কাদিয়ানী ছোট বাচ্ছাদের সাথে ‘ইমাম মাহদী’ সংক্রান্ত বিষয়ে এ কেমন ধোকাবাজি!
হাদীসের নাম ভেঙ্গে কাদিয়ানী জামাতের দায়িত্বশীল নেতারা তাদের অবুঝ কচিকাঁচা বাচ্ছাদের একদম ছোটবেলা থেকেই কিভাবে ভুল শিক্ষা দিচ্ছে দেখুন!
নোট- কাদিয়ানীদের অফিসিয়াল সাময়িকী পাক্ষিক আহমদী, পৃষ্ঠা নং ৪২-৪৩, তাং ৩১ শে মার্চ ১৯৯৭ ইং হতে হুবহু তুলে ধরা হল,
- আমার ১০ লক্ষ টাকার চ্যালেঞ্জ, এখানে উল্লিখিত বিষয়গুলো সত্য সাব্যস্ত করার মত বাংলাদেশের কোনো কেন্দ্রীয় ও পরিচিত কাদিয়ানী নেতা আমার সাথে অনলাইন ডিবেটে বা এই পোস্টে আসার সাহস করতে পারবেনা। আমি প্রমাণ করে দিতে পারব যে, মাত্র এই কয়েকটি পয়েন্টেই তারা অসম্ভব রকমের সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে এবং মারাত্মক পর্যায়ের গোঁজামিল সৃষ্টি করে মানুষকে ধোকা দিয়েছে। যথা-
(১) ইমাম মাহদী দামেস্কের পূর্ব দিকে জন্ম গ্রহণ করবেন (কাঞ্জুল উম্মাল ২য় খণ্ড ২০৩ পৃষ্ঠা)।
(২) হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রসূল করীম (সা.) বলেছেন, এক মহান ব্যক্তি ইমামতের দাবী করবেন। তাঁর প্রকাশ হওয়ার স্থানটি দুটি নদীর মাঝখানে অবস্থিত হবে। (মেশকাত, বাবু আশরাতুস সা’আত – ৪৭১)।
(৩) “মাহদী (আ.) এক পল্লী গ্রাম থেকে দাবী করবেন তার নাম হবে কাদ’আ“। (জাওয়াহেরুল আসরার, বেহারুল আনওয়ার)। উল্লেখ্য, রেফারেন্সকৃত এই দুটি গ্রন্থ হাদীসের কোনো সংকলন নয়। তথাপি আমার চ্যালেঞ্জ রইল, এইরূপ শব্দচয়নে মাহদীর গ্রামের নাম “কাদ’আ” (كدعة) হওয়া মর্মে জাল সূত্রেও উক্ত গ্রন্থদুটিতে কোনো হাদীস উল্লেখ থাকা প্রমাণ করতে পারবেনা। কাজেই এটি তাদের সুস্পষ্ট মিথ্যাচার! (প্রাসঙ্গিক এই লিখাটিও পড়া যেতে পারে- ক্লিক করুন)।
(৪) “যে হাদীসের মধ্যে দেশের নাম হিন্দুস্তান বলা হয়েছিল এর মধ্যে তার নামও বলা হয়েছিল। একদল মাহদীর সাথে জেহাদে অংশগ্রহণ করবে। মাহদীর নাম হবে আহমদ।” (রেফারেন্স নেই)। উল্লেখ্য, এই বর্ণনার কোনো সনদ বা সূত্র নেই। আমার বুঝে আসেনা, এমন ভিত্তিহীন আর কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুও তাদের নিকট অথেনটিক হতে পারে কিভাবে!
(৫) [ইমাম মাহদীর ছবিও আঁকা হয়েছিল, তবে ভাষা দ্বারা] মধ্য আকৃতির হবেন, লাল সাদা মিশানো রং-এর হবেন। চুল সরল হবে। মাহদী দেখতে খুবই সুশ্রী হবেন। (আবুদাউদ, কিতাবুল মালাহিম পৃ- ৫১৪)।
(৬) ‘তাঁর পেশা জমিদারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।’ (রেফারেন্স নেই)।
(৭) হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন মাহদীর আবির্ভাব হবেন তখন তাকে আমার সালাম দিবে১। তাকে মেনে নিবে২। তার বয়াত করবে৩। তাকে তালাশ করে তার কাছে পৌঁছতে যদি তোমাদের বরফের পাহাড়ও ডিঙ্গাতে হয় তাহলেও তাই করবে৪।” (রেফারেন্স নেই)। উল্লেখ্য, উপরে বর্ণনাটির প্রথম ১ ও ২ নং সংক্রান্ত বক্তব্য শুধুই হযরত ঈসা (আ.)-এর সাথে সম্পর্কিত। তবে কিন্তু ৩ নং সংক্রান্ত কোনো কথারই ঈসা (আ.) সংক্রান্ত হাদীসের কোনো সংকলনে পাওয়া যায় না। তথাপি মিথ্যাবাদীর দল কত চটকদার ভঙ্গিতে সেটিকে গুলিয়ে ফেলেছে ইমাম মাহদীর সাথে! আহা! এই মিথ্যুকের দলও নাকি ইলাহি জামাত!!
- কাদিয়ানীদের মারাত্মক একটি জালিয়াতি ও বিকৃত কনসেপ্ট : ‘যিনি ঈসা তিনিই মাহদী‘-এর খণ্ডনমূলক জবাব পড়ুন এখান থেকে, ক্লিক করুন।
শেষকথা, ভাবতেও গা শিহরে উঠে! অপরিণত বয়সের কচিকাঁচা বাচ্ছাদের সাথে এত জঘন্য প্রতারণা!! এরা যখন প্রাপ্ত বয়সে পৌঁছবে এবং হাদীসের কিতাবগুলোর মূল পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করবে; তখন কী হবে! ইসলামের মৌলিক শিক্ষার বাহিরে এদেরকে এভাবে আরো যেসব ভ্রান্ত কনসেপ্ট খাওয়ানো হল, পরিণত বয়সে ঐ প্রতারকের দল তাদেরকে তখন কী জবাব দেবে? আল্লাহ তুমি এই প্রতারকদের থেকে আমাদের সহজ সরল মুসলমানদের ঈমান রক্ষা কর। পাক্ষিক আহমদী মার্চ ১৯৯৭ইং এর প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:
লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী