Home Blog Page 19

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩৪

এক জায়গায় লিখেন, মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া আর কেউই ‘ছাহেবে খাতাম’ নন। আরেক জায়গায় লিখেন, ঈসা (আ.) বনী ইসরাইলের জন্য ‘খাতামুল আম্বিয়া’ ছিলেন!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন), “তিনি (মুহাম্মদ) ব্যতীত আর কেউ ছাহেবে ‘খা-তাম’ নন। ছাহেবে খা-তাম হওয়ার অন্যতম একটি কারণ এই যে, তাঁর মোহর (সীল) দ্বারা এমন নবুওয়তও অর্জিত হয় যার জন্য উম্মতি হওয়া আবশ্যক।” (রূহানী খাযায়েন ২২/২৯-৩০)।

স্ববিরোধী কথা :

“বনী ইসরাইলের ‘খাতামুল আম্বিয়া’ হলেন ঈসা (আ:)”। (নুসরাতুল হক, রূহানী খাযায়েন ২১/৪১২)।

এবার মির্যা কাদিয়ানী সাহেব নিজেরই স্ববিরোধী কথাবার্তার দরুন কী সাব্যস্ত হলেন? আফসোস! আত্মস্বীকৃত একজন মিথ্যাবাদীকে আপনারা ইমাম মাহদী বানিয়ে বসে আসেন। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩৫

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩৩

কখনো বলে, ঈসা (আ.)-এর মৃত্যু হয়েছে শামে এবং কবর শামের গ্যালিল জনপদে, আবার বলে, কাশ্মীরে বা তার আশপাশে!

এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন) ‘সত্য তো এটাই যে, মসীহ [ঈসা] আপনা মাতৃভুমি গ্যালীলে [সিরিয়া] গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু তাঁর ঐ দেহ যেটি [সেখানে] দাফন হয়েছিল তা আবার জীবিত হয়ে যাওয়া একদমই সত্য নয়।’ (রূহানী খাযায়েন: ৩/৩৫৩; রচনাকাল ১৮৯১ইং)।

স্ববিরোধী কথা :

‘হযরত মসীহ এর কবর কাশ্মীরে অথবা তার আশপাশে [তিব্বতে] রয়েছে।’ (রূহানী খাযায়েন: ১০/৩০২; রচনাকাল ১৮৯৫ইং)। (এ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন) প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)।

অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩২

মির্যা কাদিয়ানী আর তার পুত্র (কথিত মুসলেহ মওউদ) মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ তাদের দুইজনের পরষ্পর বিরোধী কথাবার্তা!

মির্যায়ী পিতা-পুত্রের মাঝে স্ববিরোধ বক্তব্যের একটি দৃষ্টান্ত এই যে, (কাদিয়ানীদের উর্দূ ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা ‘আল-ফজল’ ২০-আগস্ট-১৯২৪ এর ০৫ নং পাতায় ‘মুহাম্মদী বেগম ওয়ালি পেশগোঈ’ শীর্ষক শিরোনামে মির্যা বশির উদ্দীন মাহমূদের উদ্ধৃতিতে লিখা আছে), اللہ تعالی کا کوئی وعدہ نہیں تھا کہ وہ لڑکی آپ کے نکاح میں آئے گی অর্থাৎ “উনার সাথে (অর্থাৎ মির্যা কাদিয়ানীর সাথে) ঐ মেয়েটির (অর্থাৎ মুহাম্মদী বেগমের) বিয়ে হওয়া মর্মে আল্লাহতালার কোনোই ওয়াদা ছিলনা।

স্ববিরোধী কথা :

মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী লিখেছেন, جیسا کہ اس نے فرمایا کہ میں اس عورت کو اس کے نکاح کے بعد واپس لاؤں گا اور تجھے دوں گا ‘অর্থাৎ তিনি (খোদা) বলেছেন, আমি এ মহিলাকে তার বিবাহের পর তার নিকট (অর্থাৎ মির্যা কাদিয়ানীর নিকট) ফিরিয়ে দেব।’ (মাজমু’আয়ে ইশতিহারাত ২/৪৩ নতুন এডিশন)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা হল, মির্যাপুত্র মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ কিভাবে এমন জঘন্য মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারলেন? মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের রচনায় যে কথা সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ আছে তিনি কিজন্য সেটির বিপরীতে গেলেন? তার এই মিথ্যাচার কিবা অসচেতনতামূলক কথায় সমগ্র আহমদী বিপথগামী হয়নি? দুই জায়গায় দুই রকম! তাও আল্লাহর নাম ভেঙ্গে! আল্লাহ তাদের অনুসারীদের সহীহ বুঝ দান করুন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩১

এই কেমন স্ববিরোধ কথাবার্তা! কোথাও বলল, ফাতেমা বংশে আগত সেই ইমাম মাহদী আমি নই, আবার আরেক জায়গায় কাশফের নাম ভেঙ্গে নিজেকে ফাতেমী বংশীয় সাব্যস্ত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে (তিনি লিখেছেন, কাশফে (অতি জাগ্রত স্বপ্নে) হযরত ফাতেমা (রা.) আমার মাথা তাঁর উরুদেশে রেখেছেন এবং আমায় দেখিয়েছেন যে, আমি তাঁর থেকে উদ্ভূত।’ (এক গলতি কা ইযালা বা একটি ভুল সংশোধন, পৃষ্ঠা নং ১১)।

স্ববিরোধ কথা :

মির্যা কাদিয়ানীর বইয়ের আরেক জায়গায় লিখা আছে, “হযরত মাহদী সম্পর্কে ফাতেমার সন্তান থেকে তাঁর আগমনী যে সংবাদ হাদীস সমূহে এসেছে আমি সেই হাদীসে বর্ণিত মাহদী নই।” (দেখুন, রূহানী খাযায়েন ২১/৩৫৬)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

কাদিয়ানীদের ‘সালানা জলসা’ হজ্জের মত!

কাদিয়ানীদের চেপে রাখা ধর্মবিশ্বাস!

মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ এর ‘খুতুবাতে মাহমুদ’ গ্রন্থে লিখা আছে যে, জলসাও হজ্জের মত। বিস্তারিত জানুন! এখানে তারই বই থেকে বাংলা অনুবাদ সহ তুলে ধরছি। মির্যা বশির উদ্দিন মাহমুদ লিখেছেন,

جب تم حج کے لئے نکلو تو یہ تین باتیں یاد رکھو۔ آج جلسہ کا پہلا دن ہے۔ اور ہمارا جلسہ بھی حج کی طرح ہے۔ حج خدا تعالی نے مؤمنون کی ترقی کے لئے مقرر کیا تھا۔ آج احمدیوں کے لئے دینی لحاظ سے حج تو مفید ہے مگر اس سے اصل غرض یعنی قوم کی ترقی تھی وہ انہیں حاصل نہیں ہو سکتی۔ کیونکہ حج کا مقام ایسی لوگوں کے قبضہ میں ہے جو احمدیوں کو قتل کر دینا بھی جائز سمجھتے ہیں۔ اس لئے خدا تعالی نے قادیان کو اس کام کے لئے مقرر کیا ہے۔ ہمارے آدمیوں میں سے جن کو خدا تعالیٰ توفیق دیتا ہے حج کرتے ہیں۔ مگر وہ فائدہ جو حج سے مقصود ہے وہ سالانہ جلسہ پر ہی آکر اٹھاتے ہیں.

অর্থাৎ ‘যখন তোমরা হজ্জের জন্য বের হবে তখন এ তিনটি কথা স্মরণ রাখবে। আজ জলসার প্রথম দিন। আর আমাদের জলসাও হজ্জের মতো। খোদাতালা মুমিনদের উন্নতি সাধনের জন্যই হজ্জ বিধান করেছিলেন। আজকে আহমদীদের জন্য ধর্মীয় ভাবে হজ্জ করা তো উপকারী, তবে তার মাধ্যমে যা প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্থাৎ জাতির উন্নতি হওয়া ছিল সেটি তার মাধ্যমে অর্জিত হয় না। কেননা হজ্জের স্থান এমন লোকদের আয়ত্তে রয়েছে যারা আহমদীদেরকে হত্যা করাও বৈধ মনে করে। এজন্য খোদাতালা কাদিয়ানকে এই কাজের (হজ্জের) জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমাদের লোকদের মধ্য হতে যাদেরকে খোদাতালা তাওফিক দিয়েছেন (তারা) হজ্জ করুক। কিন্তু হজ্জের মাধ্যমে যে উপকারীতা উদ্দেশ্য সেটি সালানা জলসায় এসেও লাভ করতে পারে।’ (খুতুবাতে মাহমুদ ৪/২৫৪; ২৫-১২-১৯১৪ খ্রিস্ট-বর্ষ)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

কিন্তু এইরূপ সুস্পষ্ট প্রমাণ দেয়ার পরেও কতিপয় ঘাড়ত্যাড়া কাদিয়ানীর দৃষ্টিতে এগুলো মিথ্যা আর বানোয়াটই মনে হয়ে থাকে। আমি সবিনয়ে অনুরোধ করব, উল্লিখিত বইটি তাদের alislam.org ওয়েবসাইট থেকেও ডাউনলোড করে সত্যমিথ্যা মিলিয়ে দেখতে পারে। এইজন্য সরাসরি এই লিংকে ক্লিক করুন। আর নিম্নোক্ত নির্দেশিত ৫৩ নং লাইনে ক্লিক করুন। তবেই বশির উদ্দিন মাহমুদ এর বইটি ডাউনলোড হয়ে যাবে।

প্রিয় পাঠকপাঠিকা! আমাদের উলামায়ে কেরাম মানুষকে কাদিয়ানীদের ব্যাপারে সতর্ক করেই যাচ্ছেন। এখনো সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত। হয়ত কেউ দলিল প্রমাণ ভিত্তিক, কেউ বা সাধারণ ভাবে। যেভাবেই সতর্ক করে যাচ্ছেনা কেন, তাদের সতর্ক করার পেছনে যুক্তি আর বাস্তবতা যে রয়েছে সেটার অন্যতম প্রমাণ আমার আজকের এই লিখাটি। এখন নিজেই চিন্তা করুন, আল্লাহর একটি ফরজ হজ্জের সাথে কাদিয়ানীদের ‘সালানা জলসা’ কিভাবে তুলনীয় হয়? কিন্তু তাদের কত জঘন্য স্পর্ধা হলে ‘জলসা’-কে ফরজ হজ্জের সাথে তুলনা করতে পারে, ভাবতেও অবাক হই। এখন তাদের এই বিশ্বাস এক দিকে ভ্রান্ত ও অপর দিকে হজ্জের নিষ্ঠুরতম অবমাননা নয় কি? জ্ঞানীদের নিশ্চয়ই ভাবিয়ে তুলবে, ইনশাআল্লাহ।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী শুধুই একজন!

ইমাম মাহদী শুধুই একজন হবেন, একাধিক ইমাম মাহদীর কনসেপ্ট ভিত্তিহীন

রাসূল (সা.) অসংখ্য সহীহ হাদীসে প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদী সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে গেছেন। তন্মধ্যে একটি হাদীসে এসেছে যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রা.) হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন الْمَهْدِيُّ مِنْ عِتْرَتِي مِنْ وَلَدِ فَاطِمَةَ ‏ অর্থাৎ ইমাম মাহদী আমার ঔরসজাত ফাতিমার বংশ থেকে হবে।

(রেফারেন্স :- আবুদাউদ কিতাবুল মাহদী, অধ্যায় নং ৩১; হাদীস নং ৪২৩৫ ইফা হতে প্রকাশিত, হাদীসের মান: সহীহ) ।

সুতরাং একথা একদমই পরিষ্কার হল যে, রাসূল (সা.) একাধিক ইমাম মাহদীর সংবাদ দেননি, বরং শুধুই একজনের সংবাদ দিয়ে গেছেন। আর যার আগমনের সংবাদ দিয়ে গেছেন তিনি আহলে বাইয়েতের অন্তর্ভুক্ত ও ফাতেমা (রা.)-এর সন্তান হতেই আবির্ভূত হবেন। এটিই সুস্পষ্ট ও চূড়ান্ত।

কিন্তু আজকের এই লিখাটি পড়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ইমাম মাহদী তো একজনই, একথা তো সর্বজনসম্মত। তারপরও এইধরনের লিখার উদ্দেশ্যটা কী?

আমি আমার সেসব ভাইবোনদের জিজ্ঞাসার উত্তরে বলতে চাই, মির্যা কাদিয়ানীর কতিপয় অনুসারীর একটি বিভ্রান্তিকর দাবী ও বিশ্বাসের অসারতা প্রমাণ করতেই মূলত আজকের এই লিখা। যেহেতু তাদেরকে যখনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয় যে, এই দেখুন হাদীসগুলো! এই সহীহ হাদীসগুলোর কোনো একটিও মির্যা কাদিয়ানীর সাথে যায়না। তাকে ইমাম মাহদী সাব্যস্ত করার কোনো রসদ এগুলোতে নেই। কাজেই রাসূল (সা.)-এর সুসংবাদকৃত সেই একমাত্র ইমাম মাহদী এখনো আসেনি, তবে তিনি যথাসময়ে আসবেন। সুতরাং মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আপনা দাবীতে সত্যবাদী ছিলনা।

আপনি-আমি যখন এভাবে তাদের সামনে তাদেরই ভুলগুলো ও বাস্তবতা তুলে ধরব, তখন গা বাঁচাতে বা মির্যার মাহদী দাবীকে বাস্তব প্রমাণ করতে তারা একধরণের মিথ্যা আর গোঁজামিলের আশ্রয় নিয়ে থাকে। বলে থাকে যে, আরে জনাব! হাদীসে তো একাধিক ইমাম মাহদীর সংবাদ এসেছে। মির্যা কাদিয়ানী সাহেব যদিও ফাতেমা (রা.)-এর বংশধর বা আহলে বাইয়েতের মধ্য হতে নন, তাতে অসুবিধা কোথায়? ইমাম মাহদী যেহেতু আরও অনেক হবেন সেহেতু তিনি তাদের মধ্য থেকে কোনো না কোনো একজন তো নিশ্চয়ই হবেন! এবার আশাকরি বুঝতেই পেরেছেন যে, তারা কী অসম্ভব রকমের বিভ্রান্তিতে নিপতিত। এইজন্যই লিখাটি লিখতে হল!

এবার আমি সেসব হতভাগা বিভ্রান্ত ও বিপথগামী আহমদীবন্ধুদের উদ্দেশ্যে তাদেরই চতুর্থ খলীফা মির্যা তাহের আহমদ সাহেবের রচিত বই থেকে দেখাব যে, তিনি নিজেও পরিষ্কার করে লিখে গেছেন যে, ইমাম মাহদী শুধুই একজন। রাসূল (সা.) শুধুই একজন ইমাম মাহদী আসার সংবাদ দিয়ে গেছেন।

(রেফারেন্স ‘মাজালিসে ইরফান’ বা مجالس عرفان (উর্দূ) পৃষ্ঠা নং ৭২)।

আমি মির্যা তাহের আহমদ সাহেবের কিতাব থেকে উর্দূটা অনুবাদ সহ নিচে তুলে ধরছি, মির্যা তাহের আহমদ সাহেব লিখেছেন,

اور یہ ہو نہیں سکتا کہ خدا نے دس امتی نبی بہیجنے ہوں اور صرف ایک کی خبر دے۔ اس لئے عقلا امکان اور چیز ہے۔ واقعتا کتنے آئیں گے حضرت اقدس محمد مصطفی صلی اللہ علیہ وسلم سے پوچھے بغیر فیصلہ نہیں ہو سکتا۔ اور آپ صلی اللہ علیہ وسلم نے ایک امام مہدی کی خبر دی ہے۔ یہ تو ہمیں علم ہے۔ اور ہم ایک کو مان بھی بیٹہے ہیں۔ اس لئے کل کو اگر کسی نے دعوی کیا تو جماعت احمدیہ اس سے پوچھے گی کہ ہم نے پہلے کو تو اس لئے ماننا تھا کہ اس کے متعلق آنحضور صلی اللہ علیہ وسلم کی خوشخبریاں تھیں۔ اگر تم سچے ہو تو وہ خوشخبریاں دکھاؤ ہم تمہیں بھی مان لیں گے۔ یہ ہمارا مسلک ہے۔

অর্থাৎ ‘আর এটা তো হতে পারে না যে, খোদাতালা উম্মতিনবী পাঠাবেন দশজন আর সংবাদ দিবেন শুধুই একজনের। বুদ্ধির দাবীতে (যদিও বা এইরূপ) সম্ভাবনা থাকাটা ভিন্ন জিনিস তবে বাস্তবে কতজন আগমন করবে তা তো হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করা ব্যতীত সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না। আর হযরত (সা.) একজন ইমাম মাহদীরই সংবাদ দিয়ে গেছেন, এটি তো আমাদের জানা কথা। আর আমরা একজনকেই মেনে বসে আছি। কাজেই আগামীকাল যদি দ্বিতীয় কেউ (ইমাম মাহদী হওয়ার) দাবি করে তাহলে জামাতে আহমদীয়া তাকে জিজ্ঞেস করবে যে, আমরা তো আগের ইমাম মাহাদীকে এজন্যই মেনে নিয়েছিলাম যে, তার সম্পর্কে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুসংবাদ ছিল। (কাজেই এখন) যদি তুমি তোমার দাবিতে সত্যবাদী হও তাহলে তোমার ব্যাপারে সুসংবাদ সমূহ প্রদর্শন করো! আমরাও তোমাকে মেনে নেব! এটাই হচ্ছে আমাদের মাসলাক তথা রায়।’

(মাজালিসে ইরফান [مجالس ]-৭২; মির্যা তাহের আহমদ)। স্ক্রিনশট:-

শেষকথা,

আমার প্রিয় আহমদী ভাই ও বোনেরা! আল্লাহর ওয়াস্তে সত্যটা খুঁজুন, সত্যটা বুঝার চেষ্টা করুন। অন্ধ হবেন না। আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া বুঝার শক্তি দিয়েছেন, পরিবার বুঝতে শিখেছেন। নিজের ভালো মন্দ সবই বুঝতে সক্ষম। তাহলে কিজন্য নিজের দ্বীন ধর্ম আর ইসলামি শিক্ষায় আপনি অন্ধ থাকবেন? কেন নিরপেক্ষ ভাবে যাচাই করবেন না যে, সেই একমাত্র প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীর প্রকৃত পরিচয় কেমন?

জাল আর জঈফ হাদীসগুলো বাদ দিয়ে আপনি অন্তত সহীহ ও বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হাদীসগুলো পড়ুন ইমাম মাহদী সংক্রান্ত ১২টি নির্বাচিত সহীহ হাদীস

ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসগুলোর সনদ (সূত্র) সম্পর্কে গত হাজার বছর আগ থেকেই বিশেষজ্ঞ ইমামগণ সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন যে, কোন কোন হাদীস সূত্রের বিচারে সহীহ ও গ্রহণযোগ্য আর কোন কোন হাদীস অপ্রমাণিত ও বাতিল। ইনশাআল্লাহ, আপনি নিরপেক্ষ ভাবে সত্য খোঁজে দেখুন। একদিন অবশ্যই আপনি আপনার প্রত্যাশিত সত্য পথ পেয়ে যাবেন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩০

কোথাও লিখেছেন, জড়দেহ সহ আকাশে যাওয়া সম্ভব নয়, আবার লিখলেন রাসূল (সা.)-এর মেরাজ হয়েছিল জাগ্রত অবস্থায় ও দেহসহ!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে, তিনি জনৈক প্রশ্নকারীর প্রশ্নাকারে নিজের রায় উল্লেখপূর্বক লিখেছেন, 

কোনো জড়দেহ আকাশে যাওয়া সম্ভব নয়।” (রূহানী খাযায়েন ৩/১২৬)।

স্ববিরোধ কথা :

“অতপর মে’রাজ প্রসঙ্গে এসো! এটি কখনো আমাদের মতামত নয় যে, সেটি একটি স্বপ্ন ছিল বা শুধুমাত্র রূহই গিয়েছিল।” (মালফুযাত ৫/১৩৪ চতুর্থ এডিশন)।

আরেকটি রচনায় উল্লেখ আছে,

“বাকী রইল আমাদের রসূল (সা:)-এর মে’রাজের প্রসঙ্গটি। এটি ছিল জাগ্রত অবস্থায় একটি পরিপূর্ণ, অতীব সূক্ষ্ম আধ্যাত্মিক এবং অলৌকিক অভিজ্ঞতা। এতে কোনো সন্দেহ বা সংশয় নেই, রসূলুল্লাহ (সা:)-এর জাগ্রত অবস্থায় দেহসহ উর্ধ্বলোকে গিয়েছেন।” (হামামাতুল বুশরা [বাংলা] ৬০)। যথাক্রমে প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

মির্যার স্ববিরোধীতা-৩১

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মির্যার স্ববিরোধীতা-২৯

ফাতেহ কাদিয়ান খ্যাত শায়খ সানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহ.) সম্পর্কে মির্যার যাবতীয় লেখনীর বিষয়বস্তু গুলো শুধুই দোয়া-নির্ভর, আরেক জায়গার ভাষ্যমতে ইলহাম নির্ভর!

এখন এমন ব্যক্তিও কী করে আপনা দাবীতে সত্য হন?

মির্যা কাদিয়ানীর বই থেকে,

‘মৌলবী সানাউল্লাহ চে আখেরী ফয়সালা’ শীর্ষক শিরোনামে মির্যা সাহেব যা লিখে গেছেন সে সম্পর্কে তার বইয়ের এক জায়গায় লিখা আছে, “ইয়ে কেসি ইলহাম ইয়া ওহী কি বেনা ফর ফেশগোঈ নিহি, মহছ দু’আ কি তূর ফর মে নে খোদা চে ফয়সালা ছাহা”। অর্থ, এটি কোনো ইলহাম বা ওহীর ভিত্তিতে ভবিষ্যৎবাণী নহে, শুধুই দোয়ার মাধ্যমে আমি খোদার পক্ষ হতে ফয়সালা চেয়েছিলাম। (মাজমু’আয়ে ইশতিহারাত ৩/৫৭৮; নতুন এডিশন)।

স্ববিরোধী কথা :

তিনি আরেক জায়গায় লিখেছেন,

“সানাউল্লাহ কে মুতা’আল্লক জু কুচ লিখহা গিয়া ইয়ে দর-আছল হামারে তরফ চে নেহি, বলকে খোদা হী কে তরফ চে উসকি বুনিয়াদ রাখহি গী হে।” অর্থ, সানাউল্লাহ সম্পর্কে আমি যা কিছু লিখেছি তা প্রকৃতপক্ষে আমার পক্ষ হতে নহে, বরং খোদারই পক্ষ হতে সেটির ভিত্তি রাখা হয়েছে। (মির্যায়ী রচনা মালফুযাত ৫/২০৬ নতুন এডিশন)। প্রামাণ্য স্ক্যানকপি:-

শেষকথা : মির্যা কাদিয়ানী লিখেছেন: মিথ্যাবাদীর কথায় অবশ্যই স্ববিরোধীতা হয়ে থাকে। (রূহানী খাযায়েন: ২১/২৭৫)। অতএব এবার মির্যা কাদিয়ানী তারই স্ববিরোধী কথার কারণে কী সাব্যস্ত হলেন একটু ভেবে দেখবেন কি? এমন একজন মিথ্যাবাদীকে দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কিজন্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের ঈমানকে রক্ষা করুন। আমীন।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

পবিত্র কুরআনে ঈসা জীবিত থাকার দলিল

হায়াতে ঈসা মসীহ প্রসঙ্গ

পবিত্র কুরআন হতেও ইংগিতে প্রমাণিত, হযরত ঈসা (আ.)-এর পুনঃআগমন অকাট্য সত্য!

  • কে জানি বলেছিল, ঈসা (আ.) জীবিত নেই, কুরআন নাকি এর সাক্ষী! আমি জবাবে বলতে চাই, এটি একদমই অসত্য দাবী, যে দাবী পরিষ্কার কুরআন বিরোধী।

বিজ্ঞপাঠকবৃন্দ! লক্ষ্য করুন, পবিত্র কুরআনের সূরা আলে ইমরান আয়াত নং ৪৬। সেখানে ঈসা (আ.) সম্পর্কে,

و يكلم الناس فى المهد و كهلا

বলা আছে। অর্থ, ঈসা (আ.) দোলনায় থাকাবস্থায় যেমন মানুষের সাথে কথা বলবেন (শৈশবে বলেছেনও), তদ্রূপ প্রৌঢ় বয়সেও বলবেন।

আরবি অভিধানগ্রন্থ ‘লিসানুল আরব‘ [لسان العرب] দেখুন, كهل (কাহোল) বা প্রৌঢ় বয়স ৩৪ থেকে ৫১-এর মাঝামাঝি বয়সকে বলে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ঈসা (আ.) এর উর্ধ্বাকাশে হযরত জিবরাঈলের মাধ্যমে ‘রাফা’ বা উঠিয়ে নেয়া যদি অনূর্ধ্ব তেত্রিশ বছর (Thirty-three years) বয়সে হয় (নিশ্চয় এই রকম বয়সেই তাঁর রাফা হয়েছিল,

حين رفع كان ابن اثنتين و ثلاثين سنة و ستة اشهر;

তবকাতে ইবনে সা’আদ ১/৩৫-৩৬ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত), তাহলে তিনি প্রৌঢ় বয়সে কখন পৌছলেন? আর ঐ প্রৌঢ় (তথা পরিণত) বয়সে মানুষের সাথেও বা কখন কথা বললেন? এখন যদি প্রৌঢ় বয়সে তাঁর কথা বলতে হয় তবে কি তাঁকে পৃথিবীতে পুনরায় আসতে হবেনা? অবশ্য আসতে হবে।

উল্লেখ্য, জিবরাঈলের মাধ্যমে সংঘটিত ‘রাফা’ হতে শুধুই রূহ উঠিয়ে নেয়া উদ্দেশ্য হবেনা (فأوحى الله عز وجل إلي جبريل عليه السلام أن أرفع عبدي إلي ;রেফারেন্স তারীখে ইবনে আসাকীর ৪৭/৪৭২, তারীখে বাগদাদ ১১/৩৭৯)।

সুতরাং কুরআনের উক্ত আয়াতের মজবুত ইংগিত, ঈসা (আ.)-এর পুনঃ আগমন অকাট্য সত্য; (কাজেই রূপক তুপক এগুলা আজেবাজে কথা)। অসংখ্য সহীহ হাদীস এ কথারই পরিষ্কার সাক্ষী।

  • বলাবাহুল্য, ঈসা (আ.)-এর ১২০ বছর জীবন-যাপন করা মর্মে বর্ণনাটি সহীহ নয়, বরং সর্বসম্মতিক্রমে দুর্বল ও অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া বর্ণনাটির শুরুতে কিন্তু এও উল্লেখ আছে, ‘প্রত্যেক নবী তাঁর পূর্বের নবীর অর্ধেক আয়ুষ্কাল অবশ্যই পেয়েছেন।’ তাই এখন প্রশ্ন দাঁড়াবে, হযরত ইদরীস (আ.) এর পরেই হযরত নূহ (আ.)-এর আগমন হয়। আর হযরত ইদরীস (আ.)-এর বয়স হয়েছিল মাত্র ৮২ বছর। অপরদিকে নূহ (আ.)-এর বয়স ছিল ৯৫০ বছর। অথচ তাঁর বয়স ৮২ বছরের অর্ধেকই হওয়ার কথা। এখন এটি কি সুস্পষ্ট অসঙ্গতিপূর্ণ কথা নয়? রাসূল (সা.) কি এইরূপ অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলবেন? নিশ্চয়ই না। উল্লেখ্য, বাইবেল ‘আদিপুস্তক‘ ৫:১৮-২৪ মতে ইদরীস (আ.) ৩৬৫ বছর জীবিত ছিলেন।

সে যাইহোক, কোনোভাবেই কিন্তু নূহ (আ.) হযরত ইদরীস (আ.)-এর অর্ধেক আয়ুষ্কাল পাননি। এভাবে আরও অনেক উল্লেখ করা যাবে। সংক্ষেপে।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

দশ ঢোক দুধ পান ও কুরআনে রজমের আয়াত থাকা

শীয়া, আহলে কুরআন, খ্রিস্টান মিশনারী এবং নাস্তিকদের বিভ্রান্তিমূলক জিজ্ঞাসার জবাবে অতিব সংক্ষিপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ লিখাটি লিখছি

প্রশ্নকর্তা : কুরআনে রজমের আয়াত নেই কেন?

উত্তর : প্রশ্নকারী হয়ত বিভিন্ন হাদীসে রজম সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হওয়ার বিষয়ে জানতে পেরে অতপর সেই আয়াত কুরআনে বিদ্যমান নেই দেখেই বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছেন! এমন অনেকের এই বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের নাসিখ-মানসূখের পুরোপুরি ইলম (নলেজ) না থাকা।

এবার মূলকথায় আসা যাক,

রজমের আয়াত সম্পর্কে ঐতিহাসিকভাবে যে তথ্যটি পাওয়া যায় সেখানে আরও একটি তথ্য রয়েছে, নাস্তিক জিন্দিকরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেই তথ্যটি চেপে যায় শুধুই কুরআনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। সে তথ্যটি হল, রজমের আয়াত সম্পর্কে হাদীস দ্বারা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, সেগুলো কুরআনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলনা, ফলে সেগুলোর তেলাওয়াত এবং বিধান উভয়টি রহিত। ফলে রাসূল (সা.) কুরআন সংকলনের সময় সেসব আয়াতও পান্ডুলিপিতে সন্নিবেশিত করতে নিষেধ করেন। এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, হযরত উমার (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট গিয়েছিলেন এবং জিজ্ঞেস করেছিলেন,

يا رسول الله أكتبني آية الرجم قال لا استطيع ذاك

অর্থ, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে রজমের আয়াতটি লিখে দেওয়া হোক। তিনি বললেন, আমি তা করতে পারব না। (সুনানুল কুবরা বায়হাকী ৮/২১১ এবং সুনানুল কুবরা লিন-নাসাঈ হাদীস নং ৭১৪৮)। তাহকিক, শায়খ আলবানী (রহ.) বলেছেন, এর সনদ সহীহ। রজমের আয়াত সম্পর্কে উত্তর পেলেন।

  • নুসখ বা রহিতের ধরণ চারটি। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে, যার হুকুম ও তিলওয়াত কোনোটিই বহাল থাকেনা। যেমনঃ মাহরামের হুকুম আরোপ করার উদ্দেশ্যে দশ আর পাঁচ ঢোক দুধ পান করা সংক্রান্ত নাযিলকৃত আয়াত প্রথম দিকে থাকা কিন্তু পরে তা রহিত তথা মিটিয়ে দেয়া।
  • পবিত্র কুরআনে নাসিখ-মানসুখ বা রহিতকরণ সম্পর্কে আল্লাহতালা বলেন, ‘এবং যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি এবং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেন তিনিই সে সম্পর্কে ভাল জানেন; তখন তারা বলেঃ আপনি তো মনগড়া উক্তি করেন; বরং তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না।’ (সূরা নাহল ১০১)। ‘আমি কোনো আয়াত রহিত করলে অথবা মিটিয়ে দিলে তদাপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান? (সূরা বাকারা ১০৬)।

এবার দশ ঢোক দুধ পান করা সম্পর্কে বলছি শুনুন!

এই দশ ঢোক দুধ পান সংক্রান্ত বিধানটিও রজমের ন্যায় মানসূখ তথা রহিত। এখানে বলে রাখা জরুরি যে, রহিত হয়ে যাওয়ার অন্যতম আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে, তেলাওয়াত বাদ পড়ে যাওয়া, তবে শুধুই হুকুম (বিধান) অক্ষুণ্ণ থাকা। রাসূল (সা.) এর পত্নীগণ থেকেও ব্যাপারটি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। কাজেই এটি কিছুতেই হতে পারেনা যে, এমন একটি বিষয়ে তারা আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া ব্যতীতই একই যুগে সকলে একই রকম বুঝ গ্রহণ করবেন!

যেমন এ সম্পর্কে একখানা সহীহ হাদীসে এসেছে, নবী (সা.) এর অন্যান্য সহধর্মিণী দশ/পাঁচ ঢোক দুধপান করা দ্বারা কোনো পুরুষের তাদের নিকট প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করতেন। তারা (আয়িশা রাদ্বি.-কে উদ্দেশ্য করে) বলতেন, আল্লাহর কসম, আমরা মনে করি রাসুল (সা.) সাহলা বিনতে সুহাইল (রা.)-কে যে অনুমতি দিয়েছিলেন তা কেবলমাত্র সালিম (রা.) এর জন্য রাসুল (সা.) এর পক্ষ থেকে রুখসত তথা বিশেষ ছাড় ছিল। কসম আল্লাহর, এইরূপ দুধপান করানো দ্বারা কেউ আমাদের নিকট প্রবেশ করতে পারবেনা। নবী করীম (সা.) এর সকল সহধর্মিণী এই মতের উপর অটল ছিলেন। (সুনান আবু দাউদ, অনুচ্ছেদ ১০৪, হাদীস নং ২০৫৭)।

আশাকরি বুঝতেই পারছেন যে, ১০ বা ৫ ঢোক দুধ পান সংক্রান্ত উভয় বিধান অস্থায়ী ছিল, চূড়ান্ত ছিল না। ইসলামে চূড়ান্ত বিধান হিসেবে নির্ধারিত হচ্ছে দুগ্ধপোষ্য শিশুর দুধপানের আদর্শ বয়স মাত্র দুই-আড়াই বছরই। তাই ১০ আর ৫ ঢোকের আয়াত কুরআনের পাণ্ডুলিপিতে স্থান পায়নি। রাসূল (সা.) নিজেই তা সন্নিবেশিত করেননি। নাসিখ-মানসূখ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিস আদ দেহলভি (রহ.)-এর ‘আল ফাউযুল কাবীর’ কিতাবটিও পড়া যেতে পারে।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী