Home Blog Page 22

কে এই শায়খ মাহমুদ এফেন্দী (রহ.)

0

হায়াতে আউলিয়ায়ে কেরাম।

শায়েখ মাহমুদ এফেন্দীর জানাজায় এরদোয়ান :
ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশে অবস্থিত ইয়াভুজ সুলতান সেলিম মসজিদে গতকাল বাদ জুমা অনুষ্ঠিত বিশ্ববরেণ্য আলেম, তুরস্কের ধর্মীয় গুরু এবং নকশবন্দিয়া তরীকার খালিদিয়া শাখার শায়খ মাহমুদ এফেন্দীর জানাজায় শরীক হয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ৯৩ বছর বয়সে মহান এ মনীষী ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। নামাজে জানাজা শেষে যথাযথ সম্মানের সাথে তাঁকে দাফন করা হয়। প্রিয়গুরু ও বিশ্বনন্দিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব শায়খ মাহমুদ এফেন্দির ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এক টুইটে বলেছেন: আমাদের দেশের আধ্যাত্মিক একজন পথপ্রদর্শক মাহমুদ এফেন্দিকে আল্লাহ রহম করুন। তিনি ইসলামের জন্যে তাঁর জীবন কুরবান করেছেন। উল্লেখ্য, ইসলামের জন্যে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন শায়খ মাহমুদ এফেন্দি। খেলাফত ও সালতানাতবিদ্বেষী কামাল পাশার রেখে যাওয়া আধুনিক তুরস্কে সেকুলার বা ধর্মহীন শাসনের সময় ইসলামকে মানুষের মাঝে টিকিয়ে রাখতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা ছিলো তাঁর। বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের প্রভাব নিয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন তিনি। সেকুলার তুরস্কে যখন মসজিদগুলো জাদুঘর হয়ে যায়; মাদ্রাসাগুলোর যাবতীয় সম্পত্তি সরকার ক্রোক করে নেয়; ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়; রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে ধর্ম-চর্চা নিষিদ্ধ করা হয় – তখন তুর্কি আলেমগণ শহর ছেড়ে চলে যান প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মাদ্রাসা কায়েম করেন অজপাড়া গাঁয়ে। তাঁরা গাছের নিচে বসে বাচ্চাদেরকে কুরআন মজীদ শেখানোর কাজ শুরু করেন। মোট কথা – সরকারী নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়ে নিজেদেরকে যাঁরা ইসলামের জন্যে সঁপে দিয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন ছিলেন মাহমুদ এফেন্দি (রাহমাতুল্লাহিতা’লা ‘আলাইহি)। তিনি যেভাবে কষ্ট করে দ্বীনি ইলম হাসিল করেছেন, সেভাবে নিজেও গ্রামগঞ্জে ছাত্রদেরকে শিখিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শায়খ মাহমুদ আফেন্দি ছাত্রদের আঙুলের ইশারায় সারফ-নাহু শেখাতেন এবং হাতের ইশারায় মাসয়ালা-মাসায়িল বলতেন। এখনো তুরস্কের কিছু জায়গায় এ পদ্ধতি চালু আছে। মরহুম মাহমুদ এফেন্দি হাফিজাহুল্লাহ তুর্কি ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের ১৮ খণ্ডের বিশাল এক তাফসীর লিখেছেন – যার নাম ‘রুহুল ফোরকান’। (সূত্র: হুরিয়াত ও অন্যান্য)।

মির্যার স্ববিরোধীতা-১১

একবার লিখল, শুধুই শরীয়তবাহক নবীর অস্বীকারকারীকে ‘কাফের’ বলা যাবে, আরেক জায়গায় লিখল, ‘যে আমার আহবানে সাড়া দেয়না সে মুসলমান নয়।’

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

(মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন),  ‘খোদাতালা আমার উপর প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, যাদের নিকট আমার দাওয়াত পৌঁছেছে আর তারা তা কবুল করেনি এমন ব্যক্তি মুসলমান নয় এবং এরা (পরকালে) পাকড়াও হবে।’ (মির্যা কাদিয়ানীর কথিত ওহী-সমগ্র গ্রন্থ তাযকিরাহ পৃষ্ঠা নং ৫১৯; ইলহাম, মার্চ ১৯০৬ ইং, চতুর্থ এডিশন)।

স্ববিরোধ কথা :

(তিনি তার রচনার আরেক জায়গায় লিখেছেন), ‘এই ব্যাপারটা স্মরণ রাখা উচিত যে, আপনা দাবীর অস্বীকারকারীকে কাফের বলা সেসব নবীর বৈশিষ্ট্য যারা খোদার পক্ষ হতে শরীয়ত এবং আহকামে জাদীদাহ গ্রহণ করেন। কিন্তু একজন শরীয়তবাহক ব্যতীত যে স্তরের মুলহাম এবং মুহাদ্দাস হয় না কেন, জনাবে ইলাহির নিকট যত বিপুল পরিমাণে কথপোকথনের সম্মান অর্জনকারী ও উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন হয় না কেন; তাকে অস্বীকার করলে কেউ কাফের হবেন না।‘ (তিরয়াকুল কুলূব, রূহানী খাযায়েন ১৫/৪৩২)। স্ক্রিনশট দেখুন,

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন। স্ক্রিনশট

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-১০

কোথাও লিখা আছে, শুধু নবী করীম (সা.)-এর আনুগত্যেই নবুওয়তের মোকাম পাওয়া যায়, কোথাও লিখা আছে, ঈসা (আ.)ও মূসা নবীর আনুগত্যে খোদার নৈকট্য অর্জন ও নবী’র মোকাম পেয়েছেন!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

এই পর্বে মির্যা কাদিয়ানী আর তার ছেলে বশীর আহমদ (এম.এ) এবং অনুসারীদের মধ্যকার স্ববিরোধী কথাবার্তার আরেকটি প্রমাণ দেখানো হবে। যেমন মির্যার ছেলে বশীর আহমদ (এম.এ) লিখেছেন,

এমন একজন কামেল মানুষের পূর্ণ আনুগত্য দ্বারা মির্যা সাহেবের নবুওয়ত অর্জিত হয়েছে যাঁর পূর্ণ অনুসরণ নবুওয়তের স্তরে পৌঁছে দিয়ে থাকে। সুস্পষ্ট আছে যে, এমন নবুওয়ত নবী করীম (সা.)-এর পূর্বে সম্ভব ছিলনা। কেননা উনার (সা.) পূর্বে এমন কেউই গত হননি যার কামেল আনুগত্য দ্বারা আল্লাহর কাছ থেকে নবুওয়ত পেতে পারে।’ (কালিমাতুল ফছল ২২, হার্ডকপি, প্রথমপ্রকাশ ১লা মে ১৯১৫ ইং)। এই একই কথা এদেশীয় কাদিয়ানীদের বইগুলোতেও রয়েছে। উম্মতিনবী পৃষ্ঠা নং ৯ দ্রষ্টব্য।

  • জ্ঞাতব্য, কালিমাতুল ফসল বইটি গ্রন্থবদ্ধ হওয়ার আগে ‘রিভিউ অফ রিলিজন্স‘ (ریویو آف ریلیجنز) নামীয় কাদিয়ানীদের একটি উর্দূ অফিসিয়াল পত্রিকারই অংশ ছিল। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৪। ভাষা উর্দূ। বইটি এখনও বাংলায় অনুবাদ হয়নি।

স্ববিরোধী কথা :

‘মির্যা কাদিয়ানীর বইতে লিখা আছে, ‘যেমন খোদার বান্দা ঈসা যাকে হিব্রু ভাষায় ইসোয়া বলে, (তিনি) ত্রিশ বছর পর্যন্ত মূসা (আ.)-এর আনুগত্য করে খোদার ঘনিষ্ঠ হয়ে যান এবং নবুওয়তের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন।’ (চশমায়ে মসীহ [উর্দূ] পৃষ্ঠা নং ৬৭, রূহানী খাযায়েন: ২০/৩৮১-৮২; রচনাকাল মার্চ, ১৯০৬ইং)। আরও পরিষ্কার করে জানতে চশমায়ে মসীহি (বাংলা) এর ৫২ নং পৃষ্ঠাটিও দেখুন। (নিচ থেকে ২নং স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য)।

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৯

একবার বলল ‘নবীর ইজতিহাদি ভুল হয়, আবার বলল নবীর ইজতিহাদি ভুল মূলত ওহীরই ভুল…(অর্থাৎ নবীর কখনো ইজতিহাদি ভুল হবারও সম্ভবনা নেই)!!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

(মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন), ‘নবী’র ইজতিহাদী (গবেষণালব্ধ মত) ভুল মূলত ওহীরই ভুল। কেননা নবী কখনো ওহী থেকে কোনো অবস্থাতেই বিরত থাকেন না।’ (রূহানী খাযায়েন: ৫/৩৫৩; রচনাকাল ১৮৯২ইং)।

স্ববিরোধী কথা :

‘নবী(ও) নিজ ইজতিহাদে ভুল করে থাকেন কিন্তু খোদার ওহীতে ভুল হয় না।’ (রূহানী খাযায়েন: ২২/৫৭৩; রচনাকাল ১৯০৭ইং)। স্ক্যান সংযুক্তি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৮

শেষ যুগে আত্মপ্রকাশকারী ‘দাব্বাতুল আরদ’ সম্পর্কে

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

(মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন), ‘দাব্বাতুল আরদ (دابة الارض) হচ্ছে, ধর্মতত্ত্ব আর ফিলোসোফি তথা দর্শনশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জনকারী উলামায়ে কেরাম যারা ইসলামের সাহায্যে সমস্ত বাতিল মতবাদের উপর হামলা করতে দাঁড়িয়ে যাবে।’ (রূহানী খাযায়েন: ৩/৩৭০; রচনাকাল ১৮৯১ইং)।

স্ববিরোধী কথা :

‘দাব্বাতুল আরদ (دابة الارض) হল বিভিন্ন আকৃতির সেসব জন্তু জানোয়ার যারা কাশফে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং অন্তরে উদয় হয়েছে যে, এরা প্লেগের পোকামাকড়।’ (রূহানী খাযায়েন: ১৮/৪১৬; রচনাকাল ১৮৯২ইং)।

দুঃখজনক হলেও সত্য, কুরআন হাদীস মির্যা কাদিয়ানীর নিকট একদমই সস্তা জিনিস, বরং তার চেয়েও অতি সাধারণ বস্তু ছিল। নইলে কিভাবে সম্ভব যে, এমন হটকারিতামূলক অপব্যাখ্যার তুফান ঘটানো!

স্ক্যান সংযুক্তি –

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৭

একবার বললেন, পবিত্র কুরআন দ্বারা ঈসার মৃত্যু সাব্যস্ত; আবার বললেন, কুরআনে ‘ইবনে মরিয়ম’ বলে যে মসীহ’র আগমনী সংবাদ রয়েছে তা হতে মির্যা কাদিয়ানীই উদ্দেশ্য!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

(মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন), ‘এখন একথা সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, পবিত্র কুরআনে যেই মসীহ মওউদের আসার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সে এই অধমই।’ (ইযালায়ে আওহাম, রূহানী খাযায়েন ৩/৪৬৮)।

স্ববিরোধ কথা :

‘যদি কুরআন দ্বারা ইবনে মরিয়মের মৃত্যু সাব্যস্ত না হয় তাহলে আমি মিথ্যুক সাব্যস্ত হব।’ (রূহানী খাযায়েন ১৯/৯৭, রচনাকাল ১৯০২ ইং)।

মির্যা কাদিয়ানীর নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে এবার আমার জিজ্ঞাসা, পবিত্র কুরআনে ঈসা ইবনে মরিয়ম নামটি দ্বারা কয়জন ব্যক্তি উদ্দেশ্য? যদি শুধুই এক ব্যক্তি উদ্দেশ্য হন আর তিনি মরিয়ম পুত্র ঈসা (আ.)-ই হন (অবশ্য মরিয়ম পুত্র ঈসাই উদ্দেশ্য-লিখক) তাহলে সেই মরিয়ম পুত্র ঈসা-ই আবার কুরআন দ্বারা মৃত সাব্যস্ত কিভাবে হন? অধিকন্তু রাসূল (সা.) শপথ বাক্য সহকারেই (والذى نفسى بيده ليوشكن ان ينزل فيكم ابن مريم الخ) ইবনে মরিয়মের আগমনী ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন (সহীহ বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া)। ফলে এইরূপ ভবিষ্যৎবাণী দ্বারা কোনোভাবেই রূপক অর্থ উদ্দেশ্য হবেনা, বরং প্রকৃত অর্থই উদ্দেশ্য নিতে হবে। মির্যা কাদিয়ানী নিজেও এমন কথা তার ‘হামামাতুল বুশরা’ বইতে লিখে গেছেন। (হামামাতুল বুশরা হতে স্ক্রিনশট)।

মোটকথা, মির্যা কাদিয়ানী সাহেব জঘন্য স্ববিরোধী কথার নজির স্থাপন করে গেছেন।

স্ক্যানকপি সংযুক্তি –

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৬

একবার বলল, আনুগত্যের নবীর ধারাক্রম সর্বদা বিদ্যমান থাকবে; আবার বলল, মুহাম্মদী ধারাবাহিকতায় শেষনবী সে নিজেই।

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন),

مگر اس بات کو بحضور دل یاد رکھنا چاہیے کہ یہ نبوت جس کا ہمیشہ کے لئے سلسلہ جارى رہیگا نبوت تامہ نہیں ہے۔ بلکہ جیساکہ میں ابھی بیان کر چکا ہوں وہ صرف ایک جزئ نبوت ہے

অর্থাৎ কিন্তু এই কথা খুব মন দিয়ে স্মরণ রাখা চাই যে, এই নবুওয়ত যার ধারাক্রম সর্বদা বিদ্যমান থাকবে, তা পরিপূর্ণ নবুওয়ত নয়, বরং আমি যেভাবে এখন বলছি যে, তা শুধুই একটি আংশিক নবুওয়ত।’ (তাওযিহুল মারাম, রূহানী খাযায়েন ৩/৬০)।

স্ববিরোধ কথা :

(তিনি আরেক জায়গায় লিখেছেন), “আল্লাহর বিধান, তাঁর দুই ধরনের প্রেরিত পুরুষ নিহত হন না। (১) প্রথমত: ঐ নবী–যিনি সিলসিলার সূচনাতে আগমন করেন, যেমন মুসায়ী সিলসিলায় হযরত মুসা আলায়হিস সালাম এবং মুহাম্মদীয়া সিলসিলায় আমাদের প্রভু ও মওলা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম। (২) দ্বিতীয়ত: ঐ সকল নবী ও আল্লাহর প্রেরিতগণ যারা সিলসিলার শেষে আগমন করেন- যেমন, মুসায়ী সিলসিলায় হযরত ঈসা আলায়হিস সালাম এবং মুহাম্মদী সিলসিলায় এই অধম।” (রূহানী খাযায়েন [উর্দূ] খন্ড ২০ পৃষ্ঠা নং ৬৯-৭০; রচনাকাল ১৯০৩ইং, তাযকেরাতুশ শাহাদাতাইন [বাংলা] পৃষ্ঠা নং ৮২)।

এখানে তিনি পরিষ্কার শব্দে লিখেছেন যে, তিনি (অর্থাৎ মির্যা সাহেব নিজেই) মুহাম্মদী ধারাবাহিকতায় একজন শেষনবী! এবার তাহলে তারই উপরিউক্ত কথামতে ‘আংশিক নবুওয়তের ক্রমধারাও সর্বদা বিদ্যমান থাকল কোথায়?‘ স্ক্যান সংযুক্তি :-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

মির্যার স্ববিরোধীতা-৫

একবার লিখলেন, শেষ যুগে আগমনকারী ঈসা ইবনে মরিয়ম ‘নবী’ হবেন না; আবার লিখলেন, তিনি একজন নবীও হবেন এবং উম্মতিও হবেন! এখন কাদিয়ানীদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্ন, আগমনকারী ঈসা ‘নবী’ হিসেবে আগমন করলে তখন তার ‘উম্মত’ হিসেবে গণ্য হবেন কারা? ঈসা দাবীদার কাজ্জাব মির্যা কাদিয়ানী ‘নবী‘ হলে তখন ‘আহমদীরা’ কি তার ‘উম্মত‘ হওয়াও স্বীকার করবেন??

পড়ুন: মির্যার স্ববিরোধীতা-

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন), ‘হাদীস সমূহ মতে আরেকটি অর্থ এই দাঁড়ায় যে, আগমনকারী ইবনে মরিয়ম (মসীহ) নবী হবেন না, বরং শুধুই একজন উম্মতি হবেন।’ (রূহানী খাযায়েন: ৩/২৪৯; রচনাকাল ১৮৯১ইং)।

স্ববিরোধী কথা :

‘আগমনকারী মসীহ মওউদ সম্পর্কে হাদীস সমূহ দ্বারা বুঝা যায় ও পরিচয় পাওয়া যায় যে, তিনি নবীও হবেন এবং উম্মতিও হবেন।’ (রূহানী খাযায়েন: ২২/৩১; রচনাকাল ১৯০৭ ইং)। স্ক্যান সংযুক্তি :

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৪

মির্যার কথিত ইলহামী গ্রন্থে ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবার আকীদা প্রকাশ করা সত্ত্বেও পরবর্তীতে সেই আকীদা থেকে নতুন আরেক কথিত ইলহামের নামে সরে আসা!

পড়ুন: মির্যার স্ববিরোধীতা-

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানী লিখেন, “আমি ‘বারাহীনে আহমদীয়া’ নামক বইতে লিখেছিলাম মসীহ ইবনে মরিয়ম আকাশ থেকে নাযিল হবেন। তবে পরবর্তীতে আমি লিখেছি, আগত মসীহ (ঈসা) আমি নিজেই।” (রূহানী খাযায়েন ২২/১৫২-৫৩; হাকীকাতুল ওহী বাংলা অনূদিত কপি পৃষ্ঠা নং ১১৭)।

‘বারাহীনে আহমদীয়া’ নামক কিতাব সম্পর্কে মির্যার বক্তব্য এই যে,

১. “আমি কিতাবটি আল্লাহর পক্ষ হতে একজন মুলহাম (খোদার পক্ষ হতে অদৃশ্যের জ্ঞান লাভকারী) এবং মামূর (আদিষ্ট) হয়েই লিখেছি।” (আয়নায়ে কামালাতে ইসলাম, রূহানী খাযায়েন ৫/৬৫৭)।

২. আরো লিখা আছে, “প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ উভয় দিক থেকে কিতাবটির পরিচালক মহান আল্লাহ।” (মাজমু’আয়ে ইশতিহারাত ১/৫৬; আমি এবং আমার বই’ শীর্ষক শিরোনাম)।

৩. তিনি নিজের সম্পর্কে দাবী করে এক জায়গায় লিখেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহতালা আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলের উপর ছাড়েন না এবং আমাকে রক্ষা করেন প্রত্যেক ভুলভ্রান্তি থেকে এবং শয়তানি পথ থেকে আমাকে হেফাজত করেন।” (রূহানী খাযায়েন ৮/২৭২)।

৪. “আমার কথাবার্তায় কোনো অসঙ্গতি নেই। আমি তো খোদার ওহীরই অনুসরণকারী।” (রূহানী খাযায়েন ২২/১৫৪)।

৫. “মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে।” (রূহানী খাযায়েন ২১/২৭৫)।

এবার কিছু প্রশ্ন করতে চাই….। যেহেতু আপনাদেরই বিশ্বাস অনুসারে…!

ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবেন, এটা কুরআনের ঐ ত্রিশ আয়াত বিরোধী, তাই না?

এই সংক্রান্ত হাদীস যত আছে সবগুলোই বাতিল, যেহেতু কুরআন বিরোধী কথা সহীহ হাদীসে থাকার কথা না, তাই না?

‘আহমদ চরিত’ বইয়ের ৮ নং পৃষ্ঠায় লিখা আছে, ১৮৯১ সালের দিকে একটি ইলহামের মাধ্যমে মির্যা সাহেবকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, ঈসা (আ.) মৃত্যুবরণ করেছেন, তাই না?

এমতাবস্থায় নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন!

(ক) ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হবেন, কথাটি মির্যা সাহেব ওহীর মাধ্যমেই লিখে যাওয়ার পরেও সেটি পরবর্তীতে কেন মিথ্যা হল? (দেখুন, উপর থেকে নিচে ৪ নং উক্তি)।

(খ) যে বিষয়টি তার আগের ওহী দ্বারা ‘হ্যাঁ’ সাব্যস্ত হল সেটাই পরে তার আরেক ওহী (ইলহাম) দ্বারা ‘না’ সাব্যস্ত হলে, তবে কি আল্লাহ মির্যাকে আগে মিথ্যা বলে তারপর সত্য বললেন? নাউযুবিল্লাহ।

(গ) যদি ঈসা (আ.) আকাশ থেকে নাযিল হওয়ার বিশ্বাস ভুল বা মিথ্যা হয়, তাহলে বারাহীনে আহমদীয়া বইটি সম্পর্কে মির্যা কাদিয়ানীর উক্ত (নং ১,২) বক্তব্য দুটিও কি মিথ্যা সাব্যস্ত হল না? কারণ আল্লাহর পক্ষ হতে আদিষ্ট বলে দাবী রত অবস্থায় কোনো ব্যক্তি অদৃশ্যের এমন কোনো বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণী কিভাবে দিতে পারেন, যদি আল্লাহ সেটি তাকে বলে না দেন? আবার এমন কোনো ভবিষ্যৎবাণী এধরণের বইতে কিভাবে লিখতে পারেন যা সঠিক নয়, (মির্যার আরেক বক্তব্যানুসারে) সেটি শিরিকও? আবার নাকি বইটি তিনি আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ পেয়ে লিখেছেন!

(ঘ) আরো প্রশ্ন জাগে যে, যার দাবী হল—’আল্লাহ আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলের উপর ছাড়েন না’। তাহলে তিনি ১৮৮১-‘৮২ সালে ‘বারাহীনে আহমদীয়া’ বইতে যে কথা লিখলেন তারপর ১৮৯১ সালের দিকে তিনি সে কথা থেকে সরে যাওয়ার মানে কি দীর্ঘ ১০টি বছর ভুলের উপর থাকা নয়? তবে কি আল্লাহ তাকে এমন ভুলের উপরও ছেড়ে দিলেন, যা তার মতে শিরিকি বিশ্বাস?

শেষকথা হল, এমতাবস্থায় মির্যা সাহেব কি সীমাহীন মিথ্যা আর অসঙ্গতির জন্ম দিয়ে গেলেন না? এখন তাহলে মির্যা সাহেবকে তারই কথা অনুসারে আমি যদি একজন নাম্বার ওয়ান ‘কাজ্জাব-মিথ্যাবাদী‘ আখ্যা দিই তবে কি অন্যায় হবে? যেহেতু তিনি খোদ লিখেছেন, “মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে।” (রূহানী খাযায়েন ২১/২৭৫)। আপনার নিরপেক্ষ বিবেকের কাছে প্রশ্নগুলো রেখে দিলাম।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩

ঈসা (আ.) উম্মতি হতে পারা, না পারা!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

১। (মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন), “যে ব্যক্তি উম্মতি-এর বাস্তবতার প্রতি তীক্ষ্ণদৃষ্টি দেয় সে পরিষ্কার বুঝতে পারে যে, হযরত ঈসা (আ.)-কে ‘উম্মতি’ সাব্যস্ত করা একটি কুফুরি।” (বারাহীনে আহমদীয়া খ-৫, রূহানী খাযায়েন ২১/৩৬৪)।

এবার স্ববিরোধ কথা :

২। আরেক জায়গায় লিখেছেন, “কুরআন শরীফ দ্বারা তো সাব্যস্তই আছে যে, প্রত্যেক নবীই হযরত (সা.)-এর উম্মতের অন্তর্ভুক্ত। যেমন আল্লাহতালা বলেন, لتؤمن به و لتنصرنه (তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে)। সুতরাং এইভাবেই সমস্ত আম্বিয়া (আলাইহিমুস সালাম) হযরত (সা.) এর উম্মত হয়ে যান।” (বারাহীনে আহমদীয়া খ-৫, রূহানী খাযায়েন ২১/৩০০)।

আমার প্রশ্ন, সমস্ত আম্বিয়া হযরত (সা.)-এর উম্মত হওয়া পবিত্র কুরআন দ্বারাই সাব্যস্ত হয়ে থাকলে তবে কিজন্য ঈসা (আ.)-কে ‘উম্মতি‘ সাব্যস্ত করা কুফুরি হবে?

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক