Home Blog Page 21

মির্যার স্ববিরোধীতা-২০

কোথাও লিখলেন, ঈসা (আ.)-এর ইহ জীবদ্দশায় ঈসায়ী ধর্মে কোনো বিকৃতি ঘটতে পারেনা। আবার নিজেই আরেক জায়গায় লিখলেন, ঈসায়ীধর্মে সমস্ত বিকৃতি ঘটেছে সেন্ট পৌলের মাধ্যমে! অথচ সেন্ট পৌলের মৃত্যু যখন হয়, মির্যার বিশ্বাস অনুযায়ী ঈসা (আ.) তখনো ইহ-জগতে ও কাশ্মীরে-ই ছিলেন!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন, ‘মোটকথা এই (ঈসায়ী) ধর্মে সমস্ত খারাবি পৌলের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছিল। হযরত মসীহ তো একজন সরলমনা মানুষ ছিলেন, তিনি কখনো চাননি যে কেউ তাঁকে একজন নেক মানুষও বলুক কিন্তু পৌল তাঁকে খোদা বানিয়ে দেয়।’ (চশমায়ে মসীহি, রূহানী খাযায়েন খ-২০/পৃ-৩৭৫)।

স্ববিরোধ কথা :

তিনি আরেক জায়গায় সূরা আল মায়েদা আয়াত নং ১১৭ এর فلما توفيتنى (আর যখন আপনি আমাকে তুলিয়া নইলেন…) সম্পর্কে লিখেন, ‘মোটকথা হল, আয়াতটি দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈসায়ীধর্মে সমস্ত ফাসাদ এবং বিভ্রান্তি হযরত ঈসা (আ.)-এর মৃত্যুর পরেই শুরু হয়েছিল।’ (রূহানী খাযায়েন খ-১১/পৃ-৩২১-২২)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

সর্বপ্রথম ত্রিত্ববাদ বিষয়ক বৃক্ষ রোপণ করেন সেন্টপৌল! (চশমায়ে মসীহি, বাংলা অনূদিত কপির পৃষ্ঠা নং ৪৪ থেকে দ্রষ্টব্য)।

এখানে ‘স্ববিরোধ কথা’ কিভাবে হল তা বুঝার জন্য সেন্ট পৌলের মৃত্যু-তারিখটা জানা থাকা জরুরী। সেন্ট পৌলের মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ বা ৬৫ ঈসায়ীতে।

  • তার প্রমাণের জন্য মাইকেল এইচ হার্ট এর The 100 (দ্য হান্ড্রেড : অ্যা র‍্যাঙ্কিং অব দ্য মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল পারসন্স ইন হিস্ট্রি) গ্রন্থ দ্রষ্টব্য। এছাড়া ST. PAUL (জন্ম ৪ বা ৫ খ্রিস্টাব্দ) (মৃত্যু ৬৪ খ্রিস্টাব্দ) দ্রষ্টব্য। আরো দেখুন, Brown, Raymond E. (1997) An Introduction to the New Testament, p. 436. Doubleday, Anchor Bible Reference Library, আন্তর্জাতিক বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া সাইটেও ৬৪ বা ৬৭ খ্রিস্টাব্দ বলেই উল্লেখ পাওয়া যায়।

এবার বুঝে থাকলে বলুন, মির্যা কাদিয়ানী সূরা আল মায়েদা আয়াত নং ১১৭ এর ‘তাওয়াফফা’ হতে রূপক অর্থ মৃত্যু উদ্দেশ্য নিতে যে যুক্তির অবতারণা করে বললেন যে, এই আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈসায়ীধর্মে সমস্ত বিভ্রান্তি হযরত ঈসা (আ.)-এর মৃত্যুর পরেই শুরু হয়েছিল’—এ কথা সঠিক হলে তখন তারই বিশ্বাস অনুযায়ী সেন্ট পৌলের মৃত্যুর পরেও ঈসা (আ.) কাশ্মীরে থাকার যৌক্তিকতা কী? উল্লেখ্য, মির্যা কাদিয়ানী তার ‘মসীহ হিন্দুস্তান মে’ বইতে লিখেন, ‘ঈসা (আ.) ১২০ বছর বয়সে কাশ্মিরের শ্রীনগরেই মৃত্যুবরণ করেছেন এবং শ্রীনগরের খান ইয়ার মহল্লায় তার কবর রয়েছে।’ (রূহানী খাযায়েন খ-১৫ পৃ-১৪)। আশাকরি মির্যার স্ববিরোধী কথা কিভাবে হল তা এবার বুঝতে পেরেছেন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৯

কতটা নিকৃষ্ট স্ববিরোধ কথা, নবুওয়তি প্রাসাদের আখেরি ইট নাকি মির্যা কাদিয়ানী সে নিজেই! তাহলে আগে কেন বলল যে, নবুওয়তি প্রাসাদের আখেরি ইট হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন) ‘এবং নবুওয়তী প্রাসাদের সর্বশেষ ইট হলেন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ (রূহানী খাযায়েন: ২/২৪৬; রচনাকাল ১৮৮৬ইং)। 

স্ববিরোধী কথা : 

‘সুতরাং খোদাতায়ালা ইচ্ছা করলেন যে, এই ভবিষ্যৎবাণী পূর্ণ করবেন এবং সর্বশেষ ইট দ্বারা [নবুওয়তের] ভিত্তিকে পরিপূর্ণতা পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেবেন। অতএব আমিই হলাম সেই [সর্বশেষ] ইট।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৬/১৭৭-৭৮; রচনাকাল ১৯০০ইং)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৮

কেমন নিকৃষ্ট স্ববিরোধ কথা, একবার বলে মসীহ আমি ব্যতীত আর কেউ হবার সুযোগ নেই। আরেক জায়গায় লিখলো, দশ হাজারের অধিক মসীহ আসতে পারে এমনকি তা সম্ভবও।

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন) ‘সুতরাং আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কোনো মসীহ এর জন্য আমার যুগের পর [দুনিয়ায়] কদম রাখার [আগমন করার] জায়গা নেই।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৬/২৪৩; রচনাকাল ১৯০০ইং)। 

স্ববিরোধী কথা : 

‘এই অধমের (মির্যা) পক্ষ হতেও এমনটি দাবী করা হয় না যে, মাসীহিয়ত [কথিত রূপক মসীহ্’র আগমনীধারা] আমার সত্তাতেই সমাপ্ত হয়ে গেছে এবং আগামীতে আর কোনো মসীহ্ আগমন করবেনা! বরং আমি তো মানি এবং বারবার বলিও যে, একজন কেন; দশহাজারের চেয়েও অধিক মসীহ্ আগমন করতে পারে এমনকি সম্ভব যে, প্রকাশ্য সম্মান ও সমৃদ্ধিসহকারে আগমন করবে। আরও সম্ভব যে, তিনি সর্বপ্রথম [সিরিয়ার] দামেস্ক নগরীতে অবতরণ করবেন।’ (রূহানী খাযায়েন: ৩/২৫১; রচনাকাল ১৮৯১ইং)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৭

একেক সময় একেক স্ববিরোধ কথা, কখনো তার শিক্ষক ছিলনা বলে দাবী, আবার কখনো নিজেই নিজের শিক্ষকদের তালিকা বলে দিচ্ছেন!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের বই থেকে (তিনি লিখেছেন) ‘কেউ প্রমাণ করতে পারবেনা যে, আমি কোনো মানুষ থেকে কুরআন হাদীস অথবা তাফসীরের একটি পাঠও পড়েছি।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৪/৩৯৪; রচনাকাল ১৮৯৭ইং)। 

স্ববিরোধী কথা : 

‘আমি যখন ছয় বছর বয়সী তখন একজন ফারসী ভাষী শিক্ষককে আমার জন্য চাকর নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি কুরআন শরীফ এবং ফারসীর কিছু বই আমাকে পড়িয়েছেন। ঐ বুযূর্গ লোকটির নাম ছিল ফজলে ইলাহী।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৩/১৮০)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৬

একবার লিখলেন, কাশ্মীরের খানইয়ার মহল্লায় সমাহিত ‘ইউজে আসেফ’-ই ছিলেন ঈসা ইবনে মরিয়ম। আবার কোনো কোনো জায়গায় লিখলেন, ইউজে আসেফ একজন বাদশার পুত্র এবং যিশুখ্রিষ্টের (ঈসা) জন্মেরও পূর্বেকার ব্যক্তি…!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানী সাহেব লিখলেন,

کشمیر کے تمام باشندوں کا اس بات پر اتفاق دیکھ کر کہ یہ نبی جس کی کشمیر میں قبر ہے ہمارے نبی صلی اللہ علیہ وسلم سے چھہ سو برس پہلے گزرا ہے صاف طور پر حضرت عیسی کو متعین کر رہا ہے۔

অর্থাৎ কাশ্মীরে এই নবীর কবরের ব্যাপারে সেখানকার সমস্ত স্থানীয়দের একমত হওয়া যে, তিনি আমাদের নবী (সা.)-এরও ছয় শত বছর পূর্বেই গত হয়ে গেছেন, তা হযরত ঈসাকেই পরিষ্কার নির্দেশ করছে। (কাশফুল গুতা, রূহানী খাযায়েন ১৪/২১২)।

স্ববিরোধ কথা :

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ১৯০২ সালে তার একটি রচনায় লিখেছেন,

وانعقد عليه اجماع سكان تلك الناحية وتواتر على لسان اهلها انه قبر نبي كان ابن ملك وكان من بني اسرائيل وكان اسمه يوزآسف

অর্থ- সেই এলাকার (কাশ্মীরের) স্থানীয়রা একমত এবং সেখানকার একই ভাষাভাষী গোষ্ঠীও পরম্পরায় এই বিষয়ে একমত যে, এটি একজন নবীর কবর যিনি বাদশাহ’র পুত্র এবং বনী ইসরাইলী ছিলেন। তার নাম ছিল ইউজে আসেফ। (আল-হুদা, রূহানী খাযায়েন ১৮/৩৬১; মূল মির্যা কাদিয়ানী)।

এখানে প্রশ্ন হল, কোনো বাদশাহ’র পুত্র কি ঈসা (আ.) হবেন? নিশ্চয়ই না।

অন্য জায়গায় লিখেছেন, ‘আরও আশ্চর্যের বিষয় ইউয আসফের পুরাতন ধর্মগ্রন্থের সাথে (যা অধিকাংশ বিজ্ঞ ইংরেজ পণ্ডিতদের মতে যিশুখ্রিষ্টের জন্মের পূর্বেই লিখিত হয়েছিল এবং যা বিভিন্ন ইউরোপীয় ভাষায় অনূদিত হয়ে নানা দেশে প্রচারিত হয়েছে) ইঞ্জিলের অধিকাংশ কথায় এত সামঞ্জস্য আছে যে বহু স্থানে বর্ণনাগুলোতে বাক্যসমূহ এর সাথে সম্পূর্ণ একরূপ। ইঞ্জিলে বর্ণিত উপাখ্যান সমূহ অক্ষরে অক্ষরে উক্ত পুস্তকেও বর্ণিত আছে।” (চশমায়ে মসীহি ১২-১৩; বাংলা চতুর্থ প্রকাশ জুলাই ২০১৮ ইং; মূল মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী)।

এখানে প্রশ্ন হল, যিশুখ্রিষ্টের জন্মের পূর্বেই যার জন্ম তিনি আর যিশুখ্রিস্ট (ঈসা) কি একই ব্যক্তি হতে পারেন?

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৫

মির্যা কাদিয়ানীর একমুখে কত কথা! একবার বলল, ঈসা (আ.)-এর কবর বায়তুল মুকাদ্দাসে, আবার গ্যালিলে, আবার তিব্বতে আবার কিনা কাশ্মীরের শ্রীনগরে!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বইতে জীবিত ঈসা (আ.)-এর ‘কবরস্থান’ সম্পর্কে চার ধরণের বিভ্রান্তিকর তথ্য। নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরছি,

১। ‘সিরিয়া’ এর অন্যতম একটি জনপদ গ্যালীলে। (রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ৩ পৃষ্ঠা নং ৩৫৩)।
২। ‘ফিলিস্তিন’ এর বায়তুল মুকাদ্দাসের আঙ্গিনায়। (রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ৮ পৃষ্ঠা নং ২৯৬-৩০০; টিকা দ্রষ্টব্য)।
৩। ‘কাশ্মীরের’ আশপাশে। (রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ১০ পৃষ্ঠা নং ৩০২)।
৪। কাশ্মীরের শ্রীনগরের ‘খান-ইয়ার মহল্লা’তে। (রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ১৪ পৃষ্ঠা নং ১৭২)। অত্র বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।

ক্রমানুসারে প্রামাণ্য স্ক্যানকপি নিম্নরূপ :-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৪

মির্যা কাদিয়ানী কর্তৃক পবিত্র কুরআনের قد خلت এর একেক জায়গায় একেক রকম অর্থ নেয়ার দৃষ্টান্ত; কোথাও ‘অতীত হইয়া গিয়াছে‘ আবার কোথাও ‘আগমন করিতেন‘ এই রকম….!

মির্যা গোলাম আহমদ সাহেব লিখেছেন,

و ما محمد الا رسول قد خلت من قبله الرسل الخ يعنى محمد اس سے زیادہ نہیں کہ وہ رسول اللہ ہے اور اس سے پہلے تمام رسول اس دنیا سے ہمیشہ کے لئے گزر چکے ہیں۔

অর্থ- এবং মুহাম্মদ একজন রাসূল ব্যতীত অন্য আর কেউই নন, তাঁর পূর্বে সমস্ত রাসূল এই পৃথিবী ছেড়ে চিরকালের জন্য (گزر چکے ہیں) গত হইয়া গিয়াছেন। (রূহানী খাযায়েন ৩/৫৮৮)।

و ما المسيح بن مرىم الا رسول قد خلت من قبله الرسل الخ یعنی حضرت مسیح بن مریم میں اس سے زیادہ کوئی بات نہیں کہ وہ صرف ایک رسول ہے اور اس سے پہلے بھی رسول ہی آتے رہے ہیں۔

অর্থ- মসীহ ইবনে মরিয়মের ব্যাপারে এর চেয়ে বেশি আর কোনো কথা নেই যে, তিনি শুধুই একজন রাসূল মাত্র। তাঁর পূর্বেও রাসূলগণই (آتے رہے ہیں) আগমন করিতেন। (রূহানী খাযায়েন ৬/৮৯)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১৩

মির্যা কাদিয়ানী কর্তৃক ‘মুতাওয়াফফীকা’ শব্দের অর্থ চার জায়গায় চার রকম!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর রচনাবলী হতে আরবী শব্দ انى متوفيك -এর ভিন্ন ভিন্ন অনুবাদ পেশ করছি, যেমন তিনি এক জায়গায় انى متوفيك অর্থ লিখেছেন (উর্দূতে), میں تجھکو پوری نعمت دوں گا (উচ্চারণ – মে তুজকো পুরি নে’মত দোংগা) অর্থাৎ আমি তোমাকে পূর্ণ নেয়ামত দেব। (রূহানী খাযায়েন ১/৬২০)। মির্যা সাহেব আরেক জায়গায় লিখেন, میں تجھے کامل اجر بخشوں گا (উচ্চারণ – মে তুজে কামেল আজর বখশোঁগা) অর্থাৎ আমি তোমাকে পরিপূর্ণ পুরষ্কার দেব। (রূহানী খাযায়েন ১/৬৬৪-৬৫)। মির্যা সাহেব আরেক জায়গায় লিখেন میں تجھے اسی ذلیل اور لعنتی موتوں سے بچاؤں گا (মে তুজে এসি যলীল অওর লা’নতি মউতুঁ চে বাছাঁওগা) অর্থাৎ আমি তোমাকে এমন অপমানকর ও অভিশপ্ত মৃত্যু হতে রক্ষা করব। (রূহানী খাযায়েন ১২/২৩)।

স্ববিরোধ কথা :

এবার আপনারা দেখতে পাবেন যে, মির্যা সাহেব ঐ ‘মুতাওয়াফফীকা’ শব্দের অর্থ ঈসা (আ.)-এর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী অর্থ ‘মৃত্যু‘ নিয়েছেন। তিনি লিখেন, اے عیسیٰ میں تجھے وفات دینے والا ہوں (উচ্চারণ – আয় ঈসা মে তুজে ওফাত দেনে ওয়ালা হোঁ) অর্থাৎ হে ঈসা আমি তোমাকে মৃত্যু দেব…। (তুহফায়ে গোলডবিয়া, রূহানী খাযায়েন ১৭/১৬২)।

এখন প্রশ্ন হল, অন্যান্য জায়গায় শব্দটির ‘মৃত্যু’ অর্থ ত্যাগ করে শুধু ঈসা (আ.)-এর ক্ষেত্রে এসে সেটিকে মৃত্যু অর্থে নেয়া হলে, তখন কি ঈসা (আ.)-এর উপর অবিচার করা হল না? অথচ এই জায়গার ন্যায় আগের জায়গাগুলোতেও কর্তা আল্লাহ এবং কর্ম যীরূহ বা প্রাণীবাচকই ছিল! এবার কবি একদম নিরব!!

প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

উরিযা ফীহা বি-রূহি ঈসা শীর্ষক হাদীসের সঠিক তাৎপর্য

0

হাদীসের ভুল অনুবাদ দ্বারা জনমনে বিভ্রান্তি ও তার সমাধান

আহমদীয়া অর্থাৎ কাদিয়ানীবন্ধুদের ভুলটি শুধরানো উচিত, উনাদের অনেককে দেখেছি, একখানা হাদীসের খণ্ডিত একটি অংশ তুলে ধরে দাবী করতে চাচ্ছে যে, দেখ দেখ এখানে পরিষ্কার বলা আছে যে, “ঈসা (আ.)-এর রূহ কবজ করা হয়েছে”। আসুন, সম্পূর্ণ হাদীসটি (আরবীসহ) অনুবাদ আগে দেখে নিই।

  • হুবাইরা ইবনু ইয়ারীম হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, আলী (রা:) যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন হযরত হাসান (রা:) মিম্বারে উঠে ভাষণ দেয়ার প্রাক্কালে বলেছেন…. و لقد قُبِضَ فى الليلةِ التى عُرِجَ فيها بِرُوْحِ عيسى ابنَ مريم ليلةَ سبعِ و عشرين مِن رمضانَ অর্থ—“এমন একটি রাত্রিতে তাঁর (আলী) রূহ কবজ করা হয়েছে, যেই রাত্রিতে রূহ (রূহুল কুদস জিবরাইলের)’র মাধ্যমে ঈসা ইবনে মরিয়মকে উপরে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে (عُرِجَ فيها بِرُوْحِ عيسى)। রাত্রটি ছিল রমাদ্বানের ২৭ তারিখ।” (রেফারেন্স, আত-তবক্বাতুল কোবরা, লি ইবনে সা’আদ ৩/৩৭; মাকতাবাতুল খানজি লাহোর, সহীহ ইবনে হাব্বান খন্ড ১৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ খন্ড ১৭)।

হাদীসের তাহকীক : হাদীসটির একজন বর্ণনাকারী হলেন আবু ইসহাক সাব’ঈ। তিনি মুদাল্লিস বা সূত্রের ক্রুটি-বিচ্যূতি গোপনকারী হিসেবে অভিযুক্ত (তবকাতুল মুদাল্লিসীন পৃষ্ঠা নং ৫৮)। তাই বর্ণনাটির সনদের মান দুর্বল । (স্ক্রিনশট দেখুন)

যাইহোক, হাদীসের মান নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোনো অভিযোগ নয়। আমার বলার উদ্দেশ্য হল, এখানে ঈসা (আ.)-এর রূহ কবজ করাই যদি উদ্দেশ্য হত তাহলে عُرِجَ (উরিযা) শব্দ না হয়ে বরং قُبِضَ (কুবিজা) শব্দই ব্যবহার হত। আর ঈসা (আ.)-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ‘রূহ’ শব্দটিও ‘বা’ (ب) বর্ণ যোগে মাজরূর (مجرور) হত না। সব চে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি ওরাও হয়ত খেয়াল করেনি সেটি হল, বাক্যের মধ্যে روح (রূহ) শব্দটি কর্ম (مفعول) তথা Object নয়। অথচ রূহ কবজ করা বুঝাতে হলেও অন্ততপক্ষে روح শব্দ এখানে কর্মকারকে থাকা লাগত।

জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই জানা আছে যে, জিবরাইল (আ.) এর উপাধি ‘রূহুল কুদস’ ছিল। আল্লাহ ঈসা (আ.)-কে রূহুল কুদস তথা জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে সাহায্য করার কথা পবিত্র কুরআনেও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তালা ইরশাদ করেছেন, (সূরা বাকারা ৮৭)। و ايدناه بروح القدس (উচ্চারণ – ‘ওয়া আইয়াদনা-হু বি-রূহিল কুদুস‘- অর্থাৎ আমরা তাকে জিবরাইলের মাধ্যমে সাহায্য করেছি)। তাফসীর এই,

حدثنا الحسن بن يحيى قال : أخبرنا عبد الرزاق قال : أخبرنا معمر ، عن قتادة في قوله : وأيدناه بروح القدس) قال : هو جبريل) উপরের রেওয়ায়েতটিতে খুব খেয়াল করুন, হুবহু এই আয়াতের মতই ب (বা) বর্ণ সহকারে بروح (বি-রূহ) শব্দ এসেছে। তাহলে এই নির্বোধরা কিজন্য আরবী ক্রিয়াপদ عرج (উরিযা)এর প্রতি খেয়াল করেনা? যদি ঈসা (আ.) এর রূহ কবজ করাই উদ্দেশ্য হত তবে তো قبض (কুবিজা) শব্দটাই উল্লেখ থাকত, তাই নয় কি? এরপরেও যাদের বুঝে আসবেনা তাদেরকে আল্লাহর নিকট সমর্পণ করছি।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১২

কোথাও লিখেন, আমিই একমাত্র মসীহ মওউদ, আমার পর আর কোনো মসীহ নেই। আবার আরেক জায়গায় লিখেন, ‘তিনি (মসীহ) তিনবার দুনিয়াতে নাযিল হবেন।’

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর রচনা থেকে উল্লেখ করছি, (তিনি লিখেছেন) ‘সুতরাং আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কোনো মসীহের জন্য আমার যুগের পর (দুনিয়ায়) কদম রাখার (আগমন করার) জায়গা নেই।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৬/২৪৩; রচনাকাল ১৯০০ইং)। 

স্ববিরোধ কথা :

(তিনি আরেক জায়গায় লিখেছেন), ‘…এতে বুঝা গেল যে, মসীহ’র (খ্রিস্টীয়) উম্মতগণের অযাচিত কর্মকাণ্ডের দরুন মসীহ’র রূহানীয়তের জন্য এটাই স্থির ছিল যে, তিনি তিনবার দুনিয়াতে নাযিল হবেন।’ (রূহানী খাযায়েন ৫/৩৪৬)।

বলে রাখা দরকার, মির্যা কাদিয়ানী একথা বলে যেন বুঝাতে চাচ্ছেন যে, মসীহ’র প্রথম অবতার (বুরুজ) ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.), দ্বিতীয় অবতার মির্যা কাদিয়ানী নিজেই আর তৃতীয় অবতার এখনো আসার বাকি। তিনি আগামীতে অচিরেই আসবেন।

পাঠকবৃন্দ! আপনি যদি তার রচনাবলির সমষ্টি ‘রূহানী খাযায়েন’ এর ৫ম খণ্ডের ৩৩৯ পৃষ্ঠা হতে ৩৪৬ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মাত্র ৮টি পৃষ্ঠা মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে সম্পূর্ণ কথাটির খোলাসা আপনি বুঝতে সক্ষম হবেন। ইনশাআল্লাহ। প্রামাণ্য ডকুমেন্ট :-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী