “আর জেনে রেখো! এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সা:) এর সুন্নত ও হাদীস থেকে যা প্রমাণিত তা হলো, তিনি (সা:) বলেছেন : তোমাদের পূর্বে বনী ঈসরাইলীদের মাঝে এমন মানুষও ছিলেন যারা নবী না হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তা’লা তাদের সাথে বাক্যলাপ করেছেন আর আমার উম্মতে যদি এমন কেউ থাকে সে হলো উমর। পুনরায় বলেছেন, তোমাদের পূর্বে যে সকল উম্মত গত হয়েছে তাদের মাঝে মুহাদ্দাসও ছিলেন। আমার এই উম্মতে যদি তাদের মতো কেউ থাকে তিনি হলেন, উমর বিন খাত্তাব।” (সহীহ বুখারী) হামামাতুল বুশরা ১৪৫-৪৬ (বাংলা অনূদিত) দ্রষ্টব্য। এখানে সহীহ বুখারীর উক্ত হাদীস এর ‘আমার উম্মতে যদি এমন কেউ থাকে সে হলো উমর’ এই কথা দ্বারা উমর (রা:) ব্যতীত এই উম্মতে আর কেউই মুহাদ্দাস হবেনা বলেই সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হল। এমতাবস্থায় মির্যা কাদিয়ানীর নবী শব্দটিকে ‘মুহাদ্দাসিয়্যত’ বলে অভিহিত করার সুযোগ কোথায়? এটি কি সরাসরি হাদীসের বিরুদ্ধাচরণ নয়?

৬। তর্কের খাতিরে মানলাম যে, মির্যার নবী শব্দটির উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু তথা মুহাদ্দাসিয়্যত-ই। অধিকন্তু ‘মুহাদ্দাস‘ আর ‘নবী‘ এই দুইয়ের মাঝে অন্তর্নিহিত যোগ্যতা এবং এর কার্যকারিতার পার্থক্য থাকাটা খোদ মির্যা কাদিয়ানী নিজেও স্বীকার করে লিখে গেছেন। যেমন তিনি লিখেছেন “আমি আমার কোনো কোনো বইয়ে লিখেছি, মুহাদ্দাসের মর্যাদা নবীর পদমর্যাদার সাথে গভীরভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। এই দুইয়ের মাঝে অন্তর্নিহিত যোগ্যতা এবং এর কার্যকারিতার পার্থক্য ছাড়া অন্য কোনো পার্থক্য নেই” (হামামাতুল বুশরা ১৪৬, বাংলা অনূদিত)। খেয়াল করুল, তার এই কথায় যদিও স্ববিরোধি কথার ছাপও রয়েছে তথাপি এইটুকু তো পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, একজন নবী আর একজন মুহাদ্দাস, এই দুইয়ের মাঝে অন্তর্নিহিত যোগ্যতা এবং এর কার্যকারিতার পার্থক্য রয়েছে। কাজেই এই পার্থক্যের দেয়াল টপকে কিভাবে বলা যায় যে, মির্যা কাদিয়ানীর দাবীকৃত নবীর উদ্দেশ্য মুহাদ্দাসিয়্যত!

৭। মির্যা কাদিয়ানীর কথায় বহু স্ববিরোধ থাকা সত্ত্বেও তিনি এক জায়গায় এও লিখেছেন “যদি নবুওয়তের দ্বার রুদ্ধ না হতো তাহলে কার্যত: তিনি (অর্থাৎ মুহাদ্দাস ব্যক্তিটিও) নবীই হতেন” (হামামাতুল বুশরা ১৪৬, বাংলা অনূদিত)। এতে একদম সুস্পষ্ট হল যে, নবী আর মুহাদ্দাস ভিন্ন ভিন্ন দুই জিনিস! তাহলে মির্যা কাদিয়ানীর নবী দাবীকে ভিন্ন কিছু বলে ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ কোথায়? কী জবাব?

৮। মির্যা কাদিয়ানীর মতে কেয়ামত পর্যন্ত আরো যে সমস্ত ‘মুহাদ্দাস’ আসবে তাদেরই মধ্য হতে সে নিজেও একজন বলে লিখে গেছেন। যেমন সে লিখেছে “আঁ হযরতের পরে এই উম্মতের জন্য কোন নবী আসবেনা, না নূতন, না পুরাতন। …তবে মুহাদ্দাস আসবে যার সঙ্গে খোদা বাক্যালাপ করেন এবং পূর্ণ নবুওয়তের কিছু গুণাবলীর তারা প্রতিছায়ারূপে অধিকারী হন এবং কোন কোন দিক দিয়ে নবুওয়তের শান ও মর্যাদার রঙ্গে রঙ্গীন হন। তাদেরই মধ্যে আমি একজন” (নিশানে আসমানী বা শাহাদাতুল মুলহামীন ৪৩ [বাংলা]; লিখক মির্যা কাদিয়ানী)। এখানে খেয়াল করুন ‘তাদেরই মধ্যে আমি একজন’ এইভাবেই উল্লেখ থাকার পরেও সেই ‘আমি’টা (অর্থাৎ মির্যা কাদিয়ানী) কিভাবে লিখতে পারলেন, ‘আমিই একমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি’ অর্থাৎ বুরুজি, উম্মতিনবী হিসেবে একমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিটা আমিই! যেমন তারই ভাষ্য হচ্ছে – “মোটকথা খোদার ওহী ও অদৃশ্য বিষয়ের এই বিপুল অংশের জন্য এই উম্মতে আমিই একমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি” (হাকীকাতুল ওহী ৩৩০, বাংলা অনূদিত)! তাই প্রশ্ন হল, তিনি যাদেরই মধ্য হতে তাদের কেউই যা হতে পারেনা তা মির্যা কাদিয়ানী কিভাবে পারল? তবে কি আল্লাহতায়ালা মুহাদ্দাসদের মধ্যে এমন বৈষম্যপূর্ণ আচরণও করেন, বলবেন? নাউযুবিল্লাহ।

৯। মির্যা কাদিয়ানী এক জায়গায় ঈসা (আ:) সম্পর্কে লিখেছে “আর যেহেতু খোদাতায়ালা কাহারো আকাশে চলে যাওয়ার মত পূর্ব কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেননি তাতেই প্রমাণ হয় তাঁর আকাশে চলে যাওয়ার বিশ্বাস একটি ডাহা মিথ্যা” (মালফূযাত [উর্দু] খন্ড নং ৫ পৃষ্ঠা নং ৩৪০, নতুন এডিশন)। এখানে তিনি ‘পূর্ব কোনো দৃষ্টান্ত’ এইরূপ শব্দচয়নে যেই অজুহাতে ঈসা (আ:)-এর আকাশে চলে যাওয়ার বিশ্বাসকে ডাহা মিথ্যা বললেন সেই একই অজুহাতে তার নিজের কথিত উম্মতিনবী দাবীটাও কেন ডাহা মিথ্যা হবেনা? কেননা এই তথাকথিত উম্মতিনবী কোনো কালে ছিলনা, হবেও না। কী জবাব?

১০। সর্বশেষ এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনাদের বুঝার মত জ্ঞান থেকে থাকে। ইতিপূর্বে বলা হয়েছে যে, আপনাদের বইতেই লিখা আছে “পক্ষান্তরে (মির্যা সাহেব) আল্লাহর পক্ষ থেকে শরীয়তবিহীন ওহী একাধারে লাভ করার দাবীও বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করেছেন এবং এই ওহী প্রাপ্তির মর্যাদাকে মুহাদ্দাসিয়্যত বলে অভিহিত করেছেন” (হামামাতুল বুশরা ১৪৮; টিকা, বাংলা অনূদিত)। খুব খেয়াল করুন, মির্যা কাদিয়ানীর দাবীকৃত নবুওয়তকে ‘মুহাদ্দাসিয়্যত’ শব্দে অভিহিত করা হয়েছে। আর এইজন্যই তার অনুসারীরা বলতে চাচ্ছে যে, মির্যা সাহেব প্রকৃতপক্ষে নবুওয়তি ওহী লাভ করার দাবী করেননি, বরং ভিন্ন কিছু তথা মুহাদ্দাস হওয়ার দাবী করেছেন! অথচ মির্যা কাদিয়ানীর পুত্র ও তথাকথিত মুসলেহ মওউদ মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ লিখেছেন যে, “মির্যা সাহেব ১৯০১ সালে নবুওয়ত সংক্রান্ত পূর্বের আকীদায় পরিবর্তন এনেছেন।” দেখুন তার বইগুলোর সমষ্টি ‘আনওয়ারুল উলূম’ [উর্দু] খন্ড নং ২ পৃষ্ঠা নং ৪৪৪। তিনি একই পৃষ্ঠায় তার প্রমাণও উল্লেখ করেছেন এই বলে যে, তাই তিনি প্রথমে নিজেকে বনী ঈসরাইলী মসীহ থেকে নিজেকে মর্যাদায় নগন্ন আখ্যা দিয়েছিলেন। যেহেতু গয়রে নবী কখনো একজন নবীর সম-মর্যাদার হতে পারেনা। কথিত মুসলেহ মওউদ আরো সুস্পষ্টভাবে লিখেছেন “সুতরাং এক দিকে তার বইগুলো দ্বারা একথা সাব্যস্ত হচ্ছে যে, ১৯০১ সাল থেকে তিনি নবী শব্দ বারবার ব্যবহার করেছেন আর অপরদিকে ‘তারিয়াকুল কুলুব’ (রচনাকাল ১৮৯৯সাল)’র পরে সাব্যস্ত হচ্ছে যে, তিনি নবুওয়ত সম্পর্কে আপনা আকীদায় পরিবর্তন এনেছেন। অতএব সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, ১৯০১ সালের পূর্বে তিনি যে সমস্ত স্থানে নবী হওয়া অস্বীকার করেছেন তা বর্তমানে মানসূখ তথা রহিত হয়ে গেছে। তাই সেগুলো দ্বারা এখন দলিল পেশ করা ভুল হবে।” দেখুন, তার বইগুলোর সমষ্টি ‘আনওয়ারুল উলূম’ [উর্দু] খন্ড নং ২ পৃষ্ঠা নং ৪৪৫। সেযাইহোক, আপনারা মির্যার নবী শব্দকে ‘মুহাদ্দাসিয়্যত’ বলে অভিহিত করাটাও বর্তমানে রহিত হয়ে গেছে মর্মে খোদ মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ নিজেই বলতেছেন! তারপরেও কি বলতে চান যে, না না, মির্যা সাহেব নবী বলে ভিন্ন ধরণের কিছু অর্থাৎ মুহাদ্দাস হওয়ার দাবীই করেছেন!! আফসোস! একজন নবুওয়ত দাবীদার কিভাবে এমন বহুরূপী হতে পারে তা সত্যিই অবাককরা বিষয়!

পরিশেষে প্রমাণিত হয়েছে যে, মির্যা কাদিয়ানীর দাবীকৃত নবী শব্দকে আপনারা উম্মতি বুরুজি কিংবা জিল্লি যত শব্দেই বিশেষিত করেননা কেন, তাকে কোনোভাবেই হালাল করা যাবেনা! সে যে নবুওয়তের দাবী করে মুসাইলামা কাজ্জাবেরই শিষ্যত্ব বরণ করেছে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। নতুবা উপরের প্রশ্নগুলোর কী জবাব? শেষমেষ হয়ত বলবেন, যে যাই বলুক, মির্যা কাদিয়ানীর নবী দাবীটাই সঠিক! তা যে অর্থেই হোক; উম্মতি নবী হোক অথবা প্রকৃত নবী হোক। তার উত্তরে আমি বলব, আপনার বিশ্বাস আপনার সাথে তাতে আমাদের কিছুই যায় আসেনা। তবে আমার আপত্তি শুধু এক জায়গায়, তা হল আপনাদের প্রকৃত ধর্ম-বিশ্বাস যখন এইরূপই তখন কিজন্য সাধারণ মানুষদের এগুলো বলেন না? নিজেদের রিয়েল আইডেন্টিটি তথা প্রকৃত পরিচয় গোপন করে কেন প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষদের ধোকা দিতে বলেন যে, আহমদী আর অ-আহমদীদের মাঝে পার্থক্য শুধু এটাই যে, আগমনকারী ইমাম মাহদীকে আমরা মেনে নিয়েছি আর অ-আহমদীরা মনে করে সেই ইমাম মাহদী এখনো আসেনি! হায় হায়!! একি জঘন্য ধোকাবাজি কথা! সবাইকে ধন্যবাদ। লিখাটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন।

(সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট গুলোর স্ক্রিনশট লাগলে দেয়া যাবে)

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here