Home Blog Page 5

শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.)-এর কসীদায় শেষ যুগে হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আসার সংবাদ

0

কাদিয়ানীদের জন্য দুঃসংবাদ!! শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.)-এর কসীদায় ❝ঈসা (আ.) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন❞ বলেও উল্লেখ রয়েছে…

শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.)-এর সহস্রাধিক ফার্সি কাব্য হতে ঈসা (আ.) এবং ইমাম মাহদী (আ.) উভয় সম্পর্কে আগাম ভবিষ্যৎবাণীতে যা যা উল্লেখ রয়েছে আজ সে সম্পর্কে লিখছি,

তার আগে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী সম্পর্কে কিছু জানা উচিত, উনার পূর্ণ নাম নূরউদ্দীন। জন্ম ১৩৩০ খ্রিস্টাব্দে ইরানের হালব শহরে। একজন বিখ্যাত বুযূর্গ ও সাহেবে কাশফ ছিলেন। প্রায় দুই সহস্রাধিক ফার্সি এ কাব্যটি তারই অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি ৫৭০ হিজরি মুতাবেক ১১৭৪ খ্রিস্টাব্দে এ কাব্য লিপিবদ্ধ করেন। ফলে এই কাব্য আজ থেকে প্রায় ৮৭৪ বছর পূর্বেকার ভবিষ্যৎবাণী ঘেরা এক রহস্যপূর্ণ কাব্য। প্রতি যুগ ও শতাব্দীতে তাঁর এ ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণতা লাভ করার শক্তিশালী প্রমাণ ও সাক্ষী বিদ্যমান। শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) ২৮ শে এপ্রিল ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দে ইরানের শাহরাস্তান শহরের মাহান (ماهان) নামক গ্রামে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮-৯৯ বছর। তাঁর উক্ত রহস্যপূর্ণ কাব্যগুলোকে (কসিদা) আজও বিশ্ববাসী নিজেদের জন্য শান্তনা ও আশা জাগানো মাইলফলক হিসেবে দেখে থাকেন।

প্রথমে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) এর কিছু ফার্সি কাব্য নিম্নরূপ,

((غلبہء اسلام باشد تا چہل در ملک ہند+بعد ازاں دجال ہم از اصفہاں پیدا شود))

❝ইসলামের বিজয় চল্লিশ বছর যাবৎ হিন্দুস্তানে অক্ষুণ্ণ থাকবে। তারপরেই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে ইরানের ইস্পাহান শহর থেকে।❞

((از برائے دفع آں دجال مے گوئم شنو+عیسیٰ آید مہدی آخر زماں پیدا شود​))

❝আমি বলছি, তোমরা শুনো! এই দাজ্জাল কাফেরকে প্রতিহত করার জন্য হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাশরীফ আনবেন এবং শেষ যামানায় আবির্ভূত হবেন হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।❞

((نائب مہدی آشکار شود+بلکہ من آشکار مے بینم​))

❝(ঈসার) সহকারী মাহদীর প্রকাশ ঘটবে, বরং আমি তো তাঁকে প্রকাশিত হতে দেখতে পাচ্ছি।❞

((سمت مشرق زیں طلوع کند+ظہور دجال زار مے بینم​))

❝আমি পূর্ব দিক থেকে অভিশপ্ত দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হতে দেখতে পাচ্ছি।❞

((رنگ یک چشم او بہ چشم کبود+خرے بر خر سوار مے بینم))

❝তার এক চক্ষু (আঙ্গুরের ন্যায়) ফোলা হবে, আর আমি তাকে দেখতেছি সে গাধার পিঠে আরোহন করে আসছে।❞

((لشکر او بود اصفہاں+ہم یہود و نصاریٰ مے بینم​))

❝তার সৈন্যবাহিনী ইস্পাহান শহরের হবে, আর তাকে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সৈন্যদলের সাথে দেখতে পাচ্ছি।❞

((ہم مسیح از سماء فر ود آید+پس کوفہ غبار مے بینم​))

হযরত মসীহ আলাইহিস সালামও আকাশ থেকে অবতরণ করবেন, আমি কূফা নগরীতে ধূলো (উড়তে) দেখতে পাচ্ছি।❞

((از دم تیغ عیسیٰ مریم+قتل دجال زا رمے بینم​))

আমি হযরত ঈসার তরবারি দ্বারা অভিশপ্ত দাজ্জালের হত্যা হতে দেখতে পাচ্ছি।❞

((زینت شرع دین از اسلام+محکم و استوار مے بینم​))

❝ইসলামের শরীয়া দ্বীনকে সুশোভিত করবে। আর আমি দ্বীনকে শক্তিশালী এবং গঠনমূলক হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।❞

((نہ وردے بخود نمے گوئم+بلکہ از سر یار مے بینم​))

❝এই ঘটনাগুলো আমি নিজের পক্ষ থেকে বলছিনা, বরং আমি স্বয়ং আল্লাহর নিগূঢ় রহস্য দেখতে পাচ্ছি।❞

((نعمت اللہ نشستہ در کنجے+ہمہ را در کنار مے بینم​))

❝নেয়ামতুল্লাহ এক কোণে বসে একদিক থেকে সবকিছু দেখতে পাচ্ছে।❞

শেষকথাঃ

মির্যা কাদিয়ানী ছিল শতাব্দীর বড় দাজ্জাল (মহা প্রতারক)! কারণ সে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) এর নামেও মিথ্যাচার করে গেছে। তিনি নাকি ঈসা আর মাহদী দু’জনকে একই ব্যক্তি বলে গেছেন এবং উক্ত কাসীদায় নাকি তিনি এধরণের কাব্য লিখেও গেছেন! যেমন সে লিখেছে مہدئ وقت و عیسئ دوراں+ ہر دو را شہسوار می بینم

❝ঐ আগমনকারী ব্যক্তি মাহদীও হইবেন এবং ঈসাও হইবেন। তিনি উভয় নামের প্রতীক হইবেন এবং উভয় নামের দাবী করিবেন।❞ (দেখুন, মির্যার রচনা ‘হাকীকাতুল ওহী’ পৃষ্ঠা নং ২৭৮)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য

বলে রাখা দরকার, মির্যা কাদিয়ানীর উল্লিখিত ফার্সি পঙক্তিটির সঠিক অনুবাদেও সে ভুল করেছে। বরং এর সঠিক অনুবাদ হবে, ❝যুগ মাহদী এবং সে যুগের ঈসা, দুইজনকেই আমি বীরযোদ্ধারূপে দেখতে পাচ্ছি।❞

Hakikatul Wahi P-278 Mirza Qadiani

যাইহোক আমি অনেক খোঁজেছি, কিন্তু এধরণের কোনো কাব্য ঐ কসীদায় পাইনি, বরং সম্পূর্ণ বিপরীত পেয়েছি। অর্থাৎ তিনি তাঁর কসীদায় পরিষ্কার লিখে গেছেন যে, ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবেন এবং শেষ যুগে হযরত মাহদীর আত্মপ্রকাশ হবে। সুতরাং মির্যা কাদিয়ানী একজন জঘন্য প্রতারক ও মিথ্যাবাদী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

অনুবাদক, লিখক ও গবেষক প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
এডমিন ফিকহ মিডিয়া

প্রকৃতপক্ষে আহলুল হাদীস বা আহলে হাদীস কারা?

0

আহলে হাদীস (আহলুল হাদীস/اهل الحديث) এর সংজ্ঞা বা ডেফিনেশন,

আহলুল হাদীস এর ডেফিনেশন কীরকম সে সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম আল ওয়াজীর-محمد بن إبراهيم الوزير (মৃত. ৮৪০ হিজরী) লিখেছেন ((من المعلوم ان اهل الحديث اسم لمن عنِيَ به وانقطع فى طلبه كما قال بعضهم)) অর্থাৎ জানা আছে যে, নিশ্চয়ই আহলুল হাদীস তাদেরই নাম যারা হাদীস সংরক্ষণ করেছেন এবং হাদীস অনুসন্ধানের (সংগ্রহের) ক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করেছেন। মুহাদ্দিসগণের কেউ কেউ এরূপই বলেছেন”।

(আর-রওদুল বাসিম ফিয যাব্বি আ’ন সুন্নাতি আবীল কাসিম পৃ-১৮২)।

নোটঃ আরবী সরফ শাস্ত্রে عنِيَ শব্দটি فعل আর তার মাসদার বা ক্রিয়ামূল عناية, শব্দটির ছিলাহ (صلة) যদি ب হয় তখন এর অর্থ হবে সংরক্ষণ করা, রক্ষণাবেক্ষণ করা, গুরুত্বারোপ করা। (وعنِيَ بـ. • اهتمام، رعاية، حفظ)। আরবী অভিধান المعنى দ্রষ্টব্য।

আল্লাহর শুকরিয়া! “আহলে হাদীস” এর প্রকৃত ডেফিনেশন জানা গেল! আহা! এ যুগে এমন ব্যক্তিরাও নিজেদের “আহলে হাদীস” দাবী করে যাচ্ছেন যাদের ন্যূনতম সূরা ফাতেহাও সহীহ শুদ্ধ নেই, আরবী অক্ষর জ্ঞান তো বহূত দূর ক্যা বাত….। (ফিকহ মিডিয়া থেকে পড়ুন)

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী এডমিন ফিকহ মিডিয়া (ফিকহ বিষয়ক অনলাইন ভিত্তিক গবেষণামূলক একটি Group বা প্লাটফর্ম)।

আর্টিকেলগুলো আপনার জন্য

❝আমাদের পক্ষ হতে প্রতিবাদ ও তাদের (ইমামে আ’যম বিরোধী গয়ের মুকাল্লিদদের) অপপ্রচারের জবাব❞ Click

মস‌জি‌দে নববীর দেয়া‌লে চার মাযহাবের ইমা‌মগণের নামগুলো স্বর্ণাক্ষরে খচিত Click

তোমাদের মাযহাব “হানাফী” কিন্তু তোমরা আকীদায় “আশ’আরী-মাতুরিদী” কেন? Click

কতিপয় আশ’আরি ও মাতুরিদীধারার বিখ্যাত ৫ জন ইমাম ও মনীষীবৃন্দ! Click

আল্লাহ কোথায়? প্রশ্নের উত্তর কী? Episode 1 Click

Episode 2 Click

Episode 3 Click

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.)-এর দৃষ্টিতে “আহলে হাদীস”-এর প্রকৃত ডেফিনিশন Click

ফিকহী ইমাম ছাড়া আহলে হাদীসরা (হাদীস বিশারদরা) পথভ্রষ্ট ও গোমরাহ! এ কথা কার? Click

এক নজরে হাদীসশাস্ত্রে ইমামে আযম হযরত আবূ হানীফা রাহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের “মানাকীব” তথা গৌরবগাঁথা প্রশংসা-সমূহ Click

শায়খুল ইসলাম আল্লামা যাহিদ আল কাউসারী রাহিমাহুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী Click

ইযা সাহহাল হাদীসু ফাহুয়া মাযহাবী (إذا صح الحديث فهو مذهبى) এর সঠিক তাৎপর্য ও ভ্রান্তি নিরসন Click

❝তোমার জন্য আফসোস হে ইয়াকুব (আবূ ইউসুফ)! তুমি আমার থেকে যা শোন তাই লিখে নিও না। কারণ আমি আজ যে মত প্রদান করি, কাল তা প্রত্যাখ্যান করি এবং কাল যে মত প্রদান করি, পরশু তা প্রত্যাখ্যান করি❞ (সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তর) Click

মানাকীবে আবী হানীফা❞ অর্থাৎ ইমাম আবূ হানীফা রাহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে ইমামগণের প্রশংসাবাণী

ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহ.) হতে Episode 1 Click

ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহ.) হতে Episode 2 Click

ইমাম সুফিয়ান আস-সওরী (রহ.) হতে, Click

ইমাম সুফিয়ান ইবনে উইয়াইনাহ রাহিমাহুল্লাহ-এর পক্ষ হতে Click

ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) হতে Episode 1 Click

ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.) হতে Episode 2 Click

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.) হতে Episode 1 Click

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) হতে Episode 2 Click

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) হতে Episode 3 Click

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) হতে Episode 4 Click

ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন (রহ.) হতে Episode 5 Click

ইমাম শাফেয়ী (রহ.) হতে Click

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) হতে Episode 1 Click

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) হতে Episode 2 Click

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) হতে Episode 3 Click

ইমাম আবুদাউদ সিজিস্তানি (রহ.) হতে Click

ইমাম মক্কী ইবনে ইবরাহীম (রহ.) হতে Click

আমীরুল মুমিনীন ফিল হাদীস ইমাম শু’বাহ ইবনুল হাজ্জাজ (রহ.) হতে Click

ইমাম আওযা’ঈ (রহ.) হতে Click

ইমাম আইয়ুব আস-সিখতিয়ানী (৬৬-১৩১ হিঃ) এর দৃষ্টিতে Click

ইমাম আব্দুল ওয়াহাব আশ শা’রানী থেকে Click

হাদীসের জগতে ইমামে আযম আবূ হানীফা (রহ.)-এর অবস্থান! Click

ইমামগণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ❝সেতু পার হওয়া ইমামগণকে কারো বিচ্ছিন্ন কোনো “জরাহ” বা সমালোচনা প্রভাব ফেলবেনা❞ Click

ইমামে আযম আবূ হানীফা (রহ.) সম্পর্কে এক নজরে ইমামগণের সম্মিলিত মানাকীব Click

চলবে…

মির্যা কাদিয়ানী থিয়েটারে যাওয়া

0

মুন্সী জফর আহমদ ছিলেন মির্যা কাদিয়ানীর একজন ঘনিষ্ঠ মুরিদ। আজকে তারই উদ্ধৃতিতে মুহাম্মদ সাদিক এর বই “যিকরে হাবীব” থেকে চমৎকার একটা ঘটনা তুলে ধরছি।

উল্লেখ্য, মুহাম্মদ সাদিককে মির্যা কাদিয়ানীর যুগে কাদিয়ানীরা “মুফতি” সম্বোধন করত। তাই তার বইতেও দেখবেন مفتى محمد صادق এভাবেই লিখা। মুসলিম উম্মাহার অন্যতম সুনান গ্রন্থ “তিরমিজি শরীফ” এর রচয়িতা ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আত তিরমিজি রাহিমাহুল্লাহ (২০৯-২৭৯ হিঃ) আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ‘শামায়েল’ (شمائل) বর্ণনা করে ‘শামায়েলে তিরমিজি’ (شمائل ترمزى) সংকলন করেছেন, ঠিক তারই নমুনায় এই কাদিয়ানী মুফতী(?) মুহাম্মদ সাদিক মির্যা কাদিয়ানীরও ‘শামায়েল’ রচনা করে সেটির নাম দিয়েছেন ‘যিকরে হাবীব’ (ذكر حبيب) তথা ‘বন্ধুর আলোচনা’। বাংলাদেশের বিবাড়িয়া সদর জেলার কান্দিপাড়া গ্রামের মৌলভিপাড়ায় স্থানীয় পথভ্রষ্ট কথিত পীর আব্দুল ওয়াহিদকে (যিনি বর্তমান কাদিয়ানী আমীর আব্দুল আউয়ালের নানী ‘হোসনে আক্তার ভানু’ সাহেবার পিতা) “প্রধান” (ন্যাশনাল আমীর) করে ১৯১৩ সালে ‘ব্রাহ্মণবাড়ীয়া আঞ্জুমানে আহমদীয়া’ নামে প্রথম যখন কাদিয়ানী জামাতের গোড়াপত্তন হচ্ছিল তখন সেখানে ভারতের কাদিয়ানের ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দলও উপস্থিত ছিল, কথিত মুফতি মুহাম্মদ সাদিক তখন কাদিয়ানের পক্ষ থেকে নতুন প্রতিষ্ঠিত পূর্ব বাংলার কাদিয়ানী জামাতের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতার ভুমিকায় ছিলেন।

আসুন সেই মুফতি(?) মুহাম্মদ সাদিক এর বই থেকে একটু অংশ পড়া যাক, কথিত মুফতি মুহাম্মদ সাদিক লিখেন, “মুন্সী জফর আহমদ সাহেব নিজেই আমাকে বলেছেন, আমি হযরত সাহেবের (মির্যা কাদিয়ানীর) নিকট আপনার বিরুদ্ধে (অর্থাৎ বইটির লিখক মুফতি সাদেকের বিরুদ্ধে) অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি মনে করলাম যে, তিনি আপনাকে ডাকবেন এবং (আপনার থিয়েটার দেখা নিয়ে) আপনাকে সতর্ক করবেন। কিন্তু হুযুর (মির্যা সাহেব) শুধু একথাই বললেন যে, একবার আমিও (থিয়েটার দেখতে) গিয়েছিলাম, যাতে অবিজ্ঞতা লাভ হয়।” (যিকরে হাবীব পৃষ্ঠা নং ১৪ অথবা পৃষ্ঠা নং ১৮)।

সে যাইহোক, মির্যা কাদিয়ানী সাহেব থিয়েটার দেখেছিলেন সে কথাই তার একান্ত কাছের মুরিদের নিকট তিনি ব্যক্ত করে গেছেন। আর সেটা তার কথিত শামায়েল (জীবনচরিত) গ্রন্থে তারই আরেক ঘনিষ্ঠ সহচর কাদিয়ানী মুফতি মুহাম্মদ সাদিক উদ্ধৃত করেছেন। একই পুস্তকের উপরোল্লিখিত পুরো লিখাটা পড়ে দেখুন, গ্রন্থকার একটু উপরেই নিজের থিয়েটার দেখা সম্পর্কে পরিষ্কার লিখেছেন। (উর্দূ) ایک شب دس بجے کے قریب میں تھیئٹر میں چلا گیا (উচ্চারণ) এক শব দশ বাজে কে করিব মাই থিয়েটার মে চলা গিয়া… অর্থাৎ এক রাতে দশটার কাছাকাছি সময় আমি থিয়েটারে চলে গিয়েছিলাম।

সারকথা, মির্যা কাদিয়ানীর নিকট যখন মুফতি মুহাম্মদ সাদিক সাহেব সম্পর্কে থিয়েটার দেখার অভিযোগ করা হল তখন তিনি অভিযোগকারীকে বললেন, (উর্দূ) ایک دفعہ ہم بھی گئے تھے اور اس سے معلومات حاصل ہوتے ہیں (উচ্চারণ) এক দফা হাম ভি গিয়ি থি অর উছ ছে মালুমাত হাছিল হোতে হেঁ। অর্থাৎ “একবার তো আমিও গিয়েছিলাম যাতে এর দ্বারা (তথা থিয়েটার দেখা দ্বারা) অবিজ্ঞতা লাভ হয়।” আমি জানি না, বর্তমানে কাদিয়ানীরা জীবনে একবারের জন্য হলেও থিয়েটার দেখাকে “সুন্নাতে কাদিয়ানী” সাব্যস্ত করে কিনা?

মির্যা কাদিয়ানীর থিয়েটারে যাওয়া কিবা নর্তকীদের নাচ-গান উপভোগ করা ইত্যাদি নিয়ে এ মুহূর্তে আমার কোনো প্রশ্ন নয়, সেটা যার যার ব্যাপার। এখানে আমার প্রশ্নটি তার মুরিদদের উদ্দেশ্যে। প্রশ্ন হল, মির্যা কাদিয়ানীর থিয়েটারে যাওয়া সম্পর্কিত বক্তব্যটি একই বইয়ের আলাদা দুই সংস্করণে ভিন্ন ভিন্ন দুটি পৃষ্ঠায় কেন? হার্ডকপিতে ১৮ নং পৃষ্ঠায় আবার পিডিএফ কপিতে ১৪ নং পৃষ্ঠায়, এত এলোমেলো কেন? কান্দিপাড়ার নতুন একজন নও মুসলিমের (কাদিয়ানী থেকে ২০১৬ সালে মুসলিম হওয়া) একটা কথা মনে পড়ে গেল, তার সাথে ২০১৯ সালে আমার বিবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার তারুয়া গ্রামে দেখা হয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তিনি বললেন, কাদিয়ানীদের বাংলা বইগুলোরও একই অবস্থা! প্রতি এডিশনে তারা পৃষ্ঠা নাম্বার এলোমেলো করে দেয়। আলেমরা যখন তাদের বই থেকে রেফারেন্স দেয় তখন আমরা আমাদের স্থানীয় মু’আল্লিমের নিকট রেফারেন্স মিলানোর জন্য যেতাম মু’আল্লিম সাহেব আমাদেরকে অন্য আরেকটা এডিশন বের করে বলতেন, দেখ! এধরণের কোনো কথাই আমাদের বইতে নেই…! মোল্লারা আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে!! আমি জানিনা, আসলে কি এ উদ্দেশ্যেই এসব করা হচ্ছে? যিকরে হাবীব পৃষ্ঠাটিতেও পৃষ্ঠা নাম্বার দুই রকম…! এর পাছে রহস্যটা কী? জানার জন্য প্রশ্ন!!

যিকরে হাবীব গ্রন্থের রচয়িতা মুফতি মুহাম্মদ সাদিক কাদিয়ানী

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক
প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

কুরবানীর শর’ঈ হুকুম ইখতিলাফ ও পর্যালোচনা

0

কুরবানী বা الأضحية এর শর’ঈ হুকুম, ইখতিলাফ ও পর্যালোচনা

কুরবানী حكما (নির্দেশগত) ওয়াজিব, طريقة (আদর্শগত) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, এভাবে-ও توضيح বা ক্লিয়ারেন্স দেয়া যায়, তাহলে কোনো মতবিরোধ থাকেনা, বলাবাহুল্য, রাসূল (সা.) আজীবন “কুরবানী” এর বিধান পালন করে গেছেন, জীবনে একবারের জন্যও তিনি মিস করেননি। এটাও প্রমাণ করে যে, কুরবানী বিধানগত ওয়াজিব বা আবশ্যক, প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে কুরবানী দিতে হবে। ইবনে মাজাহ (হাসান, তাহকিক আলবানী) এর একটি হাদীসে (فلا يقربنّ مصلانا) এসেছে, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী দিবেনা সে যেন আমাদের মুসাল্লা-এর (তথা ঈদগাহের) নিকটবর্তীও না হয়। কুরবানীর বিধান পবিত্র কুরআন (فصلِّ لربِّك وانحر) দ্বারা সাব্যস্ত। আবূ দাউদ শরীফের (হা-২৪৮৭, সহীহ) একখানা হাদীস (يا أيها الناس إنّ على أهل كل بيتٍ أضحيةً في كل عام) দ্বারাও বুঝা যায় যে, কুরবানী প্রত্যেক বছর বিধিবদ্ধ। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.) এ ধরনের বিভিন্ন দলীল ও প্রমাণের ভিত্তিতে “কুরবানী” ওয়াজিব (والأظهر وجوبها), এ সিদ্ধান্তেই উপনীত হন। দেখুন, মাজমূ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়াহ খ-২৩ পৃ-১৬২।

শেষকথা হল, কুরবানী বিধানগত “ওয়াজিব” এটাই স্বীকৃত ও চূড়ান্ত, তবে কুরবানী ইবরাহীম (আ.) এর ঐতিহাসিক স্মৃতি স্মারক হিসেবে শরীয়তে মুহাম্মদীয়ায় আমাদের জন্য (سنة ابيكم ابراهيم) “সুন্নাতে ইবরাহীম” হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত। আরও সহজ করে বললে কুরবানী হচ্ছে মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহীম (আ.)-এর সুন্নাহ। আমাদের দেশে গয়ের মুকাল্লিদ শায়খদের কেউ কেউ “কুরবানী”-কে হয়ত সেই সূত্রে ‘সুন্নাহ’ বলতে চান। শায়খ উসাইমিন (রহ.)ও এ মতের প্রবক্তা। ডক্টর মঞ্জুর ইলাহী হাফিজাহুল্লাহ’র কথাটি খুব চমৎকার লেগেছে, তিনি ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.)-এর তাহকিককেই প্রাধান্য দিয়ে বলেছেন, কুরবানী “ওয়াজিব” এটাই সঠিক রায়। যুক্তিও বলে যে, কুরআনে যে সমস্ত নির্দেশ ইংগিতে থাকে আর হাদীস সেটিকে শর্তসাপেক্ষ (নেসাব, অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন থেকে মুক্ত হওয়া শর্তে) বিধিবদ্ধ করে, সে সমস্ত নির্দেশ “ওয়াজিব”-কেই নির্দেশ করবে, সুন্নাহ হওয়াকে নয়।

শরীয়তের একটি মাসয়ালাও রয়েছে যে, সুন্নাহ-কে কেউ অস্বীকার করলে সে বড়জোর ফাসেক হবে, কাফের হবেনা কিন্তু কুরবানীকে অস্বীকার করলে ব্যক্তি “কাফের” হয়ে যাবে। কেননা কুরবানীকে অস্বীকার করার অর্থই হল পবিত্র কুরআনকে আংশিক (فصلِّ لربِّك وانحـر) অস্বীকার করা, যা সুস্পষ্ট কুফুরী। কেননা কুরআনের সূরা মায়েদা, আয়াত-২৭, সূরা আনআম, আয়াত ১৬২-১৬৩, সূরা হজ, আয়াত ৩৪-৩৫ এবং সূরা হজ, আয়াত ৩৬, সূরা হজ, আয়াত ৩৭-৩৮, সূরা সাফফাত, আয়াত ১০২, সূরা কাউসার, আয়াত ২, কুরবানী সম্পর্কেই বিধৃত হয়েছে।

সুতরাং কুরবানী “ওয়াজিব” এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রধান প্রধান মুজতাহিদ ইমামগণের মধ্যে আবূ হানীফা, মালিক (ইমাম মালিকের দুটি মত : সুন্নাহ এবং ওয়াজিব, কিন্তু জাহেরি রেওয়ায়েত বা চূড়ান্ত মতানুযায়ী ‘ওয়াজিব‘ – মাজমু’ ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়াহ ২৩/১৬২) এবং আহমদ ইবনে হাম্বল ও ইমাম আওযা’ঈ, লাইছ প্রমুখ সকলের মতে এটি ওয়াজিব

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি

কিছু সংখ্যক সাহাবীর ব্যাপারে বলা হয় যে, তারা কোনো কোনো বছর কুরবানী করা থেকে বিরত ছিলেন। এর উত্তর হচ্ছে, কুরবানী একটি শর্তসাপেক্ষ শর’ঈ হুকুম। হয়ত বা উনারা সেই শর্তে ঐ বছর গুলোতে উত্তীর্ণ হননি, অথবা তারা সুনির্দিষ্ট কোনো ইল্লাত বা কারণকে সামনে রেখে ইজতিহাদ করায় সেই কারণের ভিত্তিতে তারা ঐ বছরগুলোতে কুরবানী থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। সেই ইল্লাত বা কারণটি ছিল, সাধারণ মানুষের কুরবানীর হুকুমকে অলঙ্ঘনীয় বিধান ভেবে যেন পদস্খলন না ঘটে (وبلغنا أن أبا بكر وعمر رضي الله عنهما كانا لا يضحيان كراهية أن يُرَى أنها واجبة), কিন্তু তাদের এ ইজতিহাদ সমসাময়িক কাউকে প্রভাবিত করেনি, করার প্রমাণও নেই। ইমাম শাফেয়ী (রহ.)ও তাঁদের সে ইজতিহাদের উপরই সিদ্ধান্তে উপনীত হন বিধায় তাঁর ফিকহ মতে কুরবানী “সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ”।

কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ ইমামগণের ফিকহ এবং রাসূল (সা.)-এর “সীরাত” (জীবন ও কর্ম) কী বলে তাও দেখার বিষয়! আমরা জানি যে, রাসূল (সা.) কখনো কুরবানী মিস করেননি। তিনি মদনী জীবনে প্রায় দীর্ঘ ১০ বছর সময় অতিবাহিত করেছেন, এক বছরের জন্যও কুরবানী থেকে বিরত থাকেননি। মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি এর হাদীস (أقام النبي صلي الله عليه وسلم بالمدينة عشر سنين يُضحي) সে কথারই সাক্ষ্য দেয়। আরও দেখুন, ফাতহুল বারী ১৩/৬৫, ইবনে হাজার। কাজেই “কুরবানী” এর শর’ঈ হুকুম ওয়াজিব, আর এ মতটিই প্রাধান্য মত। পরিশেষে কথা হল, এ ফেতনার যুগে পরিচিত কিবা অপরিচিত অনেককে দেখা যাবে যে, ফিকহি মীমাংসিত বিষয়গুলোয় বিতর্ক সৃষ্টি করে চলেছে ও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাই এসবে কান দেয়ার কোনো দরকার নেই। নইলে বিভ্রান্ত হবার আশংকা থাকবে। আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ সমঝ দান করুন। আমীন।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ

বাহাউল্লাহ নতুন শরীয়তবাহক ও রাসূল দাবী করা

0

বাহায়ীরা বাহাউল্লাহকে “নতুন শরীয়তবাহক একজন রাসূল” বিশ্বাস করে কিনা?

এর উত্তর খোঁজতে গিয়ে তাদেরই নিজেস্ব একটি আরবী ওয়েবসাইট www.bahai.org থেকে নিন্মোক্ত তথ্যটি ফেলাম। লিখা আছে,

في اواسط القرن التاسع عشر اختار الله حضرة بهاء الله لإيصال رسالة جديدة إلى البشرية. فعلى مدى أربعة عقود نزلت آلاف الآيات والرسائل والكتب من يراعه المباركة. في آثاره الكتابية هذه وضع الخطوط الرئيسية لإطار عمل يهدف إلى تطور حضارة عالمية تأخذ بعين الاعتبار البعدين الروحي والمادي لحياة الانسان.

অর্থ- ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে মানবজাতির প্রতি নতুন রেসালত (শরীয়ত) পৌঁছে দেয়ার জন্য আল্লাহতালা বাহাউল্লাহকে মনোনীত করেন। তারপর তার বরকতময় হেফাজতে চার দশক ধরে বহু কিতাব, পত্রাবলী এবং হাজার হাজার আয়াত নাযিল করা হয়। তিনি তার লেখালেখিতে বৈশ্বিক সভ্যতার উন্নতির লক্ষ্যে কাঠামোগত প্রধান প্রধান অনেকগুলো পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন যা মানব জীবনের আধ্যাত্মিক এবং বস্তুগত মাত্রাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে।

(সূত্র – বাহায়ী ডট অর্গ {ক্লিক})।

সম্পূর্ণ লিখাটি হতে জানা গেল, বাহায়ী জামাতের অনুসারীরাও কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ন্যায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরেও মির্যা হোসাইন আলী নূরীকে (বাহাউল্লাহ নামে প্রসিদ্ধ) নতুন একজন “রাসূল” বিশ্বাস করে। ফলে এরাও উম্মতে মুহাম্মদীয়ার গণ্ডি থেকে খারিজ ও বহিষ্কৃত। সুতরাং এদের ধর্মমত সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করতে হবে। যাতে সাধারণ কেউ এদের জামাতকে মুসলমানদের কোনো উপদল ভেবে পদস্খলিত না হয়।


একই তথ্য বাহায়ীদের আরও যেসব ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়

ক্লিক

ক্লিক

ক্লিক

ক্লিক

তথ্য প্রচারক ও লিখক

প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

লিখাটি প্রচার করতে হবে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

ডক্টর ইসরার আহমদ ও রাফউল ইয়াদাইন

0

সালাতে রাফউল ইয়াদাইনের চমৎকার বয়ান – আল্লামা ডক্টর ইসরার আহমদ রাহিমাহুল্লাহ, পাকিস্তান

ডক্টর ইসরার আহমদ। একজন মু’তাদিল ইসলামিক স্কলার। তিনি ইসলামের এবং ধর্মীয় বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত ৬০টি গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে ৯টি বই ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। এর পূর্বে তিনি একজন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং পিস টিভিতে একটি প্রতিদিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতেন। তিনি নির্দিষ্ট কোনো মাসলাকের সাথে পরিচিত ছিলেন না, উনার দালিলিক আলোচনা হতে লক্ষ লক্ষ দর্শক শ্রোতা পরিতৃপ্তির সাথে দ্বীনের ফিকহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে থাকেন। তিনি আজ আর দুনিয়ায় নেই, কিন্তু তাঁর অডিও ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মজার ব্যাপার হল, দেওবন্দী, বেরেলি, আহলে হাদীস ও সালাফী প্রত্যেকে তাঁকে নিজ নিজ মাসলাকের বলে দাবী করে থাকেন। কিন্তু সত্য হল, তিনি একজন ন্যাপরায়ণ ও মধ্যপন্থী ছিলেন। তিনি তারাবী সালাত বিশ রাকাতের প্রবক্তা যেমন, তেমনি সালাতে কখনো কখনো রাফউল ইয়াদাইনও করতেন আবার ছেড়েও দিতেন। আজকে উনার একটা আলোচনা এখানে তুলে ধরছি,

ডক্টর ইসরার আহমদ (রহ.) | ভিডিও – তিনি বলেছেন,

রাফউল ইয়াদাইন তথা সালাতে তাকবীরে তাহরিমাহ ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু হাত উঠানামা করার দলিল বুখারী মুসলিম সহ বহু হাদীসের কিতাবে এসেছে। আর এ সংক্রান্ত হাদীসগুলো ব্যাপক। কোনো কোনো হাদীসে রাসূল (সা.) এর উক্ত আমল সম্পর্কে সাহাবীদের কাছ থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সালাতে রূকুর সময় রাফউল ইয়াদাইন করেছেন, কোনো কোনো হাদীসে রূকু হতে উঠার সময়ও করার কথা রয়েছে। আবার কোনো কোনো হাদীসে এসেছে, প্রত্যেক সেজদার সময় (নাসায়ী ১/১৬৫) এবং সেজদা থেকে উঠার সময়ও রাফউল ইয়াদাইন করেছেন (আবূ দাউদ ১/১০৮, নাসায়ী ১/১৭২)। সেজদা থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময়ও রাফউল ইয়াদাইন করার কথা রয়েছে (আবূ দাউদ ১/১০৫)। তৃতীয় রাকাতের শুরুতেও (সহীহ বুখারী ১/১০২)। সালাতে প্রতিটি উঁচুনিচু হওয়ার ক্ষেত্রে (ইবনে মাজাহ ৬২)। মানে প্রায় পুরো সালাতজুড়ে প্রায় ৭ জায়গায় রাফউল ইয়াদাইন করার দলিল রয়েছে হাদীসে। আহলে হাদীস ভাইয়েরা তো বুখারী মুসলিম এর হাদীসের কথাই বেশি বলেন, অথচ হাদীসের আরও তো অনেক সংকলন রয়েছে। যেমন মুসান্নাফ ইবনে আব্দির রাজ্জাক ইত্যাদি । কিতাবটি বুখারী মুসলিম-এরও অনেক পূর্বেকার সংকলন। সেখানে ঐ সমস্ত বর্ণনা ভূরি ভূরি নজরে পড়বে। কিন্তু আমাদের হানাফী ভাইয়েরা রাফউল ইয়াদাইন এর হাদীসগুলোর উপর আমল করেন না। কেননা রাসূল (সা.) থেকে রাফউল ইয়াদাইন এর যত হাদীস বর্ণিত আছে সেগুলো একেক সাহাবীর একেক সময়ের রাসূল (সা.)-এর সালাতের অবস্থার উপর তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন মাত্র, যা নিয়মিত কোনো অবস্থাকে নির্দেশ করেনা। আর রাসূল (সা.) তো জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে শুধুমাত্র তাকবীরে তাহরিমাহ এর রাফউল ইয়াদাইন ব্যতীত অন্য সব ধরণের রাফউল ইয়াদাইন পরিত্যাগ করেছেন। হানাফী মালেকী মাযহাবের বিশিষ্ট দুই ইমাম যারা অন্য দুই ইমামের-ও পূর্বেকার ও অধিক গ্রহণযোগ্য তারা রাফউল ইয়াদাইন এর হাদীসের আমল গ্রহণ করেননি, হোক তা সহীহ হাদীস। (কেননা সহীহ হাদীসের আমল যদি “মানসূখ” সাব্যস্ত হয় তখন আর সেটির উপর আমল করা হবেনা, যতই সহীহ হোক)।

ইমাম শাফেয়ী অনেক গুলো রাফউল ইয়াদাইন এর মধ্য থেকে মাত্র দু জায়গার আমল গ্রহণ করেছেন। রূকুতে যেতে এবং উঠতে। আর ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলও শাফেয়ীর অনুরূপ বলেছেন।

হানাফী আর মালেকী মাযহাবের যুক্তি হচ্ছে, রাসূল (সা.)-এর জীবনের সর্বশেষ আমলই উম্মাহার জন্য চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে। তাদের এ কথার দলিলও তারা দিয়ে থাকে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর বর্ণনায় আছে, فصلى فلم يرفع يديه الا فى اول مرة অর্থাৎ রাসূল (সা.) সালাত পড়েছেন এবং শুধু প্রথমবার তাকবীরে তাহরিমায় দু হাত উঠিয়েছেন। (তিরমিজি ১/৩৫, হা/২৫৭, আবূ দাউদ হা/৭৪৮)। ইমাম তিরমিজি বলেছেন, هذا حديث حسن অর্থাৎ এ হাদীসের সনদ হাসান। ইবনে হাযম (রহ.) বলেছেন, এর সনদ সহীহ। (আল মুহাল্লা ৪/৮৮)।

সাহাবীরা ছিলেন রাসূল (সা.)-এর পূর্ণ আনুগত্যের একেকজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তারা রাসূল (সা.)-কে যখন যে অবস্থায় দেখেছেন সে অবস্থার কথা উল্লেখ করে দিয়েছেন। এগুলোকে অসঙ্গতি মনে করা পুরোপুরি মূর্খতা। এ সমস্ত বৈপরীত্য আমলগুলোর ডিসাইড করতে মুজতাহিদদেরকে গবেষণা করতে হয়েছে। আমাদেরকে তাদের সেই গবেষণার ফসল ফিকহকে গ্রহণ করতে হবে। আর প্রত্যেক মুজতাহিদের ছিল নিজেস্ব কিছু উসূল (নীতিমালা)। গবেষণার ফলাফল তাদের একেকজনকে একেক মতামতের দিকে নিয়ে যায়। নতুবা মাযহাব কখনো একাধিক হত না। সুতরাং যিনি যেই মুজতাহিদকে ফলো করবেন তিনি সেই মুজতাহিদের ইজতিহাদের উপরই চলবেন।

সাহাবায়ে কেরাম রাসূল (সা.)-কে যখন যে অবস্থায় পেয়েছেন তারা শুধু সেটিকে বর্ণনা করে রেখে গেছেন। আমরা যেসব ক্ষেত্রে গবেষণার দাবী রাখে সেসব ক্ষেত্রে মুজতাহিদের ইজতিহাদের আলোকে সিদ্ধান্তে উপনীত হবো…!

(সম্পূর্ণ ভিডিও এর সার নির্যাস)।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ

ইমাম মালেকের দরসে ইমামে আযম আবূ হানীফা

0

ইমাম মালেক (রহ.)-এর সান্নিধ্যে হযরত ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)

ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-এর বুদ্ধিমত্তাঃ

একদা ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) ইমাম মালেক (রহ.)-এর দরসে (হাদীসের ক্লাসে) উপস্থিত ছিলেন, তখনো তিনি তাঁকে চিনতেন না।

ইত্যবসরে ইমাম মালেক (রহ.) তাঁর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন রাখলেন। অমনি ইমাম আবূ হানীফা (রহ.) সেটির উত্তর দিয়ে দেন।

তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ লোকটি কোথা থেকে এসেছে?

তিনি উত্তর দেনঃ ইরাকবাসীর পক্ষ থেকে।

তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ভণ্ডামী আর বিভেদ সৃষ্টিকারী দেশের অধিবাসীদের কাছ থেকে!!

তিনি (ইমামে আযম) বললেনঃ আমাকে কুরআন থেকে কিছু বলার অনুমতি দিন!

ইমাম মালেক (রহ.) বললেনঃ হ্যাঁ, (অনুমতি দিলাম)।

তিনি (ইমামে আযম) তিলাওয়াত করলেনঃ
(অর্থ) ‘মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের মধ্য হতে কতিপয় এবং ইরাকবাসীদের মধ্যে হতেও কতিপয় লোক এমন মুনাফিক রয়েছে; যারা মুনাফিকিতে অটল। (তওবা ১০১)।

ইমাম মালেক (রহ.) বলেনঃ আল্লাহ তা এভাবে বলেননি!

আবূ হানীফা (রহ.) বললেনঃ আল্লাহ তাহলে কিভাবে বলেছেন?

তিনি বললেনঃ আল্লাহ বলেছেন وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ অর্থাৎ ‘মদীনাবাসীদের’ মধ্যে হতেও কতিপয় লোক এমন মুনাফিক রয়েছে…। (মানে ‘ইরাকবাসী’ এর স্থলে ‘মদীনাবাসী’ হবে)।

তিনি (ইমামে আযম) বললেনঃ আল্লাহ’র প্রশংসা জানাচ্ছি যে, আপনি নিজেই নিজের বিচার করেছেন। (অর্থাৎ কুরআনের ভাষ্যমতে মদীনার-ও কতেক লোক এমন রয়েছে যারা মুনাফিক ও মুনাফিকিতে অটল; তথাপি যত দোষ নন্দ ঘোষ!)

[ইমাম মালেক ইমামে আযমের উপরিউক্ত বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিউত্তরে হতবাক হয়ে] নিজের আসন থেকে লাফিয়ে উঠেন এবং তাঁকে (ইমামে আযমকে) চেনা মাত্রই সম্মান করলেন।

(এটি ইমাম আবূ হানীফার প্রতি ইমাম মালেকের অন্যতম গৌরবগাঁথা স্তুতি – লিখক)।

[রেফারেন্স : নুযহাতুল মাজালিস ওয়া মুন্তাখাবুন নাফাঈস-১৪৯, ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুস সালাম আস-সাফুরী (মৃত. ৮৯৪ হিজরী)]।

আরবীপাঠ সহ ফিকহ মিডিয়া গ্রুপ থেকে পড়ুন

(সংযুক্ত মূল আরবীপাঠ নিম্নরূপ)

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি

অনুবাদক- মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ

ইমাম আবূ হানীফা (রহ)-এর উপর আপত্তি ও সমালোচনার জবাব

1

ফকীহুল মিল্লাত Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-এর বিরুদ্ধে শীয়া ও অন্যান্যদের উদ্দেশ্যমূলক প্রোপাগাণ্ডার দালিলিক জবাব [১ হতে ৩০+]

প্রতিটি আর্টিকেল আমাদের স্যোসাল ফিকহ মিডিয়া গ্রুপ থেকে পড়তে 1to 30+ সংখ্যাগুলোয় (লিংক) ক্লিক করুন

❝সাহাবীর অবমাননা করে Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) বললেন (ذَاكَ قَوْلُ الشَّيْطَانِ) ‘এটা তো শয়তানের কথা’-এর জবাব❞ [01]

❝আবূ ইসহাক আল ফিজারী বলেন (كان ابو حنيفة يقول ایمان ابلیس و ايمان ابی بکر الصدیق رضی الله عنه واحد) ‘Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) বলতেন, ইবলিশের ঈমান এবং আবু বকর (রা.)-এর ঈমান একই’-এর জবাব❞ [02]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) ১৭টি হাদীস জানতেন (بلغت روايته الي سبعة عشر حديثا)-এর জবাব❞ [03]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) সম্পর্কিত (ﻳﻘﻮﻝ: ﻣﺎ ﻗﻮﻝ ﺃﺑﻲ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭاﻟﺒﻌﺮ ﻋﻨﺪﻱ ﺇﻻ ﺳﻮاء) উক্তিটির জবাব❞ [04]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) সম্পর্কিত (يَقُولُ: حَدِيثُ أَبِي حَنِيفَةَ ضَعِيفٌ , وَرَأْيُهُ ضَعِيفٌ) জরাহ বা সমালোচনাটির জবাব❞ [05]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) সম্পর্কিত (عامة ما أحدثكم خطأ) জরাহ বা আপত্তির জবাব❞ [06]

❝আব্দুল্লাহ ইবনে আহমদের রচনা كتاب السنة থেকে Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে (قَالَ ‌أَبُو ‌حَنِيفَةَ: ‌هَذَا ‌مَخْلُوقٌ) শীর্ষক জরাহ বা সমালোচনার জবাব❞ [07]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে (كَانَ أَبُو حنيفة متروك الحديث لَيْسَ بثقة) মাতরূকুল হাদীস ও শক্তিশালী নন, মর্মে জরাহ বা সমালোচনা’র জবাব❞ [08]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে (أبو حنيفة ليس بالقوي في الحديث) তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল, মর্মে জরাহ বা সমালোচনার জবাব❞ [09]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কিত (كَانَ مُرجِئًا، سَكَتُوا عنه وعَنْ رَأيِهِ، وعَنْ حديثه) একজন মুরজিয়া এবং মুহাদ্দিসীন তাঁর থেকে হাদীস গ্রহণ করা থেকে চুপ ছিলেন, মর্মে জরাহ বা সমালোচনার জবাব❞ [10]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কিত (لم يكن الحَدِيث صناعته) এই জরাহ বা সমালোচনার জবাব❞ [11]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে سَكَتُوا عنه وعَنْ رَأيِهِ، وعَنْ حديثه (মুহাদ্দিসগণ আবূ হানীফার কাছ থেকে হাদীস এবং রায় বর্ণনা করা থেকে চুপ [বা বিরত] ছিলেন) মর্মে সমালোচনার জবাব❞ [12]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) হাদীসে يتيما তথা এতিম ছিলেন মর্মে সমালোচনার জবাব❞ [13]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (كَانَ مُحَمَّد بن الحَسَن كذابا وَكَانَ جهميا، وَكَانَ أَبُو حنيفة جهميا ولم يكن كذابا) সম্পর্কিত এই সমালোচনাটির জবাব❞ [14]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে “ইসলামের মধ্যে তাঁর (আবূ হানীফা) চেয়ে অধিক অশুভ আর কেউ জন্মগ্রহণ করেনি” (ما ولد في الاسلام أشأم منه) এই সমালোচনাটির জবাব❞ [15]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে জনৈক ইমামের কথিত নিন্দাসূচক উক্তির খণ্ডাংশ (ما ينبغي لبلدكم أن تسكن) ‘তোমাদের (সেই) শহরে তোমার বসবাস না করাই উচিত’- সমালোচনাটির জবাব❞ [16]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে আবু আইয়্যুব সাখতিয়ানীর নিন্দা (قوموا لا يعدنا بجربه) ‘তোমরা সরে পড়ো, (যাতে) তিনি আমাদেরকে তাঁর চর্ম-ব্যাধী দ্বারা আক্রান্ত না করেন’-সমালোচনাটির জবাব❞ [17]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) সম্পর্কে (الحمد لله الذی اماته فإنه كان ينقض عری الاسلام عروة عروة) “নিঃসন্দেহে সে (আবু হানীফা) ইসলামের সীমারেখাকে একে একে ধ্বংস করতেছিল” মর্মে সমালোচনাটির জবাব❞ [18]

❝আমি Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) এবং আবূ ইউসুফ থেকে কোনো রেওয়ায়েত দেখতে পাইনি’ (لا أرى الرواية عنهما ) | সমালোচনাটির জবাব❞ [19]

❝আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক শেষ বয়সে Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-কে ত্যাগ করেছেন (ترك ابن المبارك ابا حنيفة في آخر امره) সমালোচনাটির জবাব❞ [20]

❝হানাফীরা মুরজিয়াদের একটি উপদল ইমাম আবুল হাসান আল আশ’আরী (রহ.) এবং শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী (والفرقة التاسعة من المرجئة أبو حنيفة وأصحابه) নামে প্রচারিত সমালোচনাটির জবাব❞ [21]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-এর প্রতি ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর তথাকথিত মন্তব্য (ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻳﻀﻊ ﺃﻭﻝ اﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﺧﻄﺄ، ﺛﻢ ﻳﻘﻴﺲ اﻟﻜﺘﺎﺏ ﻛﻠﻪ ﻋﻠﻴﻬﺎ) এর জবাব❞ [22]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-এর বিরুদ্ধে তাঁরই শায়খ হাম্মাদ বিন সুলায়মান (রহ.)-এর কিতাব চুরি করা (سرق ابو حنيفة كتب حماد منى) মর্মে প্রোপাগাণ্ডার জবাব❞ [23]

❝Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) ২০০ হাদীসের বিপরীত করেছেন (وجدنا أبا حنيفة خالف مائتي حديث) মর্মে সমালোচনাটির জবাব❞ [24]

❝জুতার ইবাদত দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভে কোনো সমস্যা নেই ((لو أَنَّ رجلًا عَبْد هذه النعل يتقرب بها إلى الله، لم أر بذلك بأسًا)) Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) এর নামে প্রচারিত সমালোচনাটির জবাব❞ [25]

❝ইমাম আবূ হানীফা (রহ.)-কে দুই বার কুফুরী থেকে তাওবা করানো হয়েছিল ((ﺳﻔﻴﺎﻥ اﻟﺜﻮﺭﻱ ﻳﻘﻮﻝ اﺳﺘﺘﻴﺐ ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻣﻦ اﻟﻜﻔﺮ ﻣﺮﺗﻴﻦ)) মর্মে Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) এর নামে প্রচারিত প্রোপাগাণ্ডার জবাব❞ [26] [Other]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة)(রহ.)-এর পৈত্রিক ধর্ম পরিচয় কী ছিল? মাজূসী? জুরথ্রুস্টীয়? খ্রিস্টীয়? আসলে কোনটি?❞ [27]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة)(রহ.) আর তাঁর সাথীদের সাথে শত্রুতা রাখার বিনিময়ে সাওয়াব পাওয়া (يؤجر الرجل على بغض أبي حنيفة وأصحابه) সম্পর্কে❞ [28]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة)(রহ.)-এর পুত্র ‘হাম্মাদ ইবনে আবী হানীফা’ এর ‘খালক্বে কুরআন’ সম্পর্কিত কথাটি সূত্রের বিচারে অগ্রহণযোগ্য ও বানোয়া যেভাবে❞ [29]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة)(রহ.) হাদী’র জন্তুকে ইশ’আর করা (অর্থাৎ উট বা গরুর কুঁজের ডান বা বাম দিক দিয়ে চিরে রক্ত প্রবাহিত করা) এর বিপরীতে ভিন্নমত পোষণ করে কি ‘সুন্নাহ’ পরিপন্থী রায় দিলেন?❞ [30]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) গোমরাহ এবং গোমরাহকারী… (নাউযুবিল্লাহ)❞ – প্রোপাগাণ্ডার খণ্ডনমূলক উত্তর [31]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) ‘সে সব লোকদের অন্তর্ভুক্ত যারা অনৈতিক কাজ করে’ – একথা নবী (সা.) নাকি জনৈক ব্যক্তিকে স্বপ্নে বলেছেন! – খণ্ডনমূলক উত্তর❞ [32]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) ব্যভিচারিণীর বিনিময়কে হালাল ফাতাওয়া দেয়া-মর্মে আপত্তির জবাব❞ [33]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.) বিবাহ-নিষিদ্ধ এইরূপ স্ত্রীলোককে বিয়েকারী এবং সহবাসকারীর উপর ‘হদ্দ’ ওয়াজিব নয়- বললেন কেন?❞ [34]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-এর পূর্বপুরুষ কি গোলাম (কৃতদাস) ছিলেন? একটি ভ্রান্তি ও তার নিরসন❞ [35]

❝ইমাম আবূ হানীফা Imam Abu Hanifa (الامام ابو حنيفة) (রহ.)-ই কি সব চেয়ে বড় ফেতনা? নাউযুবিল্লাহ! খণ্ডনমূলক উত্তর❞ [36]

(চলবে….)

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক, মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ 01629-941773 (Imo, Telegram & WhatsApp)

প্রত্যেক নবীই কেয়ামতের দিন তাদের উম্মতের সাক্ষী হবেন

0

প্রত্যেক নবীই নিজ নিজ বিদ্রোহী উম্মতদের বিরুদ্ধে কেয়ামতের দিন সাক্ষী হওয়া,

আমরা যখনি কাদিয়ানী অনুসারীদের প্রশ্ন করি, মির্যা কাদিয়ানী যদি তার ‘নবী’ দাবীতে সত্য হয় তাহলে তার উম্মত কারা? আপনারা কীজন্য নিজেদেরকে তার ‘উম্মত’ বলে স্বীকার করেন না? অথচ পৃথিবীতে এমন কোনো নবী নেই যার ‘উম্মত’ ছিল না। (এ সম্পর্কে দলিল প্রমাণ একটু পরেই পেশ করা হবে)। এমন প্রশ্নের উত্তরে তখন তাদের অবস্থা দেখার মত হয়! বেশিরভাগই তখন চিন্তায় পড়ে যায়। কী উত্তর দেবে! তাদের আরও একটি প্রশ্ন করেছিলাম যে, কবরে ফেরেশতা যখন জিজ্ঞেস করবে যে, তোমার নবী কে? তখন কার নাম বলবেন? এ সব প্রশ্নের সামনে তাদেরকে সীমাহীন অসহায় দেখা যায়। বিবাড়িয়ার (কান্দিপাড়া) বেশ কয়জন তরুণ আহমদী (কাদিয়ানী) শুধু প্রশ্নগুলো নিয়ে নিরপেক্ষ চিন্তা থেকেই তওবা করে মুহাম্মদ (সা.)-কে মুক্ত ও স্বাধীন অর্থে ‘শেষনবী’ মেনে নিয়ে ‘ইসলামের মূলধারায়’ ফিরে এসেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। ইদানীং তাদের নেতাদের কেউ কেউ উক্ত প্রশ্নদুটি থেকে আত্মরক্ষার জন্য নতুন ডেলিভারি দিচ্ছে, তা হচ্ছে, ‘সব নবীর উম্মত থাকেনা!’ এ যেন রাজ্যবিহীন ‘রাজা’ আর সেনাবিহীন সেনাপতি! অথচ মির্যা কাদিয়ানীর দ্ব্যর্থহীন উক্তি, “আমার আগমন দ্বারা প্রত্যেক নবী জীবন ফিরে পেয়েছে। আর সমস্ত রাসূল আমার জামার মধ্যে গোপন হয়ে আছে।” দেখুন, নুযূলে মসীহ, রূহানী খাযায়েন খ-১৮ পৃ-৪৭৮, (ফার্সি কাব্যাংশের অনুবাদ)। অধিকন্তু তার দাবী হচ্ছে, “আদমের বাগান অদ্য পর্যন্ত ছিল অসম্পূর্ণ; আমার আগমনে তা ফল ও পাতায় হয়ে যায় পরিপূর্ণ।” (দেখুন, বারাহীনে আহমদীয়া ৫ম খন্ড, রূহানী খাযায়েন ২১/১৪৪)। অন্যত্রে আরও লিখেছে, (কথিত ইলহাম: খোদাতালা মির্যাকে বলেছেন) ‘ইন্নী মা’আল আকরাম, লাও লা-কা লামা খালাকতুল আফলাক’ অর্থাৎ আমি বুযূর্গদের সাথেই রয়েছি। যদি তুমি না হতে তাহলে আমি আসমান সমূহকে সৃষ্টি করতাম না। (সূত্র, তাযকিরাহ, চতুর্থ এডিশন পৃষ্ঠা নং ৫২৫; ইলহাম ০৪-০৫-১৯০৬ ইং)। নাউযুবিল্লাহ। কাজেই প্রশ্ন আসে, এমন দম্ভোক্তি যার তার উম্মত থাকবেনা তা কিভাবে হয়? প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য,

রূহানী খাযায়েন খ-১৮ পৃ-৪৭৮

সমস্ত নবী নিজ নিজ উম্মতের জন্য সাক্ষী হওয়া :

আল্লাহতালা বলেছেন, (আরবী) وَ یَوۡمَ نَبۡعَثُ مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍ شَہِیۡدًا ثُمَّ لَا یُؤۡذَنُ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَ لَا ہُمۡ یُسۡتَعۡتَبُوۡنَ

অনুবাদঃ আর যেদিন আমরা প্রত্যেক উম্মত থেকে এক একজন সাক্ষী পেশ করব তারপর যারা কুফরী করেছে তাদেরকে না ওযর পেশের অনুমতি দেয়া হবে, আর না তাদেরকে (আল্লাহ্‌র) সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ দেয়া হবে। (সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৪)।

তাফসীরঃ ইতিপূর্বে যত নবী এসেছিলেন প্রত্যেকে কেয়ামতের দিন আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন এবং নিজেদের দায়িত্ব পালনের পক্ষে সাক্ষী হবেন। আর বিদ্রোহী উম্মতগণের বিপক্ষে তাদের কুফরি ও মিথ্যারোপের সাক্ষী হবেন (ফাতহুল কাদীর)। তারা সাক্ষ্য দিবেন যে, তারা তাদেরকে তাওহীদ ও আল্লাহর আনুগত্যের দাওয়াত দিয়েছিলেন। অন্য আয়াতেও আল্লাহতালা সেটা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা এমন এক দিন যেদিন না তারা কথা বলবে, আর না তাদেরকে অনুমতি দেয়া হবে ওযর পেশ করার।” (সূরা আল-মুরসালাত ৩৫-৩৬) {তাফসীরে ইবন কাসীর}।

আগের আয়াতে বলা হয়েছিল, বহু মানুষ সত্য অনুধাবনের পরও ঈমান আনে না। তারা কাফির থেকে যায়। আলোচ্য আয়াতে কাফিরদের পরকালীন করুণ পরিণতির বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতে তিনটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। এক. কিয়ামতের আদালতে সাক্ষী। দুই. কৈফিয়তের অবকাশ। তিন. আপত্তি গৃহীত না হওয়া।

কিয়ামতের দিন সমস্ত উম্মত থেকে সাক্ষী হাজির করা হবে এবং সাক্ষীরা নিজ সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে সত্য পৌঁছে দেওয়া প্রসঙ্গে সাক্ষ্য দেবে। এমন ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত করা হবে, যাঁরা আল্লাহ’র কাছে গ্রহণযোগ্য ও মানুষের জন্য তাঁরা আদর্শ। তাঁরা হলেন নবী-রাসুল। প্রত্যেক নবীকে তাঁর জাতির (বিদ্রোহী উম্মতদের বিরুদ্ধে) সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে অন্য আয়াতে এসেছে, (আরবী) فَكَيْفَ إِذٰا جِئْنٰا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَ جِئْنٰا بِكَ عَلىٰ هٰؤُلاٰءِ شَهِيداً অর্থাৎ ‘তখন কী অবস্থা হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী (নবী) উপস্থিত করব এবং তোমাকে [মহানবী (সা.)] তাদের (বিদ্রোহী উম্মতদের মিথ্যা অভিযোগের) বিরুদ্ধে সাক্ষীরূপে উপস্থিত করব, (সূরা : নিসা, আয়াত : ৪১)।

সম্পর্কিত আলোচনাঃ ইমাম জালালুদ্দীন আস-সুয়ূতী (রহ.) লিখেছেন, يشهد عليها و هو نبيها অর্থাৎ তাদের প্রত্যেক উম্মতের ব্যাপারে তাদের নবীই সাক্ষ্য দেবেন (জালালাইন)। ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) থেকেও এর তাফসীরে পরিষ্কার উল্লেখ আছে, (আরবী) فكيف يكون الأمر والحال يوم القيامة وحين يجيء من كل أمة بشهيد يعني الأنبياء عليهم السلام অর্থাৎ কেয়ামত দিবসের সেই পরিস্থিতি ও অবস্থা কেমন হবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে সাক্ষী তথা নবীগণ (আ.)-কে উপস্থিত করব। (ইবনে কাসীর, সূরা নাহল ৪১)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য,

ইবনে কাসীর

শেষকথাঃ আল্লাহতালা পৃথিবীতে যত নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন তাদের প্রত্যেককে তিনি কেয়ামতের দিন নিজ নিজ উম্মতের সাক্ষীরূপে উত্থিত করবেন। কোনো কোনো নবী স্বজাতির বিদ্রোহীদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যা হওয়ায়, কেউ বা দাওয়াত কাজের দীর্ঘ সুযোগ না পাওয়ায় হাতেগুনে কয়জন উম্মত নিয়ে হাজির হবেন। এমন কোনো নবী থাকবেনা যাঁর কোনো উম্মত ছিলনা। আর এধরণের হওয়ার ব্যাপারটা কল্পনারই বাহিরে। কেননা কোনো নবীর একজন উম্মত-ও না থাকার অর্থ দাঁড়াচ্ছে আল্লাহ উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থ ছিলেন। নাউযুবিল্লাহ। যা চিন্তা করাও কুফুরীর শামিল।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক

প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

তাহযীরুন্নাস সহ অগণিত কিতাবের নাম ভেঙ্গে কাদিয়ানীদের অপপ্রচার

0

দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা কাসেম নানুতুবী (রহ.) (মৃ. ১২৯৭ হি.)-এর ‘তাহযীরুন্নাস’ কিতাব থেকে কাদিয়ানীরা ‘ইজরায়ে নবুওয়তের’ (নবুওয়তের ক্রমধারা অব্যাহত) ইস্তিদলাল করার চেষ্টা করে যেমন, তেমনি পবিত্র কুরআনের সূরা নিসা আয়াত নং ৬৯ এর مع النبيين و الصديقين আর মুসলিম শরীফের ‘কিতাবুল ফিতান’ হাদীস নং ৭০৭৮ এর عيسى نبي الله চার চার বার এসেছে, উপবাক্যটি দ্বারাও ইজরায়ে নবুওয়তের ইস্তিদলাল করে থাকে…!

  • (আসলে তাহযীরুন্নাস কিতাবটির কোন কথাটিকে কাদিয়ানীরা বেঁকিয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে? পড়তে এখানে ক্লিক করুন – https://markajomar.org/?p=564)

এখন আমার প্রশ্ন হল, কাদিয়ানীদের ঐ সকল ইস্তিদলাল কি সঠিক বা বাস্তবসম্মত? আমার এ প্রশ্নটি বিশেষতঃ বেরেলভি মাসলাকের সেসব ভাই ও বন্ধুদের প্রতি যারা তাহযীরুন্নাস এর “যদি ধরে নেয়া হয় যে….” এরূপ খণ্ডিত ইবারত (اگر بالفرض آپ کے زمانہ میں بھی کہیں اور کوئی نبی ہو جب بھی آپ کا خاتم ہونا بدستور باقی رہتا ہے۔) দিয়েই কাদিয়ানীদের কৃত ইস্তিদলালের দরুন মওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.)-কে ‘কাফের’ আখ্যা দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না! এখন আমার প্রশ্নের উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়—তাহলে একই রকম ইস্তিদলালের কারণে তবে কি পবিত্র কুরআন এবং মুসলিম শরীফের হাদীসও অভিযুক্ত হচ্ছেনা? অর্থাৎ তখন কি আপনারা এটাও মেনে নিবেন যে, কুরআন এবং হাদীসের আলোকে কাদিয়ানীদের উল্লিখিত ইস্তিদলাল সঠিক? নাউযুবিল্লাহ।

মোটেও না।

বরং আপনি একমত হন আর যাই হোন; সত্য এটাই যে, কাদিয়ানীরা তাদের মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নবুওয়ত দাবীর বৈধতা খুঁজতে পূর্ববর্তী আরও অনেক বুযূর্গ আলেমদের কিতাবের নাম ভেঙ্গে ইস্তিদলাল চালিয়ে দিয়েছে, তাদের মধ্যে মাওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.) এর রচনাটিও অন্যতম। পবিত্র কুরআন এবং হাদীসকে পর্যন্ত তারা ছাড়েনি, ইচ্ছেমতো তাবিল আর অপব্যাবহার নিশানায় পরিণত করেছে। সুতরাং, মাওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.)-এর কিতাবটির মূল ভাষা ফার্সী হলেও এর উর্দূটাও শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখুন, তবেই মনে হবে আকাশটা যেন আপনার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়েছে। আপনি অবাক হবেন! আর অবাক হওয়ারই কথা, কেননা তিনি কিতাবটি আকীদায়ে খতমে নবুওয়তের পক্ষেই দলিল ও যুক্তি দিয়েই লিখে গেছেন। তিনি নবীকরীম (সা.)-এর খাতামিয়তকে একই সাথে যামানিরুতবিমাকানি (যুগ, মর্যাদা ও স্থান) সর্বোপরিভাবে সাব্যস্ত করে গেছেন। সব চেয়ে বড় কথা হল, তিনি তাঁর একই পুস্তকে পরিষ্কার করে লিখে গেছেন, যে রাসূল (সা.)-কে মুক্ত ও স্বাধীন অর্থে খাতামান নাবিয়্যীন স্বীকার করেনা সে কাফের। যেমন একই বইয়ের ৩৭ নং পৃষ্ঠায় পরিষ্কার এও লিখেছেন যে, اطلاق خاتم اس بات کو مقتضی ہے کہ تمام انبیاء علیہم السلام کا سلسلہ نبوت آپ پر ختم ہوتا ہے অর্থাৎ “খাতাম (خاتم)-এর প্রয়োগ এই কথারই দাবী রাখে যে, হুজুর (সা:)-এর উপরই সমস্ত নবীর নবুওয়তেরধারা শেষ হয়ে গেছে।” (তাহযীরুন্নাস, হুজ্জাতুল ইসলাম একাডেমী ওয়াক্বফে দারুলউলুম দেওবন্দ, সাহারানপুর হতে প্রকাশিত)। স্ক্রিনশট থেকে দেখুন,

.

মাওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.) আরও লিখেছেন, ‘রাসূল (সা.)-কে শেষ নবী অস্বীকারকারী কাফের। এই আকীদা ‘খাতামান নাবিয়্যীন’ সম্বলিত আয়াত, হাদীস ও ইজমা’য়ে উম্মত দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত।’ (তাহযীরুন্নাস-এর নবম পৃষ্ঠার শেষ থেকে এগারতম পৃষ্ঠার শুরু)। নিচে স্ক্রিনশট থেকে দেখুন,

.

তিনি আরো বলেন, ‘আমার দীন ও ঈমান এই যে, রাসূল (সা.)-এর পরে অন্য কারো নবী হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। যে এতে কোনো প্রকারের তাবীল (ব্যাখ্যা) করবে তাকে কাফের মনে করি।‘ (মুনাযারায়ে আজীবাহ পৃষ্ঠা নং ১০৩; জওয়াবে মাখদূরাত পৃষ্ঠা নং ৫০ আরো দেখুন, মুতালাআয়ে বেরেলবিয়্যাত ১: ৩০০-৩২২)

আসুন! এখন থেকে ঐ একই কারণে আমরা কুরআন এবং হাদীসকেও দোষারোপ করতে থাকি!!! লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ!!

উল্লেখ্য, জনৈক শায়খ মরহূম’ তাহযীরুন্নাস’ কিতাবের তিন জায়গা থেকে মন মতো ইবারত উঠিয়ে এনে ও আগপাছ কেটেকুটে ‘হুসামুল হারামাইন’ নাম দিয়ে তৈরি করে গেছেন শতাব্দীর জঘন্য খেয়ানতপূর্ণ রচনা। আফসোস! এর মুতা’আল্লেকীন ও ভক্তবৃন্দ এ তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও অন্ধকারে পড়ে আছে। একটিবারের জন্যও তারা যাচাই-বাছাই করে দেখেনা যে, হুসামুল হারামাইনে উদ্ধৃত ইবারতটি কতখানি স্বচ্ছ এবং লিগ্যাল?

‘তাহযীরুন্নাস’ কিতাবের বাস্তবতা ও শায়খ মরহুমের জঘন্য মিথ্যাচার তুলে ধরার জন্য বিক্ষিপ্ত ও স্বতন্ত্র অনেক কিতাব লেখা হয়েছে। বিশেষতঃ হযরত মাওলানা ইদ্রিস কান্দলভী, সারফারাজ খান সফদার ও শহীদে ইসলাম ইউসুফ লুধিয়ানাবি রাহিমাহুমুল্লাহ স্বতন্ত্র রিসালা লিখেছেন।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