Home Blog Page 29

মসীহ ইবনে মরিয়ম (আ.) ‘আকাশ’ থেকে অবতরণ করবেন

প্রশ্ন : ঈসা (আ.) শেষ যামানায় “আকাশ” থেকে নাযিল হবেন, এ মর্মে ‘আকাশ’ এর আরবী “সামা” শব্দটি কি কোনো সহীহ হাদীসে রয়েছে?

উত্তর : জ্বী হ্যাঁ, অবশ্যই রয়েছে। হযরত ঈসা (আ.) শেষ যামানায় পৃথিবীতে আকাশ থেকে নাযিল হবেন। এই মর্মে সহীহ বুখারী এবং সহীহ মুসলিম শরীফে হুবহু ‘মিনাস সামায়ি’ (من السماء) অর্থাৎ “আকাশ থেকে” শব্দচয়নে উল্লেখ না থাকলেও তা অন্যান্য একাধিক সহীহ হাদীসে ঠিকই উল্লেখ রয়েছে। ফলে আগমনকারী ঈসা ইবনে মরিয়ম একজন “রূপক ঈসা”, কাদিয়ানীদের এমন বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ও বাতিল।

কাদিয়ানী লিটারেচার থেকে –

মির্যা কাদিয়ানী নিজেকে ‘মসীহ’ দাবী করা সত্ত্বেও তার রচনাবলীর সমষ্টি ‘রূহানী খাযায়েন’ খন্ড নং ৫ পৃষ্ঠা নং ৪০৯ এর এক স্থানে পরিষ্কার লিখেছেন যে,

يا حسرة عليهم ان لا يعلمون أن المسيح ينزل من السماء بجميع علومه، لا يأخذ شيئا من الأرض ما لهم لا يشعرون.

অর্থাৎ হায় আফসোস! তাদের জানা নেই যে, নিশ্চয়ই মসীহ আকাশ থেকে যখন নেমে আসবেন তখন তিনি সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়েই নেমে আসবেন। আর তারা বোধশক্তি রাখবেনা যে, তিনি পৃথিবী থেকে তাদের জন্য কোনো কিছুই গ্রহণ করবেন না।

মির্যা কাদিয়ানী অনুরূপ তার রচনাবলীর আরও অনেক জায়গায় স্বীকার করে লিখে গেছেন যে, শেষ যুগে আগমনকারী হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ:) “আকাশ থেকে” (من السماء) নাযিল হওয়ার কথা নবীকরীম (সা:)-এর ভবিষ্যৎবাণীতে এসেছে। যেমন তিনি লিখেছেন, ‘এই জন্যই তাঁর সম্পর্কে নিষ্পাপ নবীর ভবিষ্যৎবাণীতে এসেছে যে, তিনি [ঈসা] ‘আসমান’ থেকে নাযিল হবেন। (রূহানী খাযায়েন: ৫/২৬৮; রচনাকাল ১৮৯২ইং)।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের নিকট অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, মির্যা কাদিয়ানী তার রচনার আরেকটি জায়গায় পরিষ্কার করে লিখে গেছেন যে,

مثلا صحیح مسلم کی حدیث میں جو یہ لفظ موجود ہے کہ حضرت مسیح جب اسمان سے اترے گئے تو ان کا لباس زرد رنگ کا ہوگا

অর্থাৎ যেমন সহীহ মুসলিম গ্রন্থের হাদীসে এমন শব্দ বিদ্যমান আছে যে, হযরত মসীহ যখন আকাশ থেকে নামবেন তখন তাঁর পোশাক হবে হলুদ রঙের। (রূহানী খাযায়েন খ-৩/পৃ-১৪২)।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

মির্যা সাহেব একই বক্তব্য লিখে গেছেন তার আরেকটি রচনা মালফুযাত গ্রন্থের খন্ড নং-৫ এবং পৃষ্ঠা নং-৩৩ এর মধ্যেও। উর্দূ চতুর্থ এডিশন দ্রষ্টব্য।

ইসলামী অথেনটিক লিটারেচার থেকে

বিখ্যাত হাদীস সংকলক, ইমাম বায়হাক্বী (রহ.)-এর সংকলন ‘আল আসমা ওয়াস সিফাত’ (১/৩৩১) গ্রন্থের একটি হাদীসে পরিষ্কার উল্লেখ আছে, হযরত ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবেন। হাদীসের من السماء শীর্ষক শব্দের উপর এক লাহোরি কাদিয়ানী-এর আপত্তির সংক্ষিপ্ত জবাব পড়তে এখানে ক্লিক করুন!

এখানে একটা প্রশ্ন হতে পারে যে, হাদীসটির সহীহ বুখারীর সনদে তো ‘সামা’ বা আকাশ শব্দটি নেই! এখন ইমাম বায়হাক্বীর সনদে এই ‘সামা’ (আকাশ) শব্দ কোত্থেকে বা কিভাবে এলো? এর দালিলিক উত্তর এখানে

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

মুসনাদে বাজ্জার গ্রন্থ থেকে –

হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে একটি টনটনে সহীহ ও মারফূ এবং মুত্তাসিলুস সানাদে বর্ণিত হাদীস পেশ করছি যেখানে পরিষ্কার শব্দে উল্লেখ আছে যে, হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম “আকাশ থেকে” নাযিল হবেন। সনদসহ হাদীসটি,

حَدَّثَنَا عَلِىُّ بْنُ الْمُنْذِرِ, نَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ, عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ, عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ, قَالَ : سَمِعْتُ مِنْ أَبِى الْقَاسِمِ الصَّادِقِ الْمَصْدُوْقِ يَقُوْلُ : يَخْرُجُ الْأَعْوَرُ الدَّجَّالُ مَسِيْحُ الضَّلاَلَةُ قِبَلِ الْمَشْرِقِ فِىْ زَمَنِ اخْتِلَاِف مِنَ النَّاسِ وَ فُرْقَةٍ, فَيَبْلُغُ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَّبْلُغَ مِنَ الْأَرْضِ فِىْ أَرْبَعِيْنَ يَوْمًا, اَللهُ اَعْلَمُ مَا مِقْدَأرُهَا, فَيَلْقَى الْمُؤْمِنُوْنَ شِدَّةً شَدِيْدَةً, ثُمَّ يَنْزِلُ عِيسْىَ ابْنُ مَرْيَمَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ مِنَ السَّمَاءِ فَيَؤُمُّ النَّاسَ, فَاِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ رَكَعَتَيْهِ قَالَ : سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ, قَتَلَ اللهُ الدَّجَالَ وَ ظَهَرَ الْمُؤْمِنُوْنَ. فَأَحْلَفَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهُ أَبَا الْقَاسِمِ الصَّادِقُ الْمَصْدُوْقُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ : اِنَّهُ لَحَقٌّ وَ إمَّا اِنَّهُ قَرِيْبٌ, فَكُلُّ مَا هُوَ آتٍ قَرِيْبٌ. (اَلْكِتَابْ: اَلْبَحْرُ الزُّخَارُ اَلْمَعْرُوْفُ بِمُسْنَدِ الْبَزَّارِ. اَلْمُؤَلِّفُ: أَبُوْ بَكْرٍ أَحْمَدُ بْنُ عَمَرُو بْنُ عَبْدِ الْخَالِقِ بْنِ خَلَّادِ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ اَلْعَتْكِىْ اَلْمَعْرُوْفٌ بِالْبَزَّارِ اَلْمُتَوَفَّى مِأَتَانِ وَ اِثْنَانٍ وَّ تِسْعُوْنَ سَنَةً مِنَ الْهِجْرَةِ.

অর্থাৎ “ইমাম বাজ্জার (রহ.) আলী ইবনুল মুনযির থেকে, তিনি মুহাম্মদ ইবনে ফুদাইল থেকে, তিনি আসেম ইবনে কুলাইব থেকে তিনি হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) হতে। তিনি বলেন, আমি আবুল কাসেম আস-সাদিকুল মাসদূক (তথা রাসূল সা.) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন: “দলাদলি আর মানুষের মাঝে মতানৈক্যের যুগে (অর্থাৎ শেষ যামানায়) পূর্ব দিক থেকে মাসীহুদ দ্বলালাহ কানা দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। আল্লাহর যেখানে যেখানে ইচ্ছে সে সেখানে পৌঁছে যাবে। সে দুনিয়ায় চল্লিশ দিন অবস্থান করবে। আল্লাহই ভালো জানেন যে, সেই দিনগুলোর পরিমাণ (বিশালতা) কত? ফলে মুমিনগণ অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে যাবে। তারপর (এমনি অবস্থায় হঠাৎ একদিন) হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আকাশ থেকে (দামেস্কে) অবতরণ করবেন। অতপর তিনি (দাজ্জালকে খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে বাহিনী সহকারে যখন বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছবেন তখন উপস্থিত) জনতার সালাতের ইমামতি করবেন (তবে প্রথম যখন দামেস্কে নাযিল হবেন তখন সালাতের ইমামতি করবেন হযরত ইমাম মাহদী)। এরপর তিনি যখন তার সালাতের দ্বিতীয় রাকাত থেকে স্বীয় মাথা উত্তোলন করে পড়বেন : (অর্থ) ‘আল্লাহ তাকে শুনছেন যিনি তাঁর প্রশংসা করছেন, আল্লাহ (অচিরেই আমার মাধ্যমে) দাজ্জালকে হত্যা করবেন, তখন মুমিনগণ বিজয় লাভ করবে’। (আবূ হুরায়রা বলেন) এ কথার পর আবুল কাসেম আস-সাদিকুল মাসদূক রাসূলুল্লাহ (সা.) শপথ করে বলেছেন : নিশ্চয়ই এটি সত্য ভবিষ্যৎবাণী, এটি নিঃসন্দেহে খুবই নিকটবর্তী। প্রত্যেক ঘটনাবলী যা আসন্ন (তা) খুবই সন্নিকটে।” [শায়খ আলবানীর ‘কিচ্ছাতুল মাসীহিদ দাজ্জাল’ কিতাব থেকে ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ সমাপ্ত হল]।

রেফারেন্স : আল বাহরুয যুখার বা মুসনাদে বাযযার হাদীস নং ৯৬৪২, সংকলক : ইমাম আবূ বকর আহমদ ইবনে আমর আল বাযযার রাহিমাহুল্লাহ, (মৃত. ২৯২ হিজরী)।

ইমাম নূরুদ্দীন আল হাইছামী (রহ.) রচিত ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’ গ্রন্থে হাদীসটির সনদে বিদ্যমান রাবীগণ সম্পর্কে লিখেছেন,

وَ رِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيْحِ غَيْرَ عَلِىِّ بْنِ الْمُنْذِرِ وَ هُوَ ثِقَةٌ. مَجْمَعُ الزَّوَائِدِ : اَلْمُجَلَّدُ اَلسَّابِعُ رَقْمُ الصَّفْحَةِ ثَلَاثُ مِأئَةٍ وَّ تِسْعُ وَّ اَرْبَعُوْنَ

অর্থাৎ “এর সকল বর্ণনাকারী সহীহ (বুখারী)’র বর্ণনাকারী তবে আলী ইবনুল মুনযির ছাড়া। কিন্তু সেও একজন সিকাহ তথা বিশ্বস্ত রাবী।” খণ্ড নং ৭ পৃষ্ঠা নং ৩৪৯।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

ধূর্ত কাদিয়ানীদের মুখোশ উন্মোচন –

অপ্রিয় হলেও সত্য, ধূর্ত কাদিয়ানীরা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা:)-এর ঐতিহাসিক একখানা বক্তব্যের প্রসঙ্গ রহস্যজনকভাবে এড়িয়ে যায় যেখানে হযরত উমর (রা:) থেকে একথাও বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছিলেন, যে বলবে মুহাম্মদ (সা:) মৃত্যুবরণ করেছেন আমি তাকে আমার এই তলোবারি দ্বারা হত্যা করব। তিনি আরও বলেছিলেন,

و انما رفع الى السماء كما رفع عيسى ابن مريم عليه السلام

এর মানে হল, “নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সা:)-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে যেমনিভাবে ঈসা (আ:)-কে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল।” (আল মিলাল ওয়ান নিহাল ১/২; ইমাম শাহরাস্তানী)। মির্যা কাদিয়ানী সাহেব নিজেও কথাটি উদ্ধৃত করেছেন। রূহানী খাযায়েন ১৫/৫৮১ দ্রষ্টব্য। কিন্তু কাদিয়ানী জ্ঞানপাপীরা হযরত উমর (রা:)-এর বক্তব্যের প্রথমাংশ বললেও শেষের অংশটুকু উদ্দেশ্যমূলকভাবে এড়িয়ে যায়।

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

অথচ উমর (রা.)-এর ঐ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) সূরা আলে ইমরান আয়াত নং ১৪৪ তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছিলেন যে,

সহীহ বুখারী, হাদীস নম্বর ৩৬৬৮ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বক্তব্যটি নিম্নরূপ –

عَنْ عَائِشَةَ رضي الله عنها، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم: ” … فَحَمِدَ اللهَ أَبُو بَكْرٍ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَقَالَ: أَلَا ‌مَنْ ‌كَانَ ‌يَعْبُدُ ‌مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ مُحَمَّدًا قَدْ مَاتَ، وَمَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ فَإِنَّ اللهَ حَيٌّ لَا يَمُوتُ. وَقَالَ: إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ، وَقَالَ: وَمَا مُحَمَّدٌ إِلا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَى عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللهُ الشَّاكِرِينَ

“যে মুহাম্মদ (সা.)-এর ইবাদত করে থাকে (সে যেন জেনে নেয়) মুহাম্মদ (সা.) মৃত্যুবরণ করেছেন। আর যে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রভুর ইবাদত করে থাকে (তার জেনে রাখা উচিত) নিশ্চয়ই তিনি জীবিত, মৃত্যুবরণ করেননি। (তারপর) আবুবকর সিদ্দিক (রা.) একখানা আয়াত তেলাওয়াত করেন—“(হে নবী) নিশ্চয়ই আপনি মরণশীল এবং তারাও মরণশীল।“ অত:পর তিনি (সূরা আলে ইমরান আয়াত নম্বর ১৪৪) তেলাওয়াত করেন :-

وَمَا مُحَمَّدٌ إِلا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ الخ

অর্থাৎ মুহাম্মদ একজন রাসূল মাত্র তাহার পূর্বে অনেক রাসূল গত হইয়া গিয়াছেন”….।

সুতরাং এটি একথারই প্রমাণ যে, ঈসা (আ.) এর আকাশে উঠিয়ে নেয়ার আকিদা স্বয়ং সাহাবীদেরও। নইলে তিনি কেন কথাটি এভাবে বললেন! আর আবুবকর (রা.)ও বা কেন সেকথার রদ (প্রত্যাখ্যান) করলেন না!? জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই ভাবিয়ে তুলবে!

এ লেখাগুলোও পড়া যেতে পারে

কুরআনের কোথায় আছে ঈসা (আ:)-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, কাদিয়ানীদের একটি মূর্খতাসুলভ প্রশ্নের উত্তর। Click (FB থেকে)।

১- পবিত্র কুরআন দ্বারাও প্রমাণিত ঈসা (আঃ) এখনো জীবিত এবং তিনি দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। Click

২- ত্রিশ আয়াতের ভুল ব্যাখ্যার খন্ডনমূলক জবাব Click

৩- হাদীসের অপব্যাখ্যায় কাদিয়ানীদের দুই ঈসা তথ্যের খন্ডন Click

৪- বাইবেল দ্বারাও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত আছে যে, কথিত রূপক ঈসার কনসেপশন শুধুই মানুষকে ঠকানো! Click

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

আশ’আরী এবং মাতুরদী আকীদা কী ও কেন?

ইন্নালহামদা লিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ! আম্মা বা’দু…। ইসলামের প্রথম কয়েক প্রজন্ম ধরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের যে আকীদা প্রচলিত ছিলো তা ছিলো মূলধারার আকীদা। এ আকীদা ছিলো খুবই সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল। এ সময় আলাদা আলাদাভাবে আকীদার একেকটি বিষয় নিয়ে স্বতন্ত্র পুস্তিকা লিখা হতো। যেমন- কিতাবুত-তাওহীদ, কিতাবুল-ঈমান ইত্যাদি। পরবর্তীতে এই মূলধারার আকীদার সব বিষয় একত্রে সন্নেবেশিত করে যে কিতাব আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে তা হচ্ছে ইমাম ত্বহাবীর ‘আকীদাতুত-ত্বহাবী‘।

এ গ্রন্থটি সহ অন্যান্য খন্ড খন্ড পুস্তিকাগুলো আকীদার একেবারে মৌলিক বিষয়ে আলোকপাত করে। কিন্তু ততদিনে ইসলামী থিওলজী গ্রীক দর্শন সহ পারসিক ভাবাদর্শে আক্রান্ত হতে শুরু করে। ইসলামী আকীদার প্রতি এমন কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়া হয় যার উত্তর না দেয়া হলে বুদ্ধিবৃত্তিক দৌড়ে ইসলামী আকীদা তার নির্যাস হারাবে। এ সমস্যার উত্তরণে অনেকেই এগিয়ে আসেন। কিছু আলেম মূলধারার সংক্ষিপ্ত আকীদার হালকা প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা দিয়ে চুপ থাকাকে নিরাপদ মনে করলেন। এক্ষেত্রে উনাদের আদর্শ ছিলেন ইমাম মালেক (রহঃ) যিনি অতিরিক্ত প্রশ্ন করাকে বিদআত সাব্যস্ত করেছিলেন। এই স্বল্প পরিসরের ব্যাখ্যা যারা গ্রহণ করে আকীদার চর্চা করেন তারা পরবর্তীতে ‘সালাফী’ আকীদার ধারক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

কিন্তু এই যৎসামান্য ব্যাখ্যা দিয়েও গ্রীক আগ্রাসন ঠেকানো যাচ্ছিলো না। মানুষ যিনদিক হতে শুরু করে। ফলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মূলধারার আরেকটি ব্যাখ্যাদানকারী উপধারা প্রবাহিত হয়। যারা প্রতিটি বর্ণনার সফল ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করে। এ কাজে প্রসিদ্ধি লাভ করেন ইমাম আবুল হাসান আশআরি ও ইমাম আবু মনসুর মাতুরিদি। উনারা মূলত গ্রীক দর্শনের আঘাত প্রতিহত করতে ‘ইলমুল কালাম’ প্রয়োগ করেন। ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যেও বেশ কিছু মতভেদ দেখা যায়।

পরবর্তীতে যারা এই বিস্তর ব্যাখ্যার অনুসারী হিসেবে ইসলামী আকীদা চর্চা করেন তারা আশআরি কিংবা মাতুরিদি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মনে রাখা উচিত, এই ব্যাখ্যাগুলো আকীদার উচ্চতর গবেষণা হিসেবে ধর্তব্য।

গ্রীকের আগ্রাসন শেষ। কিন্তু ইমাম আশআরি কিংবা মাতুরিদির রেখে যাওয়া ব্যাখ্যা তো শেষ হয়ে যায় নি। আকীদার উচ্চতর গবেষণার শিক্ষার্থীরা যুগে যুগে এইসব ব্যাখ্যা নিয়ে আরও বর্ধিত গবেষণা চালিয়ে গেছে। অবশ্য প্রত্যেক সময়ের অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী ও যিনদিকদের উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিতে এইসব আশআরী ও মাতুরিদি ব্যাখ্যা মুসলিমদের সাহস যুগিয়েছে।

  • সুতরাং আমরা বলতে পারি, ইসলামী আকীদার একেবারে মূলধারাটি হলো প্রাইমারীর মতো। সালাফি আকীদা আরেকটু বর্ধিত হয়ে অনেকটা ইন্টারমিডিয়েটের মতো। আর আশআরী-মাতুরিদি আকীদা হলো হাইয়ার এডুকেশন। এখন সহজেই বুঝতে পারবেন- একজন মুসলিমকে প্রকৃত মুমিন হতে হলে ঠিক কোন পর্যায়ের আকীদা লালন করতে হবে? আহলে সুন্নাত অয়াল জামাতের মূলধারার আকীদাই একজন মুসলিমের নাজাতের জন্য যথেষ্ট। তবে বাদ বাকি সালাফি, আশআরি কিংবা মাতুরিদি আকীদাও আহলে সুন্নাতের বাহিরে নয়।

যারা সালাফী আকীদার বিরোধিতা করতে গিয়ে আশআরী-মাতুরিদি আকীদাকে সামনে দাঁড় করাচ্ছেন, কিংবা মাতুরিদি-আশআরী আকীদাকে গলদ সাব্যস্ত করতে গিয়ে সালাফী আকীদার দাওয়াত দিচ্ছেন উভয় পক্ষই আহলে সুন্নাতের মূলধারার আকীদাকে অন্ধকারে রাখার চেষ্টা করছেন। এসব বর্ধিত আকীদা ইসলামের শত্রুদের জন্য ব্যাখ্যাকৃত করা হয়েছিলো। নিজেদের মধ্যে মূলধারার আকীদা বাদ দিয়ে যারা বিতর্কে জড়িয়ে পরে তারা প্রকৃত আকীদার দাঈ হবে কিনা আমার সন্দেহ আছে।

সাধারণ মুসলিম ভাইদের বলবো। আপনারা আতঙ্কিত না হয়ে আকীদার মূলধারার চর্চা করুন। অতি উৎসাহী হয়ে সালাফী-আশআরী-মাতুরিদি আকীদা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার আগে মৌলিক আকীদা জানুন। আর আখেরাতের নাজাতের জন্য এটুকু আকীদাই যথেষ্ট। এই আকীদা নিয়েই সাহাবীরা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। যারা ছিলেন ইসলামের সবচেয়ে নিখুঁত প্রজন্ম।”

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

মির্যা মাসরূর কি তাহলে কাদিয়ানীধর্মে বিকৃতি ঘটালেন!

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। ইন্নাল হামদা লিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ। আম্মাবা’দু…. প্রিয় পাঠকবৃন্দ! অপ্রিয় হলেও সত্য, এভাবেই মিথ্যা, ধোকা আর প্রতারণা সহ জঘন্য দ্বিচারিতার উপর প্রতিষ্ঠিত কাদিয়ানীধর্ম!! এই যে এ দুটি পৃষ্ঠাই আমার কথার প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।

কেননা মির্যা কাদিয়ানী সুস্পষ্টভাবে তার দাওয়াত যারা কবুল করেনি তিনি তাদেরকে খোদার ইলহামের নামে “অমুসলিম” বলে আখ্যা দিয়ে লিখে গেছেন! (তাযকিরাহ ৫১৯ দ্রষ্টব্য)।

অপরদিকে তাদেরই বর্তমান গদ্দিনিসীন (কথিত খলিফা) মির্যা মাসরূর আহমদ সাহেব সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করতে কত হীনতার সাথে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বক্তব্যে বললেন,

আহমদীয়া জামাত আল্লাহ ও রাসূল (সা:)-এর নির্দেশ অনুসারে প্রত্যেক কালিমা পাঠকারীকে মুসলমান মনে করে। কোনো মুসলমানের মুসলমান হওয়ার জন্য পবিত্র কলেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ পাঠ করাই যথেষ্ট।” (সূত্র: বাইতুল ফতুহ মসজিদ, যুক্তরাজ্য- জুমার খুতবা ০২-ডিসেম্বর-২০১১ইং, পাক্ষিক আহমদী তাং ১৫-১২-২০১২ ইং, পৃষ্ঠা নং ৬ দ্রষ্টব্য)।

এখন তাহলে দুইজনের কথাবার্তায় আকাশ-পাতালে তফাৎ থাকলো কিনা? তাহলে কেমনে কী??

স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য।

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত সংক্রান্ত সহীহ হাদীস

আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত সম্পর্কিত ২০টির-ও অধিক সহীহ হাদীস (আরবী ও বাংলা অনুবাদসহ) পড়ুন –

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (১৮৩৯-১৯০৮) নিজেকে নবী দাবী করেছিল ৷ অথচ কুরআন হাদীসের সুস্পষ্ট মেসেজ হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ (সা:) মুক্ত ও স্বাধীন অর্থে সর্বশেষ নবী ৷ তারপর ওহীয়ে নবুওয়তেরধারা চিরতরে রুদ্ধ। আমি নিম্নে কেবল ২০টির-ও অধিক হাদীস শরীফ পেশ করছি ৷

প্রসঙ্গত, আরবী ভাষায় খাতাম এবং খাতিম শব্দ দুটি লিসানুল আরব অভিধানবেত্তার মতানুসারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’খানা গুণবাচক নাম। সে হিসেবে শব্দদুটি সমার্থক। পবিত্র কুরআনে ‘খাতামান নাবিয়্যীন’ মূলত ‘খাতিমান নাবিয়্যীন’ এরই অর্থ প্রদানকারী। এ থেকে آخرهم (নবীগণের সর্বশেষ) অর্থই উদ্দেশ্য। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি নিম্নরূপ,

[১] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৪৪১৬, قَالَ أَلَا تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ مِنِّيْ بِمَنْزِلَةِ هَارُوْنَ مِنْ مُوْسَى إِلَّا أَنَّهُ لَيْسَ نَبِيٌّ بَعْدِي অর্থ- রাসুল (সা.) আলী (রা.)- কে বললেন, তুমি কি এ কথায় রাজী নও যে, তুমি আমার কাছে সে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হারূন (আ.) যে মর্যাদায় মূসার কাছে অধিষ্ঠিত ছিলেন । পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, হারূন (আ.) নবী ছিলেন আর আমার পরে কোনো নবী নেই৷

[২] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৫৩২, ৪৮৯৬, قال رسول الله.. وَأَنَا الْعَاقب অর্থ- রাসুল (সা.) বলেন আমার একটি নাম আক্বিব (তথা সর্বশেষে আগমনকারী) ৷

[৩] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৫৩৫, أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ مَثَلِيْ وَمَثَلَ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِيْ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى بَيْتًا فَأَحْسَنَهُ وَأَجْمَلَهُ إِلَّا مَوْضِعَ لَبِنَةٍ مِنْ زَاوِيَةٍ فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُوْنَ بِهِ وَيَعْجَبُوْنَ لَهُ وَيَقُوْلُوْنَ هَلَا وُضِعَتْ هَذِهِ اللَّبِنَةُ قَالَ فَأَنَا اللَّبِنَةُ وَأَنَا خَاتِمُ النَّبِيِّينَ অর্থ- রাসুল (সা.) বলেন, আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের অবস্থা এমন যে, এক ব্যক্তি যেন একটি গৃহ নির্মাণ করল ৷ তাকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল৷ কিন্তু এক পাশে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল ঐ শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হল না কেন! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমিই সে ইট। আর আমিই সর্বশেষ নবী।

[৪] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬৯৯০, أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لَمْ يَبْقَ مِنْ النُّبُوَّةِ إِلاَّ الْمُبَشِّرَاتُ অর্থ- আবূ হোরাইরাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, সু-সংবাদ বহনকারী বিষয়াদি ব্যতীত নবুওয়তের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

[৫] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৪৫৫, إِنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدِيْ وَسَيَكُوْنُ خُلَفَاءُ অর্থ- আমার পরে কোনো নবী নেই। তবে অনেক খলীফাহ্ হবে।

[৬] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬১৯৪, حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قُلْتُ لاِبْنِ أَبِي أَوْفَى رَأَيْتَ إِبْرَاهِيمَ ابْنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَاتَ صَغِيرًا، وَلَوْ قُضِيَ أَنْ يَكُونَ بَعْدَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم نَبِيٌّ عَاشَ ابْنُهُ، وَلَكِنْ لاَ نَبِيَّ بَعْدَهُ‏.‏ অর্থ- ইসমা‘ঈল হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আবূ আওফা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি নবী (সা.)-এর পুত্র ইবরাহীম-কে দেখেছেন? তিনি বললেন, তিনি তো বাল্যাবস্থায় মারা গিয়েছেন। যদি মুহাম্মদ (সা.)-এর পরে অন্য কেউ নবী হবার বিধান থাকত তবে তাঁর পুত্র জীবিত থাকতেন। কিন্তু তাঁর পরে কোনো নবী নাই।

[৭] সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৬৪১, وَإِنَّ الْوَحْيَ قَدْ انْقَطَعَ অর্থ- নিশ্চয় ওহী বন্ধ হয়ে গেছে ৷

[৮] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৪৯৩৬, سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بِإِصْبَعَيْهِ هَكَذَا بِالْوُسْطَى وَالَّتِيْ تَلِي الإِبْهَامَ بُعِثْتُ وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ. অর্থ- সাহল ইবনু সা‘দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দেখেছি, রাসুল (সা.) তাঁর মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুলের নিকটবর্তী অঙ্গুলিদ্বয় এভাবে একত্র করে বললেন, কেয়ামত (কিয়ামত) ও আমাকে এমনিভাবে পাঠানো হয়েছে।

[৯] সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭১২১, قَالَ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَقْتَتِلَ فِئَتَانِ عَظِيمَتَانِ يَكُونُ بَيْنَهُمَا مَقْتَلَةٌ عَظِيمَةٌ دَعْوَتُهُمَا وَاحِدَةٌ وَحَتَّى يُبْعَثَ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ قَرِيبٌ مِنْ ثَلاَثِينَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم অর্থ- তিনি বলেছেন, কেয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ দু’টি বড় দল পরস্পরে মহাযুদ্ধে লিপ্ত না হবে। উভয় দলের দাবী হবে অভিন্ন। আর যতক্ষণ ত্রিশের কাছাকাছি মিথ্যাচারী দাজ্জাল-এর প্রকাশ না পাবে তারা প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল বলে দাবি করবে ৷

[১০] সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১১৪, فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُونَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَى إِلاَّ أَنَّهُ لاَ نُبُوَّةَ بَعْدِي অর্থ- রসূলুল্লাহ (সা.) বললেন তুমি কি এতে আনন্দবোধ করো না যে, আমার নিকট তোমার সম্মান মূসা (আ.)-এর নিকট হারূন (আ.)-এর মতো। এ কথা ভিন্ন যে, আমার পর আর কোনো নবুওয়ত নেই ।

[১১] সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১০৫৪, وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِيَ النَّبِيُّونَ ‏ অর্থ- আমাকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য (নবী করে) পাঠানো হয়েছে। আর আমাকে দিয়ে নবীদের আগমন-ধারা সমাপ্ত করা হয়েছে।

[১২] সহীহ বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া হাদীস নং ৩৪৫৫, হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, كَانَتْ بَنُوْ إِسْرَائِيْلَ تَسُوْسُهُمْ الأَنْبِيَاءُ كُلَّمَا هَلَكَ نَبِيٌّ خَلَفَهُ نَبِيٌّ وَإِنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدِيْ وَسَيَكُوْنُ خُلَفَاءُ فَيَكْثُرُوْنَ অর্থ বনী ইসরাঈলের নবীগণ তাঁদের উম্মাতকে শাসন করতেন। যখন কোনো একজন নবী মারা যেতেন, তখন অন্য একজন নবী তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতেন। আর আমার পরে কোনো নবী নেই। তবে অনেক খলীফাহ্ হবে। (তাওহিদ প্রকাশনী)।

[১৩] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯৯০, হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لَمْ يَبْقَ مِنْ النُّبُوَّةِ إِلاَّ الْمُبَشِّرَاتُ অর্থ আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, মুবাশশ্বিরাত ব্যতীত নবুওয়তের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই ‘মুবাশ্বশিরাত’ (مُبَشِّرَاتِ) এর মর্মার্থ সুস্পষ্ট করে আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, لَمْ يَبْقَ مِنَ النُّبُوَّةِ إلَّا المُبَشِّراتُ. قالوا: وما المُبَشِّراتُ؟ قالَ: الرُّؤْيا الصَّالِحَةُ অর্থাৎ মুবাশ্বশিরাত ব্যতীত নবুওয়তের আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুবাশ্বশিরাত কী? তিনি (সা.) বললেন, সত্য স্বপ্ন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯৯০)।

[১৪] ইমাম দায়লামী (রহ.) সংকলিত আল-ফেরদাউস বি-মাছূরিল খিতাব (الفردوس بمأثور الخطاب للدیلمی), ১/৩৯, হাদীস নং ৮৫, হযরত আবু যর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, یٰا أَبَا ذَرٍ أَوَّلُ الْاَنْبِیَاء آدَمُ وَآخِرُہ مُحَمَّدٌ অর্থ ‘হে আবু যর! সর্বপ্রথম নবী ছিলেন আদম আর সর্বশেষ নবী হচ্ছে মুহাম্মদ।’

[১৫] তিরমিযি হাদীস নং ৩৬৮৬, হযরত উকবাহ ইবনে আমের (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, لَوْ كَانَ بَعْدِي نَبِيٌّ لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ অর্থ আমার পরবর্তীতে কেউ নবী হলে অবশ্যই উমর ইবনুল খাত্তাবই নবী হতেন। (সহীহ)।

