কাদিয়ানীদের জন্য দুঃসংবাদ!! শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.)-এর কসীদায় ❝ঈসা (আ.) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন❞ বলেও উল্লেখ রয়েছে…
শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.)-এর সহস্রাধিক ফার্সি কাব্য হতে ঈসা (আ.) এবং ইমাম মাহদী (আ.) উভয় সম্পর্কে আগাম ভবিষ্যৎবাণীতে যা যা উল্লেখ রয়েছে আজ সে সম্পর্কে লিখছি,
তার আগে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী সম্পর্কে কিছু জানা উচিত, উনার পূর্ণ নাম নূরউদ্দীন। জন্ম ১৩৩০ খ্রিস্টাব্দে ইরানের হালব শহরে। একজন বিখ্যাত বুযূর্গ ও সাহেবে কাশফ ছিলেন। প্রায় দুই সহস্রাধিক ফার্সি এ কাব্যটি তারই অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি ৫৭০ হিজরি মুতাবেক ১১৭৪ খ্রিস্টাব্দে এ কাব্য লিপিবদ্ধ করেন। ফলে এই কাব্য আজ থেকে প্রায় ৮৭৪ বছর পূর্বেকার ভবিষ্যৎবাণী ঘেরা এক রহস্যপূর্ণ কাব্য। প্রতি যুগ ও শতাব্দীতে তাঁর এ ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণতা লাভ করার শক্তিশালী প্রমাণ ও সাক্ষী বিদ্যমান। শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) ২৮ শে এপ্রিল ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দে ইরানের শাহরাস্তান শহরের মাহান (ماهان) নামক গ্রামে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮-৯৯ বছর। তাঁর উক্ত রহস্যপূর্ণ কাব্যগুলোকে (কসিদা) আজও বিশ্ববাসী নিজেদের জন্য শান্তনা ও আশা জাগানো মাইলফলক হিসেবে দেখে থাকেন।
প্রথমে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) এর কিছু ফার্সি কাব্য নিম্নরূপ,
((غلبہء اسلام باشد تا چہل در ملک ہند+بعد ازاں دجال ہم از اصفہاں پیدا شود))
❝ইসলামের বিজয় চল্লিশ বছর যাবৎ হিন্দুস্তানে অক্ষুণ্ণ থাকবে। তারপরেই দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে ইরানের ইস্পাহান শহর থেকে।❞
((از برائے دفع آں دجال مے گوئم شنو+عیسیٰ آید مہدی آخر زماں پیدا شود))
❝আমি বলছি, তোমরা শুনো! এই দাজ্জাল কাফেরকে প্রতিহত করার জন্য হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাশরীফ আনবেন এবং শেষ যামানায় আবির্ভূত হবেন হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।❞
((نائب مہدی آشکار شود+بلکہ من آشکار مے بینم))
❝(ঈসার) সহকারী মাহদীর প্রকাশ ঘটবে, বরং আমি তো তাঁকে প্রকাশিত হতে দেখতে পাচ্ছি।❞
((سمت مشرق زیں طلوع کند+ظہور دجال زار مے بینم))
❝আমি পূর্ব দিক থেকে অভিশপ্ত দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হতে দেখতে পাচ্ছি।❞
((رنگ یک چشم او بہ چشم کبود+خرے بر خر سوار مے بینم))
❝তার এক চক্ষু (আঙ্গুরের ন্যায়) ফোলা হবে, আর আমি তাকে দেখতেছি সে গাধার পিঠে আরোহন করে আসছে।❞
((لشکر او بود اصفہاں+ہم یہود و نصاریٰ مے بینم))
❝তার সৈন্যবাহিনী ইস্পাহান শহরের হবে, আর তাকে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সৈন্যদলের সাথে দেখতে পাচ্ছি।❞
((ہم مسیح از سماء فر ود آید+پس کوفہ غبار مے بینم))
❝হযরত মসীহ আলাইহিস সালামও আকাশ থেকে অবতরণ করবেন, আমি কূফা নগরীতে ধূলো (উড়তে) দেখতে পাচ্ছি।❞
((از دم تیغ عیسیٰ مریم+قتل دجال زا رمے بینم))
❝আমি হযরত ঈসার তরবারি দ্বারা অভিশপ্ত দাজ্জালের হত্যা হতে দেখতে পাচ্ছি।❞
((زینت شرع دین از اسلام+محکم و استوار مے بینم))
❝ইসলামের শরীয়া দ্বীনকে সুশোভিত করবে। আর আমি দ্বীনকে শক্তিশালী এবং গঠনমূলক হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।❞
((نہ وردے بخود نمے گوئم+بلکہ از سر یار مے بینم))
❝এই ঘটনাগুলো আমি নিজের পক্ষ থেকে বলছিনা, বরং আমি স্বয়ং আল্লাহর নিগূঢ় রহস্য দেখতে পাচ্ছি।❞
((نعمت اللہ نشستہ در کنجے+ہمہ را در کنار مے بینم))
❝নেয়ামতুল্লাহ এক কোণে বসে একদিক থেকে সবকিছু দেখতে পাচ্ছে।❞
শেষকথাঃ
মির্যা কাদিয়ানী ছিল শতাব্দীর বড় দাজ্জাল (মহা প্রতারক)! কারণ সে শাহ নেয়ামতুল্লাহ ওয়ালী (রহ.) এর নামেও মিথ্যাচার করে গেছে। তিনি নাকি ঈসা আর মাহদী দু’জনকে একই ব্যক্তি বলে গেছেন এবং উক্ত কাসীদায় নাকি তিনি এধরণের কাব্য লিখেও গেছেন! যেমন সে লিখেছে مہدئ وقت و عیسئ دوراں+ ہر دو را شہسوار می بینم
❝ঐ আগমনকারী ব্যক্তি মাহদীও হইবেন এবং ঈসাও হইবেন। তিনি উভয় নামের প্রতীক হইবেন এবং উভয় নামের দাবী করিবেন।❞ (দেখুন, মির্যার রচনা ‘হাকীকাতুল ওহী’ পৃষ্ঠা নং ২৭৮)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি দ্রষ্টব্য
বলে রাখা দরকার, মির্যা কাদিয়ানীর উল্লিখিত ফার্সি পঙক্তিটির সঠিক অনুবাদেও সে ভুল করেছে। বরং এর সঠিক অনুবাদ হবে, ❝যুগ মাহদী এবং সে যুগের ঈসা, দুইজনকেই আমি বীরযোদ্ধারূপে দেখতে পাচ্ছি।❞
যাইহোক আমি অনেক খোঁজেছি, কিন্তু এধরণের কোনো কাব্য ঐ কসীদায় পাইনি, বরং সম্পূর্ণ বিপরীত পেয়েছি। অর্থাৎ তিনি তাঁর কসীদায় পরিষ্কার লিখে গেছেন যে, ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবেন এবং শেষ যুগে হযরত মাহদীর আত্মপ্রকাশ হবে। সুতরাং মির্যা কাদিয়ানী একজন জঘন্য প্রতারক ও মিথ্যাবাদী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
অনুবাদক, লিখক ও গবেষক প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
এডমিন ফিকহ মিডিয়া