[১৬] সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৩২৬৯, فَإِنِّي آخِرُ الأَنْبِيَاءِ وَإِنَّ مَسْجِدِي آخِرُ الْمَسَاجِدِ ‏ অর্থ- অতএব অবশ্যই আমি নবীগণের সমাপ্তি এবং আমার মসজিদ সর্বশেষ মসজিদ ৷ (অন্য রেওয়ায়েতে আছে, [আরবী] مسجدى آخر مساجد الأنبياء অর্থ- নিশ্চয়ই আমার মসজিদ নবীগণের প্রতিষ্ঠিত মসজিদ সমূহের মধ্যে সর্বশেষ মসজিদ [সূত্র- আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব])।

[১৭] সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬২১২, وَلَكِنْ أَبْكِي أَنَّ الْوَحْىَ قَدِ انْقَطَعَ مِنَ السَّمَاءِ অর্থ- কিন্তু আমি এজন্য কাঁদছি যে, আকাশ হতে ওহী (তথা ওহীয়ে নবুওয়ত) আসা বন্ধ হয়ে গেল।

[১৮] সহীহ মুসিলম হাদীস নং ৫৮৫৪, مَثَلِي وَمَثَلُ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِي كَمَثَلِ رَجُلٍ ابْتَنَى بُيُوتًا فَأَحْسَنَهَا وَأَجْمَلَهَا وَأَكْمَلَهَا إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ مِنْ زَاوِيَةٍ مِنْ زَوَايَاهَا فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُونَ وَيُعْجِبُهُمُ الْبُنْيَانُ فَيَقُولُونَ أَلاَّ وَضَعْتَ هَا هُنَا لَبِنَةً فَيَتِمَّ بُنْيَانُكَ ‏.‏ فَقَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ فَكُنْتُ أَنَا اللَّبِنَ অর্থ- আমার দৃষ্টান্ত ও আমার পূর্বেকার নবীগণের দৃষ্টান্ত সে লোকের উপমার মতো যে কতকগুলো গৃহ বানালো, তা সুন্দর করল ও সুদৃশ্য করল এবং পূর্ণাঙ্গ করল; কিন্তু তার কোনো একটির কোণে একটি ইটের স্থান ব্যতীত। লোকেরা সে ঘরগুলোর চারদিকে চক্কর দিতে (ঘুরেঘুরে দেখতে) লাগল আর সে ঘরগুলো তাদের মুগ্ধ করতে লাগল। পরিশেষে তারা বলতে লাগল, এখানে একখানি ইট লাগালেন না কেন? তাহলে তো আপনার অট্টালিকা পূর্ণাঙ্গ হত। অতঃপর মুহাম্মদ (সা.) বলেন যে, আমি-ই সে (শূন্যস্থানের) ইটখানি।

[১৯] সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬০২৬, الأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ مِنْ عَلاَّتٍ وَأُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ فَلَيْسَ بَيْنَنَا نَبِيٌّ অর্থ- নবীগণ একই পিতার সন্তানের মতো। তাদের মাতা ভিন্ন। তাদের দীন একটিই। আর তাঁর (ঈসা) এবং আমার মাঝে কোনো নবী নেই।

[২০] শামায়েলে তিরমিযি হাদীস নং ২৮৩, فَقَالَ : ” أَنَا مُحَمَّدٌ ، وَأَنَا أَحْمَدُ ، وَأَنَا نَبِيُّ الرَّحْمَةِ ، وَنَبِيُّ التَّوْبَةِ ، وَأَنَا الْمُقَفَّى ، وَأَنَا الْحَاشِرُ ، وَنَبِيُّ الْمَلاحِمِ অর্থ- তিনি বললেন, আমি মুহাম্মদ, আমি আহমদ, আমি নবীউর রহমত (রহমতের নবী) আমি নবীউত তাওবা (তাওবার নবী), আমি মুকাফফী (পরে আগমনকারী), আমি হাশির (একত্রকারী অর্থাৎ আমার সময়ের পরপরই হাশরের ঘটনা ঘটবে), আমি মালাহিমের নবী (জিহাদকারী)।

[২১] আবু দাউদ হাদীস নং ৪২৫২, سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي كَذَّابُونَ ثَلَاثُونَ، كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ، وَأَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ لَا نَبِيَّ بَعْدِي অর্থ- অবিলম্বে আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশজন মিথ্যাবাদীর আবির্ভাব ঘটবে, তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নবী বলে দাবী করবে। অথচ আমিই সর্বশেষ নবী এবং আমার পরে আর কোনো নবী নেই।

[২২] তিরমিযি হাদীস নং ২২৭২, ان الرِّسَالَةَ وَالنُّبُوَّةَ قَدِ انْقَطَعَتْ فَلاَ رَسُولَ بَعْدِي وَلاَ نَبِيَّ ‏ অর্থ- নিশ্চয় রিসালাত ও নবুওয়তের ধারাবাহিকতা সমাপ্ত হয়ে গেছে। অতএব, আমার পরে আর কোনো রাসূলও প্রেরিত হবে না এবং নবীও হবে না।

[২৩] ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৩৮৯৬, ذَهَبَتِ النُّبُوَّةُ وَبَقِيَتِ الْمُبَشِّرَاتُ অর্থ- নবুওয়ত সমাপ্ত হয়ে গেছে এবং মুবাশ্বশিরাত (সত্য স্বপ্ন) অবশিষ্ট রয়ে গেছে।

  • প্রিয়বন্ধুরা, উপরিউক্ত ২০টির-ও অধিক সহীহ হাদীসের আলোকে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্টত প্রমাণিত যে, নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে নবুওয়তের ধারাবাহিকতা সমাপ্ত হয়ে গেছে। তাই তিনি সর্বশেষ নবী ও রাসূল ৷ তাঁর পর আর কোনো প্রকারের নতুন কোনো নবীও নেই রাসূলও নেই৷

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
শিক্ষাবিদ ও গবেষক
হ্যালো-

কুরআন থেকে ওফাতে মসীহ’র দলিল এইভাবে দিতে পারবেন?

  • কাদিয়ানীবন্ধুরা! অপ্রাসঙ্গিক কমেন্ট করা বাদ দিয়ে আসুন, চ্যালেঞ্জ কবুল করুন! মূল পোস্টের লিংক : ক্লিক করুন

আপনি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রশ্নটি করতে পারেন কিন্তু শতভাগ নিশ্চিত থাকুন যে, উত্তর পাবেন না! শুধু তোতাপাখির মত সেই একই কথা শুনবেন – তোমরা ঈসাকে মরিতে দাও, তবেই ইসলামের জীবন রক্ষা হবে!! আসল কথা হল, ঈসাকে মারতে পারলেই তবে মির্যা কাদিয়ানীর “রূপক ঈসা” দাবীর ষোলকলা পূর্ণ হবে! হায়রে মতলববাজ!! মতলববাজি কি সব সময় গোপন থাকবে!! কিন্তু অধিকাংশ সিজোফ্রেনিয়া পাড়ার নির্বোধ কাল্টগুলা বুঝেনা, আর বুঝানোর সাধ্যও বা আছে কার!!

এবার প্রশ্ন দুটির উত্তর দিন অন্যথা শুধু দৌড়ের ওপরে থাকুন…….

প্রশ্ন ১- পবিত্র কুরআন থেকে এমন একটি আয়াত উল্লেখ করুন যেখানে ঈসা (আ:)-এর নাম বা তৎসংশ্লিষ্ট সর্বনামপদ উল্লেখপূর্বক অতীতকালবাচক এমন কোনো ক্রিয়াপদও উল্লেখ আছে অভিধানে যেটির প্রকৃত অর্থ মৃত্যুও নেয়া হয়েছে আর মির্যা কাদিয়ানীর জন্মের পূর্বে যত যুগ ইমাম গত হয়েছেন তাদের মধ্য থেকে স্রেফ কোনো একজনও ঐ আয়াত দ্বারা ঈসা (আ:)-কে মৃত বলেছেন বা মনে করতেন! আসুন, এইরকম কোনো আয়াত যদি পেশ করতে পারেন তাহলে করুন!

প্রশ্ন ২- পবিত্র হাদীস থেকে শুধু এমন একটি হাদীস উল্লেখ করুন যেখানে ঈসা (আ:)-এর নাম বা তৎসংশ্লিষ্ট সর্বনামপদ উল্লেখপূর্বক অতীতকালবাচক এমন কোনো ক্রিয়াপদও উল্লেখ আছে অভিধানে যেটির প্রকৃত অর্থ মৃত্যুও নেয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ঐ হাদীসটির সনদ সহ উল্লেখ করতে হবে। আপনাদের আরো সহজ করে দিচ্ছি যে, ঐ সনদটি মারফূ/মুরসাল/মওকুফ যে কোনটাই হোক, তবে সনদের (Chain of narration) কোনো রাবী তথা বর্ণনাকারী সম্পর্কে জরাহ তা’দীলের বরেণ্য কোনো মুহাক্কিকের (হাদীস-শাস্ত্রবিদ) এমন কোনো নেতিবাচক উক্তি থাকতে পারবেনা যার ফলে সনদের বিচারে ঐ হাদীসটি জাল কিংবা পরিত্যাজ্য হিসেবে গণ্য হয়!

আসুন, আমার এই চ্যালেঞ্জ কবুল করুন। যদি চ্যালেঞ্জ কবুল করতে না পারেন তাহলে এই টপিকে ত্যানা-প্যাচানো বাদ দিয়ে মির্যা কাদিয়ানীর জীবন-চরিত্র নিয়ে আলোচনায় আসুন!

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

যদি মূসা ও ঈসা জীবিত থাকত

যদি মূসা এবং ঈসা জীবিত থাকত :

প্রশ্নকর্তা : ‘ইবনে কাসীর’-এর মধ্যে উল্লেখ আছে ‘কোনো কোনো হাদীসে রয়েছে, যদি হযরত মূসা ও হযরত ঈসা (ইহ-জগতে) জীবিত থাকতেন তবে তাঁদেরও আমার আনুগত্য ছাড়া কোনো উপায় থাকত না।’ ফলে কাদিয়ানী সম্প্রদায় এই রেওয়ায়েত দিয়ে হযরত ঈসা (আ:)-কে মৃত বলে আখ্যা দেয়। এখন এর কী উত্তর?

উত্তরদাতা : প্রথমত, উক্ত বর্ণনা সম্পূর্ণ একটি সনদবিহীন। ফলে এটি আকীদাগত তো বটে; কোনো ফাজায়েল বর্ণনাতেও অথেনটিক (প্রমাণযোগ্য) নয়। যেজন্য এ সম্পর্কে কথা বলাও সময় নষ্ট। আর তর্কের খাতিরে এটি অথেনটিক মেনে নিলেও এর দ্বারা ঈসা (আ.) মৃত সাব্যস্ত হবেন না। তার কারণ, এর দ্বারা ‘ইহ-জগতে’ নবীগণের কেউই আর জীবিত নেই, বুঝানো উদ্দেশ্য। কেননা ‘আনুগত্যের’ সম্পর্ক শুধুই ইহজগতের সাথে। অধিকন্তু রাসূল (সা.)-এর অন্য একটি হাদীসে আছে, নবীগণের সবাই যার যার কবরে জীবিত ও সালাত পড়েন। হাদীসটি সহীহ (পড়ুন)। সুতরাং এতেও প্রমাণিত হল যে, ইবনে কাসীরের বর্ণনাটি দ্বারা শুধুই ‘ইহ-জগতে’ জীবিত নেই, বলে বুঝানো উদ্দেশ্য। অন্যথা সমস্ত নবী ইহজাগতিক জীবনের বাহিরে যার যার অবস্থানে প্রত্যেকে জীবিত। এ ক্ষেত্রে শুধু ঈসা (আ.) একটুখানি ব্যতিক্রম, তিনিও জীবিত, কবরে নয়, বরং আকাশে। অন্যান্য হাদীসে এর প্রমাণ বিদ্যমান।

  • উল্লেখ্য, ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) বর্ণনাটি সূরা আম্বিয়া আয়াত নং ৩৪ এর তাফসীর অংশে এনেছেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর এর মূল কিতাব অনলাইন থেকে)।

দ্বিতীয়ত, ইমাম ইবনে কাসীর (রহ:) একই পৃষ্ঠায় আরো তিনখানা হাদীস উল্লেখ করেছেন কিন্তু সেগুলোর একটিতেও ‘ঈসা’ (আ:)-এর নামের উল্লেখ নেই। কাদিয়ানীরা এই হাদীসগুলোর প্রেক্ষাপট সুকৌশলে এড়িয়ে যান। পক্ষান্তরে ইবনে কাসীর (রহ:)-এর ব্যক্তিগত অভিমতও কাদিয়ানী জ্ঞানপাপীরা উদ্ধৃত করেন না। অথচ ইবনে কাসীর কর্তৃক সনদ (সূত্র) বিহীন রেওয়ায়েতটির সংগ্রহ অথেনটিক মনে করে নয়, বরং লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে মর্মে-ই ছিল। আফসোস! নির্বোধ কাদিয়ানী জ্ঞানপাপীরা ব্যাপারটি জেনে-বুঝেই নিজ অনুসারীদের প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করে চলছে। পবিত্র কুরআনেও অন্যদের কথাকে সংগ্রহ রূপে তুলে ধরার দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন আল্লাহতালা মুশরিকদের একটি বক্তব্য তুলে ধরেছেন এইভাবে : ‘যদি তোমরা তোমাদের মতই একজন মানুষের আনুগত্য করো, তবে তোমরা নিশ্চিতরূপেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (মুমিনূন/২৩:৩৪)। এখন আপনি কি এটিকে অথেনটিক (প্রমাণ) ধরে বলতে চাইবেন যে, যেহেতু নবীগণও মানুষ ছিলেন সেহেতু আমরা তাদের আনুগত্য করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চাই না? অবশ্যই চাইবেন না। শায়খ আ’লাভী (রহ:) তাফসীরে ইবনে কাসীরের বর্ণনাটির ‘ঈসা’ শব্দের বৃদ্ধি সম্পর্কে লিখেছেন, ولم يعزه لأحد، ولم أجده في أيٍّ من كتب الحديث التي بين يدي، وسألت عنه الألباني يرحمه الله هاتفيَّاً، فقال: إن زيادة ((عيسى)) منكرة لا أصل لها. অর্থাৎ তিনি (ইবনে কাসীর) একে কারো দিকে নেসবত করেননি। আর আমি ‘ঈসা’ সম্বলিত এমন কোনো রেওয়ায়েত আমার সামনে থাকা হাদীসের কোনো কিতাবেই (খুঁজে) পাইনি। (তাই) আমি শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ:)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেসও করেছিলাম। তিনি প্রতিউত্তরে বলেছেন, ان زيادة عيسى منكرة لا اصل لها অর্থ উক্ত বর্ণনায় ‘ঈসা’ শব্দের বৃদ্ধিকরণ মুনকার তথা অগ্রহণযোগ্য, আর এর কোনো ভিত্তিও নেই।

  • রেফারেন্স, তাখরীজু আহাদীস ওয়া আছার কিতাব ফী যিলালিল কুরআন (تخريج احاديث و آثار كتاب فى ظلال القرآن), শায়খ আ’লাভী বিন আব্দিল কাদের আস-সাক্বাফ (علوي بن عبد القادر السَّقَّاف)। ‘তাখরীজু আহাদীস‘ কিতাবটি দেখা যেতে পারে।

আর এতে যেন কেউ বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য তিনি (ইবনে কাসীর) ঈসা (আ:) সম্পর্কে নিজেস্ব অভিমতও লিখে দিয়েছেন। হযরত ইবনে কাসীর (রহ:)-এর নিজেস্ব অভিমত বাদ দিয়ে ‘ঈসা’ সম্বলিত ঐ রেওয়ায়েতের সংগ্রহকে তাঁর নিজের অভিমতরূপে উপস্থিত করা নিতান্তই হীনরুচির পরিচায়ক ও তাকওয়ার খেলাফ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ইবনে কাসীরের নিজেস্ব অভিমত এই যে, তিনি তাঁর উক্ত গ্রন্থে সূরা নিসার ১৫৮-৫৯ নং আয়াতের তাফসীরে আরো বেশকিছু হাদীস উল্লেখপূর্বক শিরোনাম উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ذكر الأحاديث الواردة في نزول عيسى بن مريم إلي الأرض من السماء في آخر الزمان قبل يوم القيامة অর্থাৎ ‘কেয়ামতের পূর্বে শেষ যুগে আকাশ থেকে পৃথিবীতে ঈসা ইবনে মরিয়ম এর অবতরণ করা বিষয়ক হাদীসগুলোর আলোচনা।’ সুতরাং কাদিয়ানীরা ইবনে কাসীরের নামে ‘ঈসা’ সম্বলিত যে অংশ উদ্ধৃত করে থাকে তা যে ইবনে কাসীরেরও কোনো অভিমত নয় তা প্রমাণ করার জন্য তাঁর এই উদ্ধৃত অংশই যথেষ্ট। স্ক্রিনশট :-

হাদীসের ঐ কথার প্রেক্ষাপট :

রাসূল (সা:)-এর ঐ কথার প্রেক্ষাপট এই যে, রাসূল (সা:) একদা হযরত উমর (রা:)-এর হাতে তাওরাতের একটি পৃষ্ঠা দেখতে পান। তখন তিনি (সা:) তাঁকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন : وَعَنْ جَابِرٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ أَتَاهُ عُمَرُ فَقَالَ إِنَّا نَسْمَعُ أَحَادِيثَ مِنْ يَهُودَ تُعْجِبُنَا أَفْتَرَى أَنْ نَكْتُبَ بَعْضَهَا؟ فَقَالَ: «أَمُتَهَوِّكُونَ أَنْتُمْ كَمَا تَهَوَّكَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى؟ لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً وَلَوْ كَانَ مُوسَى حَيًّا مَا وَسِعَهُ إِلَّا اتِّبَاعِي» . رَوَاهُ أَحْمد وَالْبَيْهَقِيّ فِي كتاب شعب الايمان

অর্থাৎ হযরত জাবের (রা:)-এর সূত্রে নবী করীম (সা:) থেকে বর্ণিত আছে , একদা যখন উমর (রা:) তাঁর (রাসূল) নিকট এসে বললেন, আমরা ইহুদীদের কাছ থেকে এমন বহু কথা শুনি যা আমাদের অবাক করে দেয়। এখন আমরা তার কোনো কোনোটি লিপিবদ্ধ করাকে আপনি কিভাবে দেখছেন? তিনি বললেন, তোমরা কি ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মতই দিশেহারা? আমি তোমাদের নিকট খাঁটি ও স্বচ্ছ জিনিস (দ্বীন) নিয়ে এসেছি। (আজকে) যদি মূসাও বেঁচে থাকতেন, তবে আমার অনুসরণ করা ব্যতীত তাঁর কোনো উপায় ছিল না।

  • সূত্র, ইমাম আহমদ এটি মসনাদে আহমদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, ইমাম আল-বায়হাকী স্বীয় গ্রন্থের শু’আবুল ঈমান পর্বে এটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসের মান : শায়খ আলবানী (রহ:) হাদীসটির সনদকে হাসান বলেছেন।

এখানে গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, রাসূলের (সা:) ঐ কথায় ঈসা (আ:) এর নাম উল্লেখ থাকার কোনো কারণ নেই। যেহেতু তাওরাত কিতাব ঈসা (আ:)-এর উপর নাযিল হয়নি। অতএব, ঐ সূত্রহীন মুনকার রেওয়ায়েতটি দ্বারা ঈসা (আঃ)-কে মৃত দাবী করা সম্পূর্ণ বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

হাদীসে বর্ণিত “লূদ” আর “লুধিয়ানা” কি একই শহর?

কাদিয়ানীরা “লূদ” শব্দকে ‘লুধিয়ানা’ বলেও অপব্যাখ্যা দেয়! অথচ সহীহ হাদীস তাদের ঐ সমস্ত ব্যাখ্যার সম্পূর্ণ বিরোধী!!

কাদিয়ানীবন্ধুরা! আপনারা হাদীসের “লূদ” শব্দকে পাকিস্তানের ‘লুধিয়ানা’ কিভাবে বলতে পারেন বা আপনাদের কথিত মাহদী ও সিজোফ্রেনিয়া রোগীটাও বা এরকম একটা অপব্যাখ্যা কিভাবে দিতে পারলেন?

অথচ সহীহ হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত যে, “লূদ” হচ্ছে ফিলিস্তিনের একটি শহরের নাম। আপনি ইন্টারনেটেও সার্চ দিলে দেখবেন, একদম পরিষ্কার করে লিখা আছে যে, “লূদ বর্তমান ইসরাইল অধিকৃত ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভূখন্ডের একটি ছোট শহর, যা তেলআবিব থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। ইসরাইলের প্রধানতম বিমানবন্দর বেন গুরিয়ান বিমানবন্দর এই শহরটির নিকটেই অবস্থিত।” (ইন্টারনেট)।

  • উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ)-এর হাদীসে “লূদ” যে ফিলিস্তিনের একটি স্থান, তা পরিষ্কার ভাবে প্রমাণিত। হাদীসের আরবি উচ্চারণ — “ফিলিস্তিন বি-বাবে লূদ (فلسطين بباب لد)”।
  • উইকিপিডিয়া থেকে Click

(হাদীসটি মসনাদে আহমদ গ্রন্থেও বর্ণিত হয়েছে, রাবীদের মধ্যে ‘হাযরমি বিন লাহিক’ ছাড়া সবাই সহীহ বুখারি এবং মুসলিম শরীফের রাবী, তবে তিনিও একজন ছিকাহ বা বিশ্বস্ত রাবী)।

সূত্র, ইমাম হাইছামি সংকলিত ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ‘ হাদীস নং ১২৫১২; কিতাবুল ফিতান আ-আ’জানাল্লাহু মিনহা।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

বাইবেলের তিনটি পুস্তকের নামে মির্যা কাদিয়ানীর মিথ্যা-৬

মির্যা কাদিয়ানী সাহেব কুরআন শরীফ এবং বাইবেলের নামেও কেন এমন সব মিথ্যাচার করে গেলেন?

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সাহেব পবিত্র কুরআন এবং তাওরাতের তিনটি পুস্তকের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজ পুস্তক (বাংলায় অনুবাদকৃত) “কিশতিয়ে-নূহ” এর ৫ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “ইহাও স্মরণ রাখিতে হইবে যে, কুরআন শরীফে এমনকি—তওরাতের কোন কোন কিতাবেও এই সংবাদ বিদ্যমান রহিয়াছে যে, মসীহ মওউদ (আ.)-এর সময়ে প্লেগের প্রাদুর্ভাব হইবে।” মির্যা কাদিয়ানী সাহেব উক্ত উদ্ধৃতির সমর্থনে বইয়ের টীকায় তওরাতের তিনটি পুস্তকের রেফারেন্স দিয়েছেন। রেফারেন্স হল, সখরিয়-১৪:১২, ইঞ্জিল মথি-২৪:৮, প্রকাশিত বাক্য-২২:৮। মির্যায়ী রচনা হতে স্ক্রিনশট –

এবার আমি ‘বাংলাদেশ বাইবেল স্যোসাইটি, ঢাকা” থেকে মুদ্রিত বাইবেল থেকে উল্লিখিত তিনটি পুস্তক থেকে আপনাদের উদ্দেশ্যে স্ক্রিনশট তুলে ধরছি। আপনারা ঐ তিনটি পুস্তকের যথাক্রমে ১৪:১২, ২৪:৮ ও ২২:৮ এর সাথে মির্যা কাদিয়ানীর কৃত উদ্ধৃতি মিলিয়ে দেখুন। আপনি বাইবেলের ঐ পুস্তকগুলোর সাথে মির্যা কাদিয়ানীর উদ্ধৃত কথাটির ১% মিলও খুঁজে পাবেন না। এতদ্ব্যতীত পবিত্র কুরআনের সাথে মির্যার উক্ত বক্তব্যের মিল থাকার তো প্রশ্নই আসেনা। এমতাবস্থায় মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে আপনি বা আমি একজন নিরপেক্ষ পাঠক হিসেবে কেমন মন্তব্য ছুড়তে পারি বলুন!

(মিলিয়ে দেখার জন্য বাইবেলের তিনটি পুস্তকের স্ক্রিনশট এখানে যুক্ত করে দিলাম)।

মির্যা কাদিয়ানী সম্পর্কে উল্লিখিত তথ্যের আলোকে আমি যদি নিম্নরূপ মন্তব্য ছুড়তে চাই তাহলে মোটেও বাড়াবাড়ি হবেনা! যথা-

১- মির্যা কাদিয়ানী একজন মিথ্যাবাদী।
২- একজন খেয়ানতকারী।
৩- একজন প্রতারক।
৪- সত্যমিথ্যা মিশ্রিত কারী।
৫- আল্লাহর নামে জঘন্য মিথ্যারোপকারী।
৬- একজন গু খোর, জারজ, হারামজাদাহ, মুশরিক ও শুয়োরের চেয়েও নিকৃষ্ট। কেননা মির্যা কাদিয়ানী নিজেই তার রচনাবলীর জায়গায় জায়গায় লিখেছে, মিথ্যা বলা আর গু খাওয়া একই কথা। এভাবে উপরের সবগুলো কথা নিজেই লিখেছেন। তাই এগুলো তার সাথে মিলে গেল!
৭- একজন ভন্ড মাহদী, নবুওয়তের মিথ্যাদাবিদার। কেননা, এমন একজন মিথ্যাবাদী ও খেয়ানতকারী আর যাইহোক অন্তত ভদ্র মানুষ হওয়ার যোগ্যতাও রাখেনা; থাক তো ইমাম মাহদী বা নবী হবে!

  • আফসোস! মির্যা কাদিয়ানী সাহেব ভেবেছিলেন যে, তার এসব জালিয়াতি ধরার মত পরবর্তীতে লোকের খুব অভাব থাকবে। ফলে যাচাই-বাছাই ছাড়া সবাই চোখবুঁজে তার সব মিথ্যাকে সত্য বলেই গলাধঃকরণ করবে! বেচারা ভুলেও ভাবেনি যে, শেষ যামানায় স্যোসাল মিডিয়া নামে কিংবা ইন্টারনেট নামে কিছু একটা মানুষের হাতেহাতে পৌঁছে যাবে।

প্রিয় আহমদী ভাই ও বোনেরা! নিরপেক্ষভাবে কথাগুলো নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন। মনে রাখবেন, বাহাউল্লাহ ইরানীও নবুওয়তের দাবীদার ছিলেন এবং ১৮৬৩ সালে মসীহ মওউদ হবার দাবীও করেছিলেন। তিনি তার উক্ত দাবীর উপর আরো প্রায় ২৯ বছর জীবিত ছিলেন। বর্তমানে প্রায় ২১৮টি রাষ্ট্রে তার বাহায়ী জামাত ৮ মিলিয়ন অনুসারীসহ টিকে আছে। এখন কোনো জামাত বা গোষ্ঠী দীর্ঘ সময়ব্যাপী টিকে থাকার অর্থ মোটেও এই নয় যে, সেটি সত্য বলে গন্য হবে। অন্যথা বাহায়ী জামাতকেও সত্য জামাত এবং বাহাউল্লাহও “সত্য মসীহ” হয়ে যেত। তাই আবেগপ্রবণ হয়ে নয়, বরং বিবেকবুদ্ধি সহকারে সত্যটা খুঁজে নেবেন! ইসলামের মূলধারায় ফিরে আসবেন।

ফেইসবুক থেকে

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক
প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

শায়খ সারহেন্দী (রহ.) এর নামে মিথ্যাচার-৭

মুজাদ্দিদ আলফে সানী (রহ.)-এর নামে মিথ্যাচার করে মির্যা কাদিয়ানী একই বক্তব্যকে দুই জায়গায় দুইরকম উদ্ধৃত করে পাকড়াও হয়েছেন। যেমন,

  • মির্যা কাদিয়ানী সাহেব লিখেন, ‘মুজাদ্দিদ আলফে সানী স্বীয় মাকতুবাত এর দ্বিতীয় খণ্ডে পরিষ্কার লিখেছেন, নবী হওয়া ছাড়াও উম্মতের সাধারণ সদস্যরাও আল্লাহতালার সাথে বাক্যালাপের সৌভাগ্য পেতে পারে। আর এমন সৌভাগ্যবানদের মুহাদ্দাস বলা হয়।’ (রূহানী খাযায়েন ১/৬৫২)।
  • মির্যা সাহেব তার বইয়ের আরেক জায়গায় লিখেছেন, ‘মুজাদ্দিদ সেরহান্দী নিজ মাকতুবাত এর মধ্যে লিখেছেন, যদিও বা এই উম্মতের কিছু সদস্য আল্লাহর সাথে কথপোকথন ও আল্লাহর সম্বোধনের অধিকারী এবং কেয়ামত পর্যন্ত এই ধারা চলতে থাকবে কিন্তু যাকে খুব বেশি এই বৈশিষ্ট্য এবং গায়েবের সংবাদ দান করা হয় তাকে নবী বলা হয়।’ (রূহানী খাযায়েন ২২/৪০৬)।

কাদিয়ানীরা মির্যাকে রক্ষা করতে এক্ষেত্রেও যে কাসুন্দি নিয়ে হাজির হন, তার সারাংশ মুটামুটি এরকম!

মির্যা সাহেব নাকি মুজাদ্দিদ আলফে সানী (রহ.) এর “মাকতুবাত” কিতাবের হুবহু উক্তিকে উদ্ধৃত করেননি, বরং ভাবার্থ উদ্ধৃত করেছেন। যেজন্য মির্যা সাহেবকে নাকি খেয়ানতকারি বলা যাবেনা। প্রতিউত্তরে আমি বলি, যেখানে মির্যা সাহেবের উদ্ধৃত বক্তব্যের কথাগুলো একদমই সুস্পষ্ট ও উদ্ধৃতিমূলক সেখানে আপনি/আপনারা মির্যা সাহেবের খেয়ানতপূর্ণ চরিত্রের কালিমা মুছতে কিভাবে এবং কোন প্রমাণে বলতে চাচ্ছেন যে, এটি আলফে সানী (রহ.) এর বক্তব্যের ভাবার্থ মাত্র! এভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়ে পাছে নিজের পরকাল নষ্ট করে ফেলছেন কিনা—একটু তো চিন্তা করবেন, তাই নয় কি?

স্ক্রিনশট

জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই ভাবিয়ে তুলবে!!

ফেইসবুক থেকে

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
তাং ০৫/০৮/২০২১

কাদিয়ানীদের একটি সুস্পষ্ট ধর্মমত

কাদিয়ানীদের কিভাবে বিশ্বাস করবেন? এরা গিরগিটির মতো প্রতি ক্ষণে রঙ বদলায়! এদের লিফলেট আর প্রচারপত্রগুলো দেখলে মনে হবে যে, এরা শুধুই ইমাম মাহদী হিসেবে মির্যা কাদিয়ানীকে মান্য করার কথা বলছে। এদের দাবী হল, এই একটা মাত্র কনসেপ্ট ছাড়া মুসলমানদের সাথে নাকি এদের আর কোনো বিরোধ নেই! আহা! কত নিকৃষ্ট ধোকা আর মিথ্যাচার!

এখানে এই যে দেখতে পাচ্ছেন, তারাই বলছে, হযরত মুহাম্মদ সাঃ শেষনবী নন। নাউযুবিল্লাহ।

এর মানে হল, এরা মুহাম্মদ সাঃ -কে বিনা ব্যতিক্রমে “শেষনবী” বিশ্বাস করেনা। অথচ হাদীস শরীফে “লা নাবিয়্যা বা’দী” বলা হয়েছে। যেখানে “লা” শব্দটি ‘লি নাফিয়ে আম’ অর্থাৎ বিনা ব্যতিক্রমে অর্থ নির্দেশকারী ‘লা‘। হুবহু এই ‘লা‘ শব্দটি কলেমার মধ্যেও রয়েছে। ফলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ অর্থ দাঁড়ায় — বিনা ব্যতিক্রমে আল্লাহই একমাত্র উপাস্য। ফলে এখানে তথাকথিত জিল্লি বা বুরুজি উপাস্যের দ্বিতীয় কোনো কনসেপ্ট নির্দেশ করার যেমন সুযোগ নেই তেমনি ‘লা নাবিয়্যা বা’দী (আমার পর আর কোনো নবী নেই – সহীহ বুখারী)’র কারণেও দ্বিতীয় আর কোনো জিল্লি বা বুরুজি টাইপের নবীর জন্ম হওয়ারও সুযোগ নেই বলে সাব্যস্ত হল। এবার অভিধান থেকে خاتم النبيين বা খাতামুন নাবিয়্যীন হতে কী অর্থ নেয়া হয়েছে তা দেখুন!

তাহলে এখন প্রশ্ন হল, খতমে নবুওয়ত পরিপন্থী বিশ্বাস যাদের তারা কিভাবে নিজেদের “মুসলিম” দাবী করতে পারে?

কাদিয়ানীদের দৃষ্টিতে ‘খতমে নবুওয়ত’ এর ব্যাখ্যা কীরকম তা জানতে এখানে ক্লিক করুন। কাদিয়ানীদের প্রকাশিত ‘উম্মতি নবী‘ বই এর ৯ নং পৃষ্ঠার স্ক্রিনশট নিম্নরূপ,

স্যোসাল মিডিয়ায় সক্রিয় কতিপয় কাদিয়ানী মিশনারী ও তাদের সাপোর্টারদের বিভিন্ন সময় স্ব স্ব স্বীকারোক্তি এ ই যে,

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক